০৭:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

সমস্যা সমাধান পদ্ধতি কাকে বলে? এর কৌশল, সুবিধা, অসুবিধা, বৈশিষ্ট্য কী?

শেহনাজ ইসলাম মুক্তি
  • প্রকাশ: ০১:৫৫:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অক্টোবর ২০২১
  • / ২৫৭৭০ বার পড়া হয়েছে

সমস্যা সমাধান পদ্ধতি একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি।

বহুল ব্যবহৃত না হলেও পাঠদানের জন্য বা শিখন-শেখানো কার্যক্রমের জন্য স্বীকৃত অন্যতম পদ্ধতি হলো সমস্যা সমাধান পদ্ধতি। এখানে সমস্যা সমাধান পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতি কী?

শ্রেণিকক্ষ পাঠদানের জন্য যতগুলো পদ্ধতি রয়েছে সেগুলোর মধ্যে একটি হলো ‘সমস্যা সমাধান পদ্ধতি’ বা ‘প্রবলেম সলভিং মেথড’ (Problem Solving Method)। পাঠদান কার্যক্রমের এই সমস্যা সমাধান পদ্ধতি হলো একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি (scientific method)।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির মূল কথা ‘নির্দিষ্ট কোনো বিষয়বস্তুর সমস্যামূলক উপস্থাপনা’।

পাঠদান কার্যক্রমের যে প্রক্রিয়ায় শ্রেণিকক্ষে পাঠ সংশ্লিষ্ট কোনো সমস্যা উপস্থাপন করে তা শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক কর্তৃক সম্মিলিতভাবে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে সমাধান করার মাধ্যমে শিখনফল অর্জনের চেষ্টা করা হয় তাকে শিখন-শেখানো কার্যক্রমের সমস্যা সমাধান পদ্ধতি বলে।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির একটি উপ-পদ্ধতি হলো ‘মাইন্ড ম্যাপিং

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কিছু মৌলিক শর্ত

শিক্ষা মনোবিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়ছেন যে, ব্যক্তির আচরণ তার চিন্তনের প্রকৃতি কর্তৃক নির্ধারিত হয়; আর বিভিন্ন সমস্যা, কাজ, আচরণ বা সক্রিয়তা, চিন্তন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।

এখানে সমস্যা সমাধান পদ্ধতির কিছু শর্ত উল্লেখ করা হলো:

  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ্য বিষয়বস্তুর বিশেষ ধরনের বিন্যাস প্রয়োজন।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে বিষয়বস্তুর উপস্থাপন হবে সমস্যার আকারে কারন গতানুগতিক পদ্ধতিতে বিষয়বস্তু উপস্থাপনে শিক্ষার্থীর চিন্তন প্রক্রিয়া সক্রিয় হয় না।
  • সমস্যার আকারে বিষয়বস্তুকে উপস্থাপন করলেই শিক্ষণ হয় না। সমস্যাটি এমন হওয়া উচিত যা শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থাকে সক্রিয় করে তুলতে পারে।
  • সমস্যাটির সমাধান শিক্ষার্থীর মানসিক স্তরে সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ, কোনো প্রত্যক্ষ কর্মের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান নয়। 

কাজেই বলা যেতে পারে যে, পদ্ধতিতে পাঠ্য বিষয়বস্তুর পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে তা প্রকৃত তাৎপর্যপূর্ণই সমস্যার আকারে উপস্থাপন করা হয় তা-ই হবে সমস্যা সমাধান 

পদ্ধতি।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে অনুসরণীয় যা

সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ায় গবেষণার মতো কয়েকটি নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করে অগ্রসর হয়, যেমন-

  • ১. সমস্যা শনাক্তকরণ;
  • ২. সমস্যা বিশ্লেষণ;
  • ৩. অনুমিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ;
  • ৪. তথ্য সংগ্রহ;
  • ৫. তথ্য বিশ্লেষণ;
  • ৬. অনুমিত সিদ্ধান্ত যাচাই;
  • ৭. সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

উপর্যুক্ত সাতটি ধাপ সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ায় সবসময় প্রত্যক্ষভাবে প্রতিফলিত হয়না তবে সমাধানের চিন্তন প্রক্রিয়ায় ধাপ সাতটি পরোক্ষভাবে সর্বদাই ক্রিয়াশীল থাকে।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে ব্যবহৃত কৌশল কী কী?

সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পদ্ধতিতে যৌক্তিক উপায়ে পাঠ সংশ্লিষ্ট কোনো সমস্যার সমাধান করা হয়। শিক্ষার্থীর জন্য সমস্যা নির্বাচন করা হয় তার পূর্বজ্ঞান ও ধারণার ভিত্তিতে। তবে সমাধান আগে থেকে তাদের জানা থাকে  না। তারা তাদের ব্যক্তিগত সামর্থ্য অনুযায়ী বিভিন্ন উপায়ে সমাধানের চেষ্টা করে।

শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে আলোচনার মাধ্যমে একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে সবার অলক্ষ্যে একটি সমস্যা তুলে ধরেন। তাতে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে যায় এবং সমস্যাটি অনুধাবন ও সমাধানের চেষ্টা করে। প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তায় সমস্যাটি একটি যৌক্তিক সমাধানের পথে অগ্রসর হয়।

শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ক্ষেত্রে সমস্যা সমাধান পদ্ধতি অত্যন্ত সুকৌশলে ব্যবহার করতে হয়। যেমন:

  • ১. সুনির্দিষ্ট সমস্যামূলক ইস্যু তৈরি করা।
  • ২. শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান ও ধারণার ভিত্তিতে সমস্যা নির্বাচন করা।
  • ৩. কাজের উপযোগী শ্রেণি পরিবেশ তৈরি করা।
  • ৪. শিক্ষার্থীদেরকে দলে ভাগ করা।
  • ৫. কাজের সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা।
  • ৬. শিক্ষার্থীর চিন্তন প্রক্রিয়ার ব্যবহার নিশ্চিত করা।
  • ৭. দলীয় কাজে সামষ্টিক চিন্তার প্রতিফলন ঘটছে কি-না সেদিকে খেয়াল রাখা।
  • ৮. সমস্যার ‘কেন্দ্র-অভিমুখী ও কেন্দ্র-বিমুখী’ উভয় প্রকার চিন্তার সমন্বয় সাধন করা।
  • ৯. শিক্ষার্থীর পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ, বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত হচ্ছে কি-না সেদিকে খেয়াল রাখা।
  • ১০. প্রয়োজনে সমাধানের ইঙ্গিত প্রদান করা।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সুবিধা

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সুবিধার কথা অনেক বলা হয়েছে; সংক্ষেপ করলে সেগুলো এই রকম দাঁড়ায়:

