০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

সিন্ধু সভ্যতা: মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কার, নৃ-গোষ্ঠী এবং ধ্বংস

মু. মিজানুর রহমান মিজান
  • প্রকাশ: ০৫:২৩:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অগাস্ট ২০২১
  • / ৭৭৯০ বার পড়া হয়েছে

মহেঞ্জোদারো সভ্যতার নিম্নশহর |ছবি: harappa.com

মহেঞ্জোদার ও হরপ্পা সভ্যতা হলো ভারতবর্ষের এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত সর্বাপেক্ষা প্রাচীন সভ্যতা। পূর্বে অর্থাৎ যখন পর্যন্ত মহেঞ্জোদারোর প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়নি তখন পর্যন্ত বৈদিক সভ্যতাকে ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতা বলে মনে করা হতো। কিন্তু এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে হরপ্পা-মহেঞ্জোদারোর আবিষ্কার। 

মহেঞ্জোদারো 

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা নামক জেলায় মহেঞ্জোদারোর অবস্থিত। মহেঞ্জোদারো নিয়ে পরিচালিত প্রত্নতাত্বিক গবেষণাসমূহ প্রমাণ করে ভারত পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্য দেশগুলোর একটি। সিন্ধু সভ্যতার মহেঞ্জোদারো ছিল মেসোপটেমিয়া, প্রাচীন মিশর এবং ক্রিটের সমসাময়িক।

মহেঞ্জোদারো ইংরেজিতে তিন ভাবে লেখা হয়- Mohenjo-daro, Mohenjodaro অথবা Moenjodaro। আবার বাংলাতে কে ‘মহেঞ্জোদাড়ো’ এবং ‘মোহেন-জো-দড়ো’ ও লেখা হয়ে থাকে। মহেঞ্জোদারো অর্থ হলো মৃতস্তুপ বা মৃতের টিলা (the Mound of the Dead) ।

মহেঞ্জোদারো আবিষ্কার

পশ্চিম ভারতের তৎকালীন সুপারিন্টেন্ডেট রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় (Rakhaldas Bandyopadhyay aka R D Banerji) অ্যালেক্সান্ডার প্রসঙ্গে অধ্যয়ন করে আরও তথ্য জানার প্রতি আগ্রহী হয়ে ১৯১৭ থেকে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত টানা ৬ বছর প্রতি শীতে সিন্ধু ও পাঞ্জাবের বিভিন্ন স্থানে পরীক্ষা করতে গিয়ে মহেঞ্জোদারো সভ্যতার সন্ধান পান। রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহেঞ্জোদারো আবিস্কার করেন ১৯২২ সালে। রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক আবিষ্কৃত এই সভ্যতার কথা যখন দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন ভারতীয় উপমহাদেশ ও এর বাইরের বড়ো বড়ো পণ্ডিত ও গবেষক এ নিয়ে গভীর অনুসন্ধানে কোমর বেঁধে নেমে পড়েন। আর এসবের মাধ্যমে যেমন মহেঞ্জোদারো নিয়ে নতুন নতুন ধারণার জন্ম হয়, তেমনই এ নিয়ে বিতর্কও হয় প্রচুর।

মহেঞ্জোদারো নিয়ে নানা জনের নানা মত থাকলেও, প্রত্যেকেই অন্তত সন্দেহাতীতভাবে একমত হয়েছেন যে, মহেঞ্জোদারোর অধিবাসীরা কেবল গোষ্ঠীবদ্ধ হয়েই বসবাস করতেন না; তাদের ছিল একটি সুন্দর, সুপরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খল নগর জীবন। মহেঞ্জোদারো আবিষ্কারের বহু আগে হরপ্পা আবিষ্কার হলেও দিকে দিকে মহেঞ্জোদারোর গৌরব ছড়িয়ে পড়ে হরপ্পার আগে।

মহেঞ্জোদারোর নৃ-গোষ্ঠী

মহঞ্জেদারোতে যারা বসবাস করত তারা নির্দিষ্ট কোনো জাতি বা নৃ-গোষ্ঠীর ছিল না। মহেঞ্জোদারো সভ্যতার নাগরিকরা ছিল বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর সদস্য, এর প্রমাণ মেলে এখান থেকে উদ্ধার করা অনেকগুলো কঙ্কাল পরীক্ষা করার মাধ্যমে।

