০৭:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

যোগাযোগ কী এবং যোগাযোগের প্রকারভেদ

শেহনাজ ইসলাম মুক্তি
  • প্রকাশ: ০৫:০০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৩৯৩০৭ বার পড়া হয়েছে

ব্যবসয়ের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট পক্ষের ব্যক্তিদের সাথে ভাব, ধারণা ও তথ্যের বিভিন্ন প্রকার আদান-প্রদানকে ব্যবসায় যোগাযোগ বলে।

বিশেষ কোন উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য একজনের নিকট থেকে অন্য জনের নিকট তথ্য, ভাব, ধারণা, সংবাদ বা মতামত প্রেরণের প্রক্রিয়াই হলো যোগাযোগ। এটি মৌখিক হতে পারে, লিখিত হতে পারে, আকার-ইঙ্গিতে হতে পারে আবার প্রযুক্তির মাধ্যমেও হতে পারে।

যোগাযোগের প্রকারভেদ (Types of Communication)

ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তথ্য বা ভাব বিনিময় ও সিদ্ধান্তগ্রহণে যোগাযোগ একটি অত্যাবশ্যক উপাদান হিসেবে বিবেচিত। ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী যোগযোগের ব্যক্তি ও ক্ষেত্র নির্ধারিত হয় এবং তথ্য ও সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য বিভিন্ন প্রকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়।

বিভিন্ন প্রকার যোগাযোগ ব্যবস্থা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ 

আনুষ্ঠানিকতার ভিত্তিতে যোগাযোগ (Classification on the basis of formality)

আনুষ্ঠানিকতার ভিত্তিতে যোগাযোগকে নিম্নোক্ত দুই ভাগে ভাগ করা যায়: 

১. আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ (Formal Communication)

প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠিত চ্যানেলের মাধ্যমে এবং অফিসিয়াল নিয়মানুযায়ী স্থাপিত যোগাযোগকে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ বলে। আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়ন। কথোপকথন, রিপোর্ট, মেমোরেন্ডাম, বুলেটিন ইত্যাদি আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের মাধ্যম। 

২. অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ (Informal Communication)

প্রতিষ্ঠিত নিয়ম-কানুন প্রতিপালন ব্যতিরেকে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়, তাকে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ বলে। 

সাধারণত কেন্টিনে, ক্লাবে, যাতায়াতকালীন গাড়িতে কিংবা অন্য কোথাও আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এ জাতীয় যোগাযোগ সংঘটিত হয়। আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। 

প্রতিষ্ঠানের পরিবেশভিত্তিক যোগাযোগ (Organisational environment-based communication)

প্রতিষ্ঠানের  পরিবেশের ভিত্তিতে যোগাযোগকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: 

১. অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ (Internal communication)

একই প্রতিষ্ঠানের ভিতরে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে তথ্য বা ভাবের বিনিময়কে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বলে। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে এ জাতীয় যোগাযোগ সংঘটিত হয়। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডকে গতিশীল রাখে। প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডের দক্ষতা এবং সাফল্য অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। 

২. বাহ্যিক যোগাযোগ (External communication)

প্রতিষ্ঠানের বাইরে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে যে যোগাযোগ সংঘটিত হয় তাকে বহিস্থঃযোগাযোগ বা বাহ্যিক যোগাযোগ বলে। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রয়োজনে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, সরকার, দেনাদার, পাওনাদার, গ্রাহক, ব্যাংকার, বীমাকারী, শেয়ারহোল্ডার প্রভৃতি বিভিন্ন পক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। বিভিন্ন পক্ষের সাথে যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়, তাই-ই হলো বাহ্যিক যোগাযোগ। 

তথ্য প্রবাহের ভিত্তিতে যোগাযোগ (Communication on the basis of flow of message)

তথ্য প্রবাহের ভিত্তিতে যোগাযোগকে নিম্নোক্ত চারভাগে ভাগ করা যেতে পারে:

১. নিম্নগামী যোগাযোগ (Downward communication)

সংগঠনের উপরের স্তরের কর্মরত নির্বাহীদের নিকট থেকে বার্তা নিচের স্তরে কর্মরত ব্যক্তিদের নিকট প্রেরিত হলে তাকে নিম্নগামী যোগাযোগ নামে অভিহিত করা হয়। এ জাতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অধস্তনদের নিকট প্রয়োজনীয় আদেশ-নির্দেশ, কর্মসূচি ইত্যাদি প্রেরণ করে।

