০৯:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

শিক্ষক প্রশিক্ষণ: শিক্ষক প্রশিক্ষণের ধারণা, পটভূমি ও ইতিহাস, ধরন, উদ্দেশ্য এবং শিক্ষকের মর্যাদা ও দায়িত্ব

বিশ্লেষণ সংকলন টিম
  • প্রকাশ: ০১:৫৪:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ এপ্রিল ২০২২
  • / ২৬৭৪৮ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষক


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

সুশিক্ষা ও মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে মানসম্পন্ন শিক্ষক। শিক্ষকের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য একদিকে প্রয়োজন বিজ্ঞানসম্মত ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করা, অন্যদিকে প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষা। তাই চাহিদা ভিত্তিক যুগোপযোগী শিক্ষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধন করা।

প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণের ধারণা

যে-কোনো কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নির্দিষ্ট জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োজন হয়। সাধারণত দুটি উপায়ে আমরা জ্ঞান ও দক্ষতা লাভ করে থাকি। তার একটি হলো শিক্ষা আর অন্যটি প্রশিক্ষণ। শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। কিন্তু জীবনের প্রয়োজনে স্বল্প পরিসরে এবং স্বল্প সময়ের জন্য জ্ঞান ও দক্ষতা সরবরাহের জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তা-ই প্রশিক্ষণ।

Dale S. Beach প্রশিক্ষণের যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা হলো, প্রশিক্ষণ এমন সংগঠিত পদ্ধতি যার মাধ্যমে ব্যক্তির নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করে। সুতরাং প্রশিক্ষণ বলতে বোঝায় যে কোনও প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের নির্দিষ্ট কাজ এবং সংস্থার প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা, দক্ষতা এবং মনোভাব অর্জন এবং প্রয়োগের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হিসাবে পরিচালিত শিক্ষাদান এবং শেখার কার্যক্রমগুলি বোঝায়। জরুরি কোনো বিষয়ে তাৎক্ষণিক দক্ষতা সরবরাহের প্রয়োজন হলেও প্রশিক্ষণ দরকার হয়।

প্রশিক্ষণ হচ্ছে কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা সরবরাহের জন্য স্বল্পকালীন আয়োজন। শিক্ষকতা পেশার জন্য প্রয়োজনীয় সুনির্দিষ্ট কোনো ধারণা বা দক্ষতা সরবরাহের জন্য স্বল্পকালীন আয়োজনই হচ্ছে শিক্ষক প্রশিক্ষণ। শিক্ষক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য হলো শিক্ষক যেন আবশ্যক শিক্ষণ দক্ষতাগুলো অর্জন করতে পারেন তাতে সমর্থ করে তোলা।

জাতীয় জীবনে উপযুক্ত শিক্ষকের ভূমিকা অত্যপূ গুরুত্বপূর্ণ। যে-কোনো শিক্ষাব্যবস্থার গুণগত উৎকর্ষ আনয়ন শিক্ষকের সুষ্ঠু পেশাগত শিক্ষার উপর নির্ভরশীল। শিক্ষকতা পেশা অন্যান্য পেশা থেকে ভিন্ন, কারণ অন্যান্য পেশায় ঘাটতি থাকলে তা কাটিয়ে উঠা যায়। কিন্তু শিক্ষকতা পেশায় ঘাটতি থাকলে তা দারুণভাবে শিক্ষার্থীর উপর প্রভাব ফেলে। ফলে জাতীয় ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তা আর পূরণ করা যায় না। এ ছাড়া শিক্ষার পরিমাণ ও গুণগত মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন এ কথা আজ সর্বজন স্বীকৃত। একজন শিক্ষককে তার নিজের বিষয়ে উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেই চলবেনা। সে সঙ্গে পাঠ্য বিষয়সমূহ কিভাবে শিখাতে হবে সে বিষয়ে তাকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। তাঁকে শিক্ষা বিষয়ক নিয়ম প্রক্রিয়া, শিক্ষাতত্ত্ব সম্পর্কিত ট্রেনিং, শিক্ষা ও শিশু মনোবিজ্ঞান, শিক্ষাদানের আধুনিক পদ্ধতি ও মূল্যায়ন কৌশল জানতে হবে।

উপর্যুক্ত শিক্ষা বিষয়ক জ্ঞান অর্জনের জন্যই প্রশিক্ষণ। এই প্রশিক্ষণ জ্ঞানের বহুমুখী পরিধি বাড়ায়। বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা ও কৌশল অর্জনে সহায়তা করে এবং সর্বোপরি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ঘটায়। পরিণামে পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে দুর্দমনীয় প্রেষণা জাগায়। প্রশিক্ষণ এক ধরনের শিখন প্রক্রিয়া যা অর্জিত জ্ঞানকে প্রসারিত করে, অনুশীলনের মাধ্যমে পরিপক্বতা আনয়ন করে, দক্ষতাকে শাণিত করে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন গঠিয়ে বাস্তবমুখি পরিবর্তন আনয়ন করে ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়করণের নিরপূর প্রচেষ্টা চালানোর

