চর্মরোগ থেকে বাঁচার মৌলিক উপায়
- প্রকাশ: ০৭:২৮:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৮৫৭ বার পড়া হয়েছে
চর্মরোগ ত্বককে প্রভাবিত করে বা ত্বকে না না রকম সমস্যার সৃষ্টি করে ও ছড়িয়ে পরে। সহজ কথায় চর্মরোগ বলতে ত্বকের বিভিন্ন রোগকে বুঝায়।
তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত কারণে অসহনীয় গরমের পরিস্থিতিতে ত্বকের একাধিক সমস্যায় কাবু বিপুল সংখ্যক মানুষ। এখানেই শেষ নয়, রোদে পোড়ার ফলে ত্বক তো কালো হয়ই, সেই সঙ্গে স্কিন র্যাশের পাশাপাশি অ্যালার্জির মতো সমস্যাও দেখা দিতে শুরু করে। ফলে গরমে সঠিক যত্ন না নেওয়া হলে ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা হয়। চুলকানি, জ্বালাপোড়া, লাল ছোপ, ফুসকুড়ি ইত্যাদি খুব বিরক্তিকর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময়ে এর ফলে ত্বকের স্বাভাবিক রঙ হারিয়ে যায়। আর শরীরের যেকোনও জায়গার ত্বকেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।আর খাবারে অ্যালার্জি, নানা ধরনের রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা, পোকা মাকড়ের কামড়, চুলকানি, কুষ্ঠ রোগ, ঠান্ডা আবহাওয়া ইত্যাদি নানা কারণে ত্বকের সমস্যা হতে পারে।
চর্মরোগ ত্বককে প্রভাবিত করে বা ত্বকে না না রকম সমস্যার সৃষ্টি করে ও ছড়িয়ে পরে। সহজ কথায় চর্মরোগ বলতে ত্বকের বিভিন্ন রোগকে বুঝায়।
চর্ম রোগের কারন কী?
চর্মরোগের কারন ও ধরন ভিন্ন ভিন্ন হয়। ত্বকে সংক্রমণের কারনে যে চর্মরোগগুলি হয় তাদের ধরন সংক্রামক এজেন্টের উপর নির্ভর করে। সাধারণত ত্বকে সংক্রমণ ঘটায় এধরণের এজেন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস,প্রোটোজোয়া, ছত্রাক ইত্যাদি।ডায়াবেটিস, লুপাস,স্ট্রেস ইত্যাদি রোগ ও গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন চর্মরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।তাছাড়াও অ্যালার্জি, অটোইমিউন প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি কারনেও চর্মরোগ দেখা দেয়।
চর্ম রোগের লক্ষণ কী?
সব ধরনের চর্ম রোগের লক্ষণ এক হয় না। অর্থাৎ চর্ম রোগের ধরন ও কারণ অনুযায়ী লক্ষণ প্রকাশ পায়। সব চর্মরোগে চুলকানি থাকে না। আবার কিছু ত্বকের সমস্যা রয়েছে যেগুলো চর্ম রোগ নয়। যেমনঃ টাইট বেল্ট পরার কারণে কোমরের ত্বকে সমস্যা, জুতা পরার কারণে পায়ে ফোষ্কা,মোটা কাপড় পরার কারণে শরীরে ফুসকুড়ি হওয়া ইত্যাদি।
সাধারণত বিভিন্ন চর্মরোগর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ত্বকে ফুসকুড়ি হওয়া, ত্বকে ব্যথা বা চুলকানি, খসখসে বা রুক্ষ ত্বক, ত্বক থেকে চামড়া ওঠা, ত্বকে বিবর্ণ দাগ, অতিরিক্ত ফ্লাশিংত্বকে ক্ষত বা ঘা (একে ত্বকের আলসার বলে), ক্ষত থেকে পানি পরা।
বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ
- ঘামাচি: গরমের সময় ঘামাচি একটি সাধারণ সমস্যা। ঘামাচি সাধারণত তখনই হয় যখন ঘর্মগ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ঘাম বের হয় না এবং ত্বকের নীচে ঘাম আটকে যায়। এর ফলে ত্বকের উপরিভাগে ফুসকুড়ি এবং লাল দানার মতো দেখা যায়। কিছু কিছু ঘামাচি খুব চুলকায়। ঘামাচি সাধারণত এমনিতেই সেরে যায়। তবে ঘামাচি সারানোর জন্য ত্বক সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে এবং ঘাম শুকাতে হবে।
