০৩:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে কি ফেরাবে বিসিবি? সঙ্গে আরো কিছু কথা

  • প্রকাশ: ১২:৩৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৪৩১ বার পড়া হয়েছে

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছিলেন ২০২১ টি২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক।

কন্ডিশনিং ক্যাম্পের আগে থেকেই অনুশীলনে বেশ সিরিয়াস ছিলেন আলোচনায় থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তখন অনেকে ধারণা করেছিলেন, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে হয়তো ফেরার কোনো বার্তা পেয়েছেন ৩৭ বছর বয়সি অলরাউন্ডার। নিজের জায়গা ফিরে পেতে বিসিবির মেডিকেল বিভাগে শারীরিক পরীক্ষা থেকে ফিটনেস টেস্ট সবকিছুতেই বয়স অনুযায়ী ভালো স্কোর করে উতরে যান তিনি। তবে গত শনিবার এশিয়া কাপের ১৭ জনের দলে মাহমুদউল্লাহর সুযোগ মেলেনি। তাকে নিয়ে মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এরপর টিম ম্যানেজমেন্ট আমাদের একটা পরিকল্পনা দিয়েছে। সামনে কোন দলের সঙ্গে কীভাবে খেলা হবে এসব নিয়ে।

ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে এবং অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ওয়ানডে এবং প্রায় এক বছর জাতীয় দলের বাইরে থাকা শেখ মেহেদী হাসান ফিরেছেন। ওয়ানডে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা শামীম হোসেনও দলে সুযোগ পেয়েছেন। নান্নু আশাবাদী মেহেদী ও শামীম সুযোগ পেলে মেলে ধরবেন নিজেদের, ‘বিপিএলে সে (মেহেদী) কাঁধের চোটে পড়েছিল। এখন ফিরে এসেছে। যেহেতু ইমার্জিংয়ে ভালো করেছে, আশা করছি, সে নিজেকে মেলে ধরতে পারবে।’

১৭টি টি-টোয়েন্টিতে খেলা শামীমকে নিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, শামীম আমাদের হাই পারফরম্যান্স বিভাগে ছিল। দলে সুযোগ পাওয়ার পর ২০২১-এর দিকে সময়টা খারাপ গেছে। এখন ভালো করছে। গত কয়েকটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো করেছে। ওয়ানডেতে সর্বশেষ আট ইনিংসে ২৩ এর বেশি রান নেই আফিফ হোসেনের। তবু তাকে দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে নান্নুর ব্যাখ্যা, আফিফকে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিছু জায়গা আছে, অধিনায়কের পছন্দ হতে পারে, সেই জায়গায় আমরা তাকে সুযোগ দিয়েছি। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৪০০ ওপরে এবং ইমার্জিং এশিয়া কাপে ৪ ম্যাচে ১৭৯ রান করা জুনিয়র তামিম ছিলেন তামিম ইকবালের বিকল্প হওয়ার আলোচনায়। তাকে নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী প্রধান নির্বাচক। সর্বশেষ বাংলাদেশের আফগানিস্তান সিরিজের দলে ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। কিন্তু এশিয়া কাপের দলে সুযোগ হয়নি তার। যদিও তাইজুলকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তটাও সহজ ছিল না বলে দাবি নান্নুর, ‘তাইজুলের ব্যাপারটা, সে আক্রমণাত্মক। নাসুম একটু রক্ষণাত্মক। ম্যানেজমেন্ট যে পরিকল্পনা দিয়েছে, তাতে নাসুমের দিকে গিয়েছি।’

দুই বছর পর ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েও আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ৯ ও ০ করেছেন মোহাম্মদ নাঈম। এশিয়া কাপের দলে তাঁকে রাখার ব্যাখ্যায় নান্নু বলেছেন, নাঈমের যেহেতু আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আছে, তাই তাকে আরেকটা সুযোগ দিয়েছি। নাঈমের ক্ষেত্রে যে ‘অভিজ্ঞতা’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নির্বাচক কিংবা প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছে, সেটিই আবার গুরুত্বহীন মাহমুদউল্লাহর ক্ষেত্রে। গতকাল তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল কাওসার মিষ্টি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দোয়া করি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো অভিজ্ঞ আর কোনো ক্রিকেটার যেন অবহেলার শিকার না হয়, সুযোগবঞ্চিত না হয়, সাইলেন্ট হিরো না হয়! আগামী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্য ‘বিশ্রামের’ ট্রেন্ড বন্ধ হোক, যাতে তাঁদের অবসরের অধিকার কেড়ে নেওয়া না হয়।’ সব ঠিক থাকলে এশিয়া কাপের দলটাই বিশ্বকাপের দল ধরে নেওয়া হচ্ছে।

সে হিসাবে শিগগিরই বাংলাদেশ দলে মাহমুদউল্লাহর ফেরা কঠিনই। নিকট ভবিষ্যৎ তো বটেই, দূর ভবিষ্যতেও। মাহমুদউল্লাহ টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি দলের বাইরে অনেক দিন হলো। এখন ওয়ানডের দুয়ারও শক্তভাবে বন্ধ হয়ে গেল তার সামনে। এতেই প্রশ্নটা এসে যাচ্ছে- মাহমুদউল্লাহর কি আর ফেরা হবে?

