০৫:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও পরিচিতি

ইশরাত ফেরদাউস
  • প্রকাশ: ০৯:৫০:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১
  • / ৩৪২৮ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে আসা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা বিদ্যায়তন সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা। সারা বছরই বিভিন্ন শিক্ষা ও সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম এখানে পরিচালিত হয়। শতবর্ষী এ কলেজটি শিক্ষক প্রশিক্ষণের বহুমাত্রিক কেন্দ্র। জেনে নেওয়া যাক দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ঐতিহ্যবাহী ঢাকা টিটিসির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও পরিচিতি

প্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং জন ব্যাপ্টিস্ট ডেলা সালে

শিক্ষক প্রশিক্ষণের ইতিহাস সম্পর্কে খোঁজ নিলে দেখা যায় যে, ১৬৮৪ সালে ব্রাদার্স অব দ্য ক্রিশ্চিয়ান্স স্কুলস প্রতিষ্ঠা করেন জন ব্যাপটিস্ট ডেলা সালে যেখানে গরিব ছেলেদের শিক্ষাদান করা হতো। সেখানে যারা শিক্ষাদানে  নিয়োজিত ছিলেন তাঁদের প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণও দেওয়া হতো। ক্যাথোলিক সন্ন্যাসী জন ব্যাপটিস্টকে বলা হয়ে থাকে শিক্ষক প্রশিক্ষণের পাইওনিয়ার। পরবর্তিতে তিনি ১৭২৫ সালে শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য এখানে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন। কেউ কেউ মনে করেন শিক্ষক প্রশিক্ষণের আনুষ্ঠানিক রুপ লাভ করেছিল জার্মানিতে অষ্টাদশ শতাব্দীরই শুরুর দিকে। আবার কারো মতে ম্যাসাচুসেটসে নর্মাল স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে শিক্ষক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। আবার বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত একটি বইয়ে দেখা যায়, শিক্ষক প্রশিক্ষণ আনুষ্ঠানিক রূপ লাভ করে ১৬৭২ সালে পাদার ডিমিয়া লায়ন্সের দ্বারা। এটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, কোথায় সর্বপ্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণ শুরু হয়।

অবিভক্ত বাংলায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ

ব্রিটিশ আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে যখন শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তখন বিভিন্ন স্থানে ‘নর্মাল স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯০৯ সালের ৬ই জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা লাভ করে, বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা। সেই সময় অবিভক্ত বাংলার কলকাতা ও ঢাকায় দুইটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ প্রতিষ্ঠায় যে ঘটনাটি সব থেকে বেশি প্রভাব ফেলেছিল তা হলো ১৯০৬ সালের এন্ট্র্যান্স পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয়।

টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা

ঢাকার আরমানিটোলাতে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা (ঢাকা টিটিসি) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশনে মাত্র ১২ জন প্রশিক্ষণার্থী নিয়ে ১৯০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে নিয়ে এক বছরব্যাপী প্রশিক্ষণ ‘ব্যাচেলর অব টিচিং’ এবং ছয়মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ ‘লাইসেন্সিয়েট অব ট্রেনিং’ কোর্স শুরু করে যা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ১ জুলাই, ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে। প্রতিষ্ঠাকালে কলেজটির ফ্যাকাল্টিতে ছিলেন মাত্র ৬ জন সদস্য এবং অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন ইভান ই. বিস। টিটিসি ঢাকার সফলতার স্বর্ণযুগ হিসেবে ধরা হয় ১৯২০ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত। যখন ড. মাইকেল ওয়েস্ট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন, তখন টিটিসি, ঢাকা’র সুনাম সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়েছিল। শুধু বেঙ্গল নয়, ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রদেশ থেকে এখানে প্রশিক্ষণ নিতে আসতেন প্রশিক্ষণার্থীরা। আরমানিটোলা থেকে ১৯৫৬ সালে ঢাকা টিটিসিকে ধানমন্ডিতে স্থানান্তর করা হয়। কলেজটির দাপ্তরিক নাম ‘সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা’ হলেও এটি ঢাকা টিটিসি, টিটিসি ঢাকা, টিটিসিটডি, ডিটিসিডি, ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, এমনকি টিটি কলেজ নামেও ব্যাপক পরিচিত।