মহেঞ্জোদারো এলাকায় উদ্ধারকৃত কঙ্কালগুলো যে সব নৃ-গোষ্ঠীর বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে সেগুলো হলো- আদি অস্ট্রেলিয়, ককেশিয়, আলগায়, ভূমধ্যসাগরীয়, মঙ্গোলীয়, শ্রেণিভুক্ত। গবেষকরা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত যে, এখানে নেগ্রিটো শ্রেণির মানুষের কঙ্কালের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

মহেঞ্জোদারোর ধর্ম

মহেঞ্জোদারো সভ্যতার মানুষজন কোন ধর্ম অনুসরণ করত বা কিসের পূজা করত সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য উদঘাটন করতে পারেননি গবেষকরা। এ সভ্যতা একটি প্রত্নতাত্বিক সভ্যতা যে কারণে লিখিত উপাদানের সংখ্যা কম। তবুও প্রত্নতাত্ত্বিকরা গবেষণা করে যে সব লিপি পেয়েছেন তা বিভিন্ন প্রাণীচিহ্ন প্রধান, ফলে এতে কী লেখা রয়েছে তা বোঝা সম্ভব হয়নি। আবার এগুলো আদৌ কোনো লিপি কি না, সে নিয়ে দ্বন্ধ রয়েছে। এখানে নানান মূর্তির চিত্রও পাওয়া যায়।

এ সকল চিত্র থেকে প্রত্নতত্ত্ব গবেষকরা অনুমান করছেন যে, মহেঞ্জোদারোর অধিবাসীরা বিভিন্ন ধরনের মূর্তিপূজা করত। মহেঞ্জোদারোতে যে সকল মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে, সে গুলোর মধ্যে নারীমূর্তির প্রাধান্য থাকায় অনেক গবেষক মনে করেন সেখানকার অধিবাসীগণের বেশিরভাগই ‘মাতৃপূজক’ ছিলেন। বিতর্ক আছে এখানেও, যেহেতু ওই নারীমুর্তিগুলো কিছু কিছু ছিল উলঙ্গ। এ কারণে অনেক পণ্ডিত বলছেন কোনো দেবীকে উলঙ্গ করে প্রদর্শন করা যায় না। অবশ্য মূর্তিগুলোর কোনো-কোনোটি উলঙ্গ হওয়ায় সবগুলো মাতৃদেবী নাকি সাধারণ নারী মূর্তি এ বিষয়ে সন্দেহ থেকে যায়। এই মূর্তিগুলো ধর্মের সাথে সম্পর্কিত না হয়ে বিলাসিতার অংশও হতে পারে।

হরপ্পা

হরপ্পা মহেঞ্জোদারো সভ্যতার মতোই ছড়িয়ে ছিল সিন্ধুতে। কৃষিভিত্তিক হরপ্পা সভ্যতা গড়ে উঠেছিল মহেঞ্জোদারোরও আগে।

হরপ্পা সভ্যতা আবিষ্কার

হরপ্পা (Harappa) আবিস্কৃত হয় ১৮২৬ সালে যা স্যার অ্যালেক্সান্ডার কানিংহ্যাম (Sir Alexander Cunningham) ১৮৭২ – ১৮৭৩ সালে প্রথমবারের মতো খনন করেন। পরবর্তীতে, ১৯২০ সালে বৃহৎ আকারে খনন করা হয় রায় বাহাদুর দয়ারাম সাহনির (Rai Bahadur Daya Ram Sahni) নেতৃত্বে। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৬৬ সালে মোহাম্মদ রফিক মুঘল (Mohammed Rafique Mughal) পুনরায় খননকার্য পরিচালনা করেন।

