০৯:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

আদর্শ সন্তান গঠনে ২০টি নির্দেশনা

আবদুল্লাহিল হাদী বিন আবদুল জলীল
  • প্রকাশ: ০২:৪১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ২০৮০ বার পড়া হয়েছে

সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিরাট নেয়ামত ও আমানত। যার কারণে সন্তানকে সৎ, আদর্শবান ও উত্তম চরিত্রে চরিত্রবান করে গড়ে তোলার দায়িত্ব সর্বপ্রথম পিতাণ্ডমাতার ওপর। তারা এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে বা আমানতের খেয়ানত করলে মহান আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

আজকের যারা শিশু তারাই আগামী দিনের রাষ্ট্রপরিচালক, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল এবং দেশের নাগরিক। সুতরাং তাদেরকে যথাযথভাবে গড়ে তোলার ওপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ। তাই আদর্শ সন্তান গঠনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ-

  • ১. আদর্শ সন্তানের জন্য পিতাণ্ডমাতার সৎ ও আদর্শবান হওয়া অপরিহার্য।
  • ২. সন্তানদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
  • ৩. শিশুদেরকে ভূত-প্রেত, চোর-ডাকাত ইত্যাদির কথা বলে ভয় না দেখানো।
  • ৪. শিশুদেরকে অন্যদের সামনে অপমান বা হেয় প্রতিপন্ন না করা।
  • ৫. খারাপ বা অপ্রীতিকর শব্দ ব্যবহার করে তাকে সম্বোধন না করা। যেমন, নির্বোধ, অপদার্থ, গাধা, গরু, ছাগল ইত্যাদি।
  • ৬. কোনো ক্ষেত্রে ভুল হলে নম্র ও ভদ্রভাবে ভুল সংশোধন করা (বিশেষ করে প্রথমবার)।
  • ৭. সন্তানদের সঙ্গে সমতা রক্ষা করা (স্নেহ, ভালোবাসা বা কোনো কিছু দেওয়া- ইত্যাদি ক্ষেত্রে)।
  • ৮. ১০ বছর বয়স হলে তাদেরকে আলাদা বিছানায় রাখা।
  • ৯. তাদের নিকট দাম্পত্য জীবনের বিষয়াদি গোপন রাখা (সন্তান ছোটো হলেও)।
  • ১০. শিশুদের সামনে মায়ের পাতলা, টাইট বা এমন পোশাক পরিধান না করা যাতে তার গোপনাঙ্গগুলো ফুটে ওঠে।
  • ১১. শিশুদেরকে অশ্লীল, নোংরা ছবি বা ফিল্ম দেখা কিংবা খারাপ গল্প, উপন্যাস ম্যাগাজিন ইত্যাদি পড়ার সুযোগ না দেওয়া।
  • ১২. সাত বছর বয়স পূর্ণ হলে নামাজের আদেশ দেওয়া।
  • ১৩. ১০ বছর বয়স থেকে নামাজ না পড়লে হালকাভাবে প্রহার করা।
  • ১৪. সত্যবাদিতা, আমানতদারিতা, অন্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া, অসহায়কে সাহায্য করা, মেহমানকে সম্মান করা ইত্যাদি উত্তম চরিত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া।
  • ১৫. মিথ্যা, গালাগালি, নোংরা ও নিচু মানের শব্দ ব্যবহার না করতে অভ্যস্ত করা।
  • ১৬. বাল্য বয়সে ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানদান করা। যেমন- ঈমান ও ইসলামের রোকনগুলো, আল্লাহর ভয়, পাঁচ ওয়াক্ত সলাত, কোরআন পড়া, প্রয়োজনীয় দোয়া ও জিকির ইত্যাদি এবং বিশুদ্ধ আকিদানির্ভর দিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির মাধ্যমে ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।
  • ১৭. অন্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। যেমন, পিতাণ্ডমাত, ভাইবোন, প্রতিবেশী, শিক্ষক, ক্লাসমেট, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন ইত্যাদি।
  • ১৮. সামাজিকতা শিক্ষা দেওয়া। যেমন- সালাম দেওয়া, বৈঠকে বসার ভদ্রতা, মানুষের সঙ্গে কথা বলার ভদ্রতা, কারও বাড়িতে প্রবেশের আগে অনুমতি ইত্যাদি।
  • ১৯. কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল ইত্যাদি টেকনোলোজি ব্যবহারের আদব শিক্ষা দেওয়া এবং এগুলোর অন্যায় ব্যবহারের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা।
  • ২০. সর্বদা ভয়-ভীতি প্রদর্শন না করে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা, যাতে তারা তাদের যে কোনো সমস্যা পিতাণ্ডমাতাকে বলতে পারে।

মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন প্রত্যেক পিতাণ্ডমাতাকে সঠিকভাবে তাদের সন্তান-সন্ততি প্রতিপালনের তৌফিক দান করেন। যারা হবে পিতাণ্ডমাতার জন্য চক্ষু শীতলকারী, দেশ ও সমাজের জন্য উপকারী এবং পরকালে পিতাণ্ডমাতার নাজাতের উসিলা। আল্লাহই তৌফিক দানকারী।