শিক্ষক প্রশিক্ষণের পটভূমি ও ইতিহাস

শিক্ষক প্রশিক্ষণের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, এটি বেশ প্রাচীন। ১৬৭২ সালে ফ্রান্সের পাদার ডিমিয়া লায়ন্স সর্বপ্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় নেপোলিয়ন ১৮০৮ সালে শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য সুপিরিয়র নর্মাল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ১৮২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে, ১৮৩৬ সালে যুক্তরাজ্যে, ১৮৪৬ সালে নেদারল্যান্ডে শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। কালক্রমে বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রে শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিভিন্ন কার্যক্রমের সূচনা হয় এবং বিভিন্ন পরিসরে বিস্তার লাভ করে।

সাধারণভাবে প্রশিক্ষণ বলতে বুঝায় অংশগ্রহণকারীদের কর্মকেন্দ্রিক জ্ঞান, দক্ষতা ও আচরণ উন্নয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত সুসংগঠিত কার্যক্রমকে। প্রশিক্ষণের অন্যতম উদ্দেশ্য হল- কোনো নির্ধারিত বিষয়ের উপর জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়ন। প্রশিক্ষণ বলতে এমন কিছু কার্যক্রমকে বুঝায় যার মাধ্যমে পূর্ব নির্ধারিত এবং প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করা যায়। শাব্দিক অর্থে হাতে কলমে শিক্ষাই হল প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ পেশা উন্নয়নের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এজন্য বলা হয়— ‘Education: for the life, training for a particular profession. অর্থাৎ জীবন গড়ার জন্য শিক্ষা আর বিশেষ কোনো পেশার জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণ।

সুপরিকল্পিত শিক্ষাক্রম, যোগ্য শিক্ষক এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশে উপর শিক্ষার গুণগতমান নির্ভরশীল। এই উপাদানগুলোর মধ্যে শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যোগ্য শিক্ষক হওয়ার জন্য আবশ্যক উপাদানগুলো হলো—

  • পাঠদানের বিষয়বস্তু ভালোভাবে জানা
  • শিক্ষা বিজ্ঞানের জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন
  • শিক্ষাদানের মন মানিসকতা নিজের মধ্যে গড়ে তোলা।

এই আবশ্যক উপাদানগুলো পূরণ করতে পারলেই শিক্ষক নিজের বিষয়বস্তু পাঠদানে পারদর্শী হয়ে ওঠেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টিতে, জ্ঞান লাভে ও দক্ষতা অর্জনে উদ্বুদ্ধ করতে এবং আচরণে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হন। এই গুণাবলি অর্জনের জন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সর্বজনস্বীকৃত। শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালুরয়েছে। যেমন: বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ, সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণ, বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ, চাকরি পুর্বকালীন প্রশিক্ষণ, চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। শিক্ষক প্রশিক্ষণকে এখন ‘শিক্ষক শিক্ষা’(Teacher Education) নামেও অভিহিত করা হয়।

ভারত উপমহাদেশে বৈদিক বা আর্যশিক্ষা, বৌদ্ধ শিক্ষা, মুসলিম শিক্ষা নামে বিভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল। 

সকল শিক্ষা দেশীয় শিক্ষা নামে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশদের দ্বারা এই উপমহাদেশের ক্ষমতা দখলের পরও বহুদিন পর্যন্ত ফার্সি ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা নির্ভর দেশীয় শিক্ষা প্রচলিত ছিল।

১৮৩৫ সালে মেকলের মিনিউট এর ফলে উপমহাদেশে পাশ্চাত্য প্রভাবিত শিক্ষা প্রবর্তনের সূচন হয়। সেই সময় থেকেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা প্রভৃতি স্তরভিত্তিক শিক্ষার সূচনা ঘটে।

১৮৫৪ সালে উডের ডেপ্যাচে সর্বপ্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।  বিদ্যালয়সমূহের জন্য যোগ্য ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের প্রয়োজন মেটাবার দিকেও ডেসপ্যাচ আলোকপাত করে। সে সময় ইংল্যান্ডে নরমাল ও মডেল স্কুল (Normal and Model School) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণদানের ব্যবস্থা করা হতো। অনুরূপ নরমাল স্কুল প্রত্যেক প্রদেশে প্রতিষ্ঠার জন্য ডেসপ্যাচের প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়। এ বিষয়ে ডেসপ্যাচে ইংল্যান্ডে প্রচলিত একটি জনপ্রিয় ‘Prcctice’ ভারত উপমহাদেশে প্রচলন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই ‘Practice’ হচ্ছে শিক্ষকতা পেশায় উপযুক্ত ব্যক্তিদের নরমাল স্কুলে স্টাইপেন্ডসহ প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা এবং প্রশিক্ষণ শেষে সনদ প্রদান করা এবং চাকরিতে নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