  • প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনেই সমস্যা থাকে এবং সে সব সমাধানের মাধ্যমে জীবনের অগ্রগতির ধারা বজায় রাখতে হয় বলে সমস্যা সমাধান পদ্ধতির চর্চার ফলে তা শিক্ষার্থীর জীবন প্রক্রিয়ার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে মিলে যায়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতির শিক্ষার্থীদের অনুরাগ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়। কারণ এতে শিক্ষাকে শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করা হয়। শিক্ষা শিক্ষার্থীদের কাছে অর্থবহ হয়ে ওঠে বলে তাদের অনুরাগ ধরে রাখা সম্ভব হয়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক, চিন্তনমূলক ও উদ্ভাবনমূলক দক্ষতার কার্যকর বিকাশ সাধিত হয়। বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠন, বিচার-বিশ্লেষণ ক্ষমতা, আন্তঃব্যক্তিক চিন্তনের সমন্বয়সাধন — প্রভৃতি দক্ষতার সুষম প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় বলে সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে শ্রেণি পাঠদান অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়ে থাকে।
  • ঘ) সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ পরিচালনা করলে শিক্ষার্থীরা কোনো বিশেষ বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, যে ক্ষমতার বিকাশ ব্যক্তি সত্তার বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। শিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা যখন সামাজিক দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ মতামত প্রকাশ করতে হয়। স্বাধীন এবং নিরপেক্ষমতামত প্রকাশের ক্ষমতা সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সাহায্যে বিকশিত করা যায়।
  • ঙ) সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে যদিও শিক্ষার্থীরা মানসিক পর্যায়ে সমস্যা সমাধান করে, তা সত্ত্বেও তারা শ্রেণিকক্ষে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং সমস্যা সমাধান পদ্ধতিকে ‘সক্রিয়তা ভিত্তিক পদ্ধতি’ বিবেচনা করা যায়। <বিবেচনায় রাখা যায় যে, কর্মমূলক সক্রিয়তা যেমন জীবনের পক্ষে উপযোগী, তেমনি চিন্তনমূলক সক্রিয়তাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
  • চ) গতানুগতিক শিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের স্মৃতি (গবসড়ৎু)-র উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। ফলে শিক্ষার প্রয়োগমূলক দিকের চেয়ে যান্ত্রিক আবৃত্তির উপরই সেখানে বেশি গুরুত্ব আরোপিত হয়। কিন্তু সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর মানসিক ক্ষমতার ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। ফলে শিক্ষার বিষয়বস্তুর বোধগম্যতার উপরই গুরুত্ব আরোপ বেশি হয়। 
  • ছ) সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠদান করলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান পুনরাবিষ্কার (জবফরংপড়াবৎ) করে। এখানে অনুকরণ (ওসরঃধঃরড়হ) অপেক্ষা সৃজনীস্পৃহার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে, শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা অন্ধ বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে গড়ে না উঠে প্রত্যক্ষ যুক্তি ও বিচারের আলোকে নতুন তাৎপর্য লাভ করে।
  • জ) সমস্যা সমাধান পদ্ধতি শিক্ষার্থীর মধ্যে নানা রকম সামাজিক বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটায়। তারা অন্যেরমতামতকে সহ্য করতে শেখে, অন্যের মতামতকে যোগ্য মর্যাদা দিতে শেখে। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা পারস্পরিক সহযোগিতায় কাজ করে বলে তাদের মধ্যে নানা ধরনের সামাজিক প্রবৃত্তিরও বিকাশ ঘটে।
শিখনফল অর্জনের জন্য কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে শিক্ষক পাঠদান করবেন তা পূর্বনির্ধারিত হওয়া উচিৎ।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির অসুবিধা

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সুবিধার কথা যেমন অনেক শিক্ষাবিদ বলেছেন তেমনি তার অসুবিধার কথাও অনেকে বলেছেন। যেমন –

  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে বিষয়বস্তুর ধারাবাহিকতা সব সময় বজায় রাখা সম্ভব হয় না। কারণ পাঠ্যক্রমের সমস্ত অংশগুলোকে সমস্যার মাধ্যমে উপস্থাপন করা যায় না।
  • অনেক শিক্ষাবিদ মনে করেন সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ পরিচালনা করলে শিক্ষার্থীর সুস্থ পাঠাভ্যাস (জবধফরহম যধনরঃ) গড়ে ওঠে না। সমস্যা সমাধানের জন্য যেটুকু অংশ দরকার তা-ই তারা পড়ে, অন্য অংশ পড়ে না। ফলে তাদের পাঠের অভ্যাস নষ্ট হয়ে যায়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ পরিচালনা করলে অনেক সময় দেখা গেছে শিক্ষার্থীরা বিষয়বস্তুর জ্ঞান অপেক্ষা সমস্যার সমাধানটির উপর বেশি গুরুত্ব দেয়; ফলে শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যবহত হয়।
  • অনেক শিক্ষাবিদ মনে করেন যে, শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে কাজ করতে বেশি ভালবাসে। সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে তার বিশেষ কোনো সুযোগ নেই। শিক্ষা এখানে কর্মভিত্তিক নয়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠদান যেমন বেশি সময় ব্যয় হয় তেমনি বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের জন্য ঝামেলাও বেশি।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতি দক্ষতার সাথে পরিচালনার জন্য আমাদের দেশে যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকের অভাব রয়েছে।
  • নিচের শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যা সমাধান পদ্ধতি উপযোগী নয়।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী?