কৃষিভিত্তিক হরপ্পা ধাতুর ঔজ্জ্বল্যও বহন করে

বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই হরপ্পা সভ্যতা ছিল মহেঞ্জোদারোর মতোই। কৃষিকে কেন্দ্র করেই এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল যেহেতু এ ভূমিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হতো। আবহাওয়া আর্দ্র বলেই হরপ্পা কৃষিকেন্দ্রিক হয়। কৃষি কাজকে কেন্দ্র করে হরপ্পা সভ্যতা প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও এ অঞ্চলে বড়ো বড়ো অট্টালিকা এবং পাথর ও ধাতু নির্মিত ভাঙ্কর্যের খোঁজও মেলে। বিশাল বিশাল অট্টালিকা এবং ধাতুনির্মিত ভাস্কর্য হরপ্পার ঔজ্জ্বল্য বহন করে।

হরপ্পা
হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ | HARAPPA.COM

হরপ্পা সভ্যতার নৃ-গোষ্ঠী

মহেঞ্জাদারোর মতোই হরপ্পা আবিষ্কারের থেকে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে এমন বিষগুলোর মধ্যে অন্যতম নৃ-গোষ্ঠী সংক্রান্ত বিতর্ক। হরপ্পার জনগোষ্ঠীও ককেশিয়, আলগায়, ভূমধ্যসাগরীয়, মঙ্গোলীয়, শ্রেণিভুক্ত।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো কি বৈদিক সভ্যতার সদস্যদের সৃষ্টি?

অনেকে মনে করছেন হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতার সৃষ্টি বৈদিকদের হাতে। যারা বিশ্বাস করছেন হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো বৈদিকদের সৃষ্টি তাঁদের যুক্তি হলো বৈদিক সভ্যতা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা কাছাকাছি অঞ্চলের এবং উভয়ই একই অঞ্চল (ভারতীয় উপমহাদেশ) ও একই রকম ভূমিতে অবস্থিত। কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশ হলো এমন একটি জায়গা যেখানে একের সাথে অন্যের, একটির সাথে অন্যটির মিল এবং অমিল থাকতেই পারে। আবার নানা বৈশিষ্ট্য ও বৈচিত্র্যও লক্ষ্যণীয়। তাই পণ্ডিত ও গবেষকরা যতই বলার চেষ্টা করুক যে, বৈদিকদের হাতেই হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সৃষ্টি হয়েছিল, তা কখনোই সাধারণ বিশ্বাসে পরিণত হবে না। তবে তবে এটা মেনে নিতে বাধা নেই যে, হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা ভারতীয়দের সৃষ্টি।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো কতটা উন্নত ছিল?

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে অবস্থিত ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন সভ্যতা হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা দুইটি ছিল খুবই উন্নত, এ কথা এখন আমরা মানছি। কিন্তু এই দুই সভ্যতা সভ্যতা কতটা উন্নত ছিল, সে ব্যাপারে খুব ভালো একটা ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়নি। তবে যে সকল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে তাতে যা প্রতীয়মাণ হয়, এ সভ্যতা আমাদের ধারণার থেকে বেশি উন্নত ছিল। এখানের লোকেরা ছিল বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর, কিন্তু সবাই মিলেমিশেই বসবাস করত। এ হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা ছিল কৃষিনির্ভর। দুই অঞ্চলে খননকার্য চালিয়ে যে সকল নিদর্শন পেয়েছেন গবেষকরা সেসবের মধ্যে রয়েছে গম, যব, মুগ, মসুর, শর্ষে, তুলো, তিল, বাজরা, ধান ইত্যাদি। শষ্য রাখার জন্য পাওয়া গিয়েছে বৃহদায়তন শষ্যভাণ্ডার। এছাড়া এখানে বড়ো বড়ো নর্দমা ও পানি নিষ্কাশনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থারও হদিস পাওয়া গিয়েছে। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোতে ছিল বড়ো বড়ো দালান, শ্রেণিবদ্ধ স্নানাগার ইত্যাদি। প্রশস্ত রাস্তার খোঁজ মিলেছে সেখানে। বড়ো বড়ো দালান যেমন ছিল তেমনই, ছোটো ছোটো বাসগৃহেরও দেখা মিলেছে ভারতের সবচেয়ে পুরোনো এই সভ্যতায়।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতার ধ্বংস কীভাবে?

