০৯:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

ইসলাম ধর্মে সামরিক যুদ্ধনীতি

হাফেজ মো. মুরাদ হোসেন
  • প্রকাশ: ০২:২৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ১১১৩ বার পড়া হয়েছে

ইসলাম ধর্মে সামরিক যুদ্ধনীতি কেমন?

প্রতিটি স্বাধীন জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব তার প্রতিরক্ষা শক্তির ওপর নির্ভর করে। জনসাধারণের নিরাপত্তা ও বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্রমূলক আক্রমণ প্রতিহত করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সামরিক বাহিনীর দায়িত্বশীল ভূমিকার গুরুত্ব অপরিসীম। একটি জাতির সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা তখনই নিশ্চিত হয়, যখন সে জাতির থাকে একটি সুষ্ঠু সামরিক নীতি ও সুদক্ষ সামরিক বাহিনী। বাস্তবভিত্তিক ধর্ম ইসলাম দেশমাতৃকার স্বার্থ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সামরিক শক্তি ও সক্ষমতা অর্জনের প্রতি বিশেষ দিকনির্দেশনামূলক রূপরেখা দিয়েছে।

ইসলাম প্রথমেই রাষ্ট্রে বসবাসকারী নাগরিকদের মধ্যে মানসিকভাবে সুস্থ ও শারীরিকভাবে শক্তিশালী ব্যক্তিদের দেশ ও জাতির নিরাপত্তায় নিয়োজিত হওয়ার উৎসাহমূলক নির্দেশনা প্রদান করেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, মোমিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয়, এমন ব্যক্তি (যুদ্ধে না গিয়ে) ঘরে বসে থাকে তারা সেইসব লোক যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা (ইসলাম ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়) জিহাদ করে তাদের সমান নয়। যারা স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে আল্লাহ তাদের যারা ঘরে বসে থাকে, তাদের ওপর মর্যাদা দিয়েছেন; আল্লাহ সবাইকেই কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপরে যারা জিহাদ করে তাদের মহাপুরস্কারের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। (সুরা নিসা : ৯৫)।

এক্ষেত্রে ইসলাম দেশমাতৃকার স্বার্থে আত্মনিয়োজিত সদস্যদের মুজাহিদিন উপাধিতে ভূষিত করে মর্যাদার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। তবে শর্ত হলো- ইসলাম ও দেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থ অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্ধ, খোঁড়া ও অসুস্থদের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও সামরিক বাহিনীতে সংযুক্তির ক্ষেত্রে নিষেধ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, অন্ধ, খোঁড়া ও রোগীরা যুদ্ধে না আসে, তাহলে তাদের কোনো দোষ নেই। (সুরা ফাতহ : ১৭)। বরং এসব লোকের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ইসলাম সামরিক বাহিনীতে তাদেরকেই সংযুক্ত করার কথা বলে যাদের মধ্যে রয়েছে আল্লাহর ভয়, মানবতাবোধ ও দেশপ্রেমের নৈতিক আদর্শ।

যুগের চাহিদা অনুযায়ী ইসলাম সুসংগঠিত সামরিক বাহিনী গঠন ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা বাস্তবায়নের তাগিদ দেয়। দেশের সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখার লক্ষ্যে সামরিক প্রশিক্ষণ ও নিরবচ্ছিন্ন সামরিক তৎপরতা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ বলেন, হে মোমিনরা, তোমরা হালকা যুদ্ধাস্ত্র ও ভারী যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে অভিযানে বেরিয়ে পড় এবং আল্লাহর পথে তোমাদের অর্থ-সম্পদ ও জীবন দিয়ে জিহাদ কর। যদি তোমরা জানতে (তাহলে বুঝতে পারতে যে) এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। (সুরা তাওবা : ৪১)। তবে ইসলামে সামরিক বাহিনীর শক্তি অর্জন ও কর্মতৎপরতা হতে হবে সম্পূর্ণ আত্মরক্ষামূলক। নিজ দেশের সীমানা বৃদ্ধিকরণ বা ভিন্ন স্বাধীন রাষ্ট্রকে নিজ রাষ্ট্রের অধীনস্থ করার লক্ষ্যে সামরিক যুদ্ধ ও কলাকৌশল গ্রহণ করা ইসলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম। সাম্রাজ্যবাদী চিন্তা বা অন্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নীতি পরিহারে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে।

