ভুগোল কাকে বলে? ভূগোলের উৎপত্তি, সংজ্ঞা ও আধুনিক ভুগোলের ধারণা কী?
- প্রকাশ: ০১:৪৬:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২১
- / ৫৪৫৮৮ বার পড়া হয়েছে
ভূগোল (Geography) পৃথিবীর উপরিভাগের স্থান সম্পর্কে ধারণা দেয়। তবে ভূগোলবিদদের ছাড়াও এই বিষয়েভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞানী, আবহাওয়াবিদ, জীববিদ্যা, সমুদ্রবিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞানের আরোও বেশ কিছুশাখায়ও ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগ এবং তলদেশের বিষয়াদি সম্পর্কে ধারণা দেয়। তবে, শুধুমাত্র ভূগোলবিষয়ই ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগের বিভিন্ন বিষয়াদির একটি সমন্বিত স্থানভিত্তিক ধারণা দেয়।
অতীতে সংঘঠিত ঘটনাবলী এবং বর্তমানের ঘটনাসমূহ পৃথিবীর কোন না কোন স্থানের সাথেজড়িত। এই সব ঘটনা সম্পর্কে জানতে গিয়ে মানুষ যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে সে সম্পর্কে জানতেআগ্রহী হয়। মানুষের স্থান সম্পর্কে জানার এই আগ্রহ থেকেই ভূগোলের ভিত্তি তৈরি হয়।
ভূগোল কাকে বলে?
গ্রিক পণ্ডিত ইরেটোসথেনিস (Eratosthenes) প্রথম ভূগোল শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। গ্রিক শব্দ ‘জিও’ (geo-) অর্থ ভূমন্ডল বা পৃথিবী এবং ‘গ্রাফি’ (graphy) অর্থ বর্ণনা, সার্বিক অর্থে মানুষের আবাস এই পৃথিবীর বর্ণনা। ইরেটসথে হলেন ভূগোলের জনক।
ভূগোল বিষয়ের এই মূল ধারণার আজ অবধি তেমন বড় ধরনের কোন পরিবর্তন হয়নি। তবে এই প্রসঙ্গে ভূগোল এর দুটি আধুনিক সংজ্ঞা বিবেচনা করা যেতে পারে।
হার্টশোনের মতে- “Geography is concerned to provide accurate, orderly and rational descriptions and interpretations of the variable character of the earth’s surface” (ভূ-পৃষ্ঠের বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্যাবলীর সঠিক, শ্রেবদ্ধ এবং যুক্তিসঙ্গত বর্ণনা এবং বিশ্লেষণই ভূগোলের আলোচ্য বিষয়।)
আরেকজন বিখ্যাত বৃটিশ আধুনিক ভূগোলবিদ পিটার হেগেট (১৯৮১) এর মতে- “Geography is the study of the earth’s surface as the space within which the human population lives”। (যে শাস্ত্র ভূ-পৃষ্ঠকে মানবগোষ্ঠির বসবাসের স্থান হিসাবে অধ্যয়ন করে তাহাইভূগোল।)
লক্ষ্যণীয় যে ভূগোলের এ দুটি আধুনিক সংজ্ঞার মূল বক্তব্য গ্রিকদের দেওয়া সংজ্ঞারঅনুরূপ। তবে, ভূগোল বিষয়ের মূল দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যাখ্যা দানের পদ্ধতিগত দিক কাল ও সমাজের পটভূমির আলোকে পরিবর্তিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সপ্তদশ শতক থেকে বর্তমান কালের নির্বাচিত কিছুসংজ্ঞা নিচে দেওয়া হলো:
- Geography is that part of mixed mathematics, which explains the state of the earth and of its parts, depending on quantity, viz. its figure, place, magnitude and motion, with the celestial appearance. (- Varenius, 1622)
- Geography is the study of the earth. It explains the varieties found in the various parts of the earth. – Kant, I. (late 18th century)