পৃথিবীতে অনেক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল যে গুলো খুবই উন্নত ছিল কিন্তু নানা কারণে সে গুলো আবার ধ্বংসও হয়ে গিয়েছে সময়ের ব্যবধানে। যে সব কারণে পৃথিবীর অনেক উন্নত সভ্যতা ধ্বংস হয়েছে বা হারিয়ে গেছে তার মধ্যে ছিল বহিঃশত্রুর আক্রমণ ও প্রাকৃতিক কারণ। এখন, হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো কোন কারণে ধ্বংস হয়েছিল, এটাই সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন।

কেউ কেউ যেমন মনে করেণ বৈদিকরা হরপ্পা সভ্যতা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা সৃষ্টি করে, তেমনই আবার একদল লোক ধারণা করছেন বৈদিকদের হাতে হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো ধ্বংস হয়েছে। মহেঞ্জোদারোর মতো নগর বা সভ্যতার ধ্বংস যুদ্ধ জাতীয় ঘটনা বা শত্রুতার কারণে হয়ে থাকতে পারে, এটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এই ধ্বংস আর্যদের হাতে সম্পন্ন হয়েছে এমনটি মনে করেন না গবেষকরা। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর যে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে তাতে ধারণা করা যায় না যে, এই উন্নত দুই সভ্যতার অন্তিমদশার কারণ যুদ্ধ বা রক্তপাত; এ বিষয়ে বেশিরভাগ গবেষক একমত পোষণ করেছেন।

প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণামতে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণেই ধ্বংস হয়।

রাজস্থানের সরোবরে পরিচালিত এক গবেষণায় জানা যায়, আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৫১০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২২৩০ সময়সীমায় পশ্চিম ভারতের জলবায়ু ছিল আর্দ্রতর এবং সে সময় পশ্চিমভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল বেশি যাতে মহেঞ্জোদারোর সুবৃহৎ নগর প্রকার বেশ কয়েকবার বিনষ্ট হয়। এছাড়া ধ্বংস প্রাপ্ত এই সভ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য খনন কার্যে সেখানে এক ধরণের কাদার সন্ধান পাওয়া যায় যা বন্যার ভয়াবহতার কথা প্রমাণ করে। এ থেকে গবেষকরা সন্দেহাতীতভাব একমত হন যে, হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো বন্যার কারণে ধ্বংস হয়।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সম্পর্কে তথ্য আছে এমন কয়েকটি বাংলা বই

সিন্ধু সভ্যতার অন্তর্গত হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো সম্পর্কে আরও জানতে আপনারা যে বউগুলো পড়তে পারেন-

১. প্রাগৈতিহাসিক মোহেন-জো-দড়ো (শ্রীকুঞ্জগোবিন্দ গোস্বামী)

২. প্রাচীন ভারত (এ কে এম শাহনাওয়াজ)

৩. সভ্যতার খোঁজে হরপ্পা (আবদুর রাজ্জাক)

৪. রহস্যে ঘেরা মহেঞ্জোদারো (এনায়েত রাসুল)

৫. বাঙালির নৃতত্ত্ব ও হিন্দু সভ্যতা (ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্য)

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সম্পর্কে জানার ওয়েবসাইট

বর্তমানে অনেক ওয়েবসাইটেই হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সম্পর্কে বহু তথ্য রয়েছে। ব্রিটানিকা (britannica.com) থেকে উইকিপিডিয়া (wikipedia.com), সবখানেই এই সভ্যতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। তবে আমি যে ওয়েবসাইটটি পরিদর্শনের পরামর্শ দেবো তা হলো- harappa.com

এছাড়াও আপনি নিজের মতো করে খুঁজে নিয়েও পড়তে পারেন। এখানে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো নিয়ে আমি যা লিখলাম তা শুধু পাঠকের প্রাথমিক বা তাৎক্ষণিক আগ্রহ মেটানোর জন্য। বিস্তারিত জানতে গেলে আপনার অবশ্যই বিভিন্ন বই ও গবেষণাপত্রের সাহায্য নিতে হবে।

সিন্ধু সভ্যতার মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা নিয়ে আরও পড়ুন

