০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

কর্মসহায়ক গবেষণা কেন এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

মাছুম বিল্লাহ
  • প্রকাশ: ০৯:১৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ১৪৬৩ বার পড়া হয়েছে

কর্মসহায়ক গবেষণা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

কর্মসহায়ক গবেষণা হলো এক ধরনের প্রায়োগিক গবেষণা। কোনো ব্যক্তি তার পেশাগত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে সেই সমস্যা সমাধানের জন্য যে গবেষণা করেন তাই কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিসার্চ (Action Research)। পেশাগত অনুশীলন ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়েও এ গবেষণা পরিচালনা করা যায়। কর্মসহায়ক গবেষণা হলো পুনরায় সামাজিক কার্যক্রমের জন্য গবেষণা ব্যবহারের এমন একটি পদ্ধতি, যা কোনো সমস্যা সমাধান এবং প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের জন্য করা হয়। সহযোগিতামূলক অনুসন্ধিৎসার মাধ্যমে নিজের অনুশীলনের পরীক্ষা করাই হচ্ছে অ্যাকশন রিসার্চ।

বাস্তব সমস্যা নিয়ে কর্মসহায়ক গবেষণা করা হয়

কর্মসহায়ক গবেষণা বাস্তব সমস্যাভিত্তিক গবেষণা পদ্ধতি; যা বাস্তব সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের সাধারণ তত্ত্ব আবিষ্কার করে এবং সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে থাকে। এটি সামাজিক গবেষণা থেকে একটি ভিন্ন গবেষণা পদ্ধতি। কার্ট লিউইনের (১৯৪৭) মতানুসারে কর্মসহায়ক গবেষণার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, একটি নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণাধীনে কোনো পরিবর্তনশীল প্রকৃতি বিবেচনা করে কিছু কার্যক্রম এবং গবেষণা পরিচালনা করা, কর্মসহায়ক গবেষণা শুধু সাধারণ তত্ত্ব আবিষ্কার করে না, বরং সমস্যা সমাধানের জন্য তা কার্যে পরিণত করে। এটি গবেষণার একটি চলমান প্রক্রিয়া; যা সমস্যা চিহ্নিত করে, সমাধানের তত্ত্ব আবিষ্কার করে এবং বাস্তবে প্রয়োগ করে চক্রাকারে আবর্তিত হতে থাকে। কর্মসহায়ক গবেষণা বলতে কোনো স্তর বা ধাপ বোঝায় না, বরং গবেষণার সামগ্রিক প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এটি সমস্যা সমাধানের একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটি সমস্যা চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু হয়ে তত্ত্ব প্রণয়ন এবং তত্ত্ব বাস্তবে প্রয়োগ করে ফলাফল মূল্যায়ন পর্যন্ত বিস্তৃত। কর্মসহায়ক গবেষণা শুধু অতীত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে না, বরং গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তত্ত্ব ভবিষ্যতে প্রয়োগ করে সমস্যার সমাধান করে থাকে।

কে কী বলেছেন?

১৯৪০ দশকে কার্ট লিউইন (Kurt Lewin) একটি ধারণার জন্ম দিয়েছিলেন আর সেটি হচ্ছে স্বাভাবিক অবস্থায় গবেষণা করা; যাতে ওই স্বাভাবিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। তার সেই ধারণার ওপরই প্রতিষ্ঠিত আজকের অ্যাকশন রিসার্চ। এটি অবিরত পরিকল্পনা চক্র, কাজ, পর্যবেক্ষণ এবং পরিবর্তনের ওপর প্রতিবিম্বন। ম্যাক ফারল্যান্ড এবং স্ট্যানসেল বলেছেন যে, লিউইন অ্যাকশন রিসার্চকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন ‘কাজের উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া’। স্টিফেন কোরি (Stephen Corey) লিউইনের ধারণা শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, কারো শিক্ষাদানের ওপর পরীক্ষা একটি ভালো পরিবর্তন নিয়ে আসে। আমরা নিজেরা যদি নিজেদের শিক্ষাদান পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করি, পর্যবেক্ষণ করি এবং সে অনুযায়ী পরিবর্তনের চেষ্টা করি; তাহলে সেটি অন্যের লেখা পড়ে এবং শিক্ষা নিয়ে তাদের আবিষ্কার ও তত্ত্ব (theory) পড়ে যে পরিবর্তনের চেষ্টা করব তার চেয়ে বেশি কার্যকর।