ইসলাম কখনও সাম্রাজ্যবাদী নীতি গ্রহণ করেনি; বরং পৃথিবীতে যারাই এসব জঘন্যতম পাপাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ ও পদক্ষেপ নিয়েছে। মানবতা লংঘন হয় এহেন কার্যক্রমে সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যেকোনো অন্যায় সংগঠিত হলে প্রথমেই হাত দিয়ে প্রতিরোধ করো, যদি তা করতে না পারো, তাহলে মুখ দিয়ে প্রতিবাদ করো। যদি মুখ দিয়েও না পারো তাহলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা পোষণ করো; আর এটাই দুর্বল ঈমানের পরিচয়।’ (বোখারি)। এখানে অন্তর দিয়ে ঘৃণা পোষণের পাশাপাশি মনে মনে পরিকল্পনা করবে, কীভাবে অন্যায় কার্যক্রম বন্ধ করা যায়।

নিজ দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হলে ইসলাম পরাধীন, দুর্বল, নির্যাতিত দেশের স্বৈরশাসন, নিপীড়ন, দাসত্বমূলক নির্যাতন থেকে সেদেশের জনগণকে মুক্ত করার লক্ষ্যে শর্ত সাপেক্ষে সামরিক অভিযান পরিচালনার অনুমতি দেয়। এখানে ইসলামের মূলনীতি হলো দুনিয়ার যে কোনো প্রান্তের নির্যাতিত-পরাধীন মানুষের পক্ষে চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক তাদের মুক্তির লক্ষ্যে যুদ্ধ ও সামরিক সহায়তা করা মুসলমানদের ওপর অর্পিত অনিবার্য দায়িত্ব। মহান আল্লাহ মুসলমানদের মনোযোগ দৃষ্টি আকর্ষণ করে কুরআনে বলেন, তোমাদের কী হলো যে তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করবে না এবং যুদ্ধ করবে না অসহায় নারী-পুরুষ ও শিশুদের জন্য? যারা বলেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জালিমদের এ জনপদ থেকে মুক্ত করুন। আপনার পক্ষ থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক করে দিন, আপনার কাছ থেকে কাউকে সাহায্যকারী করে দিন। (সুরা নিসা : ৭৫)। আয়াতটিতে একদিকে যেমন নিপীড়িত মানুষের মর্মান্তর অবস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি নির্যাতিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে মুসলমানদের নৈতিক দায়িত্বের কথাটিও স্মরণ করিয়ে সেই লক্ষ্যে অপ্রাণ চেষ্টার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ নিপীড়িত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে মুসলমানরা সামরিক অভিযানে আত্মনিয়োগ করবে যা তাদের ঈমানের অনিবার্য দাবি।

পরাধীনতার বেড়াজাল থেকে মুক্তি করে সেইসব জাতিগোষ্ঠীকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা যাবে না। বরং শান্তিপূর্ণ পন্থায় উত্তম আচরণের মাধ্যমে ইসলামের বাণী প্রচার করতে পারবে। সেইসব জনগণ যেন নিজেদের পছন্দের জীবনবিধান ও শাসক গ্রহণ করতে পারে, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রু পক্ষের সম্মুখে বীরের মতো যুদ্ধ করতে হবে। গুপ্ত হামলা বা আকস্মিক হামলা পরিচালনা করা যাবে না। কখনও যদি শত্রুর পক্ষ থেকে ভয়াবহ হামলার পরিকল্পনা জানা যায়, তাহলে সেটি রোধ করার প্রকল্পে গুপ্ত অভিযান আত্মরক্ষামূলক নীতির সাপেক্ষে পরিচালনা করা যাবে। অভিযানে বা যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিরস্ত্র নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ কাউকে লাঞ্ছিত বা হত্যা করা যাবে না। বিশ্বের বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের মতো গণহত্যা ও প্রাকৃতিক ধ্বংসাত্মকমূলক কার্যক্রমকে ইসলাম সম্পূর্ণভাবে হারাম ঘোষণা করেছে। এসব কার্যক্রমকে জঘন্যতম পাপাচার ও ক্ষমার অযোগ্য বলে অভিহিত করা হয়েছে।