২. উর্ধ্বগামী যোগাযোগ (Upward communication)

অধস্তন কর্মীরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রেরিত বার্তার ফলাবর্তন হিসেবে, অভাব-অভিযোগ জ্ঞাপনের লক্ষে, প্রয়োজনীয় পরামর্শ অথবা আদেশ-নির্দেশ পাওয়ার জন্য উর্ধ্বতন নির্বাহীদের সাথে যে যোগাযোগ করে থাকে, তাকে উর্ধ্বগামী যোগাযোগ বলে। 

৩. সমান্তরাল যোগাযোগ (Horizontal communication)

কোনো প্রতিষ্ঠানে উর্ধ্বতন থেকে অধস্তন এবং অধস্তন থেকে উর্ধ্বতনের মধ্যেই যোগাযোগ সীমাবদ্ধ থাকে না। সমপদে অধিষ্ঠিত এবং সমপর্যায়ের ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের মধ্যেও যোগাযোগ স্থাপিত হয়। সমপর্যায়ের বা সমপদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের মধ্যে স্থাপিত যোগযোগকে সমান্তরাল যোগাযোগ বলে। 

৪. কৌণিক যোগাযোগ (Diagonal communication)

কৌণিক যোগাযোগ হলো এমন এক ধরনের যোগাযোগ যেখানে তথ্যের প্রবাহ খাড়াখাড়ি কিংবা সমান্তরাল কোনোভাবে না হয়ে আঁকাবাঁকা ভাবে হয়ে থাকে। এ জাতীয় যোগাযোগ খুব বেশি ব্যবহৃত হয় না। তবে জরুরী পরিস্থিতিতে কিংবা দ্রুত কোনো তথ্য বা সংবাদ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে এ জাতীয় যোগাযোগ খুবই কার্যকর। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, হিসাব বিভাগের ক্যাশিয়ারের নিকট থেকে যদি প্রশাসন বিভাগের ম্যানেজার ক্যাশ সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানতে চান এবং ক্যাশিয়ার যদি যথাযথ চ্যানেলে তথ্য না পাঠিয়ে প্রশাসনের নিকট সরাসরি তথ্য প্রেরণ করে, তাহলে এরূপ তথ্য প্রবাহকে কৌণিক যোগাযোগ নামে অভিহিত করা হয়। 

কার্যভিত্তিক যোগাযোগ ((Communication on the basis of function)

প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগে নানাবিধ কার্য সম্পাদিত হয়। কোনো প্রতিষ্ঠানের বিভাগগুলোর মধ্যে বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করতে গিয়ে যে যোগাযোগ করার প্রয়োজন পড়ে, তাকেই কার্যভিত্তিক যোগাযোগ বলে। কার্যভিত্তিক যোগাযোগের ভিত্তিতে যোগাযোগকে নিম্নোক্ত কয়েকভাগে ভাগ করা যায়:

১. সাংগঠনিক যোগাযোগ (Organizational communication)

প্রাতিষ্ঠানিক দলিলপত্র প্রণয়ন, উদ্দেশ্য/লক্ষ্য নির্ধারণ, পলিসি প্রণয়ন, নির্দেশ প্রদান ও নির্দেশ বাস্তবায়ন ইত্যাদি সাংগঠনিক প্রয়োজনে সংঘটিত যোগাযোগ হলো সাংগঠনিক যোগাযোগ।

২. নৈমিত্তিক বা রুটিন যোগাযোগ ((Routine communication)

কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রতিনিয়ত যেসব তথ্যাদি বিনিময় হয়, সেগুলো রুটিন যোগাযোগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চিঠিপত্র লেখা, টেলিফোন করা, ফাইল ওয়ার্ক, নির্দেশ প্রদান ইত্যাদি।

৩. বিশেষায়িত বিভাগীয় যোগাযোগ (Specialized departmental communication)

প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত বিভাগগুলোতে তাদের নিজস্ব লিখিত স্মারক, রিপোর্ট ও চিঠিপত্রকে বিশষায়িত যোগাযোগ বলে। 

৪. উন্নয়নমূলক যোগাযোগ (Development-oriented communication)

ব্যবসায়ের উন্নতির জন্য যে সব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ সংঘটিত হয়, সেগুলোকে উন্নয়মূলক যোগাযোগ বলে।