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির কিছু বৈশিষ্ট্য হলো নিচে উল্লেকগ করা হলো-

  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতি নিয়মিত চর্চা করলে ফলে শিক্ষার্থীর জীবন প্রক্রিয়ার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে মিলে যায়।
  • শিক্ষার্থীর বিভিন্ন দক্ষতার সুষম প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় বলে সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে শ্রেণি  পাঠদান অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়ে থাকে।
  • স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ মতামত প্রকাশের ক্ষমতা সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সাহায্যে বিকশিত করা যায়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিকে ‘সক্রিয়তা ভিত্তিক পদ্ধতি’ বিবেচনা করা যায়। এখানে শিক্ষার বিষয়বস্তুর বোধগম্যতার উপরই গুরুত্ব আরোপ বেশি হয়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতি চর্চায় শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে। শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ যুক্তি ও বিচারের আলোকে নতুন তাৎপর্য লাভ করে।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা অন্যের মতামতকে যোগ্য মর্যাদা দিতে শেখে, পারস্পরিক সহযোগিতায় কাজ করে বলে তাদের মধ্যে নানা ধরনের সামাজিক প্রবৃত্তিরও বিকাশ ঘটে।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ্যক্রমের সমস্ত অংশগুলোকে সমস্যার মাধ্যমেই উপস্থাপন করা যায় না বলে বিষয়বস্তুর ধারাবাহিকতাও সব সময় বজায় রাখা সম্ভব হয় না। 
  • অনেকের মতে, এতে শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস নষ্ট হয়ে যায় এবং হাতে-কলমে কাজ করতে বেশি ভালবাসে বলে এতে শিক্ষার প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি হতে পারে না।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠদান যেমন বেশি সময় ব্যয় হয় তেমনি বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের জন্য ঝামেলাও বেশি।
  • নিচের শ্রেণির বা কম বয়সী  শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যা সমাধান পদ্ধতি উপযোগী নয়।

(সংজ্ঞা, সুবিধা, অসুবিধা, কৌশল, শর্ত সম্পর্কে ধারণা থাকলে খুব সুন্দর বৈশিষ্ট্য লেখা যায়। আপনি চাইলেই এই ‘সমস্যা সমাধান পদ্ধতি’র বৈশিষ্ট মতামতের ঘরে নিজের মতো করে লিখতে পারেন বা আমাদের ইমেইল অ্যাড্রেসে পাঠাতে পারেন নিবন্ধ আকারে।)

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

তাহসান খান এবং মুনজেরিন শহীদের দুটি প্রফেশনাল কমিউনিকেশন কোর্স করুন ২৮% ছাড়ে
তাহসান খান এবং মুনজেরিন শহীদের দুটি প্রফেশনাল কমিউনিকেশন কোর্স করুন ২৮% ছাড়ে

২৮℅ ছাড় পেতে ৩০/০৬/২০২৪ তারিখের মধ্যে প্রোমো কোড “professional10” ব্যবহার করুন। বিস্তারিত জানতে ও ভর্তি হতে ক্লিক করুন এখানে

সমস্যা সমাধান পদ্ধতি কাকে বলে? এর কৌশল, সুবিধা, অসুবিধা, বৈশিষ্ট্য কী?

প্রকাশ: ০১:৫৫:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অক্টোবর ২০২১

বহুল ব্যবহৃত না হলেও পাঠদানের জন্য বা শিখন-শেখানো কার্যক্রমের জন্য স্বীকৃত অন্যতম পদ্ধতি হলো সমস্যা সমাধান পদ্ধতি। এখানে সমস্যা সমাধান পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতি কী?

শ্রেণিকক্ষ পাঠদানের জন্য যতগুলো পদ্ধতি রয়েছে সেগুলোর মধ্যে একটি হলো ‘সমস্যা সমাধান পদ্ধতি’ বা ‘প্রবলেম সলভিং মেথড’ (Problem Solving Method)। পাঠদান কার্যক্রমের এই সমস্যা সমাধান পদ্ধতি হলো একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি (scientific method)।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির মূল কথা ‘নির্দিষ্ট কোনো বিষয়বস্তুর সমস্যামূলক উপস্থাপনা’।

পাঠদান কার্যক্রমের যে প্রক্রিয়ায় শ্রেণিকক্ষে পাঠ সংশ্লিষ্ট কোনো সমস্যা উপস্থাপন করে তা শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক কর্তৃক সম্মিলিতভাবে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে সমাধান করার মাধ্যমে শিখনফল অর্জনের চেষ্টা করা হয় তাকে শিখন-শেখানো কার্যক্রমের সমস্যা সমাধান পদ্ধতি বলে।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির একটি উপ-পদ্ধতি হলো ‘মাইন্ড ম্যাপিং