সামরিক অভিযানগুলোতে ইনসাফ ও মানবতার বিষয়টি সংরক্ষণ করতে হবে। শত্রু পক্ষের ওপরেও এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না যা মানবতার জন্য অকল্যাণকর হয়। ইসলাম প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের মতো একটানা যুদ্ধ নীতি সমর্থন করে না। উভয় পক্ষকেই যুদ্ধ বিরতি গ্রহণ করে নিজের অস্তিত্ব ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ব্যাপারে সচেতন করে। বর্তমানে জাতিসংঘও যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের ক্ষেত্রে এই বিষয়টির ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করছে।

ইসলাম দেশের সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সামরিক বাহিনী গঠনের পাশাপাশি দেশের নাগরিকদের সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের তাগিদ দেয়। যাতে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জাতীয় প্রয়োজনে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশ রক্ষায় জনসাধারণও নিয়োজিত হতে পারে। পরিবারের নিরাপত্তা ও সামাজিক শৃঙ্খলা ঠিক রাখার ক্ষেত্রে জনসাধারণের সামরিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেন না, ইসলামে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে পেশাদার সামরিক বাহিনী গঠন পুরোপুরি সমর্থিত নয়। সামরিক বাহিনী নিজেরা যেমন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে, তেমনি জনগণকেও আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দিবে। বর্তমান বিশ্বে বেশ কিছু দেশও তাদের জনগণকে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। যা সুষ্ঠু জাতি গঠন ও সার্বিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখে। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় জনসাধারণও তখন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।

বর্তমান দুনিয়ার বেশকিছু দেশের সামরিক বাহিনীতে দুই ধরনের ভূমিকা দেখা যায়।

১. অনুন্নত দেশগুলোর সামরিক বাহিনী বহিঃশত্রু মোকাবিলার পরিবর্তে নিজ দেশের জনসমর্থিত সরকারকে সামরিক শক্তির জোরে উৎখাত করে নিজেরাই বারবার ক্ষমতা দখল করে নেওয়া। অর্থাৎ স্বাধীনতার পাহারাদারিত্বের পরিবর্তে নিজেরাই স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব খর্ব করে দেশের হর্তাকর্তা হয়ে জনগণকে নিজেদের সেবকে পরিণত করা।

২. উন্নত দেশগুলোর সামরিক বাহিনী নিজ দেশে একক কর্তৃত্ব স্থাপনের পাশাপাশি দুনিয়ায় সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা, নিজ দেশের সীমানা অন্যায়ভাবে সম্প্রসারণ ও পার্শ্ববর্তী স্বাধীন দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে নিজেদের অধীনস্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হওয়ার। এই বাহিনীগুলোতে নিজ স্বার্থ ও ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের ওপর সামরিক বিধ্বংসী অভিযান চালিয়ে নিরীহ জনগণের রক্তে শহর-নগর-গ্রাম ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এসব সামরিক অভিযানে দুনিয়ায় কত মানুষের রক্ত ঝরেছে, কত জনপদ ধ্বংস হয়েছে আর কত মানুষকে নির্বিচারে হত্যার শিকার হতে হয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই।

ইসলাম সামরিক বাহিনীর উক্ত কর্মকাণ্ডগুলোকে কঠোর ভাষায় নিষেধ করে জোর প্রতিবাদ ও পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলে। নিজ দেশের জননির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়টি ইসলামে সুস্পষ্ট বিশ্বাসঘাতকতার সামিল। এটি ক্ষমতা লোভের নগ্ন নির্লজ্জ প্রকাশ। কুরআন মাজিদে এধরণের কর্মকাণ্ডকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করে করে আল্লাহ বলেন, আখিরাতের সেই আবাস (জান্নাত) আমি তাদের জন্য নির্ধারণ করি, যারা এ পৃথিবীতে দাম্ভিক হতে চায় না এবং বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি করতে চায় না। মুত্তাকিদের জন্য শুভ পরিণাম। (সুরা কাসাস : ৮৩) সামরিক বাহিনীর লোক প্রতিরক্ষা ও জননিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ খেদমতে নিয়োজিত এবং জাতীয় ধনভা-ার থেকে মর্যাদা উপযোগী বেতন-ভাতা পেয়ে থাকে সেহেতু তারা দেশের খাদেম। দেশের খাদেম হয়ে দেশমাতৃকার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকা নিঃসন্দেহে নিকৃষ্টতম কাজ।