- Geography is the science related to nature… in it are studied and described all things found on earth. – Humboldt, A. Von (early 19th century)
- Geography is the department of science that deals with the globe in all its features, phenomena, and relations as an independent unit, and shows the connection of this unified whole with man and with mans creator. – Ritter, C. (early 19th century)
- Geography`s goal is nothing less than an understanding of the vast, interacting system comprising all humanity and its natural environment on the surface of the earth. – Ackerman, E.A (1963)
- Geography seeks to explain how the subsystems of the physical environment are organized on the earth’s surface and how man distributed himself over the earth in relation to physical features and the other man. – Ad hoc committee on Academy of Science, Washington D.C (1965)
- Geography is concerned with the existing material system forming the geographical sphere of the earth as an environment for the actual or potential development of human society, together with the material aspects of social development expressed in its regional complexes within the geographical environment. – Anlechin, V.A (1973)
- Geography is the study of the relationship between man and his environment through space and time. – Anonymous (unknown) (1990)
উপরের এই সব সংজ্ঞা পর্যালোচনা থেকে লক্ষণীয় যে, উনিশ শতকের হুমবোল্ট পর্যন্ত ভূগোলের আলোচ্য বিষয়ে পৃথিবীর প্রাকৃতিক উপাদানের ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে; মানুষ ও সামাজিক সংগঠনসমূহ তেমন গুরুত্ব পায়নি। তবে হুমবোল্ট-এর সমসাময়িক ভূগোলবিদ কার্ল রিটার, মানুষকে ভূগোলের আলোচ্য বিষয় হিসাবে সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। ভুগোলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানুষের সুনিবিড় সম্পর্ক পরবর্তী প্রায় সব ভূগোলবিদই তুলে ধরেছেন।
বিংশ শতাব্দীতে মানুষ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশকে ব্যাপকভাবে ব্যবহারকরে আসছে। মানুষের কর্মকান্ডে প্রাকৃতিক পরিবেশ আর নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় না থাকলেও এরপ্রভাবকে বহনযোগ্য মাত্রায় রাখার জন্য সম্ভাবনাময় বিকল্প উদ্ভাবনের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে যাতে পরিবেশগত ভারসাম্যতা বজায় রাখা সম্ভব হয়। তাই, আধুনিক ভূগোলবিদগণ সময় ও স্থানের আলোকে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে মানুষের কর্মকান্ডের সম্পকর্দকেই ভূগোলের মূখ্য বিষয় হিসাবে দেখতে চান (Elahi, 2000)।
ভূগোল জ্ঞানের শুরু
ভূগোল জ্ঞানের শুরুর ইতিহাস শত শত বছরের পুরানো। ধারণা করা হয় মানব সভ্যতার আদিকাল থেকেই মানুষ যখন বুঝতে পেরেছে বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় খাদ্য সম্পদ বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো, সেই থেকেই মানুষের নিকট স্থানের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। গ্রিক যুগের পণ্ডিতগণ পৃথিবী সম্পর্কিত তথ্যাবলী সংগ্রহ করেন। তাঁরা জ্ঞান চর্চার সুবিধার জন্য এ সব তথ্যাবলীকে দুইটি প্রধান অংশে ভাগ করেন:
