০৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

জীবনী: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

বিশ্লেষণ সংকলন টিম
  • প্রকাশ: ০৪:০৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৭৬৬ বার পড়া হয়েছে

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে তার অসীম অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে তার অসীম অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সাধারণত প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে গীতার ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে, সাহিত্য সমালোচক হিসাবেও তিনি বিশেষ খ্যাতিমান। তিনি জীবিকাসূত্রে ব্রিটিশ রাজের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষার আদি সাহিত্যপত্র বঙ্গদর্শনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছদ্মনাম হিসেবে কমলাকান্ত নামটি বেছে নিয়েছিলেন। তাকে বাংলা উপন‍্যাসের জনক বলা হয়। এছাড়াও তিনি বাংলা সাহিত্যের সাহিত্য সম্রাট হিসেবে পরিচিত।

বঙ্কিমচন্দ্র রচিত আনন্দমঠ (১৮৮২) উপন্যাসের কবিতা বন্দে মাতরম ১৯৩৭ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক ভারতের জাতীয় স্তোত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

এক নজরে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

নামবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (Bankim Chandra Chatterjee)
জন্ম২৬ জুন ১৮৩৮ অর্থাৎ ১৩ আষাঢ় ১২৪৫কাঁঠালপাড়া গ্রাম, নৈহাটি, কলকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৮ এপ্রিল ১৮৯৪ (বয়স ৫৫)কলকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
পেশাসরকারি কর্মকর্তাঔপন্যাসিকপ্রাবন্ধিকসাংবাদিক
সময়কালঊনবিংশ শতাব্দী
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিআনন্দমঠ, দুর্গেশনন্দিনী, রাজসিংহ
দাম্পত্যসঙ্গীরাজলক্ষ্মী দেবী

জীবনী

জন্ম ও বংশপরিচয়

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হয় বর্তমান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নৈহাটি শহরের নিকটস্থ কাঁঠালপাড়া গ্রামে। তারিখ ২৬ জুন, ১৮৩৮ অর্থাৎ ১৩ আষাঢ় ১২৪৫। চট্টোপাধ্যায়দের আদিনিবাস ছিল হুগলি জেলার দেশমুখো গ্রামে। বঙ্কিমচন্দ্রের পূর্বপুরুষ রামজীবন চট্টোপাধ্যায় কাঁঠালপাড়ার রঘুদেব ঘোষালের কন্যাকে বিবাহ করেন৷ রামজীবনের পুত্র তথা বঙ্কিমচন্দ্রের প্রপিতামহ রামহরি চট্টোপাধ্যায় মাতামহের সম্পত্তি পেয়ে কাঁঠালপাড়ায় আসেন এবং সেখানেই বসবাস শুরু করেন। রামহরির পৌত্র যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের তৃতীয় পুত্র বঙ্কিমচন্দ্র,মাতা দুর্গাসুন্দরী দেবী,বঙ্কিমের পূর্বে তার আরও দুই পুত্রের জন্ম হয় – শ্যামাচরণ ও সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বঙ্কিমের জন্মকালে তিনি সদ্য অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ডেপুটি কালেক্টর পদে উন্নীত হয়েছিলেন।

শিক্ষা

জন্মের পর ছয় বছর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কাঁঠালপাড়াতেই অতিবাহিত করেন। পাঁচ বছর বয়সে কুল-পুরোহিত বিশ্বম্ভর ভট্টাচার্যের কাছে বঙ্কিমচন্দ্রের হাতেখড়ি হয়। শিশু বয়সেই তার অসামান্য মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। বঙ্কিমের কনিষ্ঠ সহোদর পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, “শুনিয়াছি বঙ্কিমচন্দ্র একদিনে বাংলা বর্ণমালা আয়ত্ত করিয়াছিলেন।” যদিও গ্রামের পাঠশালায় বঙ্কিম কোনওদিনই যান নি। পাঠশালার গুরুমশাই রামপ্রাণ সরকার বাড়িতে তার গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হন। বঙ্কিমচন্দ্রের রচনা থেকে মনে হয় তিনি রামপ্রাণের শিক্ষা থেকে বিশেষ উপকৃত হন নি। তিনি লিখেছেন, “সৌভাগ্যক্রমে আমরা আট দশ মাসে এই মহাত্মার হস্ত হইতে মুক্তিলাভ করিয়া মেদিনীপুর গেলাম।” 

১৮৪৪ সালে বঙ্কিমচন্দ্র পিতার কর্মস্থল মেদিনীপুরে আনীত হলে, সেখানেই তার প্রকৃত শিক্ষার সূচনা হয়। মেদিনীপুরের ইংরেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনৈক এফ টিডের পরামর্শে যাদবচন্দ্র শিশু বঙ্কিমকে তার স্কুলে ভর্তি করে দেন। এখানেও বঙ্কিম অল্পকালের মধ্যেই নিজ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হন। পূর্ণচন্দ্রের রচনা থেকে জানা যায়, বার্ষিক পরীক্ষার ফলে সন্তুষ্ট হয়ে টিড সাহেব বঙ্কিমকে ডবল প্রমোশন দিতে উদ্যত হলে যাদবচন্দ্রের হস্তক্ষেপে তিনি নিরস্ত হন। ১৮৪৭ সালে টিড ঢাকায় বদলি হয়ে গেলে সিনক্লেয়ার তার স্থলাভিষিক্ত হন; তার কাছেও বঙ্কিম প্রায় দেড় বছর ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করেন।