শুরুতে উপমহাদেশে শিক্ষক শিখন বলতে শিক্ষণে পারদর্শিতা অর্জন না বুঝিয়ে সাধারণ বিষয়, যেমন: বীজগণিত, জ্যামিতি, জ্যোতিবিদ্যা ও ইতিহাস জ্ঞান লাভ বুঝাত। ১৮৫৭ সালে ঢাকায় একটি নরমাল স্কুল স্থাপিত হয়। 

পরবর্তী কালে ১৮৬৯ এ ১৮৮২ সালে যথাক্রমে কুমিল্লা ও রংপুরে আরো দুটি নরমাল স্কুল স্থাপিত হয়। কুমিল্লাস্থ নরমাল স্কুলটি ১৮৮৫ সালে চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত হয। ১৮৮২ সালে হান্টার কমিশনে মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতা করার জন্য গ্রাজুয়েটদের এক বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণের সুপারিশ করে। ১৯০৮ সালে কলকাতায় ডেবিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজ এবং ১৯০৯ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ স্থাপিত হয়। মি. ডব্লিউ ই. গ্রিফিথ ছিলেন ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ। অন্যদিকে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন মি. ইভান ই. বিস। অন্যদিকে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, এই 

দুইটি কলেজই বিংশ শতাব্দীর চল্লিশ দশক পর্যন্ত গোটা বাংলার শিক্ষক শিক্ষণের প্রয়োজন কোনো প্রকারে মেটাতে সমর্থ হয়েছিল” (দাশগুপ্ত: ১৯৮৬: ২৭১)। ১৯১৭ সালে স্যাডলার তার কমিশনে মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকের পেশাগত শিক্ষা ও শিক্ষা গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এর ফলশ্রুতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গুরুতে প্রতিষ্ঠিত বিভাগগুলোর একটি ছিল দর্শন ও শিক্ষা বিভাগ। অন্যদিকে ১৯৪০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষক শিক্ষণ বিভাগ স্থাপিত হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিভিন্ন ধারা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে:

  1. ক. প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  2. খ. মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  3. গ. কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  4. ঘ. শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  5. ঙ. উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  6. চ. মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  7. বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক প্রশিক্ষণ

এই সাতটি ধারায় শিক্ষক প্রশিক্ষণের দায়িত্ব ভিন্ন ভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের ওপর ন্যস্ত রয়েছে। নিচে একটি পরিসংখ্যানিক চিত্র তুলে ধরা হলো:

  1. প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট (পিটিআই): সরকারি ৫৩ টি, বেসরকারি ১টি, মোট ৫৪
  2. টিচার্স ট্রেনিং কলেজ: সরকারি ১৪ টি, বেসরকারি ১১৮ টি, মোট ১৩২ টি
  3. বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ০১ ০০ ০১
  4. শিক্ষা ও গবেষনা ইন্সটিটিউট (আইইআর) ০৩ ০০ ০২
  5. টেকনিক্যাল শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ০১ ০০ ০১
  6. ভোকেশনাল শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ০১ ০০ ০১
  7. শারীরিক শিক্ষা কলেজ ০২ ২৫ ২৭
  8. উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ০৫ ০০ ০৫
  9. মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ০১ ০০ ০১
  10. বিশেষ শিক্ষা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ০১ ০১ ০২

বাংলাদেশে বিভিন্ন রকম শিক্ষক প্রশিক্ষণ

বর্তমানে বাংলাদেশে নানা ধরনের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু রয়েছে। সেগুলোর মধ্য থেকে বেশ কয়েকটি হলো—

  • বুনিয়াদি শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • সঞ্জীবনী শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • পেশাভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • চাকুরিপূর্ব শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • চাকরিকালীন শিক্ষক প্রশিক্ষণ

শিক্ষক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য

  • শিক্ষকদের শিখন-শিখানো কলাকৌশল সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা। 
  • শিক্ষকদের পেশাগত জ্ঞান বৃদ্ধি করা এবং সময়ের সঙ্গে যুগোপযোগীকরণে সহায়তা দান।
  • শিক্ষকদের মধ্যে ব্যক্তিত্ব, উদ্ভাবনী শক্তি বৃদ্ধি এবং নেতৃত্বের গুণাবলী জাগ্রত করা। 
  • শিক্ষণের জন্য আধুনিক উপকরণ ব্যবহার সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন ও ব্যবহারে উৎসাহিত করা।
  • নতুন নতুন শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন এবং ব্যবহারে উৎসাহিত করা। 
  • সমাজের সকল ধর্ম, বর্ণ জাতিসত্ত্বা, আর্থ সামাজিক শ্রেণির শিক্ষার্থীকে সমান সুযোগ দিয়ে পাঠদানে উৎসাহিত করা।
  • দায়িত্ব ও কর্তব্য সচেতন থেকে কার্য-সম্পাদনের জন্য শিক্ষকদের উৎসাহিত করা।
  • গবেষণা কাজে অংশগ্রহণের জন্য আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি এবং উৎসাহিত করা।