পেশাগত অনুশীলন থেকে কর্মসহায়ক গবেষণা আলাদা

সাধারণ পেশাগত অনুশীলন বা প্র্যাকটিস থেকে এটি আলাদা; কারণ এখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হয় নিজস্ব পরিবেশ থেকে সংগৃহীত তথ্যের ওপর। শিক্ষাদানের প্রচলিত মান যাচাই পদ্ধতি যে কার্যকরী হচ্ছে, তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে খুবই প্রয়োজনীয়। পরীক্ষা এবং তার কার্যকারিতা একজন শিক্ষককে সাহায্য করে তিনি কীভাবে আগামী দিনগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম এবং শিক্ষাদান পদ্ধতি গ্রহণ করবেন। একজন শিক্ষকের প্র্যাকটিস এবং কার্যাবলি কাক্সিক্ষত ফলের দিকে যাচ্ছে কি না, তা জানার একটি শক্তিশালী পদ্ধতি হচ্ছে এই কর্মসহায়ক গবেষণা।

কর্মসহায়ক গবেষণার মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান বিভিন্ন ধরনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পূর্ণ শ্রেণিকক্ষে একজন শিক্ষক কীভাবে আচরণ করবেন, কীভাবে শিক্ষাদান করবেন, কীভাবে তার শিক্ষাদান কার্যকর হবে, কীভাবে তিনি শিক্ষার্থীদের বিশেষ চাহিদাসমূহ পূরণ করবেন; সেগুলো তিনি নির্ধারণ করতে পারেন।

অতএব দেখা যায় যে, কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিসার্চের উদ্দেশ্য হচ্ছে একজন শিক্ষকের নিজস্ব শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয়ে কার্যকরী পরিবর্তন নিয়ে আসা। এটি শিক্ষকদের অবিরত উৎসাহ প্রদান করে; যেখানে তারা শিক্ষার্থীদের মতো শিখতে পারেন।

সমালোচকের দৃষ্টিতে কারো শিক্ষাদান পদ্ধতি দেখার মানসিকতা তৈরি করতে সহায়তা করে এই গবেষণা। একজন শিক্ষককে কী কী বাদ দিতে হবে, তা জানতেও সহায়তা করে। তাছাড়াও অ্যাকশন রিসার্চ একজন শিক্ষককে নিম্নোক্তভাবে সহায়তা করে, যথা-

  • পূর্ববর্তী জ্ঞানের সঙ্গে বর্তমান তথ্যের সংযোগ সাধন করা;
  • অভিজ্ঞতা থেকে শেখা
  • প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা এবং নিয়মিতভাবে, সুশৃঙ্খলভাবে উত্তর বের করা।

কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিসার্চ পদ্ধতির মানদন্ড বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসা দ্বারা পরিচালিত। এটি বরং তথ্য সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে জানা এবং জ্ঞানার্জন করা; যা কারো ব্যক্তিগত কাজের উদ্দেশ্যকে সফল করে। এটি এক ধরনের প্রচেষ্টা, যা প্রচলিত ধারণার প্রতিফলনের মাধ্যমে ওই কাজটির উন্নয়ন ঘটায়। অ্যাকশন রিসার্চের মাধ্যমে যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়, তা নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করা হয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যে, এর মাধ্যমে ইতিবাচক প্রত্যাশিত কোনো পরিবর্তন করা যাবে কি না বিদ্যালয়ে, শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে।

শিক্ষক শিক্ষাদান বা পাঠিদান নিয়ে ভাবলে কী তাকে কর্মসহায়ক গবেষণা বলা যায়?

