তোমোয়ে স্কুল ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় মস্তিস্কের ঘুমভাঙ্গার কাজ
- প্রকাশ: ১০:৪৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ অক্টোবর ২০২২
- / ৯৭৪ বার পড়া হয়েছে
শিক্ষা হবে আনন্দময়। আজ ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার শিশুরা জন্মের পর পায় মানবিক শিক্ষাব্যবস্থা যেখানে আনন্দ, গান, ও জীবনকে অনুভব করে মহৎ হবার মহিমায়। আর আমাদের শিশুরা ভয়-ভীতির সাথে যুদ্ধ করতে করতে নিরানন্দ জীবন পায় এইজন্য যে এই শিক্ষা শেখায় বড়ো হয়ে সে অনেক টাকা আয় করবে, একটা সরকারি চাকরি জুটিয়ে নেবে। তাই তো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর চাকরিই যেন তাদের মূল লক্ষ্য, চাকরির পড়াই হয়ে যায় মূল কাজ। সৈন্যদলের মতো প্যারেড কুচকাওয়াজে একই অঙ্গভঙ্গী করে একই পোশাক পরে একই ধাঁচে ফেলে তৈরি করার প্রবণতা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায়। একই রকম পণ্য তৈরি করার কারখানার মতো একই রকমের মানুষ তৈরির জায়গা স্কুল নয়। শিক্ষার্থীদের মাথা ও হৃদয়ে সহমর্মিতার আলো জ্বালাতে পারলে প্রতিটি শিশুই স্বাধীন মানুষ হিসাবে গড়ে উঠত, তুচ্ছাতিতুচ্ছ বস্তুর প্রতি মনোযোগ ও মমতা দিতে পারত।
তোমোয়ে স্কুল যে আলো দেখিয়েছিল
জাপানি লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি দেখিয়েছেন একটা স্কুল যার নাম ‘তোমোয়ে গাকুয়েন বিদ্যালয়’ কীভাবে তাঁর জীবনকে সুন্দর অর্থবহ ধারায় পরিচালিত করেছে। সোশাকু কোবাইয়াশি ছিলেন এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এবং হেডমাস্টার। আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, এই স্কুল রেলগাড়ির কামরার মধ্যে। আনন্দ এবং স্বাধীনতার মাধ্যমে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন তোমোয়ে স্কুলের সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের। কুরোয়ানাগিকে অমনোযোগিতার জন্য প্রথম স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেই রেলগাড়ি স্কুলে যাওয়ার জন্য তিনি উন্মুখ হয়ে বসে থাকতেন। বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন কিংবা আইনস্টাইনও ঠিক তাঁরা হয়ে উঠতে পারতেন না যদি তাদের মা মেধা বিকাশের জন্য প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প খুঁজে না নিতেন কারণ তাঁরা প্রথম শ্রেণিতেই বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। রবি ঠাকুরের “পাখির পালক” কবিতার মেয়ে যখন মাকে তার স্বপ্নে মোড়া পাখির পালক দেখাল, তখন মায়ের একটিমাত্র উক্তি “কিবা জিনিসের ছিরি!” তার শিশু মনের নীল আকাশের কথা, মেঘেদের কাহিনী অরুণ পাখার তরুণ আলোক গোপনের ধন হয়ে অলক্ষ্যেই রয়ে গেল।
আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ও মানবিকতা
পিএসসি, জেএসসি, এ প্লাস, গোল্ডেন এ প্লাস বেশি বেশি পরীক্ষা আর বেশি বেশি সার্টিফিকেটের মোহ যখন ভাবনার আকাশে ডালপালা ছড়ায় তখন প্রাপ্তিতে জেগে ওঠে আরও বেশি পরিমাণে পাওয়ার নেশা। একজন শিক্ষার্থী তখনি বন্দী হয়ে যায়। এখন তো কো শিক্ষার্থী খুঁজে পাই না সবাই হলো পরীক্ষার্থী। ক্লাস করা মানে প্রশ্ন দেওয়া ও নেয়া। তা প্রথম শ্রেণিই হোক আর বিশ্ববিদ্যালয়ই হোক না কেন। আমাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য যখন শুধু নম্বর পাওয়া, অল্প পড়ে বেশি নম্বরের কোচিং প্রতিযোগিতা তখন ভাবনাগুলোর চারিপাশে দেয়াল উঠতে থাকে। হারিয়ে যায় এই