শিক্ষকদের মর্যাদা

সামাজিক বাস্তবতা সামনে রেখে সকল স্তরের ও ধারার শিক্ষকের মর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা এবং দায়-দায়িত্বের বিষয় গভীরভাবে বিবেচনা করে তা পুনবিন্যাসের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ বিষয়টির দুটি বিশেষ দিক রয়েছে:

  • শিক্ষকদের মর্যাদা ও সুবিধা: শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা শুধুমাত্র সুবিন্নস্ত বাক্য গাথার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে প্রকৃত অর্থে তাদের সামাজিক মর্যাদা দেওয়া না হলে শিক্ষার মানোনড়বয়ন করা সম্ভব নয়। সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষকদের আত্মপ্রত্যয়ী, কর্মদক্ষ ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এক একজন সফল অবদানকারী হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। এজন্য শিক্ষকদের দেশ বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া, শিক্ষা খাতকে শক্তিশালী করার জন্য প্রাপ্ত বৈদেশিক বৃত্তি ও প্রশিক্ষণের সুযোগ শিক্ষকদের দেওয়া হবে। আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকল স্তরের শিক্ষকদের জন্য পৃক বেতন কাঠামো প্রণেয়ন করা হবে।
  • প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সকল স্তরের শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দক্ষতা, মর্যাদা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণ জরুরি। তাদের দক্ষতা ও দায়বদ্ধতা মূল্যায়ন অব্যাহত থাকবে।
  • মহিলা শিক্ষকদের চাকুরিতে নিয়োগসহ কোনো ক্ষেত্রেই বৈষম্য রাখা হবে না। সমযোগ্যতা সম্পন্ন মহিলাদের বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
  • শিক্ষার সকল স্তরে শিক্ষকদের পদোনড়বতির ক্ষেত্রে জেষ্ঠ্যতা এবং শিক্ষার সকল পর্যায়ে তাদের শিক্ষকতার মান বিবেচনায় আনা হবে। সে জন্য শিক্ষার মান নির্ণয় করার পদ্ধতি নির্ধারণ করা হবে।
  • শিক্ষা ক্ষেত্রে ও সমাজে বিশেষ অবদান, মৌলিক রচনা ও প্রকাশনার জন্য শিক্ষকদের সম্মানিত ও উৎসাহিত করা হবে।
  • মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নির্বাচিত শিক্ষকদের শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদায়ন করা হবে এবং তাদের পদোন্নতির সুযোগ থাকবে।
  • পেশাগত আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপসমূহ সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত হবে এবং বিধি সম্মতভাবে প্রয়োগ করা হবে।

শিক্ষকের দায়িত্ব

  • বিদ্যালয় ও সমাজের মধ্যে উন্নত পরিবেশ ও সংহতি সাধন করা;
  • শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালনা করা;
  • সমাজের সক্রিয় ক্রিয়াশীল সদস্য হওয়ার জন্য পরিপূর্ণ আত্মোপলদ্ধিবোধ অর্জনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সহায়তা করা;
  • গতিশীল ও সদ্য পরিবর্তনশীল সমাজের সাথে সামঞ্জস্য বিধানে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা;
  • শিক্ষার্থী ও সমাজের নিকট নিজেকে পেশাজীবি শিক্ষকের ভূমিকা আদর্শ (Role Model) হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা;
  • শিক্ষার্থীদের দৈহিক সুস্থতার নিশ্চয়তা বিধানে পরামর্শ দান করা;
  • পেশাগত জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির যুগোপযোগী করা সহ অব্যাহতভাবে আত্ম-উন্নয়ন সাধন করা;
  • শিখন পরিবেশ ও সম্পদের ফলপ্রসূ ব্যবস্থাপনা করা;
  • বিদ্যালয় শিক্ষাক্রমের সাথে সমাজের চাহিদার সম্পর্ক স্থাপনে দক্ষ হওয়া;
  • বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি নির্বাচন ও ব্যবহারে দক্ষ হওয়া;
  • মূল্যায়ন পদ্ধতির কলাকৌশল অনুশীলন ও দক্ষ হওয়া;
  • বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতি প্রয়োগ দক্ষ হওয়া এবং
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক নির্দেশনা ও যাবতীয় কার্যাদির সুচারুরূপে সম্পন্ন করা।

উপসংহার

উন্নত শিক্ষার জন্য প্রয়োজন উন্নত শিক্ষক। উন্নত শিক্ষক পাওয়ার জন্য প্রয়োজন উচ্চ মানসম্পন্ন চাকুরি-পূর্ব শিক্ষক শিক্ষা কার্যক্রম। এ ছাড়াও নিযুক্তি লাভের পর শিক্ষকদের পেশাগত জ্ঞান, দক্ষতা ও সচেতনতা অব্যাহত বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

উৎস: বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষামন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত শিক্ষক মডিউল ও বেশ কিছু ওয়বসাইট।

[উডের ডেসপ্যাচ সম্পর্কে পড়তে ক্লিক করুন]