শেয়ার করুন

One thought on “যোগাযোগ কী এবং যোগাযোগের প্রকারভেদ

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

তাহসান খান এবং মুনজেরিন শহীদের দুটি প্রফেশনাল কমিউনিকেশন কোর্স করুন ২৮% ছাড়ে
তাহসান খান এবং মুনজেরিন শহীদের দুটি প্রফেশনাল কমিউনিকেশন কোর্স করুন ২৮% ছাড়ে

২৮℅ ছাড় পেতে ৩০/০৬/২০২৪ তারিখের মধ্যে প্রোমো কোড “professional10” ব্যবহার করুন। বিস্তারিত জানতে ও ভর্তি হতে ক্লিক করুন এখানে

যোগাযোগ কী এবং যোগাযোগের প্রকারভেদ

প্রকাশ: ০৫:০০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১

বিশেষ কোন উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য একজনের নিকট থেকে অন্য জনের নিকট তথ্য, ভাব, ধারণা, সংবাদ বা মতামত প্রেরণের প্রক্রিয়াই হলো যোগাযোগ। এটি মৌখিক হতে পারে, লিখিত হতে পারে, আকার-ইঙ্গিতে হতে পারে আবার প্রযুক্তির মাধ্যমেও হতে পারে।

যোগাযোগের প্রকারভেদ (Types of Communication)

ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তথ্য বা ভাব বিনিময় ও সিদ্ধান্তগ্রহণে যোগাযোগ একটি অত্যাবশ্যক উপাদান হিসেবে বিবেচিত। ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী যোগযোগের ব্যক্তি ও ক্ষেত্র নির্ধারিত হয় এবং তথ্য ও সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য বিভিন্ন প্রকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়।

বিভিন্ন প্রকার যোগাযোগ ব্যবস্থা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ 

আনুষ্ঠানিকতার ভিত্তিতে যোগাযোগ (Classification on the basis of formality)

আনুষ্ঠানিকতার ভিত্তিতে যোগাযোগকে নিম্নোক্ত দুই ভাগে ভাগ করা যায়: 

১. আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ (Formal Communication)

প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠিত চ্যানেলের মাধ্যমে এবং অফিসিয়াল নিয়মানুযায়ী স্থাপিত যোগাযোগকে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ বলে। আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়ন। কথোপকথন, রিপোর্ট, মেমোরেন্ডাম, বুলেটিন ইত্যাদি আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের মাধ্যম। 

২. অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ (Informal Communication)

প্রতিষ্ঠিত নিয়ম-কানুন প্রতিপালন ব্যতিরেকে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়, তাকে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ বলে। 

সাধারণত কেন্টিনে, ক্লাবে, যাতায়াতকালীন গাড়িতে কিংবা অন্য কোথাও আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এ জাতীয় যোগাযোগ সংঘটিত হয়। আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। 

প্রতিষ্ঠানের পরিবেশভিত্তিক যোগাযোগ (Organisational environment-based communication)

প্রতিষ্ঠানের  পরিবেশের ভিত্তিতে যোগাযোগকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: 

১. অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ (Internal communication)

একই প্রতিষ্ঠানের ভিতরে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে তথ্য বা ভাবের বিনিময়কে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বলে। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে এ জাতীয় যোগাযোগ সংঘটিত হয়। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডকে গতিশীল রাখে। প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডের দক্ষতা এবং সাফল্য অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। 

২. বাহ্যিক যোগাযোগ (External communication)

প্রতিষ্ঠানের বাইরে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে যে যোগাযোগ সংঘটিত হয় তাকে বহিস্থঃযোগাযোগ বা বাহ্যিক যোগাযোগ বলে। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রয়োজনে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, সরকার, দেনাদার, পাওনাদার, গ্রাহক, ব্যাংকার, বীমাকারী, শেয়ারহোল্ডার প্রভৃতি বিভিন্ন পক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। বিভিন্ন পক্ষের সাথে যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়, তাই-ই হলো বাহ্যিক যোগাযোগ। 

তথ্য প্রবাহের ভিত্তিতে যোগাযোগ (Communication on the basis of flow of message)

তথ্য প্রবাহের ভিত্তিতে যোগাযোগকে নিম্নোক্ত চারভাগে ভাগ করা যেতে পারে:

১. নিম্নগামী যোগাযোগ (Downward communication)

সংগঠনের উপরের স্তরের কর্মরত নির্বাহীদের নিকট থেকে বার্তা নিচের স্তরে কর্মরত ব্যক্তিদের নিকট প্রেরিত হলে তাকে নিম্নগামী যোগাযোগ নামে অভিহিত করা হয়। এ জাতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অধস্তনদের নিকট প্রয়োজনীয় আদেশ-নির্দেশ, কর্মসূচি ইত্যাদি প্রেরণ করে।

