বুধবার, নভেম্বর ২৯, ২০২৩

লাইপোসাকশন সার্জারি কী? লাইপোসাকসনের উপকারিতা ও করণীয় কী কী?

For all latest articles, follow on Google News

লাইপোসাকশন কী? অনেকে শরীরের অত্যধিক ওজন কমানোরে জন্য ডায়েটিং ও এক্সারসাইজ (Dieting and Exercise) করেন। কিন্তু এর একটি সার্জিক্যাল চিকিৎসা (Surgical Treatment) আছে, যা লাইপোসাকশন সার্জারি (Liposuction Surgery) নামে পরিচিত। মূলত ওজন কমানোর এই পদ্ধতিকে লাইপোসাকশন বলে। এই পদ্ধতিতে স্কিনের নিচের চর্বি মেশিনের মাধ্যমে টেনে বের করার পদ্ধতি। অনেকে অতিরিক্ত মেদবহুল ভুঁড়ি কমানোর জন্যই এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করান।

লাইপোসাকশন পদ্ধতিতে শরীরের যে স্থান থেকে চর্বি বের করতে হবে, সেখানে আধা ইঞ্চি জায়গা অবশ করে একটি সরু নল ঢুকিয়ে মেশিন দিয়ে টেনে চর্বি বের করা হয়। শরীরে যদি অতিরিক্ত চর্বি থাকে ৩ থেকে ৫ ঘণ্টায় ৩ থেকে ৫ কেজি চর্বি বের করা হয়। মূলত বডি শেপিং করার জন্য আজকাল এই পদ্ধতিতে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর ৩ দিন বাসায় বিশ্রাম নিতে হয়।

দেহের কোন অংশ থেকে চর্বি বের করা বা কাটা যায়?

লাইপোসাকশন পদ্ধতিতে সাধারণত যেসব জায়গা থেকে চর্বি বের করা যায়: পেট ও কোমর, থাই, ব্রেস্ট, আর্ম বা হাত।

লাইপোসাকশন সার্জারি হলো ব্যাথামুক্ত এবং নিরাপদ

লাইপোসাশনের মাধ্যমে অপারেশন করলে অপারেশনের সময় ব্যথা হয় না। অপারেশনের পর অতি সামান্য ব্যথা হতে পারে; সেজন্য পেইনকিলার দেওয়া হয়, যাতে রোগী ব্যথা অনুভব না করেন। 

চিকিৎসক ও রোগী গাফিলতি না করলে এটি অবিশ্বাস্য রকম নিরাপদ। আর একটি বিষয় হলো, রোগীকে বা ব্যক্তিকে অজ্ঞান করে অপারেশন করতে হয় না। এমনকি হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয় না; কিন্তু ১ দিন পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।

পরবর্তী ২ দিন বাসায় হাঁটাচলা করা যাবে। চতুর্থ দিন থেকে স্বাভাবিক কাজ করা যাবে। ১০ দিন পর থেকে ভারী কাজসহ সব ধরনের কাজ করা যাবে। লাইপোসাকশনের মাধ্যমে অপারেশনের পর অপারেশনের জায়গা স্লিম হতে ৩ থেকে ৬ মাস সময় লাগবে। স্থান ভেদে ১/২ থেকে ৫ লিটার পর্যন্ত ফ্যাট বের করা হয়। সাধারণত যত লিটার ফ্যাট বের করা হবে, তার দ্বিগুণ পর্যন্ত ওজন কমে; তবে ওজন কমানোর জন্য লাইপোসাকসন না করানোই ভালো। আবার চর্বি জমা হতে পারে? প্রশ্ন হলো ওজন না বাড়ার উপায় কি? ওজন না বাড়লে কখনোই আর নতুন করে চর্বি জমা হবে না। ডায়েটিং ও এক্সসারসাইজ ওজন না বাড়ার উপায়।

অনেকে প্রশ্ন করেন প্রেগনেন্ট হতে অসুবিধা হবে কি? ব্রেস্টে লাইপোসাকশনের পর ব্রেস্ট ফিডিংয়ে অসুবিধা হবে কি? প্রেগনেন্ট হতে অসুবিধা হবে না। লাইপোসাকশন শুধু ফ্যাট কমায়; গ্লান্ড কমায় না, ফলে ব্রেস্ট ফিডিংয়ে অসুবিধা হবে না। লাইপোসাকশনের পর স্কিন ঝুলে যাবে না। স্কিনের নিজস্ব ইলাসটিসিটি আছে; তাছাড়া চিকিৎসকরা বাইন্ডার সাপ্লাই দেয়, তাই ঝুলে পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

লাইপোসাকশনের পর ছিদদ্রগুলো মিলিয়ে যায়; অথবা ছোট দাগ থাকতেও পারে লাইপোসাকসনের পর।

লাইপোসাকশন সার্জারির পর করণীয় কী এবং কী করা যায়?

  • প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে।
  • একদিন পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।
  • পরবর্তী ২ দিন বাসায় হাঁটাচলা করা যায়
  • চতুর্থ দিন থেকে স্বাভাবিক কাজ করা যায়।
  • ১০ দিন পর থেকে ভারী কাজসহ সব ধরনের কাজ করা যায়।
  • প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।
  • শোয়া অবস্থায় বেন্ডেজ পরিবর্তন করা।
  • ২ দিন ধূমপান ও মদ্যপান করা যাবে না।
ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল
ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল
সহকারী অধ্যাপক (চর্ম যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিভাগ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

এ বিষয়ের আরও নিবন্ধ