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

শিক্ষক প্রশিক্ষণ: শিক্ষক প্রশিক্ষণের ধারণা, পটভূমি ও ইতিহাস, ধরন, উদ্দেশ্য এবং শিক্ষকের মর্যাদা ও দায়িত্ব

প্রকাশ: ০১:৫৪:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ এপ্রিল ২০২২

সুশিক্ষা ও মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে মানসম্পন্ন শিক্ষক। শিক্ষকের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য একদিকে প্রয়োজন বিজ্ঞানসম্মত ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করা, অন্যদিকে প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষা। তাই চাহিদা ভিত্তিক যুগোপযোগী শিক্ষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধন করা।

প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণের ধারণা

যে-কোনো কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নির্দিষ্ট জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োজন হয়। সাধারণত দুটি উপায়ে আমরা জ্ঞান ও দক্ষতা লাভ করে থাকি। তার একটি হলো শিক্ষা আর অন্যটি প্রশিক্ষণ। শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। কিন্তু জীবনের প্রয়োজনে স্বল্প পরিসরে এবং স্বল্প সময়ের জন্য জ্ঞান ও দক্ষতা সরবরাহের জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তা-ই প্রশিক্ষণ।

Dale S. Beach প্রশিক্ষণের যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা হলো, প্রশিক্ষণ এমন সংগঠিত পদ্ধতি যার মাধ্যমে ব্যক্তির নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করে। সুতরাং প্রশিক্ষণ বলতে বোঝায় যে কোনও প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের নির্দিষ্ট কাজ এবং সংস্থার প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা, দক্ষতা এবং মনোভাব অর্জন এবং প্রয়োগের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হিসাবে পরিচালিত শিক্ষাদান এবং শেখার কার্যক্রমগুলি বোঝায়। জরুরি কোনো বিষয়ে তাৎক্ষণিক দক্ষতা সরবরাহের প্রয়োজন হলেও প্রশিক্ষণ দরকার হয়।

প্রশিক্ষণ হচ্ছে কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা সরবরাহের জন্য স্বল্পকালীন আয়োজন। শিক্ষকতা পেশার জন্য প্রয়োজনীয় সুনির্দিষ্ট কোনো ধারণা বা দক্ষতা সরবরাহের জন্য স্বল্পকালীন আয়োজনই হচ্ছে শিক্ষক প্রশিক্ষণ। শিক্ষক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য হলো শিক্ষক যেন আবশ্যক শিক্ষণ দক্ষতাগুলো অর্জন করতে পারেন তাতে সমর্থ করে তোলা।

জাতীয় জীবনে উপযুক্ত শিক্ষকের ভূমিকা অত্যপূ গুরুত্বপূর্ণ। যে-কোনো শিক্ষাব্যবস্থার গুণগত উৎকর্ষ আনয়ন শিক্ষকের সুষ্ঠু পেশাগত শিক্ষার উপর নির্ভরশীল। শিক্ষকতা পেশা অন্যান্য পেশা থেকে ভিন্ন, কারণ অন্যান্য পেশায় ঘাটতি থাকলে তা কাটিয়ে উঠা যায়। কিন্তু শিক্ষকতা পেশায় ঘাটতি থাকলে তা দারুণভাবে শিক্ষার্থীর উপর প্রভাব ফেলে। ফলে জাতীয় ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তা আর পূরণ করা যায় না। এ ছাড়া শিক্ষার পরিমাণ ও গুণগত মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন এ কথা আজ সর্বজন স্বীকৃত। একজন শিক্ষককে তার নিজের বিষয়ে উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেই চলবেনা। সে সঙ্গে পাঠ্য বিষয়সমূহ কিভাবে শিখাতে হবে সে বিষয়ে তাকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। তাঁকে শিক্ষা বিষয়ক নিয়ম প্রক্রিয়া, শিক্ষাতত্ত্ব সম্পর্কিত ট্রেনিং, শিক্ষা ও শিশু মনোবিজ্ঞান, শিক্ষাদানের আধুনিক পদ্ধতি ও মূল্যায়ন কৌশল জানতে হবে।

উপর্যুক্ত শিক্ষা বিষয়ক জ্ঞান অর্জনের জন্যই প্রশিক্ষণ। এই প্রশিক্ষণ জ্ঞানের বহুমুখী পরিধি বাড়ায়। বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা ও কৌশল অর্জনে সহায়তা করে এবং সর্বোপরি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ঘটায়। পরিণামে পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে দুর্দমনীয় প্রেষণা জাগায়। প্রশিক্ষণ এক ধরনের শিখন প্রক্রিয়া যা অর্জিত জ্ঞানকে প্রসারিত করে, অনুশীলনের মাধ্যমে পরিপক্বতা আনয়ন করে, দক্ষতাকে শাণিত করে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন গঠিয়ে বাস্তবমুখি পরিবর্তন আনয়ন করে ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়করণের নিরপূর প্রচেষ্টা চালানোর