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কিছু মৌলিক শর্ত

শিক্ষা মনোবিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়ছেন যে, ব্যক্তির আচরণ তার চিন্তনের প্রকৃতি কর্তৃক নির্ধারিত হয়; আর বিভিন্ন সমস্যা, কাজ, আচরণ বা সক্রিয়তা, চিন্তন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।

এখানে সমস্যা সমাধান পদ্ধতির কিছু শর্ত উল্লেখ করা হলো:

  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ্য বিষয়বস্তুর বিশেষ ধরনের বিন্যাস প্রয়োজন।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে বিষয়বস্তুর উপস্থাপন হবে সমস্যার আকারে কারন গতানুগতিক পদ্ধতিতে বিষয়বস্তু উপস্থাপনে শিক্ষার্থীর চিন্তন প্রক্রিয়া সক্রিয় হয় না।
  • সমস্যার আকারে বিষয়বস্তুকে উপস্থাপন করলেই শিক্ষণ হয় না। সমস্যাটি এমন হওয়া উচিত যা শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থাকে সক্রিয় করে তুলতে পারে।
  • সমস্যাটির সমাধান শিক্ষার্থীর মানসিক স্তরে সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ, কোনো প্রত্যক্ষ কর্মের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান নয়। 

কাজেই বলা যেতে পারে যে, পদ্ধতিতে পাঠ্য বিষয়বস্তুর পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে তা প্রকৃত তাৎপর্যপূর্ণই সমস্যার আকারে উপস্থাপন করা হয় তা-ই হবে সমস্যা সমাধান 

পদ্ধতি।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে অনুসরণীয় যা

সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ায় গবেষণার মতো কয়েকটি নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করে অগ্রসর হয়, যেমন-

  • ১. সমস্যা শনাক্তকরণ;
  • ২. সমস্যা বিশ্লেষণ;
  • ৩. অনুমিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ;
  • ৪. তথ্য সংগ্রহ;
  • ৫. তথ্য বিশ্লেষণ;
  • ৬. অনুমিত সিদ্ধান্ত যাচাই;
  • ৭. সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

উপর্যুক্ত সাতটি ধাপ সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ায় সবসময় প্রত্যক্ষভাবে প্রতিফলিত হয়না তবে সমাধানের চিন্তন প্রক্রিয়ায় ধাপ সাতটি পরোক্ষভাবে সর্বদাই ক্রিয়াশীল থাকে।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে ব্যবহৃত কৌশল কী কী?

সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পদ্ধতিতে যৌক্তিক উপায়ে পাঠ সংশ্লিষ্ট কোনো সমস্যার সমাধান করা হয়। শিক্ষার্থীর জন্য সমস্যা নির্বাচন করা হয় তার পূর্বজ্ঞান ও ধারণার ভিত্তিতে। তবে সমাধান আগে থেকে তাদের জানা থাকে  না। তারা তাদের ব্যক্তিগত সামর্থ্য অনুযায়ী বিভিন্ন উপায়ে সমাধানের চেষ্টা করে।

শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে আলোচনার মাধ্যমে একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে সবার অলক্ষ্যে একটি সমস্যা তুলে ধরেন। তাতে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে যায় এবং সমস্যাটি অনুধাবন ও সমাধানের চেষ্টা করে। প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তায় সমস্যাটি একটি যৌক্তিক সমাধানের পথে অগ্রসর হয়।

শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ক্ষেত্রে সমস্যা সমাধান পদ্ধতি অত্যন্ত সুকৌশলে ব্যবহার করতে হয়। যেমন:

  • ১. সুনির্দিষ্ট সমস্যামূলক ইস্যু তৈরি করা।
  • ২. শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান ও ধারণার ভিত্তিতে সমস্যা নির্বাচন করা।
  • ৩. কাজের উপযোগী শ্রেণি পরিবেশ তৈরি করা।
  • ৪. শিক্ষার্থীদেরকে দলে ভাগ করা।
  • ৫. কাজের সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা।
  • ৬. শিক্ষার্থীর চিন্তন প্রক্রিয়ার ব্যবহার নিশ্চিত করা।
  • ৭. দলীয় কাজে সামষ্টিক চিন্তার প্রতিফলন ঘটছে কি-না সেদিকে খেয়াল রাখা।
  • ৮. সমস্যার ‘কেন্দ্র-অভিমুখী ও কেন্দ্র-বিমুখী’ উভয় প্রকার চিন্তার সমন্বয় সাধন করা।
  • ৯. শিক্ষার্থীর পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ, বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত হচ্ছে কি-না সেদিকে খেয়াল রাখা।
  • ১০. প্রয়োজনে সমাধানের ইঙ্গিত প্রদান করা।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সুবিধা

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সুবিধার কথা অনেক বলা হয়েছে; সংক্ষেপ করলে সেগুলো এই রকম দাঁড়ায়:

  • প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনেই সমস্যা থাকে এবং সে সব সমাধানের মাধ্যমে জীবনের অগ্রগতির ধারা বজায় রাখতে হয় বলে সমস্যা সমাধান পদ্ধতির চর্চার ফলে তা শিক্ষার্থীর জীবন প্রক্রিয়ার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে মিলে যায়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতির শিক্ষার্থীদের অনুরাগ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়। কারণ এতে শিক্ষাকে শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করা হয়। শিক্ষা শিক্ষার্থীদের কাছে অর্থবহ হয়ে ওঠে বলে তাদের অনুরাগ ধরে রাখা সম্ভব হয়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক, চিন্তনমূলক ও উদ্ভাবনমূলক দক্ষতার কার্যকর বিকাশ সাধিত হয়। বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠন, বিচার-বিশ্লেষণ ক্ষমতা, আন্তঃব্যক্তিক চিন্তনের সমন্বয়সাধন — প্রভৃতি দক্ষতার সুষম প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় বলে সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে শ্রেণি পাঠদান অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়ে থাকে।
  • ঘ) সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ পরিচালনা করলে শিক্ষার্থীরা কোনো বিশেষ বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, যে ক্ষমতার বিকাশ ব্যক্তি সত্তার বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। শিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা যখন সামাজিক দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ মতামত প্রকাশ করতে হয়। স্বাধীন এবং নিরপেক্ষমতামত প্রকাশের ক্ষমতা সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সাহায্যে বিকশিত করা যায়।
  • ঙ) সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে যদিও শিক্ষার্থীরা মানসিক পর্যায়ে সমস্যা সমাধান করে, তা সত্ত্বেও তারা শ্রেণিকক্ষে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং সমস্যা সমাধান পদ্ধতিকে ‘সক্রিয়তা ভিত্তিক পদ্ধতি’ বিবেচনা করা যায়। <বিবেচনায় রাখা যায় যে, কর্মমূলক সক্রিয়তা যেমন জীবনের পক্ষে উপযোগী, তেমনি চিন্তনমূলক সক্রিয়তাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
  • চ) গতানুগতিক শিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের স্মৃতি (গবসড়ৎু)-র উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। ফলে শিক্ষার প্রয়োগমূলক দিকের চেয়ে যান্ত্রিক আবৃত্তির উপরই সেখানে বেশি গুরুত্ব আরোপিত হয়। কিন্তু সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর মানসিক ক্ষমতার ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। ফলে শিক্ষার বিষয়বস্তুর বোধগম্যতার উপরই গুরুত্ব আরোপ বেশি হয়। 
  • ছ) সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠদান করলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান পুনরাবিষ্কার (জবফরংপড়াবৎ) করে। এখানে অনুকরণ (ওসরঃধঃরড়হ) অপেক্ষা সৃজনীস্পৃহার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে, শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা অন্ধ বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে গড়ে না উঠে প্রত্যক্ষ যুক্তি ও বিচারের আলোকে নতুন তাৎপর্য লাভ করে।
  • জ) সমস্যা সমাধান পদ্ধতি শিক্ষার্থীর মধ্যে নানা রকম সামাজিক বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটায়। তারা অন্যেরমতামতকে সহ্য করতে শেখে, অন্যের মতামতকে যোগ্য মর্যাদা দিতে শেখে। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা পারস্পরিক সহযোগিতায় কাজ করে বলে তাদের মধ্যে নানা ধরনের সামাজিক প্রবৃত্তিরও বিকাশ ঘটে।
শিখনফল অর্জনের জন্য কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে শিক্ষক পাঠদান করবেন তা পূর্বনির্ধারিত হওয়া উচিৎ।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির অসুবিধা

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সুবিধার কথা যেমন অনেক শিক্ষাবিদ বলেছেন তেমনি তার অসুবিধার কথাও অনেকে বলেছেন। যেমন –