ইসলামে সামরিক বাহিনীর প্রতিটি পদক্ষেপই হবে শান্তি, মানবতা ও সার্বজনীন কল্যাণের উদ্দেশ্যে। সেইজন্য প্রশিক্ষণকালীন সময়ে কর্মের জন্য আল্লাহ ও মানুষের কাছে দায়বদ্ধতা, দেশপ্রেমের নৈতিক আদর্শ ও মানবতাবোধের বিষয়টি সামরিক সদস্যদের মননে সুস্পষ্টভাবে গেঁথে দিতে হবে। কোনো দেশ বা জাতির মানবতা বিপর্যয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হলে কিংবা নিজ দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ না হয়, এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে সামরিক কঠোর নীতি গ্রহণ করবে। উদ্ব্যতপূর্ণ পরিস্থিতি সবাই একসঙ্গে সামরিক অভিযানে বেরিয়ে না পড়ে কিছু সৈন্য দেশ ও সম্পদ পাহারায়, কিছু জননিরাপত্তায় এবং বাকিরা সমরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। আল্লাহ বলেন, মোমিনদের সবাই একসঙ্গে বের হওয়া সংগত নয়, তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গমণ করে না কেন, যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের কাছে ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয়। (তাওবা : ১২২)।

সৌজন্যে আলোকিত বাংলাদেশ

বিষয়:

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

হাফেজ মো. মুরাদ হোসেন

শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
তাহসান খান এবং মুনজেরিন শহীদের দুটি প্রফেশনাল কমিউনিকেশন কোর্স করুন ২৮% ছাড়ে
তাহসান খান এবং মুনজেরিন শহীদের দুটি প্রফেশনাল কমিউনিকেশন কোর্স করুন ২৮% ছাড়ে

২৮℅ ছাড় পেতে ৩০/০৬/২০২৪ তারিখের মধ্যে প্রোমো কোড “professional10” ব্যবহার করুন। বিস্তারিত জানতে ও ভর্তি হতে ক্লিক করুন এখানে

ইসলাম ধর্মে সামরিক যুদ্ধনীতি

প্রকাশ: ০২:২৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

প্রতিটি স্বাধীন জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব তার প্রতিরক্ষা শক্তির ওপর নির্ভর করে। জনসাধারণের নিরাপত্তা ও বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্রমূলক আক্রমণ প্রতিহত করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সামরিক বাহিনীর দায়িত্বশীল ভূমিকার গুরুত্ব অপরিসীম। একটি জাতির সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা তখনই নিশ্চিত হয়, যখন সে জাতির থাকে একটি সুষ্ঠু সামরিক নীতি ও সুদক্ষ সামরিক বাহিনী। বাস্তবভিত্তিক ধর্ম ইসলাম দেশমাতৃকার স্বার্থ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সামরিক শক্তি ও সক্ষমতা অর্জনের প্রতি বিশেষ দিকনির্দেশনামূলক রূপরেখা দিয়েছে।

ইসলাম প্রথমেই রাষ্ট্রে বসবাসকারী নাগরিকদের মধ্যে মানসিকভাবে সুস্থ ও শারীরিকভাবে শক্তিশালী ব্যক্তিদের দেশ ও জাতির নিরাপত্তায় নিয়োজিত হওয়ার উৎসাহমূলক নির্দেশনা প্রদান করেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, মোমিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয়, এমন ব্যক্তি (যুদ্ধে না গিয়ে) ঘরে বসে থাকে তারা সেইসব লোক যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা (ইসলাম ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়) জিহাদ করে তাদের সমান নয়। যারা স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে আল্লাহ তাদের যারা ঘরে বসে থাকে, তাদের ওপর মর্যাদা দিয়েছেন; আল্লাহ সবাইকেই কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপরে যারা জিহাদ করে তাদের মহাপুরস্কারের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। (সুরা নিসা : ৯৫)।

