০১:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

ডেঙ্গু হলে যেসব খাবার খাবেন এবং যেসব খাবার খাবেন না

বিশ্লেষণ সংকলন টিম
  • প্রকাশ: ০৫:২৫:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩
  • / ৪৪৬ বার পড়া হয়েছে

সকলেরই জানা উচিত একজন ডেঙ্গু রোগীর কোন খাবার খাওয়া উচিত এবং কোন খাবার খাওয়া উচিত নয়।

ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো প্লাটিলেট কমে যাওয়া। এর সঙ্গে রয়েছে মাথাব্যথা, মাংসপেশি ও চোখের পেছনে ব্যথা হওয়া, শরীরে র‍্যাশ দেখা দেওয়া।

ভাইরাসজনিত রোগ ডেঙ্গু এডিস মশার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। এর সঙ্গে লড়তে মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা জরুরি। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, ডেঙ্গু হলে কী খাবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক ডেঙ্গু হলে কোন খাবারগুলো খাবেন—

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু হলে খাদ্য তালিকায় প্রোটিন, প্রোবায়োটিক ও আয়রনযুক্ত খাবার থাকা জরুরি। এতে দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়। রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়।

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার

খাদ্যতালিকায় রাখুন দুধ, দই ও দুগ্ধজাত খাবারের প্রোবায়োটিকস সমৃদ্ধ সব খাবার। দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস নামক ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের উপকার করে। দুগ্ধজাত খাবার খেলে শরীরে পটাশিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়ামের পরিমাণ ঠিক থাকে।

প্রোটিনজাতীয় খাবার

প্রোটিনজাতীয় খাবার তাড়াতাড়ি রোগ সারাতে মুখ্য ভূমিকা নেয়। তাই ডেঙ্গু হলে খাদ্য তালিকায় রাখুন মাছ, মাংস, ডাল, ডিম, বাদাম ইত্যাদি।

পেঁপে পাতার রস

বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে পেঁপেঁ পাতার রস। তেতো লাগলেও এটি এসময় বেশ উপকারি। তবে তা খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এবং নির্দিষ্ট নিয়মে।

আয়রনসমৃদ্ধ খাবার

রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। তাই খাবার পাতে রাখুন পালংশাক, সামুদ্রিক মাছ, কলিজা, মিষ্টিকুমড়া, ডালিম, মটরশুঁটি, ছোলা, মসুর ডাল, কচুশাক ইত্যাদি। এসব খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, যা রোগীর শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করে।

তরল খাবার

জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর তরল খাবার দিতে হবে। পানি, ডাবের পানি, ফলের শরবত উপকারি। শক্ত খাবারের পরিবর্তে খাদ্য তালিকায় রাখুন জাউভাত, পাতলা খিচুড়ি, মাংসের স্যুপ, দইয়ের লাচ্ছি ইত্যাদি। এক্ষেত্রে খাবার দু-আড়াই ঘণ্টা অন্তর পরিবেশন করা ভালো। প্রয়োজনে ডেঙ্গু রোগীকে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশনও (ওআরসি) দেওয়া যেতে পারে।

ডালিম

প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে এই ফলটিতে। রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে এটি দ্রুত কাজ করে। ডালিম খেলে ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভূতিও দূর হবে।

সবুজ শাকসবজি

ভিটামিন কে এবং আই-এর সমৃদ্ধ উৎস সবুজ শাকসবজি। এই দুটি ভিটামিনই রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন। পার্সলে পাতা, পালং শাক, পুদিনা, বাধাকপি, শতমূলী ইত্যাদি রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার

প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে ভিটামিন সি। কমলালেবু, পাতিলেবু, জলপাই, আনারস, বেরি, কিউই ফলসহ মৌসুমি টকফল এই ভিটামিনের সমৃদ্ধ উৎস।

ডেঙ্গু হলে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন

ডেঙ্গু জ্বরের রোগীদের কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এসময় তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার, মসলাযুক্ত খাবার, আচার, চিনিযুক্ত খাবার, কাঁচা সবজি ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো। এড়াতে হবে উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, চা-কফি, কোকো, অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ইত্যাদিও।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত হবেন না। ঠিকমতো বিশ্রাম এবং সঠিক খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে বেশিরভাগ মানুষই দুই সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠেন। রক্তক্ষরণ বা অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