২. উর্ধ্বগামী যোগাযোগ (Upward communication)

অধস্তন কর্মীরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রেরিত বার্তার ফলাবর্তন হিসেবে, অভাব-অভিযোগ জ্ঞাপনের লক্ষে, প্রয়োজনীয় পরামর্শ অথবা আদেশ-নির্দেশ পাওয়ার জন্য উর্ধ্বতন নির্বাহীদের সাথে যে যোগাযোগ করে থাকে, তাকে উর্ধ্বগামী যোগাযোগ বলে। 

৩. সমান্তরাল যোগাযোগ (Horizontal communication)

কোনো প্রতিষ্ঠানে উর্ধ্বতন থেকে অধস্তন এবং অধস্তন থেকে উর্ধ্বতনের মধ্যেই যোগাযোগ সীমাবদ্ধ থাকে না। সমপদে অধিষ্ঠিত এবং সমপর্যায়ের ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের মধ্যেও যোগাযোগ স্থাপিত হয়। সমপর্যায়ের বা সমপদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের মধ্যে স্থাপিত যোগযোগকে সমান্তরাল যোগাযোগ বলে। 

৪. কৌণিক যোগাযোগ (Diagonal communication)

কৌণিক যোগাযোগ হলো এমন এক ধরনের যোগাযোগ যেখানে তথ্যের প্রবাহ খাড়াখাড়ি কিংবা সমান্তরাল কোনোভাবে না হয়ে আঁকাবাঁকা ভাবে হয়ে থাকে। এ জাতীয় যোগাযোগ খুব বেশি ব্যবহৃত হয় না। তবে জরুরী পরিস্থিতিতে কিংবা দ্রুত কোনো তথ্য বা সংবাদ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে এ জাতীয় যোগাযোগ খুবই কার্যকর। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, হিসাব বিভাগের ক্যাশিয়ারের নিকট থেকে যদি প্রশাসন বিভাগের ম্যানেজার ক্যাশ সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানতে চান এবং ক্যাশিয়ার যদি যথাযথ চ্যানেলে তথ্য না পাঠিয়ে প্রশাসনের নিকট সরাসরি তথ্য প্রেরণ করে, তাহলে এরূপ তথ্য প্রবাহকে কৌণিক যোগাযোগ নামে অভিহিত করা হয়। 

কার্যভিত্তিক যোগাযোগ ((Communication on the basis of function)

প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগে নানাবিধ কার্য সম্পাদিত হয়। কোনো প্রতিষ্ঠানের বিভাগগুলোর মধ্যে বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করতে গিয়ে যে যোগাযোগ করার প্রয়োজন পড়ে, তাকেই কার্যভিত্তিক যোগাযোগ বলে। কার্যভিত্তিক যোগাযোগের ভিত্তিতে যোগাযোগকে নিম্নোক্ত কয়েকভাগে ভাগ করা যায়:

১. সাংগঠনিক যোগাযোগ (Organizational communication)

প্রাতিষ্ঠানিক দলিলপত্র প্রণয়ন, উদ্দেশ্য/লক্ষ্য নির্ধারণ, পলিসি প্রণয়ন, নির্দেশ প্রদান ও নির্দেশ বাস্তবায়ন ইত্যাদি সাংগঠনিক প্রয়োজনে সংঘটিত যোগাযোগ হলো সাংগঠনিক যোগাযোগ।

২. নৈমিত্তিক বা রুটিন যোগাযোগ ((Routine communication)

কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রতিনিয়ত যেসব তথ্যাদি বিনিময় হয়, সেগুলো রুটিন যোগাযোগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চিঠিপত্র লেখা, টেলিফোন করা, ফাইল ওয়ার্ক, নির্দেশ প্রদান ইত্যাদি।

৩. বিশেষায়িত বিভাগীয় যোগাযোগ (Specialized departmental communication)

প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত বিভাগগুলোতে তাদের নিজস্ব লিখিত স্মারক, রিপোর্ট ও চিঠিপত্রকে বিশষায়িত যোগাযোগ বলে। 

৪. উন্নয়নমূলক যোগাযোগ (Development-oriented communication)

ব্যবসায়ের উন্নতির জন্য যে সব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ সংঘটিত হয়, সেগুলোকে উন্নয়মূলক যোগাযোগ বলে।