এক্ষেত্রে ইসলাম দেশমাতৃকার স্বার্থে আত্মনিয়োজিত সদস্যদের মুজাহিদিন উপাধিতে ভূষিত করে মর্যাদার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। তবে শর্ত হলো- ইসলাম ও দেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থ অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্ধ, খোঁড়া ও অসুস্থদের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও সামরিক বাহিনীতে সংযুক্তির ক্ষেত্রে নিষেধ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, অন্ধ, খোঁড়া ও রোগীরা যুদ্ধে না আসে, তাহলে তাদের কোনো দোষ নেই। (সুরা ফাতহ : ১৭)। বরং এসব লোকের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ইসলাম সামরিক বাহিনীতে তাদেরকেই সংযুক্ত করার কথা বলে যাদের মধ্যে রয়েছে আল্লাহর ভয়, মানবতাবোধ ও দেশপ্রেমের নৈতিক আদর্শ।

যুগের চাহিদা অনুযায়ী ইসলাম সুসংগঠিত সামরিক বাহিনী গঠন ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা বাস্তবায়নের তাগিদ দেয়। দেশের সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখার লক্ষ্যে সামরিক প্রশিক্ষণ ও নিরবচ্ছিন্ন সামরিক তৎপরতা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ বলেন, হে মোমিনরা, তোমরা হালকা যুদ্ধাস্ত্র ও ভারী যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে অভিযানে বেরিয়ে পড় এবং আল্লাহর পথে তোমাদের অর্থ-সম্পদ ও জীবন দিয়ে জিহাদ কর। যদি তোমরা জানতে (তাহলে বুঝতে পারতে যে) এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। (সুরা তাওবা : ৪১)। তবে ইসলামে সামরিক বাহিনীর শক্তি অর্জন ও কর্মতৎপরতা হতে হবে সম্পূর্ণ আত্মরক্ষামূলক। নিজ দেশের সীমানা বৃদ্ধিকরণ বা ভিন্ন স্বাধীন রাষ্ট্রকে নিজ রাষ্ট্রের অধীনস্থ করার লক্ষ্যে সামরিক যুদ্ধ ও কলাকৌশল গ্রহণ করা ইসলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম। সাম্রাজ্যবাদী চিন্তা বা অন্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নীতি পরিহারে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে।

ইসলাম কখনও সাম্রাজ্যবাদী নীতি গ্রহণ করেনি; বরং পৃথিবীতে যারাই এসব জঘন্যতম পাপাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ ও পদক্ষেপ নিয়েছে। মানবতা লংঘন হয় এহেন কার্যক্রমে সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যেকোনো অন্যায় সংগঠিত হলে প্রথমেই হাত দিয়ে প্রতিরোধ করো, যদি তা করতে না পারো, তাহলে মুখ দিয়ে প্রতিবাদ করো। যদি মুখ দিয়েও না পারো তাহলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা পোষণ করো; আর এটাই দুর্বল ঈমানের পরিচয়।’ (বোখারি)। এখানে অন্তর দিয়ে ঘৃণা পোষণের পাশাপাশি মনে মনে পরিকল্পনা করবে, কীভাবে অন্যায় কার্যক্রম বন্ধ করা যায়।