১৮৪৯ সালে বঙ্কিমচন্দ্র পুনরায় কাঁঠালপাড়ায় ফিরে আসেন। এইসময় কাঁঠালপাড়ার শ্রীরাম ন্যায়বাগীশের কাছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা ও সংস্কৃতের পাঠ নেন। বঙ্কিমচন্দ্র খুব ভালো আবৃত্তিকারও ছিলেন। সংবাদ প্রভাকরসংবাদ সাধুরঞ্জন নামক সংবাদপত্রে প্রকাশিত বহু কবিতা তিনি এই বয়সেই কণ্ঠস্থ করে ফেলেন। ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর বিরচিত বিদ্যাসুন্দর কাব্য থেকে বিদ্যার রূপবর্ণন ও জয়দেব প্রণীত গীতগোবিন্দম্ কাব্য থেকে ধীরে সমীরে যমুনাতীরে কবিতাদুটি তিনি প্রায়শই আবৃত্তি করতেন। এছাড়াও পণ্ডিত হলধর তর্কচূড়ামণির কাছে এই সময় তিনি মহাভারত শ্রবণ করতেন। হলধরই তাকে শিক্ষা দেন – “শ্রীকৃষ্ণ আদর্শ পুরুষ ও আদর্শ চরিত্র”। এই শিক্ষা তার পরবর্তী জীবনে রচিত নানা রচনাতে প্রতিফলিত হয়েছিল।

কিছুকাল পরে ১৮৪৯ সালে হুগলি কলেজে (অধুনা হুগলী মহসিন কলেজ) ভর্তি হন। এখানে তিনি সাত বছর পড়াশোনা করেন। হুগলি কলেজ পড়াকালীন ১৮৫৩ সালে জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে মাসিক আট টাকা বৃত্তি লাভ করেন। এই বছরেই সংবাদ প্রভাকরে কবিতা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে কুড়ি টাকা পুরস্কার লাভ করেন। হুগলি কলেজ অধ্যয়নকালেই বঙ্কিমচন্দ্র কবিবর ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সংবাদ প্রভাকর ও সংবাদ সাধুরঞ্জনে গদ্য-পদ্য রচনা আরম্ভ করেন। পরবর্তীকালে তার বহু রচনা এই দুই কাগজে প্রকাশিত হয়। হুগলি কলেজ ১৮৫৬ সালে সিনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় সব বিষয়ে বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করে তিনি দুই বছরের জন্য কুড়ি টাকা বৃত্তি লাভ করেন। এই বছরই তিনি হুগলি কলেজ ছেড়ে আইন পড়বার জন্য কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৮৫৭ সালে জানুয়ারী মাসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এন্ট্রান্স বা প্রবেশিকা পরীক্ষা প্রবর্তন করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজের আইন বিভাগ থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরের বছর ১৮৫৯ সালে প্রথমবারের মতো বি.এ. পরীক্ষা নেওয়া হয়। মোট দশজন ছাত্র প্রথমবারে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। উত্তীর্ণ হয়েছিলেন কেবলমাত্র বঙ্কিমচন্দ্র ও যদুনাথ বসু।

তার বাবার মতো তিনিও সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্‌টার পদে। সারা জীবন তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যান। স্বীকৃতি স্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাকে দুটি খেতাবে ভূষিত করে – ১৮৯১ সালে রায় বাহাদুর খেতাব এবং ১৮৯৪ সালে কম্প্যানিয়ন অফ দ্য মোস্ট এমিনেন্ট অর্ডার অফ দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার খেতাব। তবে সরকারি কর্মকর্তা নয় বরং লেখক এবং বাঙলা তথা ভারতের নবজাগরণের অন‍্যতম মুখ হিসেবেই তিনি অধিক প্রখ্যাত।

বিবাহ

বঙ্কিমচন্দ্রের চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম বিয়ে হয় ১৮৪৯ সালে। তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ১১ বছর। নারায়নপুর গ্রামের এক পঞ্চমবর্ষীয়া বালিকার সাথে তার বিয়ে হয়। কিন্তু চাকুরি জীবনের শুরুতে যশোর অবস্থান কালে ১৮৫৯ সালে এ পত্নীর মৃত্যু হয়। অতঃপর ১৮৬০ সালের জুন মাসে হালি শহরের বিখ্যাত চৌধুরী বংশের কন্যা রাজলক্ষী দেবীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

কর্মজীবন

তার কর্মজীবনের সংক্ষেপিত তালিকা:

  • যশোর – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – যোগদানের তারিখ: ১৮৫৮, ৭ আগস্ট
  • নেগুয়া (মেদিনীপুর) – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – যোগদানের সাল: ১৮৬০, ৯ ফেব্রুয়ারি
  • খুলনা – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – যোগদানের সাল: ১৮৬০, ৯ নভেম্বর
  • বারুইপুর (২৪ পরগনা) – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – যোগদানের সাল: ১৮৬৪, ৫ মার্চ
  • মুর্শিদাবাদ – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – উচ্চতর কার্যভার গ্রহণের তারিখ: ১৮৬৯, ১৫ ডিসেম্বর।
  • মুর্শিদাবাদ – কালেক্টর – পদোন্নতির তারিখ: ১৮৭১, ১০ জুন।
  • কলিকাতা – বেঙ্গল গভর্নমেন্টের অ্যাসিটেন্ট সেক্রেটারি – যোগদানের তারিখ: ১৮৮১, ৪ সেপ্টেম্বর।
  • আলিপুর – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – ১৮৮২, ২৬ জানুয়ারি।
  • জাজপুর (কটক) – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – ১৮৮৩, ৮ আগস্ট।
  • হাওড়া – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – ১৮৮৩, ১৪ ফেব্রুয়ারি।
  • ঝিনাইদহ – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – ১৮৮৫, ১ জুলাই।[১৪]
  • অবসরগ্রহণের তারিখ: ১৮৯১, ১৪ সেপ্টেম্বর।