শিক্ষক প্রশিক্ষণের পটভূমি ও ইতিহাস

শিক্ষক প্রশিক্ষণের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, এটি বেশ প্রাচীন। ১৬৭২ সালে ফ্রান্সের পাদার ডিমিয়া লায়ন্স সর্বপ্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় নেপোলিয়ন ১৮০৮ সালে শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য সুপিরিয়র নর্মাল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ১৮২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে, ১৮৩৬ সালে যুক্তরাজ্যে, ১৮৪৬ সালে নেদারল্যান্ডে শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। কালক্রমে বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রে শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিভিন্ন কার্যক্রমের সূচনা হয় এবং বিভিন্ন পরিসরে বিস্তার লাভ করে।

সাধারণভাবে প্রশিক্ষণ বলতে বুঝায় অংশগ্রহণকারীদের কর্মকেন্দ্রিক জ্ঞান, দক্ষতা ও আচরণ উন্নয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত সুসংগঠিত কার্যক্রমকে। প্রশিক্ষণের অন্যতম উদ্দেশ্য হল- কোনো নির্ধারিত বিষয়ের উপর জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়ন। প্রশিক্ষণ বলতে এমন কিছু কার্যক্রমকে বুঝায় যার মাধ্যমে পূর্ব নির্ধারিত এবং প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করা যায়। শাব্দিক অর্থে হাতে কলমে শিক্ষাই হল প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ পেশা উন্নয়নের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এজন্য বলা হয়— ‘Education: for the life, training for a particular profession. অর্থাৎ জীবন গড়ার জন্য শিক্ষা আর বিশেষ কোনো পেশার জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণ।

সুপরিকল্পিত শিক্ষাক্রম, যোগ্য শিক্ষক এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশে উপর শিক্ষার গুণগতমান নির্ভরশীল। এই উপাদানগুলোর মধ্যে শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যোগ্য শিক্ষক হওয়ার জন্য আবশ্যক উপাদানগুলো হলো—

  • পাঠদানের বিষয়বস্তু ভালোভাবে জানা
  • শিক্ষা বিজ্ঞানের জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন
  • শিক্ষাদানের মন মানিসকতা নিজের মধ্যে গড়ে তোলা।

এই আবশ্যক উপাদানগুলো পূরণ করতে পারলেই শিক্ষক নিজের বিষয়বস্তু পাঠদানে পারদর্শী হয়ে ওঠেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টিতে, জ্ঞান লাভে ও দক্ষতা অর্জনে উদ্বুদ্ধ করতে এবং আচরণে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হন। এই গুণাবলি অর্জনের জন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সর্বজনস্বীকৃত। শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালুরয়েছে। যেমন: বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ, সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণ, বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ, চাকরি পুর্বকালীন প্রশিক্ষণ, চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। শিক্ষক প্রশিক্ষণকে এখন ‘শিক্ষক শিক্ষা’(Teacher Education) নামেও অভিহিত করা হয়।

ভারত উপমহাদেশে বৈদিক বা আর্যশিক্ষা, বৌদ্ধ শিক্ষা, মুসলিম শিক্ষা নামে বিভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল। 

সকল শিক্ষা দেশীয় শিক্ষা নামে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশদের দ্বারা এই উপমহাদেশের ক্ষমতা দখলের পরও বহুদিন পর্যন্ত ফার্সি ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা নির্ভর দেশীয় শিক্ষা প্রচলিত ছিল।

১৮৩৫ সালে মেকলের মিনিউট এর ফলে উপমহাদেশে পাশ্চাত্য প্রভাবিত শিক্ষা প্রবর্তনের সূচন হয়। সেই সময় থেকেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা প্রভৃতি স্তরভিত্তিক শিক্ষার সূচনা ঘটে।

১৮৫৪ সালে উডের ডেপ্যাচে সর্বপ্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।  বিদ্যালয়সমূহের জন্য যোগ্য ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের প্রয়োজন মেটাবার দিকেও ডেসপ্যাচ আলোকপাত করে। সে সময় ইংল্যান্ডে নরমাল ও মডেল স্কুল (Normal and Model School) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণদানের ব্যবস্থা করা হতো। অনুরূপ নরমাল স্কুল প্রত্যেক প্রদেশে প্রতিষ্ঠার জন্য ডেসপ্যাচের প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়। এ বিষয়ে ডেসপ্যাচে ইংল্যান্ডে প্রচলিত একটি জনপ্রিয় ‘Prcctice’ ভারত উপমহাদেশে প্রচলন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই ‘Practice’ হচ্ছে শিক্ষকতা পেশায় উপযুক্ত ব্যক্তিদের নরমাল স্কুলে স্টাইপেন্ডসহ প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা এবং প্রশিক্ষণ শেষে সনদ প্রদান করা এবং চাকরিতে নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