বিষয়:

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

ডেঙ্গু হলে যেসব খাবার খাবেন এবং যেসব খাবার খাবেন না

প্রকাশ: ০৫:২৫:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩

ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো প্লাটিলেট কমে যাওয়া। এর সঙ্গে রয়েছে মাথাব্যথা, মাংসপেশি ও চোখের পেছনে ব্যথা হওয়া, শরীরে র‍্যাশ দেখা দেওয়া।

ভাইরাসজনিত রোগ ডেঙ্গু এডিস মশার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। এর সঙ্গে লড়তে মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা জরুরি। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, ডেঙ্গু হলে কী খাবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক ডেঙ্গু হলে কোন খাবারগুলো খাবেন—

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু হলে খাদ্য তালিকায় প্রোটিন, প্রোবায়োটিক ও আয়রনযুক্ত খাবার থাকা জরুরি। এতে দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়। রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়।

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার

খাদ্যতালিকায় রাখুন দুধ, দই ও দুগ্ধজাত খাবারের প্রোবায়োটিকস সমৃদ্ধ সব খাবার। দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস নামক ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের উপকার করে। দুগ্ধজাত খাবার খেলে শরীরে পটাশিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়ামের পরিমাণ ঠিক থাকে।

প্রোটিনজাতীয় খাবার

প্রোটিনজাতীয় খাবার তাড়াতাড়ি রোগ সারাতে মুখ্য ভূমিকা নেয়। তাই ডেঙ্গু হলে খাদ্য তালিকায় রাখুন মাছ, মাংস, ডাল, ডিম, বাদাম ইত্যাদি।

পেঁপে পাতার রস

বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে পেঁপেঁ পাতার রস। তেতো লাগলেও এটি এসময় বেশ উপকারি। তবে তা খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এবং নির্দিষ্ট নিয়মে।

আয়রনসমৃদ্ধ খাবার

রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। তাই খাবার পাতে রাখুন পালংশাক, সামুদ্রিক মাছ, কলিজা, মিষ্টিকুমড়া, ডালিম, মটরশুঁটি, ছোলা, মসুর ডাল, কচুশাক ইত্যাদি। এসব খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, যা রোগীর শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করে।

তরল খাবার

জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর তরল খাবার দিতে হবে। পানি, ডাবের পানি, ফলের শরবত উপকারি। শক্ত খাবারের পরিবর্তে খাদ্য তালিকায় রাখুন জাউভাত, পাতলা খিচুড়ি, মাংসের স্যুপ, দইয়ের লাচ্ছি ইত্যাদি। এক্ষেত্রে খাবার দু-আড়াই ঘণ্টা অন্তর পরিবেশন করা ভালো। প্রয়োজনে ডেঙ্গু রোগীকে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশনও (ওআরসি) দেওয়া যেতে পারে।

ডালিম

প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে এই ফলটিতে। রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে এটি দ্রুত কাজ করে। ডালিম খেলে ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভূতিও দূর হবে।

সবুজ শাকসবজি

ভিটামিন কে এবং আই-এর সমৃদ্ধ উৎস সবুজ শাকসবজি। এই দুটি ভিটামিনই রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন। পার্সলে পাতা, পালং শাক, পুদিনা, বাধাকপি, শতমূলী ইত্যাদি রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার

প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে ভিটামিন সি। কমলালেবু, পাতিলেবু, জলপাই, আনারস, বেরি, কিউই ফলসহ মৌসুমি টকফল এই ভিটামিনের সমৃদ্ধ উৎস।

ডেঙ্গু হলে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন

ডেঙ্গু জ্বরের রোগীদের কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এসময় তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার, মসলাযুক্ত খাবার, আচার, চিনিযুক্ত খাবার, কাঁচা সবজি ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো। এড়াতে হবে উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, চা-কফি, কোকো, অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ইত্যাদিও।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত হবেন না। ঠিকমতো বিশ্রাম এবং সঠিক খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে বেশিরভাগ মানুষই দুই সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠেন। রক্তক্ষরণ বা অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।