মৃত্যু

শেষ জীবনে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য বিশেষ ভালো ছিল না। ১৮৯৪ সালের মার্চ মাসে তার বহুমূত্র রোগ বেশ বেড়ে যায়। এই রোগেই অবশেষে তার মৃত্যু হয়, এপ্রিল ৮, ১৮৯৪ (বাংলা ২৬ চৈত্র ১৩০০ সাল)।

বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান

বাংলা ভাষার প্রথম সার্থক ঔপন্যাসিক ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। দুর্গেশনন্দিনী ছিলো প্রথম সার্থক বাংলা উপন্যাস যেটা বাংলা সাহিত্যের দ্বার উন্মোচন করেছিলো। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মোট ১৫টি উপন্যাস লিখেছিলেন এবং এর মধ্যে একটি ইংরেজি ভাষার উপন্যাস ছিলো। বঙ্কিমই বাংলা ভাষাকে প্রথম সত্যিকারের মর্যাদা দিয়েছিলেন। তার রচনা ‘বঙ্কিমী শৈলী’ বা ‘বঙ্কিমী রীতি’ নামে পরিচিত।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যচর্চা শুরু হয় ১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে, “সংবাদ প্রভাকর” পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে। বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক উপন্যাস দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫) তাঁর লেখা। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ: ললিতা তথা মানস (১৮৫৬)।

উপন্যাস

উপন্যাসপ্রকাশকালবিস্তারিত তথ্য
Rajmohans Wife১৮৬৪বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস। এটি ১৮৬৪ সালে ‘Indian Field’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
দুর্গেশনন্দিনীমার্চ, ১৮৬৫ঐতিহাসিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম বাংলা উপন্যাস। রচনাকাল ১৮৬২-৬৪। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে উপন্যাসের তেরটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ মুদ্রিত হয় ১৮৯৩ সালে।
কপালকুণ্ডলা১৮৬৬কাব্যিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের দ্বিতীয় উপন্যাস। মেদিনীপুর জেলার নেগুঁয়া মহকুমায় (বর্তমানে কাঁথি মহকুমা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা) অবস্থানকালে অর্জিত কিছু অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই উপন্যাস রচনা করেন বঙ্কিমচন্দ্র। সমালোচক মহলে উচ্চ-প্রশংসিত হয় এই উপন্যাস।
মৃণালিনী১৮৬৯ঐতিহাসিক উপন্যাস। খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর পটভূমিতে রচিত।
বিষবৃক্ষ১৮৭৩সামাজিক উপন্যাস। বঙ্গদর্শন পত্রিকার প্রথম সংখ্যা (বৈশাখ, ১২৭৯) থেকে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। মোট সংস্করণের সংখ্যা আট। সর্বশেষ সংস্করণ মুদ্রিত হয় ১৮৯২ সালে।
ইন্দিরা১৮৭৩অনু-উপন্যাস। বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৭৯) ছোটোগল্প আকারে প্রকাশিত হয়। ১৮৭৩ সালে ৪৫ পৃষ্ঠার ক্ষুদ্র গ্রন্থাকারে প্রকাশিত। ১৮৯৩ সালে ১৭৭ পৃষ্ঠার একটি অনু-উপন্যাসের আকারে এই গ্রন্থের পঞ্চম সংস্করণ প্রকাশিত হয়।
যুগলাঙ্গুরীয়১৮৭৪ঐতিহাসিক অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (বৈশাখ, ১২৮০)। প্রথম সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৬। ১৮৯৩ সালে পঞ্চম তথা সর্বশেষ সংস্করণে পৃষ্ঠা সংখ্যা হয় ৫০।
চন্দ্রশেখর১৮৭৫রোম্যান্সধর্মী উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (শ্রাবণ, ১২৮০ – ভাদ্র, ১২৮১)। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৮৯ সালে মুদ্রিত।
রাধারাণী১৮৮৬অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (কার্তিক-অগ্রহায়ণ, ১২৮২)। ১৮৭৭ ও ১৮৮১ সালে উপন্যাস – অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপন্যাস সংগ্রহ গ্রন্থে সংকলিত হয়। ১৮৮৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশের সময় পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৮। ১৮৯৩ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয় ৬৫।
রজনী১৮৭৭রোম্যান্সধর্মী উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (১২৮১-৮২)। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৮৭ সালে মুদ্রিত।
কৃষ্ণকান্তের উইল১৮৭৮সামাজিক উপন্যাস। ১৮৮২ ও ১৮৮৪ সালে বঙ্গদর্শন পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে চারটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৯২ সালে মুদ্রিত।
রাজসিংহ১৮৮২ঐতিহাসিক উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৮৪ – ভাদ্র, ১২৮৫)। পত্রিকায় অসমাপ্ত উপন্যাসটি সমাপ্ত করে ১৮৮২ সালে ৮৩ পৃষ্ঠার প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয় ৯০। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা হয় ৪৩৪।
আনন্দমঠ১৮৮২বঙ্কিমচন্দ্রের প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৮৭ – জ্যৈষ্ঠ, ১২৮৯)।-১৮৯২ সালে মুদ্রিত। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় স্তোত্র বন্দেমাতরম্এই উপন্যাস থেকে গৃহীত।। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পটভূমিকায় সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ছায়া অবলম্বনে রচিত। এই উপন্যাসে লেখকের দেশপ্রেম ফুটে উঠেছে।
দেবী চৌধুরাণী১৮৮৪ঐতিহাসিক উপন্যাস। বিভিন্ন সময়ে বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে ছয়টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৯১ সালে মুদ্রিত।
সীতারামমার্চ, ১৮৮৭ঐতিহাসিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের শেষ উপন্যাস। প্রচার পত্রিকায় (শ্রাবণ, ১২৯১ – মাঘ, ১২৯৩; মাঝে কয়েকমাসের বিরতি সহ) প্রকাশিত হয়। প্রথম সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৪১৯। তৃতীয় ও শেষ সংস্করণ বঙ্কিমচন্দ্রের জীবদ্দশায় মুদ্রিত হলেও প্রকাশিত হয় তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পরে, ১৮৯৪ সালের মে মাসে।