- ব্রণ: সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে এই রোগটি দেখা দেয়। তাই একে টিনএজারদের রোগও বলা যেতে পারে। ১৮ থেকে ২০ বছরের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এ রোগটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে তৈলাক্ত, ঝাল ও ভাজাপোড়া খাবারসহ চকলেট, আইসক্রিম ও অন্যান্য ফাস্টফুড খাওয়া কমাতে হবে। এছাড়া বেশি করে পানি ও শাক-সবজি খেতে হবে।
- দাদ: শরীরের যে-কোনো স্থান ফাংগাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একে দাদ বলে। এই আক্রমণ মাথার চামড়ায়, হাত-পায়ের আঙুলের ফাঁকে কিংবা কুঁচকিতে হতে পারে। এটা ছোয়াঁচে রোগ। আক্রান্ত স্থান চাকার মতো গোলাকার হয় এবং চুলকায়। মাথায় দাদ দেখতে গোলাকার হয় এবং আক্রান্ত স্থানে চুল কমে যায়। প্রতিকার পেতে সাবান ও পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান প্রতিদিন ধুতে হবে। এছাড়া আক্রান্ত স্থান শুকনো রাখা জরুরি৷ অনেক সময় ব্যবহৃত সাবান থেকেও দাদ হতে পারে, সেক্ষেত্রে সাবান ব্যবহার কিছুদিন বন্ধ রাখতে হবে।
- পাঁচড়া: শিশুদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়। পরিষ্কার কাপড়-চোপড় ব্যবহার ও নিয়মিত গোসল করলে খোসপাঁচড়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
- একজিমা: একজিমা হলো ত্বকের এমন একটি অবস্থা যেখানে ত্বকে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। একেক ধরনের একজিমার লক্ষণ একেক রকম হয়। তবে সাধারণভাবে লালচে, প্রদাহযুক্ত ত্বক, শুষ্ক, খসখসে ত্বক; ত্বকে চুলকানি; হাত ও পায়ের ত্বকের মধ্যে ছোট ছোট পানির ফুসকুড়ি ইত্যাদি হলো একজিমার লক্ষণ। ডিটারজেন্ট, সাবান অথবা শ্যাম্পু থেকে একজিমার সংক্রমণ হতে পারে। অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে ভেজা আবহাওয়াও একজিমার কারণ।
- সোরিয়াসিস: সোরিয়াসিস ত্বকের একটি জটিল রোগ। তবে এটি কেবল ত্বক নয়, আক্রমণ করতে পারে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও। যেমন সন্ধি, নখ ইত্যাদি। সাধারণত ত্বকের কোষস্তর প্রতিনিয়ত মারা যায় এবং নতুন করে তৈরি হয়। সোরিয়াসিসে এই কোষ বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। ত্বকের কয়েক মিলিমিটার থেকে কয়েক সেন্টিমিটার জায়গাজুড়ে এই সমস্যা দেখা দেয়। রোগ যত পুরোনো হয়, ততই জটিল হতে থাকে। তাই দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার আওতায় আসা জরুরি। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আজীবন চিকিৎসা নিতে হয়। সোরিয়াসিস বংশগতভাবে হতে পারে।
- আর্সেনিকের কারণে চর্মরোগ: আর্সেনিক যুক্ত পানি খেলে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ত্বকের গায়ে ছোট ছোট কালো দাগ কিংবা পুরো ত্বক কালো হয়ে যেতে পারে, হাত ও নখের চামড়া শক্ত ও খসখসে হয়ে যেতে পারে। এছাড়া ত্বকের বিভিন্ন স্থানে সাদা-কালো দাগ দেখা দেয়াসহ হাত ও পায়ের তালুর চামড়ায় শক্ত গুটি বা গুটলি দেখা দিতে পারে। তবে চিন্তার বিষয় হলো, আর্সেনিক যুক্ত পানি পানের শেষ পরিণতি হতে পারে কিডনি ও লিভারের কর্মক্ষমতা লোপ পাওয়া; ত্বক, ফুসফুস ও মূত্রথলির ক্যানসার হওয়া; কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া ইত্যাদি।