ঢাকা টিটিসির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবার পর ১৯২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা টিটিসি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি লাভ করে। ১৯৫৬-৫৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে ব্যাচেলর অব টিচিং প্রোগ্রামের নাম পরিবর্তন করে ব্যাচেলর অব এডুকেশন করা হয় এবং কারিকুলামেও পরিবর্তন আনা হয়। তখন ঢাকা টিটিসির অধ্যক্ষ পদাধিকার বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ডিন/পরিচালক ছিলেন। ১৯৮৮-৮৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমএড এবং ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিএড (অনার্স) প্রোগ্রাম চালু করা হয়।

সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকার অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন
সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকার অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন। ছবি: মেহেদি আকাশ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা টিটিসি

১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৩-৯৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন এবং ২০১৭ সালে এক বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন প্রোগ্রামের নতুন কারিকুলাম প্রবর্তন করা হয়। মাস্টার অব এডুকেশনের সর্বশেষ কারিকুলাম কার্যকর রয়েছে ২০১৯ সাল থেকে।

সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা’র অধ্যক্ষমণ্ডলীর নামের তালিকা ও কার্যকাল

  • ১. মি. ইভান ই. বিস (১৯০৯-১৯১৬)
  • ২. মি. এইচ. এ. স্টার্ক (১৯১৬-১৯২০)
  • ৩. ড. মাইকেল ওয়েস্ট (১৯২০-১৯৩২)
  • ৪. বাবু গুরুবন্ধু ভট্টাচার্য্য (১৯৩২-১৯৩৪)
  • ৫. রায় সাহেব মনোরঞ্জন মিত্র (১৯৩৪-১৯৩৬)
  • ৬. খান বাহাদুর আব্দুর রহমান খান (১৯৩৬-১৯৩৯)
  • ৭. বাবু ক্ষেত্রপাল দাস ঘোষ (১৯৩৯-১৯৪৪)
  • ৮. বাবু ফকির দাস বানার্জী (১৯৪৫-১৯৪৬)
  • ০৯. বাবু সুরেশ চন্দ্র চক্রবর্তী (১৯৪৬-১৯৪৭)
  • ১০. জনাব আবদুর রাজ্জাক আখুনজী (১৯৪৭-১৯৪৯)
  • ১১. জনাব মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক (১৯৪৯-১৯৫১)
  • ১২. জনাব সলমন চৌধুরী (১৯৫১-১৯৫২)
  • ১৩. জনাব মুহাম্মদ ওসমান গনি (১৯৫২-১৯৬৮)
  • ১৪. ড. মুহাম্মাদ নূরুল হক (১৯৬৮-১৯৭২)
  • ১৫. ড. আবুল হাশেম মুহাম্মদ করিম (১৯৭২-১৯৭৭)
  • ১৬. ড. এ.কে.এম. ওবায়েদ উল্লাহ (১৯৭৭-১৯৭৯)
  • ১৭. ড. মালিহা খাতুন (১৯৭৯-১৯৮১)
  • ১৮. প্রফেসড মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম (১৯৮১-১৯৮৩)
  • ১৯. মিসেস রাশিদা বেগম (১৯৮৪-১৯৯৫)
  • ২০. প্রফেসর ড. নুরুজ্জামান চৌধুরী (১৯৯৫-১৯৯৬)
  • ২১. প্রফেসর হাসান ওয়ায়েজ (১৯৯৬-১৯৯৬)
  • ২২. প্রফেসর ইউ.এস সাকিনা বেগম (১৯৯৬-১৯৯৭)
  • ২৩. প্রফেসর রেজিনা সুলতানা (১৯৯৭-২০০১)
  • ২৪. প্রফেসর ড. মো: ফজলুল হক (২০০১-২০০১)
  • ২৫. প্রফেসর মো: লুৎফর রহমান (২০০১-২০০১)
  • ২৬. প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (২০০২-২০০২)
  • ২৭. প্রফেসর মোহাম্মদ আলী আসগর (২০০২-২০০৩)
  • ২৮. প্রফেসর মোহাম্মদ সাইদুর রহমান (২০০৩-২০০৪)
  • ২৯. প্রফেসর মেহেরুন নেছা (২০০৪-২০০৭)
  • ৩০. জনাব এস.এম. আবু সাইদ (ভারপ্রাপ্ত) (২০০৭-২০০৭)
  • ৩১. প্রফেসর তসলিমা বেগম (২০০৭-২০০৯)
  • ৩২. জনাব এস.এম. আবু সাইদ (ভারপ্রাপ্ত) (২০০৯-২০১০)
  • ৩৩. প্রফেসর মোহাম্মদ শফিকুর রহমান (২০১০-২০১১)
  • ৩৪. জনাব এস.এম. আবু সাইদ (ভারপ্রাপ্ত) (২০১১-২০১১)
  • ৩৫. প্রফেসর দীপক কুমার নাগ (২০১১-২০৫)
  • ৩৬. জনাব সৈয়দ সাদিক জাহিদুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) (২০১৫-২০১৫)
  • ৩৭. প্রফেসর স্বপন কুমার ঢালী (২০১৫-২০১৬)
  • ৩৮. জনাব মমতাজ সাহানারা (ভারপ্রাপ্ত) (২০১৬-২০১৭)
  • ৩৯. প্রফেসর কানিজ সৈয়েদা বেন্তে সাবাহ্ (২০১৭-২০১৯)
  • ৪০.জনাব মমতাজ সাহানারা (ভারপ্রাপ্ত) (২০১৯-২০২১)
  • ৪১. প্রফেসর গোলাম ফারুক (২০২১- বর্তমান)