প্রবন্ধ

প্রবন্ধপ্রকাশকালবিস্তারিত তথ্য
লোকরহস্য১৮৭৪লোকরহস্য গ্রন্থের প্রবন্ধগুলো হলো: ব্যাঘ্রচার্য বৃহল্লাঙ্গুল, ইংরাজস্তোত্র, বাবু, গর্দভ, দাম্পত্য দণ্ডবিধির আইন, বসন্ত এবং বিরহ, সুবর্ণগোলক, রামায়ণের সমালোচন, বৰ্ষ সমালোচন, কোন ‘স্পেশিয়ালের’ পত্র, BRANSONISM, হনুমদ্বাবুসংবাদ, গ্রাম্য কথা(প্রথম সংখ্যা, দ্বিতীয় সংখ্যা), বাঙ্গালা সাহিত্যের আদর, New Year’s Day.
বিজ্ঞান রহস্য১৮৭৫
কমলাকান্তের দপ্তর১৮৭৫
বিবিধ সমালোচনা১৮৭৬
সাম্য১৮৭৯
কৃষ্ণচরিত্র১৮৮৬
বিবিধ প্রবন্ধ১ম খন্ড-১৮৮৭, ২য় খন্ড-১৮৯২
ধর্মতত্ত্ব অনুশীলন১৮৮৮
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা১৯০২

সম্পাদনা

  • বঙ্গদর্শন পত্রিকা (১৮৭২-১৮৭৬)

তথ্যসূত্র

  • “বাংলা সাহিত্যের সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়”। ইত্তেফাক
  • সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান – প্রথম খণ্ড – সংশোধিত পঞ্চম সংস্করন – সাহিত্য সংসদ
  • মাসিক কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, মে ২০১১, পৃ. ৩৩; পরিদর্শনের তারিখ: ২৬ মে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ
  • গৌতম চক্রবর্তী (২৭ ডিসেম্বর ২০১১)। “একদিন দেশ মাতবে এই গানে…বলেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ‘বন্দে মাতরম্’-এর ইতিহাসটিও বিচিত্র”। আনন্দবাজার পত্রিকা
  • “সম্পাদক সমীপেষু: বন্দে মাতরম”। আনন্দবাজার পত্রিকা। ২৩ জুন ২০১৮।
  • বঙ্কিম-জীবনী, শচীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, পুস্তক বিপণি, কলিকাতা, ১৯৫২, পৃ. ৯
  • প্রবন্ধ বঙ্কিমচন্দ্রের বাল্যশিক্ষা, পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিম-প্রসঙ্গ গ্রন্থ, সুরেশচন্দ্র সমাজপতি সম্পাদিত
  • বঙ্কিমচন্দ্রজীবনী, অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ১৯৯১, পৃ. ২৫ থেকে উদ্ধৃত
  • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (জীবনকথা), বঙ্কিম রচনাবলী, প্রথম খণ্ড, যোগেশচন্দ্র বাগল সম্পাদিত, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, পৃষ্ঠা নয়
  • সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী, বঙ্কিম রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, যোগেশচন্দ্র বাগল সম্পাদিত, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, পৃষ্ঠা ৭৯০
  • বঙ্কিমচন্দ্রজীবনী, অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ১৯৯১, পৃ. ২৫
  • প্রবন্ধ বঙ্কিমচন্দ্রের বাল্যশিক্ষা, পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিম-প্রসঙ্গ গ্রন্থ, সুরেশচন্দ্র সমাজপতি সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ৩৩-৪১
  • https://wbchse.nic.in/html/bankim_chandra.html
  • “নবগঙ্গা তীরে বঙ্কিম স্মৃতি”। ইত্তেফাক। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
  • শনোলী দেবনাথ (২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। “কুস্তি লড়বে কপালকুণ্ডলা! বঙ্কিমী উপন্যাসের অসীম নয়-ছয়”। দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