- ভূগোল (পৃথিবীর ভূ-ভাগ সম্পর্কিত জ্ঞান চর্চা) ও মহাজাগতিক বিদ্যা (আকাশ, তারকারাজি
- মহাজগত বিষয়ক জ্ঞান চর্চা)।
ইরেটোসেথেনিস (ca. ২৭৩ – ca. ১৯২ BC)-এর মতে ভূগোল ছিল পৃথিবীর সঠিক বর্ণনা। তাঁর জীবদ্দশায় শিলা, মৃত্তিকা ও উদ্ভিদ সম্পর্কে বিপুল তথ্য সংগৃহীত হয়।
গ্রিক দার্শনিকগণ পৃথিবীর স্থান বর্ণনার বাহিরেও স্থান সমূহের তারতম্য এবং এর কারণ অনুসন্ধান করেন। যেমন, পৃথিবীর জলবায়ুসম্পর্কে জানার জন্য তাঁরা এর অঞ্চলভিত্তিক শ্রেণি বিভাগ করেন যা অনেকটা আধুনিক অক্ষাংশভিত্তিক জলবায়ুঅঞ্চলের অনুরূপ। তবে, গ্রিকদের তৈরিকৃত মানচিত্র ভূগোল জ্ঞান চর্চায় সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে।
ভূগোলকে বিজ্ঞানভিত্তিক কাঠামো দিয়েছেন ভেরিনিয়াস (Bernhardus Varenius)
ভূগোল বিষয়ক জ্ঞানচর্চা মধ্য যুগে হ্রাস পায়, বিশেষত: ইউরোপে। বিশ্ব পরিভ্রমণ যুগে (১৫০০-১৯০০) নতুন নতুন দেশ আবিস্কারের ফলে ভৌগোলিক জ্ঞানের কদর বেড়ে যায়। এই সময়কার বিজ্ঞানীরা ভৌগোলিক তথ্যাবলীকে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক কাঠামোর আওতায় দাঁড় করানোর চেষ্টাকরেন। এই কাজে, জার্মান বিজ্ঞানী ও ভূগোলবিদ বার্হনহার্ডাস ভেরিনিয়াস (১৬২২-১৬৫০) সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
তিনি ভৌগোলিক তথ্যাবলিকে দুইটি অংশে ভাগ করেন।
- ১. প্রাকৃতিক যার আওতায় বায়ুমন্ডলীয়, পানি এবং অশ্মমন্ডলীয় বিষয়ক তথ্যাবলী অন্তর্ভূক্ত।
- ২. পৃথিবীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিন্যাস বা ধরন সম্পর্কিত তথ্যাবলী বিবেচনা করা হয়।
তবে, ভূগোল বিষয় চর্চার এই পর্যায়ে ভেরিনিয়াস স্পষ্টতই মানুষের সাথে বাহ্যিক পৃথিবীর আন্ত:সম্পর্কের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
ইমানুয়েল কান্ট (Immanuel Kant) ভূগোলকে বিজ্ঞানে স্থান দিয়েছেন
ভেরিনিয়াস ভূগোল বিষয়কে একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক কাঠামো দিয়েছেন কিন্তু ইমানুয়েল কান্ট (১৭২৪-১৮০৪) ভূগোলকে বিজ্ঞানে স্থান করে নিতে বিশেষভাবে অবদান রেখেছেন। কান্টের মতে, জ্ঞানকে তিনভাবে সংগঠিত করা যায়।
- ১. জ্ঞান চর্চার প্রাপ্তফলকে বিষয় গতি তারতম্যের ভিত্তিতে শ্রেণি বিভাজনের মাধ্যমে। এর ফলস্বরূপ যেমন, রসায়ন, ভূতত্ত্ব, প্রণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা ইত্যাদি যা নিয়মাবদ্ধ ক্ষেত্র (Systematic fields) নামে পরিচিত।
- ১. ঐতিহাসিক পদ্ধতি অবলম্বনে অর্থাৎ সময়ের আলোকে সম্পর্ক বিবেচনা করা।
- ৩. কিভাবে স্থানসমূহ পরস্পরে সম্পর্কিত তা জানার মাধ্যমে।মূলত: এই বিষয়টিই ভূগোল চর্চার ক্ষেত্র।
আধুনিক ভূগোলের ধারণা
কান্টের দেওয়া দার্শনিক কাঠামোর মাধ্যমে ভূগোল অন্যান্য বিষয়ের সাথে নিজের একটি দৃঢ় অবস্থান করে নিতে পেরেছে। পরবর্তীতে ভূগোল চর্চার প্রধান লক্ষ্য দাঁড়ায় বিভিন্ন বিষয়সমূহের স্থানিক বর্ণনা, বিশ্লেষণ ও ধরনের ব্যাখ্যা প্রদান করা এবং তাদের তুলনা ও তারতম্য তুলে ধরা।
ভূগোল চর্চায় তিনটি প্রধান প্রধান বিষয় গুরুত্ব পায়:
- পৃথিবী পৃষ্ঠের বিষয়সমূহ (Features) কোথায় (where) অবস্থিত?