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

মু. মিজানুর রহমান মিজান

মু. মিজানুর রহমান মিজান একজন স্বাধীন শিক্ষামূলক লেখক। তিনি শিক্ষা গবেষণায় বেশ আগ্রহী। যৌথভাবে কিছু গবেষণায়ও অংশ নিয়েছেন।

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

সিন্ধু সভ্যতা: মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কার, নৃ-গোষ্ঠী এবং ধ্বংস

প্রকাশ: ০৫:২৩:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অগাস্ট ২০২১

মহেঞ্জোদার ও হরপ্পা সভ্যতা হলো ভারতবর্ষের এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত সর্বাপেক্ষা প্রাচীন সভ্যতা। পূর্বে অর্থাৎ যখন পর্যন্ত মহেঞ্জোদারোর প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়নি তখন পর্যন্ত বৈদিক সভ্যতাকে ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতা বলে মনে করা হতো। কিন্তু এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে হরপ্পা-মহেঞ্জোদারোর আবিষ্কার। 

মহেঞ্জোদারো 

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা নামক জেলায় মহেঞ্জোদারোর অবস্থিত। মহেঞ্জোদারো নিয়ে পরিচালিত প্রত্নতাত্বিক গবেষণাসমূহ প্রমাণ করে ভারত পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্য দেশগুলোর একটি। সিন্ধু সভ্যতার মহেঞ্জোদারো ছিল মেসোপটেমিয়া, প্রাচীন মিশর এবং ক্রিটের সমসাময়িক।

মহেঞ্জোদারো ইংরেজিতে তিন ভাবে লেখা হয়- Mohenjo-daro, Mohenjodaro অথবা Moenjodaro। আবার বাংলাতে কে ‘মহেঞ্জোদাড়ো’ এবং ‘মোহেন-জো-দড়ো’ ও লেখা হয়ে থাকে। মহেঞ্জোদারো অর্থ হলো মৃতস্তুপ বা মৃতের টিলা (the Mound of the Dead) ।

মহেঞ্জোদারো আবিষ্কার

পশ্চিম ভারতের তৎকালীন সুপারিন্টেন্ডেট রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় (Rakhaldas Bandyopadhyay aka R D Banerji) অ্যালেক্সান্ডার প্রসঙ্গে অধ্যয়ন করে আরও তথ্য জানার প্রতি আগ্রহী হয়ে ১৯১৭ থেকে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত টানা ৬ বছর প্রতি শীতে সিন্ধু ও পাঞ্জাবের বিভিন্ন স্থানে পরীক্ষা করতে গিয়ে মহেঞ্জোদারো সভ্যতার সন্ধান পান। রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহেঞ্জোদারো আবিস্কার করেন ১৯২২ সালে। রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক আবিষ্কৃত এই সভ্যতার কথা যখন দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন ভারতীয় উপমহাদেশ ও এর বাইরের বড়ো বড়ো পণ্ডিত ও গবেষক এ নিয়ে গভীর অনুসন্ধানে কোমর বেঁধে নেমে পড়েন। আর এসবের মাধ্যমে যেমন মহেঞ্জোদারো নিয়ে নতুন নতুন ধারণার জন্ম হয়, তেমনই এ নিয়ে বিতর্কও হয় প্রচুর।

মহেঞ্জোদারো নিয়ে নানা জনের নানা মত থাকলেও, প্রত্যেকেই অন্তত সন্দেহাতীতভাবে একমত হয়েছেন যে, মহেঞ্জোদারোর অধিবাসীরা কেবল গোষ্ঠীবদ্ধ হয়েই বসবাস করতেন না; তাদের ছিল একটি সুন্দর, সুপরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খল নগর জীবন। মহেঞ্জোদারো আবিষ্কারের বহু আগে হরপ্পা আবিষ্কার হলেও দিকে দিকে মহেঞ্জোদারোর গৌরব ছড়িয়ে পড়ে হরপ্পার আগে।

মহেঞ্জোদারোর নৃ-গোষ্ঠী

মহঞ্জেদারোতে যারা বসবাস করত তারা নির্দিষ্ট কোনো জাতি বা নৃ-গোষ্ঠীর ছিল না। মহেঞ্জোদারো সভ্যতার নাগরিকরা ছিল বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর সদস্য, এর প্রমাণ মেলে এখান থেকে উদ্ধার করা অনেকগুলো কঙ্কাল পরীক্ষা করার মাধ্যমে।