জীবনী: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

প্রকাশ: ০৪:০৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে তার অসীম অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সাধারণত প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে গীতার ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে, সাহিত্য সমালোচক হিসাবেও তিনি বিশেষ খ্যাতিমান। তিনি জীবিকাসূত্রে ব্রিটিশ রাজের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষার আদি সাহিত্যপত্র বঙ্গদর্শনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছদ্মনাম হিসেবে কমলাকান্ত নামটি বেছে নিয়েছিলেন। তাকে বাংলা উপন‍্যাসের জনক বলা হয়। এছাড়াও তিনি বাংলা সাহিত্যের সাহিত্য সম্রাট হিসেবে পরিচিত।

বঙ্কিমচন্দ্র রচিত আনন্দমঠ (১৮৮২) উপন্যাসের কবিতা বন্দে মাতরম ১৯৩৭ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক ভারতের জাতীয় স্তোত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

এক নজরে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

নামবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (Bankim Chandra Chatterjee)
জন্ম২৬ জুন ১৮৩৮ অর্থাৎ ১৩ আষাঢ় ১২৪৫কাঁঠালপাড়া গ্রাম, নৈহাটি, কলকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৮ এপ্রিল ১৮৯৪ (বয়স ৫৫)কলকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
পেশাসরকারি কর্মকর্তাঔপন্যাসিকপ্রাবন্ধিকসাংবাদিক
সময়কালঊনবিংশ শতাব্দী
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিআনন্দমঠ, দুর্গেশনন্দিনী, রাজসিংহ
দাম্পত্যসঙ্গীরাজলক্ষ্মী দেবী

জীবনী

জন্ম ও বংশপরিচয়

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হয় বর্তমান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নৈহাটি শহরের নিকটস্থ কাঁঠালপাড়া গ্রামে। তারিখ ২৬ জুন, ১৮৩৮ অর্থাৎ ১৩ আষাঢ় ১২৪৫। চট্টোপাধ্যায়দের আদিনিবাস ছিল হুগলি জেলার দেশমুখো গ্রামে। বঙ্কিমচন্দ্রের পূর্বপুরুষ রামজীবন চট্টোপাধ্যায় কাঁঠালপাড়ার রঘুদেব ঘোষালের কন্যাকে বিবাহ করেন৷ রামজীবনের পুত্র তথা বঙ্কিমচন্দ্রের প্রপিতামহ রামহরি চট্টোপাধ্যায় মাতামহের সম্পত্তি পেয়ে কাঁঠালপাড়ায় আসেন এবং সেখানেই বসবাস শুরু করেন। রামহরির পৌত্র যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের তৃতীয় পুত্র বঙ্কিমচন্দ্র,মাতা দুর্গাসুন্দরী দেবী,বঙ্কিমের পূর্বে তার আরও দুই পুত্রের জন্ম হয় – শ্যামাচরণ ও সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বঙ্কিমের জন্মকালে তিনি সদ্য অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ডেপুটি কালেক্টর পদে উন্নীত হয়েছিলেন।

শিক্ষা

জন্মের পর ছয় বছর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কাঁঠালপাড়াতেই অতিবাহিত করেন। পাঁচ বছর বয়সে কুল-পুরোহিত বিশ্বম্ভর ভট্টাচার্যের কাছে বঙ্কিমচন্দ্রের হাতেখড়ি হয়। শিশু বয়সেই তার অসামান্য মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। বঙ্কিমের কনিষ্ঠ সহোদর পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, “শুনিয়াছি বঙ্কিমচন্দ্র একদিনে বাংলা বর্ণমালা আয়ত্ত করিয়াছিলেন।” যদিও গ্রামের পাঠশালায় বঙ্কিম কোনওদিনই যান নি। পাঠশালার গুরুমশাই রামপ্রাণ সরকার বাড়িতে তার গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হন। বঙ্কিমচন্দ্রের রচনা থেকে মনে হয় তিনি রামপ্রাণের শিক্ষা থেকে বিশেষ উপকৃত হন নি। তিনি লিখেছেন, “সৌভাগ্যক্রমে আমরা আট দশ মাসে এই মহাত্মার হস্ত হইতে মুক্তিলাভ করিয়া মেদিনীপুর গেলাম।” 

১৮৪৪ সালে বঙ্কিমচন্দ্র পিতার কর্মস্থল মেদিনীপুরে আনীত হলে, সেখানেই তার প্রকৃত শিক্ষার সূচনা হয়। মেদিনীপুরের ইংরেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনৈক এফ টিডের পরামর্শে যাদবচন্দ্র শিশু বঙ্কিমকে তার স্কুলে ভর্তি করে দেন। এখানেও বঙ্কিম অল্পকালের মধ্যেই নিজ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হন। পূর্ণচন্দ্রের রচনা থেকে জানা যায়, বার্ষিক পরীক্ষার ফলে সন্তুষ্ট হয়ে টিড সাহেব বঙ্কিমকে ডবল প্রমোশন দিতে উদ্যত হলে যাদবচন্দ্রের হস্তক্ষেপে তিনি নিরস্ত হন। ১৮৪৭ সালে টিড ঢাকায় বদলি হয়ে গেলে সিনক্লেয়ার তার স্থলাভিষিক্ত হন; তার কাছেও বঙ্কিম প্রায় দেড় বছর ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করেন।