নিজ দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হলে ইসলাম পরাধীন, দুর্বল, নির্যাতিত দেশের স্বৈরশাসন, নিপীড়ন, দাসত্বমূলক নির্যাতন থেকে সেদেশের জনগণকে মুক্ত করার লক্ষ্যে শর্ত সাপেক্ষে সামরিক অভিযান পরিচালনার অনুমতি দেয়। এখানে ইসলামের মূলনীতি হলো দুনিয়ার যে কোনো প্রান্তের নির্যাতিত-পরাধীন মানুষের পক্ষে চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক তাদের মুক্তির লক্ষ্যে যুদ্ধ ও সামরিক সহায়তা করা মুসলমানদের ওপর অর্পিত অনিবার্য দায়িত্ব। মহান আল্লাহ মুসলমানদের মনোযোগ দৃষ্টি আকর্ষণ করে কুরআনে বলেন, তোমাদের কী হলো যে তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করবে না এবং যুদ্ধ করবে না অসহায় নারী-পুরুষ ও শিশুদের জন্য? যারা বলেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জালিমদের এ জনপদ থেকে মুক্ত করুন। আপনার পক্ষ থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক করে দিন, আপনার কাছ থেকে কাউকে সাহায্যকারী করে দিন। (সুরা নিসা : ৭৫)। আয়াতটিতে একদিকে যেমন নিপীড়িত মানুষের মর্মান্তর অবস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি নির্যাতিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে মুসলমানদের নৈতিক দায়িত্বের কথাটিও স্মরণ করিয়ে সেই লক্ষ্যে অপ্রাণ চেষ্টার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ নিপীড়িত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে মুসলমানরা সামরিক অভিযানে আত্মনিয়োগ করবে যা তাদের ঈমানের অনিবার্য দাবি।

পরাধীনতার বেড়াজাল থেকে মুক্তি করে সেইসব জাতিগোষ্ঠীকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা যাবে না। বরং শান্তিপূর্ণ পন্থায় উত্তম আচরণের মাধ্যমে ইসলামের বাণী প্রচার করতে পারবে। সেইসব জনগণ যেন নিজেদের পছন্দের জীবনবিধান ও শাসক গ্রহণ করতে পারে, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রু পক্ষের সম্মুখে বীরের মতো যুদ্ধ করতে হবে। গুপ্ত হামলা বা আকস্মিক হামলা পরিচালনা করা যাবে না। কখনও যদি শত্রুর পক্ষ থেকে ভয়াবহ হামলার পরিকল্পনা জানা যায়, তাহলে সেটি রোধ করার প্রকল্পে গুপ্ত অভিযান আত্মরক্ষামূলক নীতির সাপেক্ষে পরিচালনা করা যাবে। অভিযানে বা যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিরস্ত্র নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ কাউকে লাঞ্ছিত বা হত্যা করা যাবে না। বিশ্বের বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের মতো গণহত্যা ও প্রাকৃতিক ধ্বংসাত্মকমূলক কার্যক্রমকে ইসলাম সম্পূর্ণভাবে হারাম ঘোষণা করেছে। এসব কার্যক্রমকে জঘন্যতম পাপাচার ও ক্ষমার অযোগ্য বলে অভিহিত করা হয়েছে।

সামরিক অভিযানগুলোতে ইনসাফ ও মানবতার বিষয়টি সংরক্ষণ করতে হবে। শত্রু পক্ষের ওপরেও এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না যা মানবতার জন্য অকল্যাণকর হয়। ইসলাম প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের মতো একটানা যুদ্ধ নীতি সমর্থন করে না। উভয় পক্ষকেই যুদ্ধ বিরতি গ্রহণ করে নিজের অস্তিত্ব ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ব্যাপারে সচেতন করে। বর্তমানে জাতিসংঘও যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের ক্ষেত্রে এই বিষয়টির ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করছে।

ইসলাম দেশের সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সামরিক বাহিনী গঠনের পাশাপাশি দেশের নাগরিকদের সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের তাগিদ দেয়। যাতে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জাতীয় প্রয়োজনে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশ রক্ষায় জনসাধারণও নিয়োজিত হতে পারে। পরিবারের নিরাপত্তা ও সামাজিক শৃঙ্খলা ঠিক রাখার ক্ষেত্রে জনসাধারণের সামরিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেন না, ইসলামে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে পেশাদার সামরিক বাহিনী গঠন পুরোপুরি সমর্থিত নয়। সামরিক বাহিনী নিজেরা যেমন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে, তেমনি জনগণকেও আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দিবে। বর্তমান বিশ্বে বেশ কিছু দেশও তাদের জনগণকে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। যা সুষ্ঠু জাতি গঠন ও সার্বিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখে। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় জনসাধারণও তখন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।

