০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

ইসলাম ধর্মে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব

  • প্রকাশ: ০৫:৪৫:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অগাস্ট ২০২১
  • / ৬৯৬ বার পড়া হয়েছে

বৃক্ষরোপণ


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

ভারসাম্যপূর্ণ ও দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সবচেয়ে বড়ো ভূমিকা বৃক্ষের। বৃক্ষ শুধু পরিবেশ রক্ষার জন্যই নয়; বরং ধর্মীয় কারণেও মানুষের বৃক্ষরোপণ করা চাই। মহানবি (সা.) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও তা পরিচর্যার কথা উল্লেখ করে বিভিন্ন হাদিসে উৎসাহ ও নির্দেশনা দিয়েছেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর মোট উদ্ভিদ প্রজাতির ভেতরকার ২৫ শতাংশই বৃক্ষ। বৃক্ষ ছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশ কল্পনা করা অবান্তর। ইসলাম সঙ্গত কারণেই পরিবেশ সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণে জনসচেতনতা তৈরিতে উদসাহ ও নির্দেশনা দিয়েছে।

বৃক্ষরাজি ও প্রকৃতি নিয়ে কোরআনের বর্ণনা

আল্লাহ তায়ালা মানুষের প্রয়োজনীয় জীবনোপকরণ হিসেবে ফলবান বৃক্ষরাজি ও সবুজ-শ্যামল সৃষ্টি করেছেন। বনভূমির মাধ্যমে পৃথিবীকে সুশোভিত ও অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছেন। গাছপালার মাধ্যমে ভূম-ল ও পরিবেশ-প্রাকৃতিক ভারসাম্য সংরক্ষণের শিক্ষা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি ও তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে নয়নাভিরাম সর্বপ্রকার উদ্ভিদ উদ্গত করেছি। আর আমি আকাশ থেকে কল্যাণময় বৃষ্টিবর্ষণ করি এবং এর দ্বারা উদ্যান ও পরিপক্ব শস্যরাজি উদ্গত করি, যেগুলোর ফসল আহরণ করা হয়।’ (সুরা কাফ: ৭-৯)।

অন্য আয়াতে এসেছে ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি বায়ু প্রেরণ করেন। অতঃপর তা (বায়ু) মেঘমালাকে সঞ্চালিত করেন। অতঃপর তিনি (আল্লাহ) মেঘমালাকে যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তা স্তরে স্তরে রাখেন। এরপর তুমি দেখতে পাও, তার মধ্য থেকে বারিধারা নির্গত হয়। তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যাদের ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান, তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সুরা রুম: ৪৮)।

পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির কিছু দৃশ্য মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। যেন মানুষ প্রাকৃতিক বিচিত্র, প্রকারভেদ, বর্ণ, গন্ধ ও সৌন্দর্য দেখে পুলকিত ও অভিভূত হয়। সব কিছুর উন্নতি, অগ্রগতি ও সক্রিয়তা দেখে মানুষ আল্লাহর শক্তিমত্তার কথা স্মরণ করে। এরশাদ হয়েছে, ‘তিনি তোমাদের জন্য তা (পানি) দিয়ে জন্মান শস্য, জয়তুন, খেজুরগাছ, আঙুর ও সব ধরনের ফল। অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সুরা নাহল: ১১)।

বৃক্ষরাজি যে কত বড়ো নিয়ামত, পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতের মাধ্যমে তা প্রতীয়মান হয়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘তারা কি লক্ষ করে না? আমি ঊষর ভূমির ওপর পানি প্রবাহিত করে তার সাহায্যে উদ্গত করি শস্য, যা থেকে তাদের গবাদি পশু এবং তারা নিজেরা আহার গ্রহণ করে।’ (সুরা সাজদা: ২৭)।

গাছবিহীন এক মুহূর্তও অসম্ভব। মানুষের যাপিত জীবনের সব কিছুই গাছ ঘিরে ও গাছকে নিয়ে। তাই গাছ নিধন হলে গাছ শুধু একাই মরে না। মানুষসহ সব প্রাণসত্তার জন্যই তা ঝুঁকি ও উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একটি পূর্ণবয়স্ক বৃক্ষ বছরে যে পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করে, তা কমপক্ষে ১০ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের বার্ষিক অক্সিজেনের চাহিদা মেটায়। ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিএম দাস ১৯৭৯ সালে পূর্ণবয়স্ক একটি বৃক্ষের অবদান আর্থিক মূল্যে বিবেচনা করে দেখান যে ৫০ বছর বয়সি একটি বৃক্ষের অর্থনৈতিক মূল্য প্রায় ১ লাখ ৮৮ হাজার মার্কিন ডলার (সূত্র: ইন্ডিয়ান বায়োলজিস্ট, ভলিয়ম-১১, সংখ্যা-১-২)।

বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে হাদিসে উৎসাহ ও নির্দেশনা

হাদিসে এসেছে, ‘যদি কোনো মুসলমান একটি বৃক্ষরোপণ করে অথবা কোনো শস্য উৎপাদন করে এবং তা থেকে কোনো মানুষ কিংবা পাখি অথবা পশু ভক্ষণ করে, তবে তা উৎপাদনকারীর জন্য সদকা (দান) স্বরূপ গণ্য হবে।’ (বোখারি: ২৩২০, মুসলিম: ১৫৬৩/১২)। এ হাদিসটি আরও স্পষ্ট করে অন্য জায়গায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি বৃক্ষরোপণ করে তা ফলদার হওয়া পর্যন্ত তার পরিচর্যা ও সংরক্ষণে ধৈর্য ধারণ করে, তার প্রতিটি ফল যা নষ্ট হয়, তার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তাকে সদকার নেকি দেবেন।’ (মুসনাদ আহমাদ: ১৬৭০২)। অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো বৃক্ষরোপণ করে, আল্লাহ তায়ালা এর বিনিময়ে তাকে ওই বৃক্ষের ফলের সমপরিমাণ প্রতিদান দান করবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৩৫৬৭)।

বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা সম্পর্কে হাদিস: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করতে নির্দেশ দিয়ে মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে, কেয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি রোপণ করবে।’ (বোখারি, আদাবুল মুফরাদ: ৪৭৯; মুসনাদ আহমদ: ৩/১৮৩)। অন্য বর্ণনায় মহানবি (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘কেয়ামত এসে গেছে, এমন অবস্থায় তোমাদের কারও হাতে যদি ছোটো একটি খেজুরগাছ থাকে, তাহলে সে যেন গাছটি রোপণ করে দেয়।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১২৯০২; আল-আদাবুল মুফরাদ: ৪৭৯; মুসনাদে বাজজার: ৭৪০৮)।

ইসলাম ধর্মে বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটার শাস্তি

হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটবে [যে গাছ মানুষের উপকার করত], আল্লাহ তার মাথা আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করবেন।’ (বায়হাকি: ৬/১৪০)। অবশ্য এই হাদিসের বর্ণনা দুর্বল। হাদিসবিশারদরা দীর্ঘ ব্যাখ্যা ও প্রাসঙ্গিকতা বর্ণনা করেছেন।

বৃক্ষের ছায়ায় মহানবি (সা.)

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘মক্কা এবং মদিনার মাঝে অবস্থিত একটি বৃক্ষের কাছে যখন মহানবি (সা.) আসতেন, তখন তার নিচে শুয়ে বিশ্রাম করতেন।’ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরূপ করতেন। (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব: ৪৭)। গাছ-বৃক্ষ প্রকৃতি ও পরিবেশের ‘বন্ধু’। তাই নির্বিচারে গাছ না কেটে প্রচুর বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করি। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।

বিষয়:

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

ইসলাম ধর্মে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব

প্রকাশ: ০৫:৪৫:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অগাস্ট ২০২১

ভারসাম্যপূর্ণ ও দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সবচেয়ে বড়ো ভূমিকা বৃক্ষের। বৃক্ষ শুধু পরিবেশ রক্ষার জন্যই নয়; বরং ধর্মীয় কারণেও মানুষের বৃক্ষরোপণ করা চাই। মহানবি (সা.) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও তা পরিচর্যার কথা উল্লেখ করে বিভিন্ন হাদিসে উৎসাহ ও নির্দেশনা দিয়েছেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর মোট উদ্ভিদ প্রজাতির ভেতরকার ২৫ শতাংশই বৃক্ষ। বৃক্ষ ছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশ কল্পনা করা অবান্তর। ইসলাম সঙ্গত কারণেই পরিবেশ সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণে জনসচেতনতা তৈরিতে উদসাহ ও নির্দেশনা দিয়েছে।

বৃক্ষরাজি ও প্রকৃতি নিয়ে কোরআনের বর্ণনা

আল্লাহ তায়ালা মানুষের প্রয়োজনীয় জীবনোপকরণ হিসেবে ফলবান বৃক্ষরাজি ও সবুজ-শ্যামল সৃষ্টি করেছেন। বনভূমির মাধ্যমে পৃথিবীকে সুশোভিত ও অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছেন। গাছপালার মাধ্যমে ভূম-ল ও পরিবেশ-প্রাকৃতিক ভারসাম্য সংরক্ষণের শিক্ষা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি ও তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে নয়নাভিরাম সর্বপ্রকার উদ্ভিদ উদ্গত করেছি। আর আমি আকাশ থেকে কল্যাণময় বৃষ্টিবর্ষণ করি এবং এর দ্বারা উদ্যান ও পরিপক্ব শস্যরাজি উদ্গত করি, যেগুলোর ফসল আহরণ করা হয়।’ (সুরা কাফ: ৭-৯)।

অন্য আয়াতে এসেছে ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি বায়ু প্রেরণ করেন। অতঃপর তা (বায়ু) মেঘমালাকে সঞ্চালিত করেন। অতঃপর তিনি (আল্লাহ) মেঘমালাকে যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তা স্তরে স্তরে রাখেন। এরপর তুমি দেখতে পাও, তার মধ্য থেকে বারিধারা নির্গত হয়। তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যাদের ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান, তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সুরা রুম: ৪৮)।

পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির কিছু দৃশ্য মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। যেন মানুষ প্রাকৃতিক বিচিত্র, প্রকারভেদ, বর্ণ, গন্ধ ও সৌন্দর্য দেখে পুলকিত ও অভিভূত হয়। সব কিছুর উন্নতি, অগ্রগতি ও সক্রিয়তা দেখে মানুষ আল্লাহর শক্তিমত্তার কথা স্মরণ করে। এরশাদ হয়েছে, ‘তিনি তোমাদের জন্য তা (পানি) দিয়ে জন্মান শস্য, জয়তুন, খেজুরগাছ, আঙুর ও সব ধরনের ফল। অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সুরা নাহল: ১১)।

বৃক্ষরাজি যে কত বড়ো নিয়ামত, পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতের মাধ্যমে তা প্রতীয়মান হয়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘তারা কি লক্ষ করে না? আমি ঊষর ভূমির ওপর পানি প্রবাহিত করে তার সাহায্যে উদ্গত করি শস্য, যা থেকে তাদের গবাদি পশু এবং তারা নিজেরা আহার গ্রহণ করে।’ (সুরা সাজদা: ২৭)।

গাছবিহীন এক মুহূর্তও অসম্ভব। মানুষের যাপিত জীবনের সব কিছুই গাছ ঘিরে ও গাছকে নিয়ে। তাই গাছ নিধন হলে গাছ শুধু একাই মরে না। মানুষসহ সব প্রাণসত্তার জন্যই তা ঝুঁকি ও উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একটি পূর্ণবয়স্ক বৃক্ষ বছরে যে পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করে, তা কমপক্ষে ১০ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের বার্ষিক অক্সিজেনের চাহিদা মেটায়। ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিএম দাস ১৯৭৯ সালে পূর্ণবয়স্ক একটি বৃক্ষের অবদান আর্থিক মূল্যে বিবেচনা করে দেখান যে ৫০ বছর বয়সি একটি বৃক্ষের অর্থনৈতিক মূল্য প্রায় ১ লাখ ৮৮ হাজার মার্কিন ডলার (সূত্র: ইন্ডিয়ান বায়োলজিস্ট, ভলিয়ম-১১, সংখ্যা-১-২)।

বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে হাদিসে উৎসাহ ও নির্দেশনা

হাদিসে এসেছে, ‘যদি কোনো মুসলমান একটি বৃক্ষরোপণ করে অথবা কোনো শস্য উৎপাদন করে এবং তা থেকে কোনো মানুষ কিংবা পাখি অথবা পশু ভক্ষণ করে, তবে তা উৎপাদনকারীর জন্য সদকা (দান) স্বরূপ গণ্য হবে।’ (বোখারি: ২৩২০, মুসলিম: ১৫৬৩/১২)। এ হাদিসটি আরও স্পষ্ট করে অন্য জায়গায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি বৃক্ষরোপণ করে তা ফলদার হওয়া পর্যন্ত তার পরিচর্যা ও সংরক্ষণে ধৈর্য ধারণ করে, তার প্রতিটি ফল যা নষ্ট হয়, তার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তাকে সদকার নেকি দেবেন।’ (মুসনাদ আহমাদ: ১৬৭০২)। অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো বৃক্ষরোপণ করে, আল্লাহ তায়ালা এর বিনিময়ে তাকে ওই বৃক্ষের ফলের সমপরিমাণ প্রতিদান দান করবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৩৫৬৭)।

বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা সম্পর্কে হাদিস: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করতে নির্দেশ দিয়ে মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে, কেয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি রোপণ করবে।’ (বোখারি, আদাবুল মুফরাদ: ৪৭৯; মুসনাদ আহমদ: ৩/১৮৩)। অন্য বর্ণনায় মহানবি (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘কেয়ামত এসে গেছে, এমন অবস্থায় তোমাদের কারও হাতে যদি ছোটো একটি খেজুরগাছ থাকে, তাহলে সে যেন গাছটি রোপণ করে দেয়।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১২৯০২; আল-আদাবুল মুফরাদ: ৪৭৯; মুসনাদে বাজজার: ৭৪০৮)।

ইসলাম ধর্মে বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটার শাস্তি

হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটবে [যে গাছ মানুষের উপকার করত], আল্লাহ তার মাথা আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করবেন।’ (বায়হাকি: ৬/১৪০)। অবশ্য এই হাদিসের বর্ণনা দুর্বল। হাদিসবিশারদরা দীর্ঘ ব্যাখ্যা ও প্রাসঙ্গিকতা বর্ণনা করেছেন।

বৃক্ষের ছায়ায় মহানবি (সা.)

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘মক্কা এবং মদিনার মাঝে অবস্থিত একটি বৃক্ষের কাছে যখন মহানবি (সা.) আসতেন, তখন তার নিচে শুয়ে বিশ্রাম করতেন।’ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরূপ করতেন। (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব: ৪৭)। গাছ-বৃক্ষ প্রকৃতি ও পরিবেশের ‘বন্ধু’। তাই নির্বিচারে গাছ না কেটে প্রচুর বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করি। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।