১৮৪৯ সালে বঙ্কিমচন্দ্র পুনরায় কাঁঠালপাড়ায় ফিরে আসেন। এইসময় কাঁঠালপাড়ার শ্রীরাম ন্যায়বাগীশের কাছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা ও সংস্কৃতের পাঠ নেন। বঙ্কিমচন্দ্র খুব ভালো আবৃত্তিকারও ছিলেন। সংবাদ প্রভাকরসংবাদ সাধুরঞ্জন নামক সংবাদপত্রে প্রকাশিত বহু কবিতা তিনি এই বয়সেই কণ্ঠস্থ করে ফেলেন। ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর বিরচিত বিদ্যাসুন্দর কাব্য থেকে বিদ্যার রূপবর্ণন ও জয়দেব প্রণীত গীতগোবিন্দম্ কাব্য থেকে ধীরে সমীরে যমুনাতীরে কবিতাদুটি তিনি প্রায়শই আবৃত্তি করতেন। এছাড়াও পণ্ডিত হলধর তর্কচূড়ামণির কাছে এই সময় তিনি মহাভারত শ্রবণ করতেন। হলধরই তাকে শিক্ষা দেন – “শ্রীকৃষ্ণ আদর্শ পুরুষ ও আদর্শ চরিত্র”। এই শিক্ষা তার পরবর্তী জীবনে রচিত নানা রচনাতে প্রতিফলিত হয়েছিল।

কিছুকাল পরে ১৮৪৯ সালে হুগলি কলেজে (অধুনা হুগলী মহসিন কলেজ) ভর্তি হন। এখানে তিনি সাত বছর পড়াশোনা করেন। হুগলি কলেজ পড়াকালীন ১৮৫৩ সালে জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে মাসিক আট টাকা বৃত্তি লাভ করেন। এই বছরেই সংবাদ প্রভাকরে কবিতা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে কুড়ি টাকা পুরস্কার লাভ করেন। হুগলি কলেজ অধ্যয়নকালেই বঙ্কিমচন্দ্র কবিবর ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সংবাদ প্রভাকর ও সংবাদ সাধুরঞ্জনে গদ্য-পদ্য রচনা আরম্ভ করেন। পরবর্তীকালে তার বহু রচনা এই দুই কাগজে প্রকাশিত হয়। হুগলি কলেজ ১৮৫৬ সালে সিনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় সব বিষয়ে বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করে তিনি দুই বছরের জন্য কুড়ি টাকা বৃত্তি লাভ করেন। এই বছরই তিনি হুগলি কলেজ ছেড়ে আইন পড়বার জন্য কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৮৫৭ সালে জানুয়ারী মাসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এন্ট্রান্স বা প্রবেশিকা পরীক্ষা প্রবর্তন করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজের আইন বিভাগ থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরের বছর ১৮৫৯ সালে প্রথমবারের মতো বি.এ. পরীক্ষা নেওয়া হয়। মোট দশজন ছাত্র প্রথমবারে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। উত্তীর্ণ হয়েছিলেন কেবলমাত্র বঙ্কিমচন্দ্র ও যদুনাথ বসু।

তার বাবার মতো তিনিও সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্‌টার পদে। সারা জীবন তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যান। স্বীকৃতি স্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাকে দুটি খেতাবে ভূষিত করে – ১৮৯১ সালে রায় বাহাদুর খেতাব এবং ১৮৯৪ সালে কম্প্যানিয়ন অফ দ্য মোস্ট এমিনেন্ট অর্ডার অফ দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার খেতাব। তবে সরকারি কর্মকর্তা নয় বরং লেখক এবং বাঙলা তথা ভারতের নবজাগরণের অন‍্যতম মুখ হিসেবেই তিনি অধিক প্রখ্যাত।

বিবাহ

বঙ্কিমচন্দ্রের চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম বিয়ে হয় ১৮৪৯ সালে। তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ১১ বছর। নারায়নপুর গ্রামের এক পঞ্চমবর্ষীয়া বালিকার সাথে তার বিয়ে হয়। কিন্তু চাকুরি জীবনের শুরুতে যশোর অবস্থান কালে ১৮৫৯ সালে এ পত্নীর মৃত্যু হয়। অতঃপর ১৮৬০ সালের জুন মাসে হালি শহরের বিখ্যাত চৌধুরী বংশের কন্যা রাজলক্ষী দেবীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

কর্মজীবন

তার কর্মজীবনের সংক্ষেপিত তালিকা:

  • যশোর – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – যোগদানের তারিখ: ১৮৫৮, ৭ আগস্ট
  • নেগুয়া (মেদিনীপুর) – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – যোগদানের সাল: ১৮৬০, ৯ ফেব্রুয়ারি
  • খুলনা – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – যোগদানের সাল: ১৮৬০, ৯ নভেম্বর
  • বারুইপুর (২৪ পরগনা) – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – যোগদানের সাল: ১৮৬৪, ৫ মার্চ
  • মুর্শিদাবাদ – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – উচ্চতর কার্যভার গ্রহণের তারিখ: ১৮৬৯, ১৫ ডিসেম্বর।
  • মুর্শিদাবাদ – কালেক্টর – পদোন্নতির তারিখ: ১৮৭১, ১০ জুন।
  • কলিকাতা – বেঙ্গল গভর্নমেন্টের অ্যাসিটেন্ট সেক্রেটারি – যোগদানের তারিখ: ১৮৮১, ৪ সেপ্টেম্বর।
  • আলিপুর – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – ১৮৮২, ২৬ জানুয়ারি।
  • জাজপুর (কটক) – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – ১৮৮৩, ৮ আগস্ট।
  • হাওড়া – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – ১৮৮৩, ১৪ ফেব্রুয়ারি।
  • ঝিনাইদহ – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর – ১৮৮৫, ১ জুলাই।[১৪]
  • অবসরগ্রহণের তারিখ: ১৮৯১, ১৪ সেপ্টেম্বর।