মহেঞ্জোদারো এলাকায় উদ্ধারকৃত কঙ্কালগুলো যে সব নৃ-গোষ্ঠীর বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে সেগুলো হলো- আদি অস্ট্রেলিয়, ককেশিয়, আলগায়, ভূমধ্যসাগরীয়, মঙ্গোলীয়, শ্রেণিভুক্ত। গবেষকরা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত যে, এখানে নেগ্রিটো শ্রেণির মানুষের কঙ্কালের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

মহেঞ্জোদারোর ধর্ম

মহেঞ্জোদারো সভ্যতার মানুষজন কোন ধর্ম অনুসরণ করত বা কিসের পূজা করত সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য উদঘাটন করতে পারেননি গবেষকরা। এ সভ্যতা একটি প্রত্নতাত্বিক সভ্যতা যে কারণে লিখিত উপাদানের সংখ্যা কম। তবুও প্রত্নতাত্ত্বিকরা গবেষণা করে যে সব লিপি পেয়েছেন তা বিভিন্ন প্রাণীচিহ্ন প্রধান, ফলে এতে কী লেখা রয়েছে তা বোঝা সম্ভব হয়নি। আবার এগুলো আদৌ কোনো লিপি কি না, সে নিয়ে দ্বন্ধ রয়েছে। এখানে নানান মূর্তির চিত্রও পাওয়া যায়।

এ সকল চিত্র থেকে প্রত্নতত্ত্ব গবেষকরা অনুমান করছেন যে, মহেঞ্জোদারোর অধিবাসীরা বিভিন্ন ধরনের মূর্তিপূজা করত। মহেঞ্জোদারোতে যে সকল মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে, সে গুলোর মধ্যে নারীমূর্তির প্রাধান্য থাকায় অনেক গবেষক মনে করেন সেখানকার অধিবাসীগণের বেশিরভাগই ‘মাতৃপূজক’ ছিলেন। বিতর্ক আছে এখানেও, যেহেতু ওই নারীমুর্তিগুলো কিছু কিছু ছিল উলঙ্গ। এ কারণে অনেক পণ্ডিত বলছেন কোনো দেবীকে উলঙ্গ করে প্রদর্শন করা যায় না। অবশ্য মূর্তিগুলোর কোনো-কোনোটি উলঙ্গ হওয়ায় সবগুলো মাতৃদেবী নাকি সাধারণ নারী মূর্তি এ বিষয়ে সন্দেহ থেকে যায়। এই মূর্তিগুলো ধর্মের সাথে সম্পর্কিত না হয়ে বিলাসিতার অংশও হতে পারে।

হরপ্পা

হরপ্পা মহেঞ্জোদারো সভ্যতার মতোই ছড়িয়ে ছিল সিন্ধুতে। কৃষিভিত্তিক হরপ্পা সভ্যতা গড়ে উঠেছিল মহেঞ্জোদারোরও আগে।

হরপ্পা সভ্যতা আবিষ্কার

হরপ্পা (Harappa) আবিস্কৃত হয় ১৮২৬ সালে যা স্যার অ্যালেক্সান্ডার কানিংহ্যাম (Sir Alexander Cunningham) ১৮৭২ – ১৮৭৩ সালে প্রথমবারের মতো খনন করেন। পরবর্তীতে, ১৯২০ সালে বৃহৎ আকারে খনন করা হয় রায় বাহাদুর দয়ারাম সাহনির (Rai Bahadur Daya Ram Sahni) নেতৃত্বে। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৬৬ সালে মোহাম্মদ রফিক মুঘল (Mohammed Rafique Mughal) পুনরায় খননকার্য পরিচালনা করেন।