  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে বিষয়বস্তুর ধারাবাহিকতা সব সময় বজায় রাখা সম্ভব হয় না। কারণ পাঠ্যক্রমের সমস্ত অংশগুলোকে সমস্যার মাধ্যমে উপস্থাপন করা যায় না।
  • অনেক শিক্ষাবিদ মনে করেন সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ পরিচালনা করলে শিক্ষার্থীর সুস্থ পাঠাভ্যাস (জবধফরহম যধনরঃ) গড়ে ওঠে না। সমস্যা সমাধানের জন্য যেটুকু অংশ দরকার তা-ই তারা পড়ে, অন্য অংশ পড়ে না। ফলে তাদের পাঠের অভ্যাস নষ্ট হয়ে যায়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ পরিচালনা করলে অনেক সময় দেখা গেছে শিক্ষার্থীরা বিষয়বস্তুর জ্ঞান অপেক্ষা সমস্যার সমাধানটির উপর বেশি গুরুত্ব দেয়; ফলে শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যবহত হয়।
  • অনেক শিক্ষাবিদ মনে করেন যে, শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে কাজ করতে বেশি ভালবাসে। সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে তার বিশেষ কোনো সুযোগ নেই। শিক্ষা এখানে কর্মভিত্তিক নয়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠদান যেমন বেশি সময় ব্যয় হয় তেমনি বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের জন্য ঝামেলাও বেশি।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতি দক্ষতার সাথে পরিচালনার জন্য আমাদের দেশে যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকের অভাব রয়েছে।
  • নিচের শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যা সমাধান পদ্ধতি উপযোগী নয়।

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী?

সমস্যা সমাধান পদ্ধতির কিছু বৈশিষ্ট্য হলো নিচে উল্লেকগ করা হলো-

  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতি নিয়মিত চর্চা করলে ফলে শিক্ষার্থীর জীবন প্রক্রিয়ার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে মিলে যায়।
  • শিক্ষার্থীর বিভিন্ন দক্ষতার সুষম প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় বলে সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে শ্রেণি  পাঠদান অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়ে থাকে।
  • স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ মতামত প্রকাশের ক্ষমতা সমস্যা সমাধান পদ্ধতির সাহায্যে বিকশিত করা যায়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিকে ‘সক্রিয়তা ভিত্তিক পদ্ধতি’ বিবেচনা করা যায়। এখানে শিক্ষার বিষয়বস্তুর বোধগম্যতার উপরই গুরুত্ব আরোপ বেশি হয়।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতি চর্চায় শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে। শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ যুক্তি ও বিচারের আলোকে নতুন তাৎপর্য লাভ করে।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা অন্যের মতামতকে যোগ্য মর্যাদা দিতে শেখে, পারস্পরিক সহযোগিতায় কাজ করে বলে তাদের মধ্যে নানা ধরনের সামাজিক প্রবৃত্তিরও বিকাশ ঘটে।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠ্যক্রমের সমস্ত অংশগুলোকে সমস্যার মাধ্যমেই উপস্থাপন করা যায় না বলে বিষয়বস্তুর ধারাবাহিকতাও সব সময় বজায় রাখা সম্ভব হয় না। 
  • অনেকের মতে, এতে শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস নষ্ট হয়ে যায় এবং হাতে-কলমে কাজ করতে বেশি ভালবাসে বলে এতে শিক্ষার প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি হতে পারে না।
  • সমস্যা সমাধান পদ্ধতিতে পাঠদান যেমন বেশি সময় ব্যয় হয় তেমনি বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের জন্য ঝামেলাও বেশি।
  • নিচের শ্রেণির বা কম বয়সী  শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যা সমাধান পদ্ধতি উপযোগী নয়।

(সংজ্ঞা, সুবিধা, অসুবিধা, কৌশল, শর্ত সম্পর্কে ধারণা থাকলে খুব সুন্দর বৈশিষ্ট্য লেখা যায়। আপনি চাইলেই এই ‘সমস্যা সমাধান পদ্ধতি’র বৈশিষ্ট মতামতের ঘরে নিজের মতো করে লিখতে পারেন বা আমাদের ইমেইল অ্যাড্রেসে পাঠাতে পারেন নিবন্ধ আকারে।)