শেয়ার করুন

2 thoughts on “আদর্শ সন্তান গঠনে ২০টি নির্দেশনা

  1. মাশাআল্লাহ অসাধারণ লিখেছেন প্রিয় সাইখ,,, বারাকাল্লাহু ফি কুম

  2. খুবই চমৎকার এবং যুগোপযোগী একটি লেখা। যা আমাদের সবার চিন্তা করা উচিত।

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

আবদুল্লাহিল হাদী বিন আবদুল জলীল

দাই, জুবাইল দাওয়াহ অ্যান্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

আদর্শ সন্তান গঠনে ২০টি নির্দেশনা

প্রকাশ: ০২:৪১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিরাট নেয়ামত ও আমানত। যার কারণে সন্তানকে সৎ, আদর্শবান ও উত্তম চরিত্রে চরিত্রবান করে গড়ে তোলার দায়িত্ব সর্বপ্রথম পিতাণ্ডমাতার ওপর। তারা এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে বা আমানতের খেয়ানত করলে মহান আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

আজকের যারা শিশু তারাই আগামী দিনের রাষ্ট্রপরিচালক, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল এবং দেশের নাগরিক। সুতরাং তাদেরকে যথাযথভাবে গড়ে তোলার ওপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ। তাই আদর্শ সন্তান গঠনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ-

  • ১. আদর্শ সন্তানের জন্য পিতাণ্ডমাতার সৎ ও আদর্শবান হওয়া অপরিহার্য।
  • ২. সন্তানদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
  • ৩. শিশুদেরকে ভূত-প্রেত, চোর-ডাকাত ইত্যাদির কথা বলে ভয় না দেখানো।
  • ৪. শিশুদেরকে অন্যদের সামনে অপমান বা হেয় প্রতিপন্ন না করা।
  • ৫. খারাপ বা অপ্রীতিকর শব্দ ব্যবহার করে তাকে সম্বোধন না করা। যেমন, নির্বোধ, অপদার্থ, গাধা, গরু, ছাগল ইত্যাদি।
  • ৬. কোনো ক্ষেত্রে ভুল হলে নম্র ও ভদ্রভাবে ভুল সংশোধন করা (বিশেষ করে প্রথমবার)।
  • ৭. সন্তানদের সঙ্গে সমতা রক্ষা করা (স্নেহ, ভালোবাসা বা কোনো কিছু দেওয়া- ইত্যাদি ক্ষেত্রে)।
  • ৮. ১০ বছর বয়স হলে তাদেরকে আলাদা বিছানায় রাখা।
  • ৯. তাদের নিকট দাম্পত্য জীবনের বিষয়াদি গোপন রাখা (সন্তান ছোটো হলেও)।
  • ১০. শিশুদের সামনে মায়ের পাতলা, টাইট বা এমন পোশাক পরিধান না করা যাতে তার গোপনাঙ্গগুলো ফুটে ওঠে।
  • ১১. শিশুদেরকে অশ্লীল, নোংরা ছবি বা ফিল্ম দেখা কিংবা খারাপ গল্প, উপন্যাস ম্যাগাজিন ইত্যাদি পড়ার সুযোগ না দেওয়া।
  • ১২. সাত বছর বয়স পূর্ণ হলে নামাজের আদেশ দেওয়া।
  • ১৩. ১০ বছর বয়স থেকে নামাজ না পড়লে হালকাভাবে প্রহার করা।
  • ১৪. সত্যবাদিতা, আমানতদারিতা, অন্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া, অসহায়কে সাহায্য করা, মেহমানকে সম্মান করা ইত্যাদি উত্তম চরিত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া।
  • ১৫. মিথ্যা, গালাগালি, নোংরা ও নিচু মানের শব্দ ব্যবহার না করতে অভ্যস্ত করা।
  • ১৬. বাল্য বয়সে ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানদান করা। যেমন- ঈমান ও ইসলামের রোকনগুলো, আল্লাহর ভয়, পাঁচ ওয়াক্ত সলাত, কোরআন পড়া, প্রয়োজনীয় দোয়া ও জিকির ইত্যাদি এবং বিশুদ্ধ আকিদানির্ভর দিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির মাধ্যমে ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।
  • ১৭. অন্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। যেমন, পিতাণ্ডমাত, ভাইবোন, প্রতিবেশী, শিক্ষক, ক্লাসমেট, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন ইত্যাদি।
  • ১৮. সামাজিকতা শিক্ষা দেওয়া। যেমন- সালাম দেওয়া, বৈঠকে বসার ভদ্রতা, মানুষের সঙ্গে কথা বলার ভদ্রতা, কারও বাড়িতে প্রবেশের আগে অনুমতি ইত্যাদি।
  • ১৯. কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল ইত্যাদি টেকনোলোজি ব্যবহারের আদব শিক্ষা দেওয়া এবং এগুলোর অন্যায় ব্যবহারের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা।
  • ২০. সর্বদা ভয়-ভীতি প্রদর্শন না করে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা, যাতে তারা তাদের যে কোনো সমস্যা পিতাণ্ডমাতাকে বলতে পারে।

মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন প্রত্যেক পিতাণ্ডমাতাকে সঠিকভাবে তাদের সন্তান-সন্ততি প্রতিপালনের তৌফিক দান করেন। যারা হবে পিতাণ্ডমাতার জন্য চক্ষু শীতলকারী, দেশ ও সমাজের জন্য উপকারী এবং পরকালে পিতাণ্ডমাতার নাজাতের উসিলা। আল্লাহই তৌফিক দানকারী।