কৃষিভিত্তিক হরপ্পা ধাতুর ঔজ্জ্বল্যও বহন করে

বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই হরপ্পা সভ্যতা ছিল মহেঞ্জোদারোর মতোই। কৃষিকে কেন্দ্র করেই এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল যেহেতু এ ভূমিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হতো। আবহাওয়া আর্দ্র বলেই হরপ্পা কৃষিকেন্দ্রিক হয়। কৃষি কাজকে কেন্দ্র করে হরপ্পা সভ্যতা প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও এ অঞ্চলে বড়ো বড়ো অট্টালিকা এবং পাথর ও ধাতু নির্মিত ভাঙ্কর্যের খোঁজও মেলে। বিশাল বিশাল অট্টালিকা এবং ধাতুনির্মিত ভাস্কর্য হরপ্পার ঔজ্জ্বল্য বহন করে।

হরপ্পা
হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ | HARAPPA.COM

হরপ্পা সভ্যতার নৃ-গোষ্ঠী

মহেঞ্জাদারোর মতোই হরপ্পা আবিষ্কারের থেকে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে এমন বিষগুলোর মধ্যে অন্যতম নৃ-গোষ্ঠী সংক্রান্ত বিতর্ক। হরপ্পার জনগোষ্ঠীও ককেশিয়, আলগায়, ভূমধ্যসাগরীয়, মঙ্গোলীয়, শ্রেণিভুক্ত।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো কি বৈদিক সভ্যতার সদস্যদের সৃষ্টি?

অনেকে মনে করছেন হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতার সৃষ্টি বৈদিকদের হাতে। যারা বিশ্বাস করছেন হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো বৈদিকদের সৃষ্টি তাঁদের যুক্তি হলো বৈদিক সভ্যতা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা কাছাকাছি অঞ্চলের এবং উভয়ই একই অঞ্চল (ভারতীয় উপমহাদেশ) ও একই রকম ভূমিতে অবস্থিত। কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশ হলো এমন একটি জায়গা যেখানে একের সাথে অন্যের, একটির সাথে অন্যটির মিল এবং অমিল থাকতেই পারে। আবার নানা বৈশিষ্ট্য ও বৈচিত্র্যও লক্ষ্যণীয়। তাই পণ্ডিত ও গবেষকরা যতই বলার চেষ্টা করুক যে, বৈদিকদের হাতেই হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সৃষ্টি হয়েছিল, তা কখনোই সাধারণ বিশ্বাসে পরিণত হবে না। তবে তবে এটা মেনে নিতে বাধা নেই যে, হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা ভারতীয়দের সৃষ্টি।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো কতটা উন্নত ছিল?

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে অবস্থিত ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন সভ্যতা হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা দুইটি ছিল খুবই উন্নত, এ কথা এখন আমরা মানছি। কিন্তু এই দুই সভ্যতা সভ্যতা কতটা উন্নত ছিল, সে ব্যাপারে খুব ভালো একটা ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়নি। তবে যে সকল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে তাতে যা প্রতীয়মাণ হয়, এ সভ্যতা আমাদের ধারণার থেকে বেশি উন্নত ছিল। এখানের লোকেরা ছিল বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর, কিন্তু সবাই মিলেমিশেই বসবাস করত। এ হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা ছিল কৃষিনির্ভর। দুই অঞ্চলে খননকার্য চালিয়ে যে সকল নিদর্শন পেয়েছেন গবেষকরা সেসবের মধ্যে রয়েছে গম, যব, মুগ, মসুর, শর্ষে, তুলো, তিল, বাজরা, ধান ইত্যাদি। শষ্য রাখার জন্য পাওয়া গিয়েছে বৃহদায়তন শষ্যভাণ্ডার। এছাড়া এখানে বড়ো বড়ো নর্দমা ও পানি নিষ্কাশনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থারও হদিস পাওয়া গিয়েছে। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোতে ছিল বড়ো বড়ো দালান, শ্রেণিবদ্ধ স্নানাগার ইত্যাদি। প্রশস্ত রাস্তার খোঁজ মিলেছে সেখানে। বড়ো বড়ো দালান যেমন ছিল তেমনই, ছোটো ছোটো বাসগৃহেরও দেখা মিলেছে ভারতের সবচেয়ে পুরোনো এই সভ্যতায়।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতার ধ্বংস কীভাবে?