শিক্ষকরা যখন তাদের শিক্ষাদান নিয়ে সাধারণ কিছু ভাবেন সেটি অ্যাকশন রিসার্চ নয়। অ্যাকশন রিসার্চ পদ্ধতিগত, সিস্টেমেটিক এবং প্রমাণ সংগ্রহ করার বিষয় থাকে সেখানে যার ওপর কঠিন প্রতিফলন থাকে। এটি শুধু সমস্যা সমাধান নয়। একটি অনুসন্ধিৎসার মাধ্যমে এটি পরিচালিত হয়, পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করা হয় এবং সেটি উন্নয়নের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। বিশেষ কিছু লোকের কাজের ওপর গবেষণাটি করা হয়, যাতে তারা যা করেন তার উন্নয়ন ঘটানো যায়। অ্যাকশন রিসার্চ মানুষকে বস্তু হিসেবে দেখে না, দায়িত্বপূর্ণ সত্তা হিসেবে দেখে। অ্যাকশন রিসার্চ শুধু অনুমান-পরীক্ষামূলক নয় কিংবা কিছু তথ্যের উপসংহার নয়।

বিদ্যালয়ে কর্মসহায়ক গবেষণা কী?

বিদ্যালয়ে কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিসার্চ বলতে বোঝায় মূল্যায়নের বিভিন্নতা, তদন্ত, অন্বেষণ এবং বিশ্লেষণমূলক গবেষণা পদ্ধতি; যা বিন্যাস করা হয় সমস্যা কিংবা দুর্বলতা চিহ্নিত করার নিমিত্তে। সেটি হতে পারে প্রাতিষ্ঠানিক, অ্যাকাডেমিক কিংবা পাঠদান সম্পর্কিত এবং শিক্ষকদের সহায়তা করা; যাতে তারা বাস্তব সমাধান বের করতে পারেন দ্রুততার সঙ্গে এবং কার্যকরভাবে। এ ছাড়াও অ্যাকশন রিসার্চ কোনো কর্মসূচি কিংবা পাঠদান সম্পর্কিত কৌশলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেখানে কার্যত কোনো সমস্যা বিরাজমান নেই, তবে শিক্ষকরা বিষয়টি আরো গভীরভাবে জানতে চান এবং সেটির উন্নয়ন ঘটাতে চান। এ গবেষণার সাধারণ উদ্দেশ্য হচ্ছে সহজ, বাস্তব, বারবার পদ্ধতি, মূল্যায়ন এবং উন্নয়ন; যা ক্রমাগতভাবে অধিকতর ভালো ফলাফলের দিকে নিয়ে যায়, যা বিদ্যালয়, শিক্ষক কিংবা কোনো কর্মসূচির জন্য মঙ্গলজনক।

ক্রিয়াচক্র বা অনুসন্ধান চক্র

অ্যাকশন রিসার্চকে ক্রিয়াচক্র কিংবা অনুসন্ধান চক্রও বলা যায়। এতে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করা হয়, যথা-

  • গবেষণার জন্য একটি সমস্যা চিহ্নিত করা
  • সমস্যার ওপর তথ্য সংগ্রহ করা
  • তথ্যগুলো সন্নিবেশ করা, বিশ্লেষণ করা এবং ব্যাখ্যা করা
  • সমস্যাটি সমাধানের জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা
  • পরিকল্পনাটিকে বাস্তবায়ন করা
  • যেসব কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে তার ফলগুলো মূল্যায়ন করা নতুন একটি সমস্যা চিহ্নিত করা
  • পদ্ধতিটিকে আবার অনুসরণ করা।