বেশির ভাগ চর্মরোগই নিরাময়যোগ্য। তবে জেনেটিক কারনে অর্থাৎ বংশগত কারণে কোন চর্মরোগ হলে সেটিকে নিরাময় করা যায় না।আবার হরমোনের ভারসাম্য, ডায়াবেটিস, দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সহ না না ধরনের শারীরিক সমস্যার কারনে চর্মরোগ হলে সেটিকে নিরাময় করা জটিল হয়।
চর্মরোগ প্রতিরোধ
জেনেটিক বা অন্য কোন রোগের অসুস্থতার কারণে যে চর্মরোগ হয় সেগুলোকে প্রতিরোধ করা যায় না। যেতু প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করা হলো সবচেয়ে ভালো কাজ তাই চর্মরোগ প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
চর্মরোগ প্রতিরোধে চাই ঘরোয়া পরামর্শ:
- * সাবান ও গরম পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোঁয়ার অভ্যাস করতে হবে।
- * নিজের খাবার পাত্র (যেমন: প্লেট,গ্লাস,চায়ের কাপ ইত্যাদি) অন্য কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না।
- * চর্মরোগে আক্রান্ত এমন ব্যাক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।
- * পাবলিক স্পেসে কোন কিছু ব্যাবহার করলে জীবানু মুক্ত করে নিতে হবে।
- * ব্যক্তিগত জিনিসপত্র, যেমন: কম্বল,হেয়ার ব্রাশ, তোয়ালে ইত্যাদি কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না।
- * অন্য কারো জিনিসপত্র ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- * প্রতি রাতে কমপক্ষে সাত ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
- অতিরিক্ত শারীরিক ও মানসিক চাপ এড়িয়ে চলতে হবে।
- পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, পাশাপাশি প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে।
ইনফেকশন ছাড়া যে সকল চর্ম রোগ হয় যেমনঃ ব্রন,এটোপিক ডার্মাটাইটিস ইত্যাদি রোগসমুহ প্রতিরোধ করতে নিচের পদক্ষেপগুলো নেয়া যেতে পারে:
- একটি মৃদু ক্লিনজার ও জীবানু মুক্ত পানি দিয়ে প্রতিদিন মুখ ধুতে হবে।
- ত্বকের শুষ্কতা রোধ করতে ময়েশ্চারাইজার ব্যাবহার করতে হবে।
- অ্যালার্জিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- রাসায়নিক দ্রব্যাদি বা ক্ষতিকর প্রসাধনী এড়িয়ে চলতে হবে।
- প্রতি রাতে কমপক্ষে সাত ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
- স্বাস্থ্যকর খাবার ও প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে।
- ত্বককে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা, তাপ ও বাতাস থেকে রক্ষা করতে হবে।
- নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে হবে।
- অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরার একাধিক গুণাগুণ রয়েছে। ত্বকের যেকোনও সমস্যায় অসাধারণ কাজ দেয় এটি। ত্বকের যেকোনও সমস্যায় অ্যালো ভেরার রস লাগান। সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
- অলিভ অয়েল: শুষ্ক ত্বকে সমস্যা অনেক বেশি হয়। অলিভ অয়েলে থাকা ভিটামিন ত্বকে মিশে গিয়ে আর্দ্রতা বজায় রাখে। ফলে নিয়মিত মাখলে ত্বক ভালো থাকে।