ঢাকা টিটিসিতে চলমান প্রোগ্রামসমূহ

  • ১. এক বছর মেয়াদী প্রফেশনাল ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড)
  • ২. চার বছর মেয়াদী প্রফেশনাল ব্যাচেলর অব এডুকেশন (অনার্স)/বিএড (অনার্স)
  • ৩. এক বছর মেয়াদী মাস্টার অব এডুকেশন (এমএড)

ঢাকা টিটিসিতে ভর্তি পদ্ধতি ও যোগ্যতা

১. ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড)

ক) শিক্ষকদের ক্ষেত্রে

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়ে এক বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড) প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারে। এক্ষেত্রে ডেপুটেশন প্রাপ্তির অফিস আদেশ, শিক্ষকতার প্রত্যয়ন পত্র, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সনদ ও নম্বরপত্র, আইডি নং, সহ নোটিশে শর্তাবলি মেনে আবেদন ফরম পূরন করতে হবে।

খ) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে

যেকোনো ইউজিসি মঞ্জুরীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (পাস কোর্স ৩ বছর মেয়াদী) অথবা ৪ বছর মেয়াদী স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় সনাতন পদ্ধতিতে ৪৫% গ্রেডিং মার্ক অথবা সিজিপিএ ২.২৫ থাকতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্তানুযায়ী নির্ধারিত পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

২. ব্যাচেলর অব এডুকেশন (অনার্স)

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে ভর্তি পদ্ধতি সম্পন্ন হয়ে থাকে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ২.৫০ করে মোট ৫.০০ হলে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক শাখার যেকোনো শিক্ষার্থী বিএড অনার্স কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারে। জিপিএ এর মান অনুযায়ী ম্যারিট লিস্ট প্রদান করা হয়।

৩. মাস্টার অব এডুকেশন (এমএড)

চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন (অনার্স) অথবা এক বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন অথবা ব্যাচেলর অব মাদরাসা এডুকেশন পরীক্ষায় সনাতন পদ্ধতিতে ন্যূনতম ৪৫% নম্বর অথবা গ্রেডিং ও ক্রেডিট পদ্ধতিতে ন্যূনতম সিজিপিএ/জিপিএ ২.২৫ পেতে হবে।

সান অ্যান্ড সৌল, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ঢাকার মসকট
সান অ্যান্ড সৌল, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ঢাকার মসকট যেটির আদলে ডিজাইন করা হয় এ প্রতিষ্ঠানের লোগো। ছবি: মেহেদি আকাশ।

বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রজেক্ট 

  • শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের টিকিউআই-২ প্রকল্প (যা ইংরেজি বিষয়ে সেন্টার অব এক্সেলেন্সির মর্যাদা প্রাপ্ত)
  • জাতীয় পর্যায় শিক্ষা ক্ষেত্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রশিক্ষণসমূহ যেমন: অ্যাডভান্সড আইসিটি মাস্টার ট্রেইনার, অটিজম সচেতনতা বিষয়ক মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণ, লাইফ স্কিল এডুকেশন বিষয়ক মাস্টার ট্রেইনার ট্রেনিং এখানে হয়ে থাকে।
  • জাতীয় পর্যায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণী ফোরাম, যেমন: শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, এনসিটিবি’র পুস্তক রচনা, শিক্ষক নির্দেশকা প্রণয়ন, মহামাণ্য রাষ্ট্রপতির ভাষণ অনুবাদ ইত্যাদি।
  • তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায় এ কলেজের অবদান অনস্বীকার্য। যেমন: সরকারের শিক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইটের ইন্টারফেস তৈরি, ইন্টারএক্টিভ বুক তৈরি, মাধ্যমিক স্তরের ই-লার্নিং ম্যাটেরিয়ালের স্ক্রিপ্ট রচনা ইত্যাদি।
  • ফ্লিপড ক্লাসরুম ধারণা বিষয়ক উদ্ভাবনী প্রকল্প যা বাংলাদেশে ঢাকা টিটিসি প্রথম প্রচলন করে।
  • সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা’র তত্বাবধানে সর্বপ্রথম ইন্টারেক্টিভ ডিজিটাল টেক্সটবুক প্রনয়ণের স্ক্রিপ্ট রচনা হয় যা পরবর্তিতে এনসিটিবি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। 

শতবছরের ঐতিহ্যবাহী এই কলেজ সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করছে শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ শাখার কার্যক্রম সমূহ। কামনা করছি ঢাকা টিটিসি একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নিবে।

শেয়ার করুন

2 thoughts on “ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও পরিচিতি

  1. সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানলাম।

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

ইশরাত ফেরদাউস

শিক্ষার্থী, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা এবং বিশ্লেষণ'র কন্ট্রিবিউটর।

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও পরিচিতি

প্রকাশ: ০৯:৫০:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১

শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে আসা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা বিদ্যায়তন সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা। সারা বছরই বিভিন্ন শিক্ষা ও সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম এখানে পরিচালিত হয়। শতবর্ষী এ কলেজটি শিক্ষক প্রশিক্ষণের বহুমাত্রিক কেন্দ্র। জেনে নেওয়া যাক দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ঐতিহ্যবাহী ঢাকা টিটিসির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও পরিচিতি

সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকার লোগো (সান অ্যান্ড সৌল)

প্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং জন ব্যাপ্টিস্ট ডেলা সালে

শিক্ষক প্রশিক্ষণের ইতিহাস সম্পর্কে খোঁজ নিলে দেখা যায় যে, ১৬৮৪ সালে ব্রাদার্স অব দ্য ক্রিশ্চিয়ান্স স্কুলস প্রতিষ্ঠা করেন জন ব্যাপটিস্ট ডেলা সালে যেখানে গরিব ছেলেদের শিক্ষাদান করা হতো। সেখানে যারা শিক্ষাদানে  নিয়োজিত ছিলেন তাঁদের প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণও দেওয়া হতো। ক্যাথোলিক সন্ন্যাসী জন ব্যাপটিস্টকে বলা হয়ে থাকে শিক্ষক প্রশিক্ষণের পাইওনিয়ার। পরবর্তিতে তিনি ১৭২৫ সালে শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য এখানে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন। কেউ কেউ মনে করেন শিক্ষক প্রশিক্ষণের আনুষ্ঠানিক রুপ লাভ করেছিল জার্মানিতে অষ্টাদশ শতাব্দীরই শুরুর দিকে। আবার কারো মতে ম্যাসাচুসেটসে নর্মাল স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে শিক্ষক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। আবার বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত একটি বইয়ে দেখা যায়, শিক্ষক প্রশিক্ষণ আনুষ্ঠানিক রূপ লাভ করে ১৬৭২ সালে পাদার ডিমিয়া লায়ন্সের দ্বারা। এটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, কোথায় সর্বপ্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণ শুরু হয়।

অবিভক্ত বাংলায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ

ব্রিটিশ আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে যখন শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তখন বিভিন্ন স্থানে ‘নর্মাল স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯০৯ সালের ৬ই জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা লাভ করে, বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা। সেই সময় অবিভক্ত বাংলার কলকাতা ও ঢাকায় দুইটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ প্রতিষ্ঠায় যে ঘটনাটি সব থেকে বেশি প্রভাব ফেলেছিল তা হলো ১৯০৬ সালের এন্ট্র্যান্স পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয়।

টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা

ঢাকার আরমানিটোলাতে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা (ঢাকা টিটিসি) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশনে মাত্র ১২ জন প্রশিক্ষণার্থী নিয়ে ১৯০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে নিয়ে এক বছরব্যাপী প্রশিক্ষণ ‘ব্যাচেলর অব টিচিং’ এবং ছয়মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ ‘লাইসেন্সিয়েট অব ট্রেনিং’ কোর্স শুরু করে যা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ১ জুলাই, ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে। প্রতিষ্ঠাকালে কলেজটির ফ্যাকাল্টিতে ছিলেন মাত্র ৬ জন সদস্য এবং অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন ইভান ই. বিস। টিটিসি ঢাকার সফলতার স্বর্ণযুগ হিসেবে ধরা হয় ১৯২০ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত। যখন ড. মাইকেল ওয়েস্ট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন, তখন টিটিসি, ঢাকা’র সুনাম সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়েছিল। শুধু বেঙ্গল নয়, ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রদেশ থেকে এখানে প্রশিক্ষণ নিতে আসতেন প্রশিক্ষণার্থীরা। আরমানিটোলা থেকে ১৯৫৬ সালে ঢাকা টিটিসিকে ধানমন্ডিতে স্থানান্তর করা হয়। কলেজটির দাপ্তরিক নাম ‘সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা’ হলেও এটি ঢাকা টিটিসি, টিটিসি ঢাকা, টিটিসিটডি, ডিটিসিডি, ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, এমনকি টিটি কলেজ নামেও ব্যাপক পরিচিত।

ঢাকা টিটিসির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবার পর ১৯২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা টিটিসি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি লাভ করে। ১৯৫৬-৫৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে ব্যাচেলর অব টিচিং প্রোগ্রামের নাম পরিবর্তন করে ব্যাচেলর অব এডুকেশন করা হয় এবং কারিকুলামেও পরিবর্তন আনা হয়। তখন ঢাকা টিটিসির অধ্যক্ষ পদাধিকার বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ডিন/পরিচালক ছিলেন। ১৯৮৮-৮৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমএড এবং ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিএড (অনার্স) প্রোগ্রাম চালু করা হয়।

সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকার অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন
সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকার অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন। ছবি: মেহেদি আকাশ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা টিটিসি

১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৩-৯৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন এবং ২০১৭ সালে এক বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন প্রোগ্রামের নতুন কারিকুলাম প্রবর্তন করা হয়। মাস্টার অব এডুকেশনের সর্বশেষ কারিকুলাম কার্যকর রয়েছে ২০১৯ সাল থেকে।

সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা’র অধ্যক্ষমণ্ডলীর নামের তালিকা ও কার্যকাল

  • ১. মি. ইভান ই. বিস (১৯০৯-১৯১৬)
  • ২. মি. এইচ. এ. স্টার্ক (১৯১৬-১৯২০)
  • ৩. ড. মাইকেল ওয়েস্ট (১৯২০-১৯৩২)
  • ৪. বাবু গুরুবন্ধু ভট্টাচার্য্য (১৯৩২-১৯৩৪)
  • ৫. রায় সাহেব মনোরঞ্জন মিত্র (১৯৩৪-১৯৩৬)
  • ৬. খান বাহাদুর আব্দুর রহমান খান (১৯৩৬-১৯৩৯)
  • ৭. বাবু ক্ষেত্রপাল দাস ঘোষ (১৯৩৯-১৯৪৪)
  • ৮. বাবু ফকির দাস বানার্জী (১৯৪৫-১৯৪৬)
  • ০৯. বাবু সুরেশ চন্দ্র চক্রবর্তী (১৯৪৬-১৯৪৭)
  • ১০. জনাব আবদুর রাজ্জাক আখুনজী (১৯৪৭-১৯৪৯)
  • ১১. জনাব মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক (১৯৪৯-১৯৫১)
  • ১২. জনাব সলমন চৌধুরী (১৯৫১-১৯৫২)
  • ১৩. জনাব মুহাম্মদ ওসমান গনি (১৯৫২-১৯৬৮)
  • ১৪. ড. মুহাম্মাদ নূরুল হক (১৯৬৮-১৯৭২)
  • ১৫. ড. আবুল হাশেম মুহাম্মদ করিম (১৯৭২-১৯৭৭)
  • ১৬. ড. এ.কে.এম. ওবায়েদ উল্লাহ (১৯৭৭-১৯৭৯)
  • ১৭. ড. মালিহা খাতুন (১৯৭৯-১৯৮১)
  • ১৮. প্রফেসড মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম (১৯৮১-১৯৮৩)
  • ১৯. মিসেস রাশিদা বেগম (১৯৮৪-১৯৯৫)
  • ২০. প্রফেসর ড. নুরুজ্জামান চৌধুরী (১৯৯৫-১৯৯৬)
  • ২১. প্রফেসর হাসান ওয়ায়েজ (১৯৯৬-১৯৯৬)
  • ২২. প্রফেসর ইউ.এস সাকিনা বেগম (১৯৯৬-১৯৯৭)
  • ২৩. প্রফেসর রেজিনা সুলতানা (১৯৯৭-২০০১)
  • ২৪. প্রফেসর ড. মো: ফজলুল হক (২০০১-২০০১)
  • ২৫. প্রফেসর মো: লুৎফর রহমান (২০০১-২০০১)
  • ২৬. প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (২০০২-২০০২)
  • ২৭. প্রফেসর মোহাম্মদ আলী আসগর (২০০২-২০০৩)
  • ২৮. প্রফেসর মোহাম্মদ সাইদুর রহমান (২০০৩-২০০৪)
  • ২৯. প্রফেসর মেহেরুন নেছা (২০০৪-২০০৭)
  • ৩০. জনাব এস.এম. আবু সাইদ (ভারপ্রাপ্ত) (২০০৭-২০০৭)
  • ৩১. প্রফেসর তসলিমা বেগম (২০০৭-২০০৯)
  • ৩২. জনাব এস.এম. আবু সাইদ (ভারপ্রাপ্ত) (২০০৯-২০১০)
  • ৩৩. প্রফেসর মোহাম্মদ শফিকুর রহমান (২০১০-২০১১)
  • ৩৪. জনাব এস.এম. আবু সাইদ (ভারপ্রাপ্ত) (২০১১-২০১১)
  • ৩৫. প্রফেসর দীপক কুমার নাগ (২০১১-২০৫)
  • ৩৬. জনাব সৈয়দ সাদিক জাহিদুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) (২০১৫-২০১৫)
  • ৩৭. প্রফেসর স্বপন কুমার ঢালী (২০১৫-২০১৬)
  • ৩৮. জনাব মমতাজ সাহানারা (ভারপ্রাপ্ত) (২০১৬-২০১৭)
  • ৩৯. প্রফেসর কানিজ সৈয়েদা বেন্তে সাবাহ্ (২০১৭-২০১৯)
  • ৪০.জনাব মমতাজ সাহানারা (ভারপ্রাপ্ত) (২০১৯-২০২১)
  • ৪১. প্রফেসর গোলাম ফারুক (২০২১- বর্তমান)

ঢাকা টিটিসিতে চলমান প্রোগ্রামসমূহ

  • ১. এক বছর মেয়াদী প্রফেশনাল ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড)
  • ২. চার বছর মেয়াদী প্রফেশনাল ব্যাচেলর অব এডুকেশন (অনার্স)/বিএড (অনার্স)
  • ৩. এক বছর মেয়াদী মাস্টার অব এডুকেশন (এমএড)

ঢাকা টিটিসিতে ভর্তি পদ্ধতি ও যোগ্যতা

১. ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড)

ক) শিক্ষকদের ক্ষেত্রে

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়ে এক বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড) প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারে। এক্ষেত্রে ডেপুটেশন প্রাপ্তির অফিস আদেশ, শিক্ষকতার প্রত্যয়ন পত্র, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সনদ ও নম্বরপত্র, আইডি নং, সহ নোটিশে শর্তাবলি মেনে আবেদন ফরম পূরন করতে হবে।

খ) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে

যেকোনো ইউজিসি মঞ্জুরীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (পাস কোর্স ৩ বছর মেয়াদী) অথবা ৪ বছর মেয়াদী স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় সনাতন পদ্ধতিতে ৪৫% গ্রেডিং মার্ক অথবা সিজিপিএ ২.২৫ থাকতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্তানুযায়ী নির্ধারিত পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

২. ব্যাচেলর অব এডুকেশন (অনার্স)

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে ভর্তি পদ্ধতি সম্পন্ন হয়ে থাকে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ২.৫০ করে মোট ৫.০০ হলে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক শাখার যেকোনো শিক্ষার্থী বিএড অনার্স কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারে। জিপিএ এর মান অনুযায়ী ম্যারিট লিস্ট প্রদান করা হয়।

৩. মাস্টার অব এডুকেশন (এমএড)

চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন (অনার্স) অথবা এক বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব এডুকেশন অথবা ব্যাচেলর অব মাদরাসা এডুকেশন পরীক্ষায় সনাতন পদ্ধতিতে ন্যূনতম ৪৫% নম্বর অথবা গ্রেডিং ও ক্রেডিট পদ্ধতিতে ন্যূনতম সিজিপিএ/জিপিএ ২.২৫ পেতে হবে।

সান অ্যান্ড সৌল, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ঢাকার মসকট
সান অ্যান্ড সৌল, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ঢাকার মসকট যেটির আদলে ডিজাইন করা হয় এ প্রতিষ্ঠানের লোগো। ছবি: মেহেদি আকাশ।

বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রজেক্ট 

  • শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের টিকিউআই-২ প্রকল্প (যা ইংরেজি বিষয়ে সেন্টার অব এক্সেলেন্সির মর্যাদা প্রাপ্ত)
  • জাতীয় পর্যায় শিক্ষা ক্ষেত্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রশিক্ষণসমূহ যেমন: অ্যাডভান্সড আইসিটি মাস্টার ট্রেইনার, অটিজম সচেতনতা বিষয়ক মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণ, লাইফ স্কিল এডুকেশন বিষয়ক মাস্টার ট্রেইনার ট্রেনিং এখানে হয়ে থাকে।
  • জাতীয় পর্যায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণী ফোরাম, যেমন: শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, এনসিটিবি’র পুস্তক রচনা, শিক্ষক নির্দেশকা প্রণয়ন, মহামাণ্য রাষ্ট্রপতির ভাষণ অনুবাদ ইত্যাদি।
  • তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায় এ কলেজের অবদান অনস্বীকার্য। যেমন: সরকারের শিক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইটের ইন্টারফেস তৈরি, ইন্টারএক্টিভ বুক তৈরি, মাধ্যমিক স্তরের ই-লার্নিং ম্যাটেরিয়ালের স্ক্রিপ্ট রচনা ইত্যাদি।
  • ফ্লিপড ক্লাসরুম ধারণা বিষয়ক উদ্ভাবনী প্রকল্প যা বাংলাদেশে ঢাকা টিটিসি প্রথম প্রচলন করে।
  • সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা’র তত্বাবধানে সর্বপ্রথম ইন্টারেক্টিভ ডিজিটাল টেক্সটবুক প্রনয়ণের স্ক্রিপ্ট রচনা হয় যা পরবর্তিতে এনসিটিবি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। 

শতবছরের ঐতিহ্যবাহী এই কলেজ সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করছে শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ শাখার কার্যক্রম সমূহ। কামনা করছি ঢাকা টিটিসি একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নিবে।