যদিও বলা হয় যে, অ্যাকশন রিসার্চ বিশেষ কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য করা হয় যেমন শিক্ষার্থীদের বর্ধিতহারে অনুপস্থিতি কিংবা বিশেষ কোনো প্রশ্নের উত্তর বের করার জন্য কিংবা কিছু শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষে অমনোযোগী হওয়া, কারোর হাতের লেখা অস্পষ্ট সেটি সুন্দর এবং বোধগম্য করার জন্য, কেন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বেশি পরিমাণে গণিতে অকৃতকার্য হয়েছে। তার পরও অ্যাকশন রিসার্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে জ্ঞানের বর্ধিত কলেবরেও অবদান রাখতে পারে। যেমন- বিদ্যালয় কিংবা সহযোগী সংস্থাগুলোর মধ্যে।

কর্মসহায়ক গবেষণার ইতিবাচক দিকসমূহ

বিভিন্ন কারণে কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিচার্সের ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে অ্যাকশন রিসার্চ সব সময়ই অংশগ্রহণকারীদের কাছে প্রাসঙ্গিক। প্রসঙ্গ এখানে থাকছেই, কারণ প্রতিটি গবেষণার ফোকাস নির্ধারণ করা হয় গবেষকদের মাধ্যমে যারা নিজেরাই প্রাপ্ত ফলাফলের ভোক্তা।

আরও বলা যেতে পারে, অ্যাকশন রিসার্চ শিক্ষকদের সহায়তা করে যেসব কাজে তাদের প্রচুর আগ্রহ আছে এবং তারা সেগুলোর উন্নয়ন চান যেমন তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি, তাদের শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন। শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন ঘটে থাকলে সেটি একজন শিক্ষকের কাছে বিরাট এক আনন্দের বিষয়। একজন শিক্ষক যখন দেখেন বা প্রমাণ পান যে, তার কাজ শিক্ষার্থীদের জীবনে প্রকৃতপক্ষেই পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, তখন তার শত শত ঘণ্টা কাজ, পরিশ্রম সার্থক মনে হয়। শুধু শিক্ষাদান ও রুটিন অ্যাকাডেমিক কাজ করাই একজন প্রকৃত ও আধুনিক শিক্ষকের কাজ নয়। অ্যাকশন রিসার্চ একজন শিক্ষক একটি শ্রেণিকক্ষে পরিচালনা করতে পারেন কিংবা দুই বা ততোধিক শিক্ষক, পুরো বিদ্যালয় কিংবা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বা কোনো বিভাগ এতে সহায়তা করতে পারে।

সুশিক্ষকরা নিজেদের প্রশ্ন করেন

সুশিক্ষকরা শিক্ষা ক্ষেত্রের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিবর্গ। তারা শুধু চিরাচরিত নিয়মে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান বা নতুনভাবে উদয় হওয়া সমস্যার সমাধান করেন না। তারা শুধু অন্যের উপদেশ এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ওপর নির্ভর করে থাকেন না। শিক্ষা ক্ষেত্রের এসব নেতা সমস্যা চিহ্নিত করতে, সমস্যার প্রকৃতি নির্ণয় করতে, তথ্যের বিশ্লেষণ করতে তাদের নিজ নিজ শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পদ্ধতিতে অনুসন্ধান চালিয়ে যান। এ ধরনের সুশিক্ষকরা নিজেদের প্রশ্ন করেন-

  • ক. আমাদের শিক্ষার্থীরা কী শিখছে?
  • খ. আমাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি সঠিক এবং কার্যকর হচ্ছে তো?
  • গ. শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়নে আমাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি কতটা আলাদা, কতটা অবদান রাখছে

ফলে তাদের পেশাগত দক্ষতার আরো উন্নয়ন ঘটে। তাই বলা যায়, পেশাগত উন্নয়নের জন্য এ ধরনের অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ একটি শক্তিশালী উপকরণ।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