সমাজ, এই পরিবেশ, এই মাঠ, নদনদী, বন, বায়ুর এই সুন্দর ভুবনের প্রতি দায়িত্ব ও কাজ। মানবিক চেতনা ও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ক্রমাগতভাবে আমরা উজাড় করি বন, নদী, চারপাশের প্রকৃতি, দুষিত হয় পরিবেশ, আমাদের শিক্ষাকেন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয়। খুব ক্ষতি হচ্ছে এই প্রজন্মের শিশুদের। স্কুলের চেয়ে কোচিং সেন্টারের চাহিদা বেশি আবার পাঠ্যবইয়ের চেয়ে গাইড বইয়ের কদর বেশি কিংবা শিক্ষকের চেয়ে টিউটরের মূল্য বেশি হলে জীবনের স্কুল হতে কি শেখার আছে? জীবনের চ্যালেঞ্জ, মানবিকতা, সেবা দেওয়ার মানসিকতা ও ভালো মানুষ হবার মানবিক গুণাবলির বিকাশ হচ্ছে না। তুচ্ছ কারণে গত ছয়মাসে ৭৩৯১ জন আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যাকারীদের ২৫ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের কম। মোবাইল কিনে না দেওয়া বা মা-বাবা বকাঝকা করলেও আত্মহত্যা করছে কিশোর বয়সীরা। শুধু কিশোর-কিশোরী নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মধ্যেও আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে।গত আড়াই মাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। রবি ঠাকুর ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শ নিয়ে বক্তৃতায় বলেন, ”আমরা দাবি করব সেই শিক্ষার যা সত্যের জন্য সুন্দরের জন্য যা অনুসন্ধিৎসা এনে দেবে, মানসে একটি মননশক্তি জাগিয়ে তুলবে, যে শক্তি সারাটা দেশ জুড়ে তার খেলা খেলবে। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেইটাই হলো সবচেয়ে বড়ো কাজ, যা একটা জীবন্ত প্রাণবন্ত জীবের রসসঞ্চালনের পথ হবে, আরও যা দেশের লোকের ও জাতির জ্ঞানের একনিষ্ঠার ধারাকে স্বচ্ছন্দভাবে প্রকাশ করবে”।
শিক্ষা হোক আনন্দময় ও ভিতর জগত মমতাময়
শিক্ষার্থীর সুন্দর ও আনন্দময় শিক্ষাজীবন কে না চায়? শিশুকাল হতেই শুরু করি যেমন ‘জুতোর ফিতে বাঁধা’ প্রশিক্ষণ দেওয়া। স্কুলের শিক্ষকগণ এই জ্ঞানটি সঠিক ভাবে শেখালে সারা জীবন নিজের, সংসারের, সমাজের ও দেশের দায়িত্ব ধরে রাখতে পারবে। আমেরিকার বাচ্চাদের ছোটো থেকেই স্বনির্ভরতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। নিজের জামা কাপড় নিজে পরা, বইপত্র খেলনা, বিছানা গোছানো, টয়লেট ব্যবহার, ব্রাশ করা, নিজের খাবার নিজে খেয়ে প্লেট পরিষ্কার ইত্যাদি। এই শিক্ষাগুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে বাচ্চাদের হৃদয়ে পৌঁছে দিতে পারি অনেক সহজে। তখন দেখা যাবে আমাদের বাচ্চারা স্কুল হতে ঘরে ফিরে স্কুলের ইউনিফর্ম ছেড়ে সেলফে ভাঁজ করে রেখে বেসিনে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে খাবারের প্লেট নিয়ে নিজে খেতে বসবে। আবার বাড়িতে কেউ এলে বা পথে কাউকে দেখলে সুন্দর অভিবাদন জানাবে। প্রতিটি মানুষকে নারী-বৃদ্ধ সবাইকে কীভাবে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো যায় সব হাতে খড়ি সম্ভব এই লেভেলের শিক্ষা হতেই। এইসব সামাজিক শিক্ষার শুরু প্রাথমিক স্কুল বা কিন্ডারগার্টেন লেভেলেই তো হবার কথা ছিল? কিন্তু তাঁরা কেবল অনেকগুলো মুখস্ত কবিতা, রাইম শেখায়। যদি শিক্ষাব্যবস্থায় শুদ্ধাচারকে গুরুত্ব দেওয়া হত, ছাত্রের হাতে শিক্ষককে মার খাওয়া বা হল দখলের মতো অশুভ প্রতিযোগিতা হত না। জাতির অন্যতম মেধাবী সন্তান হয়েও আহা কি নির্মম, পৈশাচিকভাবে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গভীরভাবে লক্ষ্য করলে এই অমানবিকতার কালো ছায়ার উৎস খুঁজে পাওয়া সম্ভব। সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ লাশ, হাতুড়ি, চাপাতির ব্যবহার যারা করে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা কেন করা হবে না? যদিও শারীরিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য ৭২ সালের অর্ডিন্যান্সে শরীরচর্চা শিক্ষকের দায়িত্ব ও কাজ স্পষ্ট করে দেওয়া আছে। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার কি হবে? যা হোক, ধৈর্য মমতা আদর দিয়ে বাচ্চা বয়সে শেখানোর বিকল্প আর কিছু হতে পারে না। শেয়ার করতে শেখা বা প্রকৃতি হতে দেওয়া নেয়ার জ্ঞান শিশুর অন্তরে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দেবে যা তাকে সুশৃঙ্খল ও সুসভ্য সুন্দর মনের মানুষ করে গড়ে তুলবে। আবার টীমওয়ার্ক কীভাবে করতে হয়, সবাই একসাথে কাজের অভিজ্ঞতা শিশুকে সহযোগিতামূলক মনোভাব বিকশিত হতে সাহায্য করবে। একটা শিশু সবার সাথে কতটা মিশতে পারে, কতটা বন্ধুসুলভ, কতটা সহযোগিতাপ্রবণ, টীমওয়ার্কে কতটা সাবলীল এসবই তো ক্লাস পারফরমেন্স বা মূল্যায়নে থাকা উচিত। আমরা মুখস্ত কিছু নীতিকথা, মিথ্যা কথার ফুলঝুরি, সত্যকে নানাভাবে মিথ্যা করে টেনে টুনে বড় করার বিতর্ক শেখাচ্ছি। এটা থেকে বেরিয়ে আসাটা প্রয়োজন। ফল লাভের আশা না করে কাজ করে যাবার কথা প্রতিটি ধর্মীয় বাণীই আমাদের প্রতিনিয়ত জানান দেয়। আমাদের মেধায়, মননে ও কর্মে তার প্রতিফলন দরকার। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “আমারে না যেন করি প্রচার আমার আপন কাজে; তোমারি ইচ্ছা করো হে পূর্ণ আমার জীবন-মাঝে”।
গবেষণায় দেখা গেছে যারা সম্পদ, সম্মান, খ্যাতির তাড়নায় পথ চলে তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ও হতাশার জন্ম নেয়। যারা অন্তরের ডাক শুনে মানুষের প্রতি মমতায় অন্যের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা দুশ্চিন্তা ও হতাশামুক্ত থাকে। সেবা বা স্বেচ্ছাশ্রমের ভালো কাজগুলোকে ক্রেডিট আওয়ারে যোগ করার প্রচলন অনেক দেশেই আছে।
কেমন হতে পারত দেশের শিক্ষাব্যবস্থা?
আবর্জনার মতো হোমওয়ার্ক ও পরীক্ষার চাপ শিশুকে সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে দেয়না। প্রতিটা শিশু অনন্য ও এক একটি ফুল। তাকে তাঁর মতো করে বেড়ে উঠার পথে সাহায্য করা প্রয়োজন। আমরা চাপিয়ে দেই তোমাকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। বাচ্চাকে সমহিমায় বিকশিত হতে সক্ষম করে তুলতে হবে ও তাঁর সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে। স্কুলে কোন বাচ্চাকে আমরা প্রথমে যা শেখাই তা হলো ‘চুপ কর, কথা বলবে না’। যে যত চুপ থাকবে সে তত ভালো বলে মনে করি। একটা বাচ্চা চুপচাপ করে বসে থাকা যে স্বাস্থ্যকর কিছু না সে কথা আমরা কীভাবে বুজব? আমরা বড়রা ভাবি বাচ্চারা আমাদের নিয়মের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিবে। আমেরিকায় এক পুলিশকে দেখেছিলাম হাঁটু ভাঁজ করে বসে ছোটো এক বাচ্চার সামনে সমান হয়ে কথা বলছে ও তাঁর পিস্তল দেখাচ্ছে।