- বেকিং সোডা: বেকিং সোডা দিয়েও ত্বকের নানা সমস্যার সমাধান সম্ভব। আক্রান্ত জায়গায় বেকিং সোডা লাগান। সঙ্গে সঙ্গে জ্বালাপোড়া ভাব ও চুলকানি কমে যাবে।
- তুলসী: তুলসীর হাজারো গুণ রয়েছে। নানা ধরনের ক্ষত, লাল ছোপ, পোড়া, চুলকানিসহ ত্বকের যেকোনো সমস্যায় তুলসী পাতা বেটে রস লাগালে সঙ্গে সঙ্গে উপকার পাওয়া যায়।
- নিম: নিমে রয়েছে এমন উপাদান যা যেকোনো জ্বালাময়ী ভাব কমিয়ে দিতে সক্ষম। বিশেষ করে চুলকানি বা ত্বকের লাল ছোপ ইত্যাদি কমাতে নিমের পাতা বিশেষ কাজ করে।
- প্রসাধনী: ত্বকে যে কোনো ধরনের প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহারের আগে সচেতন হওয়া জরুরি। রাসায়নিক পদার্থসমৃদ্ধ প্রসাধনী এবং অ্যালার্জি তৈরি করে এমন উপাদান সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। প্যারাবিন ও সোডিয়াম লরাইল সালফেট আছে এমন শ্যাম্পু ও সাবান এড়িয়ে চলা উচিত।
- ওমেগা ফ্যাটি এসিড: ত্বক ভালো রাখতে ওমেগা ফ্যাটি এসিড খুবই জরুরি একটি উপাদান। তাই খাদ্য তালিকায় প্রয়োজনীয় ওমেগা ফ্যাটি এসিডযুক্ত করার চেষ্টা করতে হবে।
- ভিটামিন ডি: শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন দিনগুলোতে চুলকানির প্রবণতা বেড়ে যায়। এটা কিন্তু কালতালীয় ব্যাপার নয়। শরীরে ভিটামিন ডি কতটুকু রয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে ত্বকের চুলকানি বাড়তে পারে অথবা কমতে পারে। ডা. তারিন বলেন, ‘আপনার শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি নিশ্চিত করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ভিটামিন ডি কমে গেলে (সাধারণত শীতকালে) ত্বকের সমস্যা ও চুলকানি অগ্নিমূর্তি ধারণ করতে পারে।
- সূর্যের আলো: প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকার চেষ্টা করুন।
- মেডিটেশন: সারাদিনের কর্মব্যস্ততার ফাঁকে কিছুটা সময় নিজের জন্য রাখা উচিত। চাইলে মেডিটেশন বা যোগ ব্যায়াম করা যেতে পারে। কারণ মেডিটেইশন ও যোগ ব্যায়াম পুরো শরীরের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায়
- নিয়মিত গোসল: অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস, ময়লা যেকোন চর্ম রোগের মূল কারণ। দিনে একবার গোসল করুন। গোসল আপনার শরীরে সমস্ত ময়লা আবর্জনা দূর করে দিবে। সম্ভব হলে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। তবে খুব গরম পানি দিয়ে গোসল করা থেকে বিরত থাকুন।
- সূর্যের রশ্মি থেকে দূরে থাকুন: ত্বকের সবচেয়ে ক্ষতি করে থাকে সূর্যের রশ্মি। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বক রিংকেল, কালো দাগ, বলিরেখা ফেলে। এমনকি স্কিন ক্যান্সার হতে পারে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির কারণে। তাই বাইরে বের হওয়ার সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। কমপক্ষে এসপিএফ ১৫ হওয়া উচিত। রোদে বের হওয়ার ৩০ মিনিট থেকে ২ ঘন্টা আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত রোদে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন। দীর্ঘসময় রোদে থাকতে হলে ফুল হাতা পোশাক পরিধান করুন।
- ব্রণ প্রতিরোধ: আপনার ত্বক যদি ব্রণ প্রবণ হয়ে থাকে, তবে দিনে দুইবার কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার অভ্যাস করুন। এরপর বেনযোইল পারক্সাইড সমৃদ্ধ লোশন ব্যবহার করুন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে মেকআপ তুলতে ভুলবেন না।