মাছুম বিল্লাহ

শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক এবং প্রেসিডেন্ট: ইংলিশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইট্যাব)। সাবেক কান্ট্রি ডিরেক্টর- ভাব বাংলাদেশ এবং শিক্ষা বিশেষজ্ঞ -ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি। ইমেইল: [email protected]

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

কর্মসহায়ক গবেষণা কেন এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

প্রকাশ: ০৯:১৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১

কর্মসহায়ক গবেষণা হলো এক ধরনের প্রায়োগিক গবেষণা। কোনো ব্যক্তি তার পেশাগত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে সেই সমস্যা সমাধানের জন্য যে গবেষণা করেন তাই কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিসার্চ (Action Research)। পেশাগত অনুশীলন ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়েও এ গবেষণা পরিচালনা করা যায়। কর্মসহায়ক গবেষণা হলো পুনরায় সামাজিক কার্যক্রমের জন্য গবেষণা ব্যবহারের এমন একটি পদ্ধতি, যা কোনো সমস্যা সমাধান এবং প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের জন্য করা হয়। সহযোগিতামূলক অনুসন্ধিৎসার মাধ্যমে নিজের অনুশীলনের পরীক্ষা করাই হচ্ছে অ্যাকশন রিসার্চ।

বাস্তব সমস্যা নিয়ে কর্মসহায়ক গবেষণা করা হয়

কর্মসহায়ক গবেষণা বাস্তব সমস্যাভিত্তিক গবেষণা পদ্ধতি; যা বাস্তব সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের সাধারণ তত্ত্ব আবিষ্কার করে এবং সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে থাকে। এটি সামাজিক গবেষণা থেকে একটি ভিন্ন গবেষণা পদ্ধতি। কার্ট লিউইনের (১৯৪৭) মতানুসারে কর্মসহায়ক গবেষণার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, একটি নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণাধীনে কোনো পরিবর্তনশীল প্রকৃতি বিবেচনা করে কিছু কার্যক্রম এবং গবেষণা পরিচালনা করা, কর্মসহায়ক গবেষণা শুধু সাধারণ তত্ত্ব আবিষ্কার করে না, বরং সমস্যা সমাধানের জন্য তা কার্যে পরিণত করে। এটি গবেষণার একটি চলমান প্রক্রিয়া; যা সমস্যা চিহ্নিত করে, সমাধানের তত্ত্ব আবিষ্কার করে এবং বাস্তবে প্রয়োগ করে চক্রাকারে আবর্তিত হতে থাকে। কর্মসহায়ক গবেষণা বলতে কোনো স্তর বা ধাপ বোঝায় না, বরং গবেষণার সামগ্রিক প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এটি সমস্যা সমাধানের একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটি সমস্যা চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু হয়ে তত্ত্ব প্রণয়ন এবং তত্ত্ব বাস্তবে প্রয়োগ করে ফলাফল মূল্যায়ন পর্যন্ত বিস্তৃত। কর্মসহায়ক গবেষণা শুধু অতীত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে না, বরং গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তত্ত্ব ভবিষ্যতে প্রয়োগ করে সমস্যার সমাধান করে থাকে।

কে কী বলেছেন?

১৯৪০ দশকে কার্ট লিউইন (Kurt Lewin) একটি ধারণার জন্ম দিয়েছিলেন আর সেটি হচ্ছে স্বাভাবিক অবস্থায় গবেষণা করা; যাতে ওই স্বাভাবিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। তার সেই ধারণার ওপরই প্রতিষ্ঠিত আজকের অ্যাকশন রিসার্চ। এটি অবিরত পরিকল্পনা চক্র, কাজ, পর্যবেক্ষণ এবং পরিবর্তনের ওপর প্রতিবিম্বন। ম্যাক ফারল্যান্ড এবং স্ট্যানসেল বলেছেন যে, লিউইন অ্যাকশন রিসার্চকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন ‘কাজের উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া’। স্টিফেন কোরি (Stephen Corey) লিউইনের ধারণা শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, কারো শিক্ষাদানের ওপর পরীক্ষা একটি ভালো পরিবর্তন নিয়ে আসে। আমরা নিজেরা যদি নিজেদের শিক্ষাদান পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করি, পর্যবেক্ষণ করি এবং সে অনুযায়ী পরিবর্তনের চেষ্টা করি; তাহলে সেটি অন্যের লেখা পড়ে এবং শিক্ষা নিয়ে তাদের আবিষ্কার ও তত্ত্ব (theory) পড়ে যে পরিবর্তনের চেষ্টা করব তার চেয়ে বেশি কার্যকর।