শুরুতে উপমহাদেশে শিক্ষক শিখন বলতে শিক্ষণে পারদর্শিতা অর্জন না বুঝিয়ে সাধারণ বিষয়, যেমন: বীজগণিত, জ্যামিতি, জ্যোতিবিদ্যা ও ইতিহাস জ্ঞান লাভ বুঝাত। ১৮৫৭ সালে ঢাকায় একটি নরমাল স্কুল স্থাপিত হয়। 

পরবর্তী কালে ১৮৬৯ এ ১৮৮২ সালে যথাক্রমে কুমিল্লা ও রংপুরে আরো দুটি নরমাল স্কুল স্থাপিত হয়। কুমিল্লাস্থ নরমাল স্কুলটি ১৮৮৫ সালে চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত হয। ১৮৮২ সালে হান্টার কমিশনে মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতা করার জন্য গ্রাজুয়েটদের এক বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণের সুপারিশ করে। ১৯০৮ সালে কলকাতায় ডেবিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজ এবং ১৯০৯ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ স্থাপিত হয়। মি. ডব্লিউ ই. গ্রিফিথ ছিলেন ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ। অন্যদিকে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন মি. ইভান ই. বিস। অন্যদিকে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, এই 

দুইটি কলেজই বিংশ শতাব্দীর চল্লিশ দশক পর্যন্ত গোটা বাংলার শিক্ষক শিক্ষণের প্রয়োজন কোনো প্রকারে মেটাতে সমর্থ হয়েছিল” (দাশগুপ্ত: ১৯৮৬: ২৭১)। ১৯১৭ সালে স্যাডলার তার কমিশনে মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকের পেশাগত শিক্ষা ও শিক্ষা গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এর ফলশ্রুতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গুরুতে প্রতিষ্ঠিত বিভাগগুলোর একটি ছিল দর্শন ও শিক্ষা বিভাগ। অন্যদিকে ১৯৪০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষক শিক্ষণ বিভাগ স্থাপিত হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিভিন্ন ধারা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে:

  1. ক. প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  2. খ. মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  3. গ. কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  4. ঘ. শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  5. ঙ. উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  6. চ. মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  7. বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক প্রশিক্ষণ

এই সাতটি ধারায় শিক্ষক প্রশিক্ষণের দায়িত্ব ভিন্ন ভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের ওপর ন্যস্ত রয়েছে। নিচে একটি পরিসংখ্যানিক চিত্র তুলে ধরা হলো:

  1. প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট (পিটিআই): সরকারি ৫৩ টি, বেসরকারি ১টি, মোট ৫৪
  2. টিচার্স ট্রেনিং কলেজ: সরকারি ১৪ টি, বেসরকারি ১১৮ টি, মোট ১৩২ টি
  3. বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ০১ ০০ ০১
  4. শিক্ষা ও গবেষনা ইন্সটিটিউট (আইইআর) ০৩ ০০ ০২
  5. টেকনিক্যাল শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ০১ ০০ ০১
  6. ভোকেশনাল শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ০১ ০০ ০১
  7. শারীরিক শিক্ষা কলেজ ০২ ২৫ ২৭
  8. উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ০৫ ০০ ০৫
  9. মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ০১ ০০ ০১
  10. বিশেষ শিক্ষা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ০১ ০১ ০২

বাংলাদেশে বিভিন্ন রকম শিক্ষক প্রশিক্ষণ

বর্তমানে বাংলাদেশে নানা ধরনের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু রয়েছে। সেগুলোর মধ্য থেকে বেশ কয়েকটি হলো—

  • বুনিয়াদি শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • সঞ্জীবনী শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • পেশাভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • চাকুরিপূর্ব শিক্ষক প্রশিক্ষণ
  • চাকরিকালীন শিক্ষক প্রশিক্ষণ

শিক্ষক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য

  • শিক্ষকদের শিখন-শিখানো কলাকৌশল সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা। 
  • শিক্ষকদের পেশাগত জ্ঞান বৃদ্ধি করা এবং সময়ের সঙ্গে যুগোপযোগীকরণে সহায়তা দান।
  • শিক্ষকদের মধ্যে ব্যক্তিত্ব, উদ্ভাবনী শক্তি বৃদ্ধি এবং নেতৃত্বের গুণাবলী জাগ্রত করা। 
  • শিক্ষণের জন্য আধুনিক উপকরণ ব্যবহার সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন ও ব্যবহারে উৎসাহিত করা।
  • নতুন নতুন শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন এবং ব্যবহারে উৎসাহিত করা। 
  • সমাজের সকল ধর্ম, বর্ণ জাতিসত্ত্বা, আর্থ সামাজিক শ্রেণির শিক্ষার্থীকে সমান সুযোগ দিয়ে পাঠদানে উৎসাহিত করা।
  • দায়িত্ব ও কর্তব্য সচেতন থেকে কার্য-সম্পাদনের জন্য শিক্ষকদের উৎসাহিত করা।
  • গবেষণা কাজে অংশগ্রহণের জন্য আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি এবং উৎসাহিত করা।