ট্রাফিক আইনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি শিশু বয়স হতে জেন্ডার সমতার প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। “আতা গাছে তোতা পাখি ডালিম গাছে মৌ, এত ডাকি তবু কেন কও না কথা বউ” কিংবা “ বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর… শিব ঠাকুরের বিয়ে হবে তিন কন্যা দান” এই সব আজগুবি বউ বউ খেলা ও বহু বিবাহের তত্ত্ব কি শিশু বয়সে দেওয়া উচিত? পারিবারিক সহিংসতা, নির্যাতন ও সাংসারিক অশান্তির মূল কারণ হলো শিশু বয়সে জেন্ডার সমতার প্রশিক্ষণ না দেওয়া। গার্হস্থ্য বিজ্ঞানের ক্লাস শুধু মেয়েদের কেন হবে? ছেলে মেয়ে সবাইকে শেখাতে হবে। আজকাল গৃহকর্মী পাওয়া যায় না বা ব্যয়বহুল। বাবা মাকে কিংবা স্বামী-স্ত্রীকে সমান ভাবে সাহায্য করলে ঘরের কাজগুলো সুন্দর হয়। ছেলেরা শুধু টি ভি দেখবে বা বাইরে চায়ের দোকানে আড্ডা দেবে এমনটা হবার কথা ছিল না। বাবা মা কে ঘরের প্রতিটি কাজে সাহায্য করা, ঘর পরিষ্কার করা, রান্না করা ছেলে মেয়ে সবার দায়িত্ব। তেমনি বাগান করা, সবজি লাগানো বা আগাছা পরিষ্কার করা ও কৃষি কাজে অংশ নেয়া একটা বাচ্চাকে কৃষক ও ফল উৎপাদনকারীদের ভালবাসতে সাহায্য করবে ও উন্নয়নশীল পরিকল্পনায় অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করবে।
মস্তিস্কের ঘুমভাঙ্গার কাজ বড়ই প্রয়োজন
জীবন অনেক মহৎ ও বড়। জীবনটাকে বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ হতে দেওয়া উচিত নয়। সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্তি ও পরীক্ষা-ভীতির কারণে অনেকেই হতাশায় ও বিষাদময় জীবনের জালে বন্দী হয়। শিক্ষকদের গভীরভাবে দেখা ও পর্যবেক্ষণ করা দরকার যে শিশুর সামাজিক ও মানসিক উন্নয়ন ঘটছে কি না। ক্লাসে কেউ বেশি ভাল পারলে বা তাঁর কাজ শেষ করলে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া যে কম পারে তাঁকে সাহায্য করা। তবেই সহযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি হবে। এছাড়া সহনশীলতার অনুশীলন শিশুকাল হতে শিক্ষা দেওয়া শুরু করলে অন্য ধর্ম, ভাষা, জাতীয়তাকে শ্রদ্ধা করতে শিখবে।
শিশুকালে বাচ্চাদের পাঁচটি ফুল ও পাঁচটি ফলের মান মুখস্ত করতে হয় অথচ জরুরি ছিল ফুলটি কেমন, কীভাবে ফুল হতে ফল হয়, মেঘ হতে বৃষ্টি হয় হাতে কলমে মাঠে, বাগানে, পুকুরে নিয়ে দেখানো যে দেখ কত রকমের মাছ হয়। এগুলো আমিষ এগুলো বেশি করে খেতে হয়, সবজি ফল বেশি করে খাবে। চাইনি্জ, জাঙ্ক ফুড, কোমল পানীয় খাবে না। ডাবের পানি খাবে, কেন খাবে সেই জ্ঞান তাঁকে দিতে হবে। এতে করে শিশুরা কোনটি স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার আর কোনটি অস্বাস্থ্যকর খাবার জানলে এই প্রজন্ম শক্তিশালী দেহ মন নিয়ে দেশকে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারবে। শিশুদের স্বপ্নময় ভবিষ্যতের জন্য গতানুগতিক স্কুলের বাইরে নানা রঙের বৈচিত্র্যময় ফুলফলে ভরা বাগান, গাছ লতাপাতার বাড়ন্ত ভুবন, ফটোসিনথেসিস, মৌমাছির মধু আহরণ, ফুলের পরাগায়ন, পাখির গান, মাঠে মাঠে কৃষকের হাসি দেখা ও শোনার মধ্য দিয়ে শিশুর মস্তিস্কের ঘুমভাঙ্গার কাজ খুব যত্নের সাথে করা যায়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে গাছের ছায়ায় আনন্দধারার স্কুল যেমন ভাবতে পেরেছিলেন তেমনি রাশিয়ার বিখ্যাত লেখক নিকোলাই দ্যুবোভ ভাবতেন শিশুদের মানুষ করার ভার যাদের জিম্মায় তাঁরা নিজেরা যদি ভালো মানুষ না হয় তবে শিশুরা ভুল জিনিস শিখেই বড়ো হবে। বিশ্বের কোন দেশের জন্যই, কোন সময়ের জন্যই যেটা কাম্য নয়।
অসাধারণ
অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি লেখা। সত্যি বলতে একটা মেধাবী, শিক্ষিত, ও উন্নত জাতি গঠনের গাইডলাইন বলে দেওয়া হয়েছে এই লেখায় । শিক্ষক, বাবা-মা, অভিভাবকদের চিন্তায় পরিবর্তন আনতে লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।