পেশাগত অনুশীলন থেকে কর্মসহায়ক গবেষণা আলাদা

সাধারণ পেশাগত অনুশীলন বা প্র্যাকটিস থেকে এটি আলাদা; কারণ এখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হয় নিজস্ব পরিবেশ থেকে সংগৃহীত তথ্যের ওপর। শিক্ষাদানের প্রচলিত মান যাচাই পদ্ধতি যে কার্যকরী হচ্ছে, তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে খুবই প্রয়োজনীয়। পরীক্ষা এবং তার কার্যকারিতা একজন শিক্ষককে সাহায্য করে তিনি কীভাবে আগামী দিনগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম এবং শিক্ষাদান পদ্ধতি গ্রহণ করবেন। একজন শিক্ষকের প্র্যাকটিস এবং কার্যাবলি কাক্সিক্ষত ফলের দিকে যাচ্ছে কি না, তা জানার একটি শক্তিশালী পদ্ধতি হচ্ছে এই কর্মসহায়ক গবেষণা।

কর্মসহায়ক গবেষণার মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান বিভিন্ন ধরনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পূর্ণ শ্রেণিকক্ষে একজন শিক্ষক কীভাবে আচরণ করবেন, কীভাবে শিক্ষাদান করবেন, কীভাবে তার শিক্ষাদান কার্যকর হবে, কীভাবে তিনি শিক্ষার্থীদের বিশেষ চাহিদাসমূহ পূরণ করবেন; সেগুলো তিনি নির্ধারণ করতে পারেন।

অতএব দেখা যায় যে, কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিসার্চের উদ্দেশ্য হচ্ছে একজন শিক্ষকের নিজস্ব শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয়ে কার্যকরী পরিবর্তন নিয়ে আসা। এটি শিক্ষকদের অবিরত উৎসাহ প্রদান করে; যেখানে তারা শিক্ষার্থীদের মতো শিখতে পারেন।

সমালোচকের দৃষ্টিতে কারো শিক্ষাদান পদ্ধতি দেখার মানসিকতা তৈরি করতে সহায়তা করে এই গবেষণা। একজন শিক্ষককে কী কী বাদ দিতে হবে, তা জানতেও সহায়তা করে। তাছাড়াও অ্যাকশন রিসার্চ একজন শিক্ষককে নিম্নোক্তভাবে সহায়তা করে, যথা-

  • পূর্ববর্তী জ্ঞানের সঙ্গে বর্তমান তথ্যের সংযোগ সাধন করা;
  • অভিজ্ঞতা থেকে শেখা
  • প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা এবং নিয়মিতভাবে, সুশৃঙ্খলভাবে উত্তর বের করা।

কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিসার্চ পদ্ধতির মানদন্ড বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসা দ্বারা পরিচালিত। এটি বরং তথ্য সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে জানা এবং জ্ঞানার্জন করা; যা কারো ব্যক্তিগত কাজের উদ্দেশ্যকে সফল করে। এটি এক ধরনের প্রচেষ্টা, যা প্রচলিত ধারণার প্রতিফলনের মাধ্যমে ওই কাজটির উন্নয়ন ঘটায়। অ্যাকশন রিসার্চের মাধ্যমে যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়, তা নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করা হয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যে, এর মাধ্যমে ইতিবাচক প্রত্যাশিত কোনো পরিবর্তন করা যাবে কি না বিদ্যালয়ে, শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে।

শিক্ষক শিক্ষাদান বা পাঠিদান নিয়ে ভাবলে কী তাকে কর্মসহায়ক গবেষণা বলা যায়?