মৃত্যু

শেষ জীবনে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য বিশেষ ভালো ছিল না। ১৮৯৪ সালের মার্চ মাসে তার বহুমূত্র রোগ বেশ বেড়ে যায়। এই রোগেই অবশেষে তার মৃত্যু হয়, এপ্রিল ৮, ১৮৯৪ (বাংলা ২৬ চৈত্র ১৩০০ সাল)।

বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান

বাংলা ভাষার প্রথম সার্থক ঔপন্যাসিক ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। দুর্গেশনন্দিনী ছিলো প্রথম সার্থক বাংলা উপন্যাস যেটা বাংলা সাহিত্যের দ্বার উন্মোচন করেছিলো। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মোট ১৫টি উপন্যাস লিখেছিলেন এবং এর মধ্যে একটি ইংরেজি ভাষার উপন্যাস ছিলো। বঙ্কিমই বাংলা ভাষাকে প্রথম সত্যিকারের মর্যাদা দিয়েছিলেন। তার রচনা ‘বঙ্কিমী শৈলী’ বা ‘বঙ্কিমী রীতি’ নামে পরিচিত।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যচর্চা শুরু হয় ১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে, “সংবাদ প্রভাকর” পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে। বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক উপন্যাস দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫) তাঁর লেখা। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ: ললিতা তথা মানস (১৮৫৬)।

উপন্যাস

উপন্যাসপ্রকাশকালবিস্তারিত তথ্য
Rajmohans Wife১৮৬৪বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস। এটি ১৮৬৪ সালে ‘Indian Field’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
দুর্গেশনন্দিনীমার্চ, ১৮৬৫ঐতিহাসিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম বাংলা উপন্যাস। রচনাকাল ১৮৬২-৬৪। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে উপন্যাসের তেরটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ মুদ্রিত হয় ১৮৯৩ সালে।
কপালকুণ্ডলা১৮৬৬কাব্যিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের দ্বিতীয় উপন্যাস। মেদিনীপুর জেলার নেগুঁয়া মহকুমায় (বর্তমানে কাঁথি মহকুমা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা) অবস্থানকালে অর্জিত কিছু অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই উপন্যাস রচনা করেন বঙ্কিমচন্দ্র। সমালোচক মহলে উচ্চ-প্রশংসিত হয় এই উপন্যাস।
মৃণালিনী১৮৬৯ঐতিহাসিক উপন্যাস। খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর পটভূমিতে রচিত।
বিষবৃক্ষ১৮৭৩সামাজিক উপন্যাস। বঙ্গদর্শন পত্রিকার প্রথম সংখ্যা (বৈশাখ, ১২৭৯) থেকে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। মোট সংস্করণের সংখ্যা আট। সর্বশেষ সংস্করণ মুদ্রিত হয় ১৮৯২ সালে।
ইন্দিরা১৮৭৩অনু-উপন্যাস। বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৭৯) ছোটোগল্প আকারে প্রকাশিত হয়। ১৮৭৩ সালে ৪৫ পৃষ্ঠার ক্ষুদ্র গ্রন্থাকারে প্রকাশিত। ১৮৯৩ সালে ১৭৭ পৃষ্ঠার একটি অনু-উপন্যাসের আকারে এই গ্রন্থের পঞ্চম সংস্করণ প্রকাশিত হয়।
যুগলাঙ্গুরীয়১৮৭৪ঐতিহাসিক অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (বৈশাখ, ১২৮০)। প্রথম সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৬। ১৮৯৩ সালে পঞ্চম তথা সর্বশেষ সংস্করণে পৃষ্ঠা সংখ্যা হয় ৫০।
চন্দ্রশেখর১৮৭৫রোম্যান্সধর্মী উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (শ্রাবণ, ১২৮০ – ভাদ্র, ১২৮১)। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৮৯ সালে মুদ্রিত।
রাধারাণী১৮৮৬অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (কার্তিক-অগ্রহায়ণ, ১২৮২)। ১৮৭৭ ও ১৮৮১ সালে উপন্যাস – অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপন্যাস সংগ্রহ গ্রন্থে সংকলিত হয়। ১৮৮৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশের সময় পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৮। ১৮৯৩ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয় ৬৫।
রজনী১৮৭৭রোম্যান্সধর্মী উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (১২৮১-৮২)। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৮৭ সালে মুদ্রিত।
কৃষ্ণকান্তের উইল১৮৭৮সামাজিক উপন্যাস। ১৮৮২ ও ১৮৮৪ সালে বঙ্গদর্শন পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে চারটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৯২ সালে মুদ্রিত।
রাজসিংহ১৮৮২ঐতিহাসিক উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৮৪ – ভাদ্র, ১২৮৫)। পত্রিকায় অসমাপ্ত উপন্যাসটি সমাপ্ত করে ১৮৮২ সালে ৮৩ পৃষ্ঠার প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয় ৯০। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা হয় ৪৩৪।
আনন্দমঠ১৮৮২বঙ্কিমচন্দ্রের প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৮৭ – জ্যৈষ্ঠ, ১২৮৯)।-১৮৯২ সালে মুদ্রিত। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় স্তোত্র বন্দেমাতরম্এই উপন্যাস থেকে গৃহীত।। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পটভূমিকায় সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ছায়া অবলম্বনে রচিত। এই উপন্যাসে লেখকের দেশপ্রেম ফুটে উঠেছে।
দেবী চৌধুরাণী১৮৮৪ঐতিহাসিক উপন্যাস। বিভিন্ন সময়ে বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে ছয়টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৯১ সালে মুদ্রিত।
সীতারামমার্চ, ১৮৮৭ঐতিহাসিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের শেষ উপন্যাস। প্রচার পত্রিকায় (শ্রাবণ, ১২৯১ – মাঘ, ১২৯৩; মাঝে কয়েকমাসের বিরতি সহ) প্রকাশিত হয়। প্রথম সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৪১৯। তৃতীয় ও শেষ সংস্করণ বঙ্কিমচন্দ্রের জীবদ্দশায় মুদ্রিত হলেও প্রকাশিত হয় তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পরে, ১৮৯৪ সালের মে মাসে।