- এই সব বিষয়সমূহ কেন সেখানে অবস্থিত? এবং
- এই সব বিষয়সমূহের এই অবস্থানের ফলাফল কী?
প্রথম প্রশ্নটি ভূগোলের মূল উপপাদ্য বিষয় হলেও ‘কোথায়’ এর মাধ্যমে মূলত: কোন বস্তুর অবস্থানগত ব্যাখ্যাই নির্দেশ করে। কোন বস্তু শুধুমাত্র কোথায় অবস্থিত জানলে ভূগোল চর্চা খুবই সংকীর্ণ হতো। তাই, কোন বস্তু যেখানে আছে কেন সেখানে অবস্থিত, কিভাবে সেস্থানে এর উদ্ভব/বিকাশ ঘটে, ভূগোল এই সব বিষয়ের ব তারতম্য ও বিন্যাসের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দানে চেষ্টা করে থাকে।
ভূগোল চর্চার জ্ঞানের ৬ টি ধারণা
ভূগোল চর্চা থেকে লব্ধ জ্ঞানকে ৬টি প্রধান ধারণায় ভাগ করা যেতে পারে। এগুলো হলো:
- ১. বিশ্বময়তা (Globalism)
- ২. বৈচিত্রতা/বিধিময়তা (Diversity-Variability)
- ৩. স্থানিক অবস্থান (Spatial Location)
- ৪. আন্ত:সংযোগময়তা (Inter relatedness)
- ৫. পরিবর্তন (Change)
- ৬. সংস্কৃতি (Culture)
বিশ্বময়তা
পৃথিবীকে একটি ভূগোলক হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং এর সাথে সৌরজগতের বিশেষ সম্পর্ক আছে। তাছাড়া, ভূগোলককে বিভিন্ন অক্ষ ও দ্রাঘিমা রেখা দ্বারা ভাগ করা হয়, যাপৃথিবীর স্থানগত পরিমাপ, আবহাওয়া ও জলবায়ুগত তারতম্য জানতে সহায়ক হয়। মোট কথা হলো- পৃথিবী, সূর্য সম্পর্কিত জ্ঞান, গ্রীড, স্কেল, এই সবই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বৈচিত্র্যতা
পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তু অসমানভাবে ব, ফলে পৃথিবী বৈচিত্র্যময় অর্থাৎ স্থান সমূহে পার্থক্য দেখা যায়। এই বিবিধময়তা প্রকাশে ভূগোলে তিনটি ধারণা ব্যবহার করা হয়। যথা: বিন্যাস, স্থানিক তারতম্য ও আঞ্চলিকরণ।
স্থানিক অবস্থান
স্থানিক অবস্থানকে ও তিনটি উপ-ধারণায় প্রকাশ করা হয়। যথা:
- অবস্থানগত (Position)- (যা পৃথিবী পৃষ্ঠে কোন বস্তুর সুনির্দিষ্ট অক্ষ ও দ্রাঘিমা রেখাভিত্তিক অবস্থান নির্দেশ করে)
- স্থানগত (যা সে স্থানের প্রকৃতি বুঝায়)
- পরিস্থিতিগত (যা পার্শ্ববর্তী বস্তুর আলোকে এর অবস্থানগত গুরুত্ব ইঙ্গিত করে)।
আন্ত:সংযোগময়তা
ভূ-বৈচিত্র্যময়তা সত্ত্বেও ভূগোলবিদগণ মনে করেন, পৃথিবীর স্থানসমূহের সাথে এবং বিষয়সমূহ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। ভূগোলের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্থান ও বিষয়সমূহের এ পারস্পারিক সম্পর্ককে বিভিন্ন নামে ভূগোলে অভিহিত করা হয়। যেমন- আন্ত: নির্ভরশীলতা, আন্ত: সংযোগ, স্থানিক মিথষ্ক্রিয়া এবং স্থানিক সহ-সংশ্রব।
পরিবর্তন