শিক্ষকরা যখন তাদের শিক্ষাদান নিয়ে সাধারণ কিছু ভাবেন সেটি অ্যাকশন রিসার্চ নয়। অ্যাকশন রিসার্চ পদ্ধতিগত, সিস্টেমেটিক এবং প্রমাণ সংগ্রহ করার বিষয় থাকে সেখানে যার ওপর কঠিন প্রতিফলন থাকে। এটি শুধু সমস্যা সমাধান নয়। একটি অনুসন্ধিৎসার মাধ্যমে এটি পরিচালিত হয়, পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করা হয় এবং সেটি উন্নয়নের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। বিশেষ কিছু লোকের কাজের ওপর গবেষণাটি করা হয়, যাতে তারা যা করেন তার উন্নয়ন ঘটানো যায়। অ্যাকশন রিসার্চ মানুষকে বস্তু হিসেবে দেখে না, দায়িত্বপূর্ণ সত্তা হিসেবে দেখে। অ্যাকশন রিসার্চ শুধু অনুমান-পরীক্ষামূলক নয় কিংবা কিছু তথ্যের উপসংহার নয়।

বিদ্যালয়ে কর্মসহায়ক গবেষণা কী?

বিদ্যালয়ে কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিসার্চ বলতে বোঝায় মূল্যায়নের বিভিন্নতা, তদন্ত, অন্বেষণ এবং বিশ্লেষণমূলক গবেষণা পদ্ধতি; যা বিন্যাস করা হয় সমস্যা কিংবা দুর্বলতা চিহ্নিত করার নিমিত্তে। সেটি হতে পারে প্রাতিষ্ঠানিক, অ্যাকাডেমিক কিংবা পাঠদান সম্পর্কিত এবং শিক্ষকদের সহায়তা করা; যাতে তারা বাস্তব সমাধান বের করতে পারেন দ্রুততার সঙ্গে এবং কার্যকরভাবে। এ ছাড়াও অ্যাকশন রিসার্চ কোনো কর্মসূচি কিংবা পাঠদান সম্পর্কিত কৌশলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেখানে কার্যত কোনো সমস্যা বিরাজমান নেই, তবে শিক্ষকরা বিষয়টি আরো গভীরভাবে জানতে চান এবং সেটির উন্নয়ন ঘটাতে চান। এ গবেষণার সাধারণ উদ্দেশ্য হচ্ছে সহজ, বাস্তব, বারবার পদ্ধতি, মূল্যায়ন এবং উন্নয়ন; যা ক্রমাগতভাবে অধিকতর ভালো ফলাফলের দিকে নিয়ে যায়, যা বিদ্যালয়, শিক্ষক কিংবা কোনো কর্মসূচির জন্য মঙ্গলজনক।

ক্রিয়াচক্র বা অনুসন্ধান চক্র

অ্যাকশন রিসার্চকে ক্রিয়াচক্র কিংবা অনুসন্ধান চক্রও বলা যায়। এতে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করা হয়, যথা-

  • গবেষণার জন্য একটি সমস্যা চিহ্নিত করা
  • সমস্যার ওপর তথ্য সংগ্রহ করা
  • তথ্যগুলো সন্নিবেশ করা, বিশ্লেষণ করা এবং ব্যাখ্যা করা
  • সমস্যাটি সমাধানের জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা
  • পরিকল্পনাটিকে বাস্তবায়ন করা
  • যেসব কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে তার ফলগুলো মূল্যায়ন করা নতুন একটি সমস্যা চিহ্নিত করা
  • পদ্ধতিটিকে আবার অনুসরণ করা।

যদিও বলা হয় যে, অ্যাকশন রিসার্চ বিশেষ কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য করা হয় যেমন শিক্ষার্থীদের বর্ধিতহারে অনুপস্থিতি কিংবা বিশেষ কোনো প্রশ্নের উত্তর বের করার জন্য কিংবা কিছু শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষে অমনোযোগী হওয়া, কারোর হাতের লেখা অস্পষ্ট সেটি সুন্দর এবং বোধগম্য করার জন্য, কেন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বেশি পরিমাণে গণিতে অকৃতকার্য হয়েছে। তার পরও অ্যাকশন রিসার্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে জ্ঞানের বর্ধিত কলেবরেও অবদান রাখতে পারে। যেমন- বিদ্যালয় কিংবা সহযোগী সংস্থাগুলোর মধ্যে।

কর্মসহায়ক গবেষণার ইতিবাচক দিকসমূহ

বিভিন্ন কারণে কর্মসহায়ক গবেষণা বা অ্যাকশন রিচার্সের ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে অ্যাকশন রিসার্চ সব সময়ই অংশগ্রহণকারীদের কাছে প্রাসঙ্গিক। প্রসঙ্গ এখানে থাকছেই, কারণ প্রতিটি গবেষণার ফোকাস নির্ধারণ করা হয় গবেষকদের মাধ্যমে যারা নিজেরাই প্রাপ্ত ফলাফলের ভোক্তা।

আরও বলা যেতে পারে, অ্যাকশন রিসার্চ শিক্ষকদের সহায়তা করে যেসব কাজে তাদের প্রচুর আগ্রহ আছে এবং তারা সেগুলোর উন্নয়ন চান যেমন তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি, তাদের শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন। শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন ঘটে থাকলে সেটি একজন শিক্ষকের কাছে বিরাট এক আনন্দের বিষয়। একজন শিক্ষক যখন দেখেন বা প্রমাণ পান যে, তার কাজ শিক্ষার্থীদের জীবনে প্রকৃতপক্ষেই পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, তখন তার শত শত ঘণ্টা কাজ, পরিশ্রম সার্থক মনে হয়। শুধু শিক্ষাদান ও রুটিন অ্যাকাডেমিক কাজ করাই একজন প্রকৃত ও আধুনিক শিক্ষকের কাজ নয়। অ্যাকশন রিসার্চ একজন শিক্ষক একটি শ্রেণিকক্ষে পরিচালনা করতে পারেন কিংবা দুই বা ততোধিক শিক্ষক, পুরো বিদ্যালয় কিংবা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বা কোনো বিভাগ এতে সহায়তা করতে পারে।

সুশিক্ষকরা নিজেদের প্রশ্ন করেন

সুশিক্ষকরা শিক্ষা ক্ষেত্রের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিবর্গ। তারা শুধু চিরাচরিত নিয়মে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান বা নতুনভাবে উদয় হওয়া সমস্যার সমাধান করেন না। তারা শুধু অন্যের উপদেশ এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ওপর নির্ভর করে থাকেন না। শিক্ষা ক্ষেত্রের এসব নেতা সমস্যা চিহ্নিত করতে, সমস্যার প্রকৃতি নির্ণয় করতে, তথ্যের বিশ্লেষণ করতে তাদের নিজ নিজ শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পদ্ধতিতে অনুসন্ধান চালিয়ে যান। এ ধরনের সুশিক্ষকরা নিজেদের প্রশ্ন করেন-

  • ক. আমাদের শিক্ষার্থীরা কী শিখছে?
  • খ. আমাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি সঠিক এবং কার্যকর হচ্ছে তো?
  • গ. শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়নে আমাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি কতটা আলাদা, কতটা অবদান রাখছে

ফলে তাদের পেশাগত দক্ষতার আরো উন্নয়ন ঘটে। তাই বলা যায়, পেশাগত উন্নয়নের জন্য এ ধরনের অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ একটি শক্তিশালী উপকরণ।