বর্তমান দুনিয়ার বেশকিছু দেশের সামরিক বাহিনীতে দুই ধরনের ভূমিকা দেখা যায়।

১. অনুন্নত দেশগুলোর সামরিক বাহিনী বহিঃশত্রু মোকাবিলার পরিবর্তে নিজ দেশের জনসমর্থিত সরকারকে সামরিক শক্তির জোরে উৎখাত করে নিজেরাই বারবার ক্ষমতা দখল করে নেওয়া। অর্থাৎ স্বাধীনতার পাহারাদারিত্বের পরিবর্তে নিজেরাই স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব খর্ব করে দেশের হর্তাকর্তা হয়ে জনগণকে নিজেদের সেবকে পরিণত করা।

২. উন্নত দেশগুলোর সামরিক বাহিনী নিজ দেশে একক কর্তৃত্ব স্থাপনের পাশাপাশি দুনিয়ায় সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা, নিজ দেশের সীমানা অন্যায়ভাবে সম্প্রসারণ ও পার্শ্ববর্তী স্বাধীন দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে নিজেদের অধীনস্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হওয়ার। এই বাহিনীগুলোতে নিজ স্বার্থ ও ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের ওপর সামরিক বিধ্বংসী অভিযান চালিয়ে নিরীহ জনগণের রক্তে শহর-নগর-গ্রাম ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এসব সামরিক অভিযানে দুনিয়ায় কত মানুষের রক্ত ঝরেছে, কত জনপদ ধ্বংস হয়েছে আর কত মানুষকে নির্বিচারে হত্যার শিকার হতে হয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই।

ইসলাম সামরিক বাহিনীর উক্ত কর্মকাণ্ডগুলোকে কঠোর ভাষায় নিষেধ করে জোর প্রতিবাদ ও পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলে। নিজ দেশের জননির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়টি ইসলামে সুস্পষ্ট বিশ্বাসঘাতকতার সামিল। এটি ক্ষমতা লোভের নগ্ন নির্লজ্জ প্রকাশ। কুরআন মাজিদে এধরণের কর্মকাণ্ডকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করে করে আল্লাহ বলেন, আখিরাতের সেই আবাস (জান্নাত) আমি তাদের জন্য নির্ধারণ করি, যারা এ পৃথিবীতে দাম্ভিক হতে চায় না এবং বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি করতে চায় না। মুত্তাকিদের জন্য শুভ পরিণাম। (সুরা কাসাস : ৮৩) সামরিক বাহিনীর লোক প্রতিরক্ষা ও জননিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ খেদমতে নিয়োজিত এবং জাতীয় ধনভা-ার থেকে মর্যাদা উপযোগী বেতন-ভাতা পেয়ে থাকে সেহেতু তারা দেশের খাদেম। দেশের খাদেম হয়ে দেশমাতৃকার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকা নিঃসন্দেহে নিকৃষ্টতম কাজ।

ইসলামে সামরিক বাহিনীর প্রতিটি পদক্ষেপই হবে শান্তি, মানবতা ও সার্বজনীন কল্যাণের উদ্দেশ্যে। সেইজন্য প্রশিক্ষণকালীন সময়ে কর্মের জন্য আল্লাহ ও মানুষের কাছে দায়বদ্ধতা, দেশপ্রেমের নৈতিক আদর্শ ও মানবতাবোধের বিষয়টি সামরিক সদস্যদের মননে সুস্পষ্টভাবে গেঁথে দিতে হবে। কোনো দেশ বা জাতির মানবতা বিপর্যয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হলে কিংবা নিজ দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ না হয়, এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে সামরিক কঠোর নীতি গ্রহণ করবে। উদ্ব্যতপূর্ণ পরিস্থিতি সবাই একসঙ্গে সামরিক অভিযানে বেরিয়ে না পড়ে কিছু সৈন্য দেশ ও সম্পদ পাহারায়, কিছু জননিরাপত্তায় এবং বাকিরা সমরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। আল্লাহ বলেন, মোমিনদের সবাই একসঙ্গে বের হওয়া সংগত নয়, তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গমণ করে না কেন, যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের কাছে ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয়। (তাওবা : ১২২)।

সৌজন্যে আলোকিত বাংলাদেশ