সর্বাত্মক পরিচয়পত্রের সংজ্ঞা এবং এতে কী থাকে? সর্বাত্মক পরিচয়পত্র প্রস্তুত প্রণালী কী?
- প্রকাশ: ১২:২৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২২
- / ১৩২৫১ বার পড়া হয়েছে
সর্বাত্মক পরিচয় পত্র কী
সর্বাত্মক পরিচয়পত্র হলো শিক্ষার্থীদের জীবনের ইতিহাস, যা শুরু হয় তাদের যোগদানের সময় এবং তার শিক্ষা সমাপ্তিকাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়। সর্বাত্মক পরিচয়পত্রের অপর নাম ‘ক্রমপুঞ্জিত পরিচয়পত্র’।
সর্বাত্মক পরিচয়পত্র হলো একেকজন শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীন উন্নতির পরিচয়পত্র। সর্বাত্মক পরিচয়পত্রে শিক্ষার্থীর শিক্ষণীয় বিষয়ের কৃতিত্বের রেকর্ডসহ তার দৈহিক, মানসিক, প্রক্ষোভিক, সামাজিক, প্রবণতা, বুদ্ধি ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নতির মাত্রা ও পরিচয় লিপিবদ্ধ করা হয়।
সুতরাং, যে পুস্তিকা বা পত্রে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষণীয় বিষয়ের কৃতিত্ব বা অগ্রগতি, তাদের স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিসত্তার বিশেষ বৈশিষ্ট্য, কাজকর্ম, সামাজিক আচরণ, বুদ্ধি, প্রবণতা ইত্যাদি বিষয়ের উপর নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আহরিত তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে, তাকে সর্বাত্মক পরিচয়পত্র বলে। এই সর্বাত্মক পরিচয়পত্র বা ক্রমপুঞ্জিত পরিচয়পত্রের উপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের আচরণ বা জীবনে পরিবর্তন আনার সুযোগ পাওয়া যায়।
সর্বাত্মক পরিচয়পত্রে কী কী থাকে?
ইতোমধ্যেই বলা হয়েছে যে, সর্বাত্মক পরিচয়পত্রের অপর নাম ক্রমপুঞ্জিত পরিচয়পত্র; সুতরাং এই পরিচয়পত্রে সকল তথ্যের পুঞ্জিভুত রূপ থাকে। সধারণত যে সব বিষয় ক্রমপুঞ্জিত বা সর্বাত্মক পরিচয়পত্রে থাকে তা হলো:
- মৌলিক পরিচয়
- পারিবারিক পরিচয়
- পাঠোন্নতির বিবরণ
- সামাজিকতার পরিচয়
- ঝোঁকের পরিচয়
- চারু ও কারুশিল্পে প্রবণতার পরিচয়
- স্বাস্থ্য পরিচয়
- ব্যক্তিত্বের পরিচয়
- সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলির পরিচয়
- বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতির নকশা
- আগ্রহের পরিচয়
- স্কুলে দায়িত্ব পালনে শিক্ষার্থীর অবস্থান
- পুরষ্কার প্রাপ্তি ইত্যাদির পরিচয়
সর্বাত্মক পরিচয়পত্র সংরক্ষণ প্রণালী
সর্বাত্মক পরিচয়পত্র সংরক্ষণের পূর্বে অবশ্যই শিশুদের (শিক্ষার্থী) ধারাবাহিক মূল্যায়নকে গুরুত্ব দিতে হবে। সর্বাত্মক পরিচয়পত্র সংরক্ষণের জন্য যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে তা হলো:
- প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কম পক্ষে তিন বা পাঁচ বছরের রেকর্ড একসঙ্গে থাকবে।
সাধারণত ১ম পরিচয়পত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি;
দ্বিতীয়টিতে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে যে রেকর্ড রাখা শুরু হবে তা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চলবে;
তৃতীয় পরিচয়পত্র শুরু হবে নবম শ্রেণি থেকে চলবে দশম শ্রেণি পর্যন্ত।
- যে-কোনো শিক্ষক যে-কোনো শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র দেখতে পারেন।
- এক শিক্ষার্থীকে অন্য শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র দেখানো যাবে না।
- পরিচয়পত্রটি এমনভাবে লিখতে হবে যেন যে কোন শিক্ষার্থী সম্বন্ধে প্রয়োজনীয় কোন তথ্য এক নজরে চোখে পড়ে।
- পরিচয়পত্রে তথ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
- শ্রেণি শিক্ষক বা পরামর্শদাতাই কেবলমাত্র পরিচয়পত্র সংরক্ষণ করবেন।
- শিক্ষার্থীর চাহিদা অনুসারে শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে তাকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবেন।
- প্রয়োজনে অভিভাবককে এই পরিচয়পত্র দেখানো যেতে পারে।
- বিদ্যালয় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই পরিচয়পত্র ট্রান্সফার সার্টিফিকেটের সাথে দিতে হবে।