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

কন্ট্রিবিউটর, বিশ্লেষণ

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে কি ফেরাবে বিসিবি? সঙ্গে আরো কিছু কথা

প্রকাশ: ১২:৩৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩

কন্ডিশনিং ক্যাম্পের আগে থেকেই অনুশীলনে বেশ সিরিয়াস ছিলেন আলোচনায় থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তখন অনেকে ধারণা করেছিলেন, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে হয়তো ফেরার কোনো বার্তা পেয়েছেন ৩৭ বছর বয়সি অলরাউন্ডার। নিজের জায়গা ফিরে পেতে বিসিবির মেডিকেল বিভাগে শারীরিক পরীক্ষা থেকে ফিটনেস টেস্ট সবকিছুতেই বয়স অনুযায়ী ভালো স্কোর করে উতরে যান তিনি। তবে গত শনিবার এশিয়া কাপের ১৭ জনের দলে মাহমুদউল্লাহর সুযোগ মেলেনি। তাকে নিয়ে মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এরপর টিম ম্যানেজমেন্ট আমাদের একটা পরিকল্পনা দিয়েছে। সামনে কোন দলের সঙ্গে কীভাবে খেলা হবে এসব নিয়ে।

ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে এবং অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ওয়ানডে এবং প্রায় এক বছর জাতীয় দলের বাইরে থাকা শেখ মেহেদী হাসান ফিরেছেন। ওয়ানডে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা শামীম হোসেনও দলে সুযোগ পেয়েছেন। নান্নু আশাবাদী মেহেদী ও শামীম সুযোগ পেলে মেলে ধরবেন নিজেদের, ‘বিপিএলে সে (মেহেদী) কাঁধের চোটে পড়েছিল। এখন ফিরে এসেছে। যেহেতু ইমার্জিংয়ে ভালো করেছে, আশা করছি, সে নিজেকে মেলে ধরতে পারবে।’

১৭টি টি-টোয়েন্টিতে খেলা শামীমকে নিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, শামীম আমাদের হাই পারফরম্যান্স বিভাগে ছিল। দলে সুযোগ পাওয়ার পর ২০২১-এর দিকে সময়টা খারাপ গেছে। এখন ভালো করছে। গত কয়েকটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো করেছে। ওয়ানডেতে সর্বশেষ আট ইনিংসে ২৩ এর বেশি রান নেই আফিফ হোসেনের। তবু তাকে দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে নান্নুর ব্যাখ্যা, আফিফকে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিছু জায়গা আছে, অধিনায়কের পছন্দ হতে পারে, সেই জায়গায় আমরা তাকে সুযোগ দিয়েছি। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৪০০ ওপরে এবং ইমার্জিং এশিয়া কাপে ৪ ম্যাচে ১৭৯ রান করা জুনিয়র তামিম ছিলেন তামিম ইকবালের বিকল্প হওয়ার আলোচনায়। তাকে নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী প্রধান নির্বাচক। সর্বশেষ বাংলাদেশের আফগানিস্তান সিরিজের দলে ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। কিন্তু এশিয়া কাপের দলে সুযোগ হয়নি তার। যদিও তাইজুলকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তটাও সহজ ছিল না বলে দাবি নান্নুর, ‘তাইজুলের ব্যাপারটা, সে আক্রমণাত্মক। নাসুম একটু রক্ষণাত্মক। ম্যানেজমেন্ট যে পরিকল্পনা দিয়েছে, তাতে নাসুমের দিকে গিয়েছি।’

দুই বছর পর ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েও আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ৯ ও ০ করেছেন মোহাম্মদ নাঈম। এশিয়া কাপের দলে তাঁকে রাখার ব্যাখ্যায় নান্নু বলেছেন, নাঈমের যেহেতু আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আছে, তাই তাকে আরেকটা সুযোগ দিয়েছি। নাঈমের ক্ষেত্রে যে ‘অভিজ্ঞতা’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নির্বাচক কিংবা প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছে, সেটিই আবার গুরুত্বহীন মাহমুদউল্লাহর ক্ষেত্রে। গতকাল তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল কাওসার মিষ্টি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দোয়া করি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো অভিজ্ঞ আর কোনো ক্রিকেটার যেন অবহেলার শিকার না হয়, সুযোগবঞ্চিত না হয়, সাইলেন্ট হিরো না হয়! আগামী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্য ‘বিশ্রামের’ ট্রেন্ড বন্ধ হোক, যাতে তাঁদের অবসরের অধিকার কেড়ে নেওয়া না হয়।’ সব ঠিক থাকলে এশিয়া কাপের দলটাই বিশ্বকাপের দল ধরে নেওয়া হচ্ছে।

সে হিসাবে শিগগিরই বাংলাদেশ দলে মাহমুদউল্লাহর ফেরা কঠিনই। নিকট ভবিষ্যৎ তো বটেই, দূর ভবিষ্যতেও। মাহমুদউল্লাহ টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি দলের বাইরে অনেক দিন হলো। এখন ওয়ানডের দুয়ারও শক্তভাবে বন্ধ হয়ে গেল তার সামনে। এতেই প্রশ্নটা এসে যাচ্ছে- মাহমুদউল্লাহর কি আর ফেরা হবে?