- এনজাইম প্রতিরোধ: আপনি যদি এনজাইম চর্ম রোগ প্রতিরোধ করতে চান, তবে অব্যশই ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। সুগন্ধীযুক্ত লোশন এবং ক্রিম ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- স্বাস্থ্যকর খাবার: একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনেক রোগের পাশাপাশি চর্মরোগের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। নিয়মিত প্রচুর পরিমাণ ফল, সবজি, এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার এবং লো ফ্যাট যুক্ত খাবার তারুণ্যদীপ্ত ত্বকের জন্য বেশ কার্যকরী।
- হোমিও সমাধান: আমাদের ত্বক বা চামড়া হল আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় ইন্দ্রিয়। ত্বক আমাদের বিভিন্ন রকম কেমিক্যাল, ক্ষতিকারক তরঙ্গ, রোগ জীবাণু থেকে আমাদের রক্ষা করে। আমাদের শরীরের আভ্যন্তরীণ তাপের সমতা বজায় রাখে। আবার ত্বক আমাদের শরীরের সবথেকে সংবেদনশীল অংশ। তাই আমাদের শরীরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারনে বিভিন্ন চর্মরোগ – চুলকানি, একজিমা, দাদ দেখা দেয়। সমীক্ষায় জানা গেছে যে, জনসংখ্যার প্রায় ২০% থেকে ৩০% লোক কোন না কোন চর্মরোগে আক্রান্ত। একমাত্র হোমিওপ্যাথি ওষুধই এই চর্মরোগের স্থায়ী প্রতিকার করতে পারে। এখানে বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ জন্য প্রাথমিক ভাবে যেই সব মেডিসিন লক্ষণের উপর আসতে পারে: Rhus Tox, Anthrakokali, Anacardium Occi, Antim Crud, Aloe Soc, Anagallis, Arsenic Alb, Sarsaparilla, Graphites, Petroleum , Coffea Crud, Croton Tig, Dolichos, Comocladia, Hepar Sulph, Nat Mur, Calcarea Carb, Clematis, Erecta, Oleander, Psorinum, Dulcamara Sulphur, Kali Ars, Sepia, Fagopyrum, Caladium Segu, Echinacea, Urtica Urens Bufo Rana, Acid Chryso, Mezereum, Tellurium, Alumina, APIS MELLIFICA-সহ আরো অনেক মেডিসিন লক্ষণের উপর আসতে পারে তাই ওষুধ নিজে নিজে ব্যবহার না করে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আবার ইদানীং অনেক নামদারি হোমিও চিকিৎসক বের হয়েছে, তারা চর্মরোগীদের পেটেন্ট টনিক, মলম, ক্রিম দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তাদের ডা. হ্যানিমান শংকর জাতের হোমিওপ্যাথ বলে থাকেন। রোগীদের মনে রাখতে হবে— চর্মরোগ কোনো সাধারণ রোগ নয়, তাই সঠিক চিকিৎসা পেতে হলে অভিজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শ নিন।
পরিশেষে বলতে চাই, ধূমপান, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত স্ট্রেস স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে থাকে। তাই ত্বক সুস্থ রাখার জন্য ত্বকের যত্নের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং ধূমপান ত্যাগ করা প্রয়োজন। আর বিভিন্ন কারণে ত্বকে চুলকানি বা চর্মরোগ হতে পারে। তবে কিছুটা সচেতন হলে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে চর্মরোগ থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাওয়া যায়।