পৃথিবীতে অনেক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল যে গুলো খুবই উন্নত ছিল কিন্তু নানা কারণে সে গুলো আবার ধ্বংসও হয়ে গিয়েছে সময়ের ব্যবধানে। যে সব কারণে পৃথিবীর অনেক উন্নত সভ্যতা ধ্বংস হয়েছে বা হারিয়ে গেছে তার মধ্যে ছিল বহিঃশত্রুর আক্রমণ ও প্রাকৃতিক কারণ। এখন, হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো কোন কারণে ধ্বংস হয়েছিল, এটাই সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন।

কেউ কেউ যেমন মনে করেণ বৈদিকরা হরপ্পা সভ্যতা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা সৃষ্টি করে, তেমনই আবার একদল লোক ধারণা করছেন বৈদিকদের হাতে হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো ধ্বংস হয়েছে। মহেঞ্জোদারোর মতো নগর বা সভ্যতার ধ্বংস যুদ্ধ জাতীয় ঘটনা বা শত্রুতার কারণে হয়ে থাকতে পারে, এটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এই ধ্বংস আর্যদের হাতে সম্পন্ন হয়েছে এমনটি মনে করেন না গবেষকরা। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর যে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে তাতে ধারণা করা যায় না যে, এই উন্নত দুই সভ্যতার অন্তিমদশার কারণ যুদ্ধ বা রক্তপাত; এ বিষয়ে বেশিরভাগ গবেষক একমত পোষণ করেছেন।

প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণামতে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণেই ধ্বংস হয়।

রাজস্থানের সরোবরে পরিচালিত এক গবেষণায় জানা যায়, আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৫১০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২২৩০ সময়সীমায় পশ্চিম ভারতের জলবায়ু ছিল আর্দ্রতর এবং সে সময় পশ্চিমভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল বেশি যাতে মহেঞ্জোদারোর সুবৃহৎ নগর প্রকার বেশ কয়েকবার বিনষ্ট হয়। এছাড়া ধ্বংস প্রাপ্ত এই সভ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য খনন কার্যে সেখানে এক ধরণের কাদার সন্ধান পাওয়া যায় যা বন্যার ভয়াবহতার কথা প্রমাণ করে। এ থেকে গবেষকরা সন্দেহাতীতভাব একমত হন যে, হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো বন্যার কারণে ধ্বংস হয়।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সম্পর্কে তথ্য আছে এমন কয়েকটি বাংলা বই

সিন্ধু সভ্যতার অন্তর্গত হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো সম্পর্কে আরও জানতে আপনারা যে বউগুলো পড়তে পারেন-

১. প্রাগৈতিহাসিক মোহেন-জো-দড়ো (শ্রীকুঞ্জগোবিন্দ গোস্বামী)

২. প্রাচীন ভারত (এ কে এম শাহনাওয়াজ)

৩. সভ্যতার খোঁজে হরপ্পা (আবদুর রাজ্জাক)

৪. রহস্যে ঘেরা মহেঞ্জোদারো (এনায়েত রাসুল)

৫. বাঙালির নৃতত্ত্ব ও হিন্দু সভ্যতা (ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্য)

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সম্পর্কে জানার ওয়েবসাইট

বর্তমানে অনেক ওয়েবসাইটেই হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সম্পর্কে বহু তথ্য রয়েছে। ব্রিটানিকা (britannica.com) থেকে উইকিপিডিয়া (wikipedia.com), সবখানেই এই সভ্যতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। তবে আমি যে ওয়েবসাইটটি পরিদর্শনের পরামর্শ দেবো তা হলো- harappa.com

এছাড়াও আপনি নিজের মতো করে খুঁজে নিয়েও পড়তে পারেন। এখানে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো নিয়ে আমি যা লিখলাম তা শুধু পাঠকের প্রাথমিক বা তাৎক্ষণিক আগ্রহ মেটানোর জন্য। বিস্তারিত জানতে গেলে আপনার অবশ্যই বিভিন্ন বই ও গবেষণাপত্রের সাহায্য নিতে হবে।

সিন্ধু সভ্যতার মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা নিয়ে আরও পড়ুন