০৬:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা: মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসার প্রয়োগ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী?

জারিন তাসনিম
  • প্রকাশ: ১০:৩২:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১
  • / ১০৮৪ বার পড়া হয়েছে

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি কীভাবে কাজ করে?


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি (Monoclonal Antibody) চিকিৎসা হচ্ছে তাদের জন্য যাদের কোভিড-১৯ হয়েছে অথবা সম্প্রতি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে এসেছেন, এবং হাসপাতালে ভর্তি হননি। মনোক্লোনাল চিকিৎসা ব্যক্তির শরীরে উপস্থিত ভাইরাসের সংখ্যা কমাতে সক্ষম ও উপসর্গ হ্রাস করতে পারে। এ চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে হাসপাতালে যাওয়া এড়ানো যায়।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করে যখন কেউ কোভিড-১৯ এর উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর চিকিৎসা গ্রহণ করে। মনোক্লনাল চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা কী?

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিসমূহ একটি ল্যাবে তৈরি হয়, তবে এই অ্যান্টিবডিগুলো দেহে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। মানবদেহে সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য স্বাভাবিকভাবে যে ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি করা হয়, এই মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ঠিক সেগুলোর মতোই কাজ করে।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা তখনই কারো শরীরের জন্য উত্তম ফল দেয় যখন তিনি ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণায়, মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা নিরাপদ ও কার্যকর বলে দেখা গেছে। 

কারা মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা পাওয়ার যোগ্য?

যাদের ক্ষেত্রে নিচের সবগুলো সত্য তারাচিকিৎসা পাওয়ার জন্য অনুমোদিত: 

  • যার কোভিড-১৯ এর পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে
  • যিনি ১০ দিন বা তার কম সময় ধরে হালকা থেকে মাঝারি কোভিড-১৯ এর উপসর্গে ভুগেছেন
  • যার বয়স কমপক্ষে ১২ বছর এবং ওজন কমপক্ষে ৮৮ পাউন্ড বা ৪০ কিলোগ্রাম।
  • যিনি গুরুতর কোভিড-১৯-এ অসুস্থতার উচ্চ  ঝুঁকিতে আছেন; বয়ষ্ক বা প্রাপ্তবয়ষ্করা; গর্ভবতী ও নির্দিষ্ট কিছু অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যগত অবস্থাসমূহ আছে এমন কেউ; স্থূলত্ব, ডায়াবেটিস, পুরাতন কিডনি রোগে আক্রান্ত কেউ; এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই দুর্বল।

কোভিড-১৯ উপসর্গ না থাকলে কি মনোক্লোনাল চিকিৎসা নেওয়া যাবে?

কেউ যদি কোভিড-১৯-এ সংক্রমিত হয় তবে কোনো উপসর্গ না থাকলেও মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা নেওয়া যাবে। কোভিড-১৯’র সংস্পর্শে আসার পর মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি আপনার অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে

স্তন ক্যান্সার চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ব্যবহার এক অসাধারণ সাফল্য এনে দিয়েছে। এই মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি কী?
স্তন ক্যান্সা চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ব্যবহার এক অসাধারণ সাফল্য এনে দিয়েছে।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা কীভাবে দেওয়া হয়?

চিকিৎসা সাধারণত ইন্ট্রাভেনাস (Intravenous – IV) ইনফিউশনের মাধ্যমে দেওয়া হয় এবং এতে এক ঘণ্টার মতো সময় ব্যয় হয়। ইনজেকশনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া যায়। রোগীদের মধ্যে কোনো তাৎক্ষণিক খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে না তা দেখার জন্য তাদেরকে আরো এক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। 

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী কী? 

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে থাকতে পারে:

  • IV বা ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, রক্তক্ষরণ বা আঘাতের মত কোনো প্রতিক্রিয়া
  • বমি বমি ভাব, বমি হওয়া বা ডায়রিয়া
  • চুলকানি, ফু সকুড়ি বা লাল লাল দাগ অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া এবং অন্যান্য গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসমূহ অত্যন্ত বিরল।

একই সাথে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা এবং ভ্যাকসিন গ্রহণ গ্রহণ করা যাবে?

কেউ যদি পূর্বে কোভিড-১৯ থেকে মুক্তি পেতে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তিনিও মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন, যদি পূনরায় উপসর্গ দেখা দেয় বা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে। কেউ যদি ইতোমধ্যে মনোক্লোনাল চিকিৎসা নিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসার ৯০ দিন পরে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারবেন।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসার মাধ্যমে- ক্যান্সার, বিশেষ করে স্তন ক্যান্সারে বিরুদ্ধে সাফল্য পাওয়া গেছে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

জারিন তাসনিম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং স্বাধীন লেখক।

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা: মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসার প্রয়োগ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী?

