সোমবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম

২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পদার্পণ করেন মুশফিক। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘতম ক্যারিয়ারের ইতি টানার আগে ১৬ বছরে ১০২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি, রান করেছেন ১,৫০০।

For all latest articles, follow on Google News

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি (Twenty-20 International) থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিম (Mushfiqur Rahim)। এশিয়া কাপ ২০২২-এ ব্যার্থতার পর সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ তারিখ এক ফেইসবুক পোস্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ট-টোয়েন্টি থেকে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি দলে মুশফিকুর রহিমের জায়গা বেশ নড়বড়ে হয়ে যায়। জিম্বাবুয়ে সফরের টি-টোয়েন্টি দলে ছিলেন না, তাকে বিশ্রাম দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। তবে এশিয়া কাপ দিয়ে আবার ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফরম্যাটের দলে ফিরেছিলেন ৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

এশিয়া কাপে ব্যাট হাতে এবং ফিল্ডিংয়ে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। আফগানিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচে মাত্র ৫ রান করেছিলেন। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উইকেটের পেছনে তার ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে বিস্তর। তাসকিন আহমেদের বলে কুশল মেন্ডিসের ক্যাচ ছেড়েছেন, আবার এবাদত হোসেনের বলে লঙ্কান ব্যাটসম্যানের পরিস্কার এজ ঠাহর করতে পারেননি। সব সমালোচনার ইতি টেনে অবশেষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকেই বিদায় বলে দিলেন তিনি।

মুশফিকুর রহিম
মুশফিকুর রহিম

৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখ নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে অবসরের ঘোষণা দিয়ে মুশফিক লিখেছেন, ‘সবাইকে সালাম এবং শুভেচ্ছা। দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের যাত্রায় আমি আপনাদের সবাইকে পাশে পেয়েছি। ভাল এবং খারাপ দুই সময়েই আপনাদের অকুন্ঠ সমর্থন আমার প্রেরনা। টি টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে আজ আমি অবসর নিচ্ছি। তবে, বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাবো।’

মুশফিক আরও যোগ করেন, ‘আশা করছি এই দুই ফরম্যাটে আমি আরো কিছু নিয়ে আসতে পারবো দেশের জন্য। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) সহ অন্যান্য ফ্রেঞ্চাইজি লিগে আমি আমার খেলা চালিয়ে যাবো টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে। আলহামদুলিল্লাহ। সবার নিকট কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।’

২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পদার্পণ করেন মুশফিক। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘতম ক্যারিয়ারের ইতি টানার আগে ১৬ বছরে ১০২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি, রান করেছেন ১,৫০০। ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিয়ারসেরা ৩৫ বলে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাট হাতে কখনওই খুব বেশি আলো ছড়াতে পারেননি মুশফিক। ১০২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ১৯.৪৮ গড়ে ১৫০০ রান করেছেন তিনি। ৯৩ ইনিংসে ব্যাট করে মাত্র ৬ বার অর্ধশতক পেরিয়েছেন মুশফিক। 

২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলেন ক্যারিয়ারসেরা ৩৫ বলে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকের ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট ১১৫.০৮।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে উইকেটরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসালের অধিকারী ক্রিকেটারদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন মুশফিক। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে উইকেটরক্ষক ক্যাচ-স্টাম্পিং মিলিয়ে ৬২টি ডিসমিসাল রয়েছে তার ঝুলিতে। এই তালিকায় তার সামনে রয়েছেন কেবল ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি (৯১ ডিসমিসাল), দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক (৭৭) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের দীনেশ রামদিন (৬৩)।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবমিলিয়ে ৪২টি ক্যাচ তালুবন্দি করেছেন, যার মধ্যে উইকেটরক্ষক হিসেবে ৩২টি ক্যাচ নিয়েছেন এই ক্রিকেটার। উইকেটরক্ষক হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ক্যাচের দিক দিয়ে বিশ্বে সপ্তম এই বাংলাদেশি উইকেটরক্ষক। 
মুশফিকের ৩০টি স্টাম্পিং টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে উইকেটরক্ষকদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এই কীর্তিতে তার সামনে রয়েছেন শুধু ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি (৩৪ স্টাম্পিং) এবং পাকিস্তানের কামরান আকমল (৩২)।

মনির হোসেন
মনির হোসেন
কন্ট্রিবিউটর, বিশ্লেষণ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

এ বিষয়ের আরও নিবন্ধ