ভূ-পৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্যাবলী সদা পরিবর্তনশীল। মানুষ, প্রকৃতি ভূ-পৃষ্ঠের এ পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। যেমন, মানুষ বনভূমি উজাড় করে, ফলে ভূমিক্ষয় বেড়ে যায় এবং নদীতে বাড়তি পলি জমে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে। নদীর পথ পরিবর্তন কিংবা নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় নৌপরিবহন ব্যবস্থা ও কৃষিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আবার প্রকৃতি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই ভূমিকম্প বা আগ্নেয় তৎপরতার মাধ্যমে কোন স্থানের ভূ-পৃষ্ঠে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে। ভূ-পৃষ্ঠের এ পরিবর্তন সাধনে যে সব প্রক্রিয়াসমূহ কার্যরত আছে সেগুলোকে তিন
ভাগে দেখানো হয়। যথা:
- প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াসমূহ (Physical Processes)
- জৈব প্রক্রিয়াসমূহ (Biotic Processes)
- সামাজিক প্রক্রিয়াসমূহ (Social Processes)
সাংস্কৃতিক অঞ্চলসমূহ
আধুনিক ভূগোলের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো মানুষ বিভিন্ন পরিবেশে কিভাবে নিজেকে মানিয়ে নেয় এবং প্রাকৃতিক প্রতিকূল অবস্থাকে কতখানি জয় করে নিজের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পারে তা জানা। মানুষের সংস্কৃতির মান/পর্যায় দ্বারাই নির্ধারিত হয় সে কতখানি প্রকৃতিকে কাজে লাগাতে পারবে। সাংস্কৃতিক অঞ্চল বিষয় ভৌগোলিক জ্ঞান চর্চা মানুষ ও প্রাকৃতিক সম্পদের সম্পর্ক ছাড়াও এর আহরণ ও সহনশীলতা এবং মানবতা সম্পর্কে ধারণা পেতে সাহায্য করে।
সারাংশ
ভূগোল বিষয়ের প্রধান লক্ষ্য ‘মানুষের আবাসভূমি হিসাবে পৃথিবীকে জানা’। গ্রিক যুগ থেকে ভূগোল ধারণার গোঁড়াপত্তন হয়। সে সময় ভূগোল পৃথিবীর ভূভাগ ও মহাজাগতিক বিদ্যাচর্চায় সীমাবদ্ধ ছিল। গ্রিক পণ্ডিত ও ভূগোলবিদ ইরেটোসথেনিসকে ভূগোলের জনক বলা হয়। গ্রিকদের তৈরিকৃত মানচিত্র ভূগোল চর্চায় বিশেষ অবদান রেখেছে। ইউরোপীয় বিশ্ব পরিভ্রমণ যুগে ভূগোল বিষয়ের কদর বাড়তে থাকে। এ সময়ের বিজ্ঞানী ইমানুয়েল কান্ট ভূগোলকে বিজ্ঞানে স্থান করে নিতে বিশেষ অবদান রেখেছেন। আধুনিক যুগের ভূগোল চর্চায় বিভিন্ন বিষয়ের স্থানিক বর্ণনা, বিশ্লেষণ ও অবস্থানগত ধরনের ব্যাখ্যা প্রদান করা এবং পরস্পরের তুলনা ও তারতম্য অনুসন্ধান করার দিকেই সবিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
রক্ষা করে ভূগোল বিশ্বের প্রথম লক্ষ্য যা মানুষের আসবাব গ্রীন যুগ থেকে গুগলের ধারণা আদিকাল থেকে ভূগোল পৃথিবীতে ভূগোল একটি অন্যরকম শব্দ এ সময় বিজ্ঞানীরা ইনচার্জ বিশেষ অবদান রেখেছে ইউরোপীয় বিশ্ব ভ্রমণে যোগ ভূগোল বিষয়ে
ভূগোল কাকে বলে?