প্রকাশ: ১০:৩২:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি (Monoclonal Antibody) চিকিৎসা হচ্ছে তাদের জন্য যাদের কোভিড-১৯ হয়েছে অথবা সম্প্রতি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে এসেছেন, এবং হাসপাতালে ভর্তি হননি। মনোক্লোনাল চিকিৎসা ব্যক্তির শরীরে উপস্থিত ভাইরাসের সংখ্যা কমাতে সক্ষম ও উপসর্গ হ্রাস করতে পারে। এ চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে হাসপাতালে যাওয়া এড়ানো যায়।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করে যখন কেউ কোভিড-১৯ এর উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর চিকিৎসা গ্রহণ করে। মনোক্লনাল চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা কী?

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিসমূহ একটি ল্যাবে তৈরি হয়, তবে এই অ্যান্টিবডিগুলো দেহে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। মানবদেহে সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য স্বাভাবিকভাবে যে ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি করা হয়, এই মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ঠিক সেগুলোর মতোই কাজ করে।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা তখনই কারো শরীরের জন্য উত্তম ফল দেয় যখন তিনি ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণায়, মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা নিরাপদ ও কার্যকর বলে দেখা গেছে। 

কারা মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা পাওয়ার যোগ্য?

যাদের ক্ষেত্রে নিচের সবগুলো সত্য তারাচিকিৎসা পাওয়ার জন্য অনুমোদিত: 

  • যার কোভিড-১৯ এর পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে
  • যিনি ১০ দিন বা তার কম সময় ধরে হালকা থেকে মাঝারি কোভিড-১৯ এর উপসর্গে ভুগেছেন
  • যার বয়স কমপক্ষে ১২ বছর এবং ওজন কমপক্ষে ৮৮ পাউন্ড বা ৪০ কিলোগ্রাম।
  • যিনি গুরুতর কোভিড-১৯-এ অসুস্থতার উচ্চ  ঝুঁকিতে আছেন; বয়ষ্ক বা প্রাপ্তবয়ষ্করা; গর্ভবতী ও নির্দিষ্ট কিছু অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যগত অবস্থাসমূহ আছে এমন কেউ; স্থূলত্ব, ডায়াবেটিস, পুরাতন কিডনি রোগে আক্রান্ত কেউ; এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই দুর্বল।

কোভিড-১৯ উপসর্গ না থাকলে কি মনোক্লোনাল চিকিৎসা নেওয়া যাবে?

কেউ যদি কোভিড-১৯-এ সংক্রমিত হয় তবে কোনো উপসর্গ না থাকলেও মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা নেওয়া যাবে। কোভিড-১৯’র সংস্পর্শে আসার পর মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি আপনার অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে

স্তন ক্যান্সার চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ব্যবহার এক অসাধারণ সাফল্য এনে দিয়েছে। এই মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি কী?
স্তন ক্যান্সা চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ব্যবহার এক অসাধারণ সাফল্য এনে দিয়েছে।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা কীভাবে দেওয়া হয়?

চিকিৎসা সাধারণত ইন্ট্রাভেনাস (Intravenous – IV) ইনফিউশনের মাধ্যমে দেওয়া হয় এবং এতে এক ঘণ্টার মতো সময় ব্যয় হয়। ইনজেকশনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া যায়। রোগীদের মধ্যে কোনো তাৎক্ষণিক খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে না তা দেখার জন্য তাদেরকে আরো এক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। 

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী কী? 

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে থাকতে পারে:

  • IV বা ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, রক্তক্ষরণ বা আঘাতের মত কোনো প্রতিক্রিয়া
  • বমি বমি ভাব, বমি হওয়া বা ডায়রিয়া
  • চুলকানি, ফু সকুড়ি বা লাল লাল দাগ অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া এবং অন্যান্য গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসমূহ অত্যন্ত বিরল।

একই সাথে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা এবং ভ্যাকসিন গ্রহণ গ্রহণ করা যাবে?

কেউ যদি পূর্বে কোভিড-১৯ থেকে মুক্তি পেতে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তিনিও মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন, যদি পূনরায় উপসর্গ দেখা দেয় বা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে। কেউ যদি ইতোমধ্যে মনোক্লোনাল চিকিৎসা নিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসার ৯০ দিন পরে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারবেন।

মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসার মাধ্যমে- ক্যান্সার, বিশেষ করে স্তন ক্যান্সারে বিরুদ্ধে সাফল্য পাওয়া গেছে।