শিক্ষকদের মর্যাদা

সামাজিক বাস্তবতা সামনে রেখে সকল স্তরের ও ধারার শিক্ষকের মর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা এবং দায়-দায়িত্বের বিষয় গভীরভাবে বিবেচনা করে তা পুনবিন্যাসের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ বিষয়টির দুটি বিশেষ দিক রয়েছে:

  • শিক্ষকদের মর্যাদা ও সুবিধা: শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা শুধুমাত্র সুবিন্নস্ত বাক্য গাথার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে প্রকৃত অর্থে তাদের সামাজিক মর্যাদা দেওয়া না হলে শিক্ষার মানোনড়বয়ন করা সম্ভব নয়। সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষকদের আত্মপ্রত্যয়ী, কর্মদক্ষ ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এক একজন সফল অবদানকারী হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। এজন্য শিক্ষকদের দেশ বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া, শিক্ষা খাতকে শক্তিশালী করার জন্য প্রাপ্ত বৈদেশিক বৃত্তি ও প্রশিক্ষণের সুযোগ শিক্ষকদের দেওয়া হবে। আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকল স্তরের শিক্ষকদের জন্য পৃক বেতন কাঠামো প্রণেয়ন করা হবে।
  • প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সকল স্তরের শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দক্ষতা, মর্যাদা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণ জরুরি। তাদের দক্ষতা ও দায়বদ্ধতা মূল্যায়ন অব্যাহত থাকবে।
  • মহিলা শিক্ষকদের চাকুরিতে নিয়োগসহ কোনো ক্ষেত্রেই বৈষম্য রাখা হবে না। সমযোগ্যতা সম্পন্ন মহিলাদের বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
  • শিক্ষার সকল স্তরে শিক্ষকদের পদোনড়বতির ক্ষেত্রে জেষ্ঠ্যতা এবং শিক্ষার সকল পর্যায়ে তাদের শিক্ষকতার মান বিবেচনায় আনা হবে। সে জন্য শিক্ষার মান নির্ণয় করার পদ্ধতি নির্ধারণ করা হবে।
  • শিক্ষা ক্ষেত্রে ও সমাজে বিশেষ অবদান, মৌলিক রচনা ও প্রকাশনার জন্য শিক্ষকদের সম্মানিত ও উৎসাহিত করা হবে।
  • মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নির্বাচিত শিক্ষকদের শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদায়ন করা হবে এবং তাদের পদোন্নতির সুযোগ থাকবে।
  • পেশাগত আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপসমূহ সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত হবে এবং বিধি সম্মতভাবে প্রয়োগ করা হবে।

শিক্ষকের দায়িত্ব

  • বিদ্যালয় ও সমাজের মধ্যে উন্নত পরিবেশ ও সংহতি সাধন করা;
  • শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালনা করা;
  • সমাজের সক্রিয় ক্রিয়াশীল সদস্য হওয়ার জন্য পরিপূর্ণ আত্মোপলদ্ধিবোধ অর্জনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সহায়তা করা;
  • গতিশীল ও সদ্য পরিবর্তনশীল সমাজের সাথে সামঞ্জস্য বিধানে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা;
  • শিক্ষার্থী ও সমাজের নিকট নিজেকে পেশাজীবি শিক্ষকের ভূমিকা আদর্শ (Role Model) হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা;
  • শিক্ষার্থীদের দৈহিক সুস্থতার নিশ্চয়তা বিধানে পরামর্শ দান করা;
  • পেশাগত জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির যুগোপযোগী করা সহ অব্যাহতভাবে আত্ম-উন্নয়ন সাধন করা;
  • শিখন পরিবেশ ও সম্পদের ফলপ্রসূ ব্যবস্থাপনা করা;
  • বিদ্যালয় শিক্ষাক্রমের সাথে সমাজের চাহিদার সম্পর্ক স্থাপনে দক্ষ হওয়া;
  • বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি নির্বাচন ও ব্যবহারে দক্ষ হওয়া;
  • মূল্যায়ন পদ্ধতির কলাকৌশল অনুশীলন ও দক্ষ হওয়া;
  • বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতি প্রয়োগ দক্ষ হওয়া এবং
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক নির্দেশনা ও যাবতীয় কার্যাদির সুচারুরূপে সম্পন্ন করা।

উপসংহার

উন্নত শিক্ষার জন্য প্রয়োজন উন্নত শিক্ষক। উন্নত শিক্ষক পাওয়ার জন্য প্রয়োজন উচ্চ মানসম্পন্ন চাকুরি-পূর্ব শিক্ষক শিক্ষা কার্যক্রম। এ ছাড়াও নিযুক্তি লাভের পর শিক্ষকদের পেশাগত জ্ঞান, দক্ষতা ও সচেতনতা অব্যাহত বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

উৎস: বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষামন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত শিক্ষক মডিউল ও বেশ কিছু ওয়বসাইট।

[উডের ডেসপ্যাচ সম্পর্কে পড়তে ক্লিক করুন]