প্রবন্ধ

প্রবন্ধপ্রকাশকালবিস্তারিত তথ্য
লোকরহস্য১৮৭৪লোকরহস্য গ্রন্থের প্রবন্ধগুলো হলো: ব্যাঘ্রচার্য বৃহল্লাঙ্গুল, ইংরাজস্তোত্র, বাবু, গর্দভ, দাম্পত্য দণ্ডবিধির আইন, বসন্ত এবং বিরহ, সুবর্ণগোলক, রামায়ণের সমালোচন, বৰ্ষ সমালোচন, কোন ‘স্পেশিয়ালের’ পত্র, BRANSONISM, হনুমদ্বাবুসংবাদ, গ্রাম্য কথা(প্রথম সংখ্যা, দ্বিতীয় সংখ্যা), বাঙ্গালা সাহিত্যের আদর, New Year’s Day.
বিজ্ঞান রহস্য১৮৭৫
কমলাকান্তের দপ্তর১৮৭৫
বিবিধ সমালোচনা১৮৭৬
সাম্য১৮৭৯
কৃষ্ণচরিত্র১৮৮৬
বিবিধ প্রবন্ধ১ম খন্ড-১৮৮৭, ২য় খন্ড-১৮৯২
ধর্মতত্ত্ব অনুশীলন১৮৮৮
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা১৯০২

সম্পাদনা

  • বঙ্গদর্শন পত্রিকা (১৮৭২-১৮৭৬)

তথ্যসূত্র

  • “বাংলা সাহিত্যের সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়”। ইত্তেফাক
  • সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান – প্রথম খণ্ড – সংশোধিত পঞ্চম সংস্করন – সাহিত্য সংসদ
  • মাসিক কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, মে ২০১১, পৃ. ৩৩; পরিদর্শনের তারিখ: ২৬ মে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ
  • গৌতম চক্রবর্তী (২৭ ডিসেম্বর ২০১১)। “একদিন দেশ মাতবে এই গানে…বলেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ‘বন্দে মাতরম্’-এর ইতিহাসটিও বিচিত্র”। আনন্দবাজার পত্রিকা
  • “সম্পাদক সমীপেষু: বন্দে মাতরম”। আনন্দবাজার পত্রিকা। ২৩ জুন ২০১৮।
  • বঙ্কিম-জীবনী, শচীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, পুস্তক বিপণি, কলিকাতা, ১৯৫২, পৃ. ৯
  • প্রবন্ধ বঙ্কিমচন্দ্রের বাল্যশিক্ষা, পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিম-প্রসঙ্গ গ্রন্থ, সুরেশচন্দ্র সমাজপতি সম্পাদিত
  • বঙ্কিমচন্দ্রজীবনী, অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ১৯৯১, পৃ. ২৫ থেকে উদ্ধৃত
  • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (জীবনকথা), বঙ্কিম রচনাবলী, প্রথম খণ্ড, যোগেশচন্দ্র বাগল সম্পাদিত, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, পৃষ্ঠা নয়
  • সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী, বঙ্কিম রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, যোগেশচন্দ্র বাগল সম্পাদিত, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, পৃষ্ঠা ৭৯০
  • বঙ্কিমচন্দ্রজীবনী, অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ১৯৯১, পৃ. ২৫
  • প্রবন্ধ বঙ্কিমচন্দ্রের বাল্যশিক্ষা, পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিম-প্রসঙ্গ গ্রন্থ, সুরেশচন্দ্র সমাজপতি সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ৩৩-৪১
  • https://wbchse.nic.in/html/bankim_chandra.html
  • “নবগঙ্গা তীরে বঙ্কিম স্মৃতি”। ইত্তেফাক। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
  • শনোলী দেবনাথ (২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। “কুস্তি লড়বে কপালকুণ্ডলা! বঙ্কিমী উপন্যাসের অসীম নয়-ছয়”। দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস