০৭:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

পৃথিবী সৃষ্টির সর্বাধুনিক তত্ত্ব বিগ ব্যাং মডেলের ভিত্তি কী?

বিশ্লেষণ সংকলন টিম
  • প্রকাশ: ১১:৩৮:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ১৬৮২ বার পড়া হয়েছে

বিগ ব্যাং

পৃথিবী সৃষ্টির সর্বাধুনিক তত্ত্ব হলো বিগ ব্যাং থিওরি (Big Bang Theory)। বিগ ব্যাং থিওরি বা তত্বের মডেলটি আদতে দাঁড়িয়ে আছে পদার্থবিদ্যার দুইটি মূল স্তম্ভের ওপর।

বিগ ব্যাং তত্ত্ব যে দুই মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত সেগুলো হলো-

  • আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ (General Theory of Relativity)
  • সৃষ্টিতত্ত্বের নীতি (Cosmological Principle)

আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ হলো মহাকর্ষ সম্পর্কিত একটি জ্যামিতিক তত্ত্ব। এই তত্ত্ব বর্তমানে বহুল পরীক্ষিত ও সর্বজন গৃহীত।

আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্ব অনুযায়ী বস্তুর (matter) উপস্থিতি তার চার পাশের দেশকালকে (space-time) বেঁকিয়ে দেবে। বিখ্যাত পদার্থবিদ জন হুইলারের বক্তব্য‌ অনুযায়ী ‘বস্তু দেশকালকে বলে কী ভাবে বেঁকাতে হয় আর দেশকাল বস্তুকে বলে কী ভাবে সরতে হয়।’

সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের প্রস্তাবনার (১৯১৬) পর, আইনস্টাইন সহ অন্যান্য বিজ্ঞানী চাইলেন এই তত্ত্ব প্রয়োগ করে আমাদের মহাবিশ্বে পদার্থসমূহ কী ভাবে বণ্টিত রয়েছে তা জানতে। খালি চোখে আকাশের দিকে তাকালে শুরুতেই যেটা ধারণা করা যায় তা হল, মহাবিশ্বের সকল বস্তু (নক্ষত্রপুঞ্জ, ছায়াপথ ইত্যাদি) ছড়িয়ে আছে সর্বত্র সমান হারে (homogeneous) এবং সমস্ত দিকে (isotropic)।

আলবার্ট আইনস্টাইন

ধরা যাক, আপনি একটা দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠের একেবারে মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে আছেন। যে দিকেই তাকান না কেন, আপনি কেবল সবুজ ঘাসই দেখতে পাবেন। কারণ মাঠের ঘাসগুলো সমস্ত দিকে সমান হারে বণ্টিত হয়ে রয়েছে। যদিও কাছ গিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন তা হলে হয়তো মাঠের মধ্যে অনেক অংশ পাওয়া যাবে যেখানে হয়তো ঘাসের ঘনত্ব কম, তলা থেকে মাটির ধূসরতা বেরিয়ে পড়েছে।

কিন্তু সামগ্রিক ভাবে, একটা বড়ো পরিমণ্ডলে মাঠের ঐ ছোটো ছোটো ঘাসহীন অংশগুলো আমাদের চোখে পড়ে না। মনে হয় মাঠের ঘাস সমস্ত দিকে সমান ভাবে বণ্টিত হয়ে রয়েছে। আমাদের মহাবিশ্বের পদার্থও, একটা বিরাট অঞ্চল হিসেবে দেখলে, ঐ একই রকম ভাবে বণ্টিত রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এটাই সৃষ্টিতত্ত্বের নীতি বা কসমোলজিকাল প্রিন্সিপাল (Cosmological Principle) নামে পরিচিত।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

পৃথিবী সৃষ্টির সর্বাধুনিক তত্ত্ব বিগ ব্যাং মডেলের ভিত্তি কী?

প্রকাশ: ১১:৩৮:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

পৃথিবী সৃষ্টির সর্বাধুনিক তত্ত্ব হলো বিগ ব্যাং থিওরি (Big Bang Theory)। বিগ ব্যাং থিওরি বা তত্বের মডেলটি আদতে দাঁড়িয়ে আছে পদার্থবিদ্যার দুইটি মূল স্তম্ভের ওপর।

বিগ ব্যাং তত্ত্ব যে দুই মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত সেগুলো হলো-

  • আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ (General Theory of Relativity)
  • সৃষ্টিতত্ত্বের নীতি (Cosmological Principle)

আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ হলো মহাকর্ষ সম্পর্কিত একটি জ্যামিতিক তত্ত্ব। এই তত্ত্ব বর্তমানে বহুল পরীক্ষিত ও সর্বজন গৃহীত।

আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্ব অনুযায়ী বস্তুর (matter) উপস্থিতি তার চার পাশের দেশকালকে (space-time) বেঁকিয়ে দেবে। বিখ্যাত পদার্থবিদ জন হুইলারের বক্তব্য‌ অনুযায়ী ‘বস্তু দেশকালকে বলে কী ভাবে বেঁকাতে হয় আর দেশকাল বস্তুকে বলে কী ভাবে সরতে হয়।’

সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের প্রস্তাবনার (১৯১৬) পর, আইনস্টাইন সহ অন্যান্য বিজ্ঞানী চাইলেন এই তত্ত্ব প্রয়োগ করে আমাদের মহাবিশ্বে পদার্থসমূহ কী ভাবে বণ্টিত রয়েছে তা জানতে। খালি চোখে আকাশের দিকে তাকালে শুরুতেই যেটা ধারণা করা যায় তা হল, মহাবিশ্বের সকল বস্তু (নক্ষত্রপুঞ্জ, ছায়াপথ ইত্যাদি) ছড়িয়ে আছে সর্বত্র সমান হারে (homogeneous) এবং সমস্ত দিকে (isotropic)।

আলবার্ট আইনস্টাইন

ধরা যাক, আপনি একটা দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠের একেবারে মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে আছেন। যে দিকেই তাকান না কেন, আপনি কেবল সবুজ ঘাসই দেখতে পাবেন। কারণ মাঠের ঘাসগুলো সমস্ত দিকে সমান হারে বণ্টিত হয়ে রয়েছে। যদিও কাছ গিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন তা হলে হয়তো মাঠের মধ্যে অনেক অংশ পাওয়া যাবে যেখানে হয়তো ঘাসের ঘনত্ব কম, তলা থেকে মাটির ধূসরতা বেরিয়ে পড়েছে।

কিন্তু সামগ্রিক ভাবে, একটা বড়ো পরিমণ্ডলে মাঠের ঐ ছোটো ছোটো ঘাসহীন অংশগুলো আমাদের চোখে পড়ে না। মনে হয় মাঠের ঘাস সমস্ত দিকে সমান ভাবে বণ্টিত হয়ে রয়েছে। আমাদের মহাবিশ্বের পদার্থও, একটা বিরাট অঞ্চল হিসেবে দেখলে, ঐ একই রকম ভাবে বণ্টিত রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এটাই সৃষ্টিতত্ত্বের নীতি বা কসমোলজিকাল প্রিন্সিপাল (Cosmological Principle) নামে পরিচিত।