০৪:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

আফগানিস্তানে ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান, ফিরে গেল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী

আহমেদ মিন্টো
  • প্রকাশ: ১২:০০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অগাস্ট ২০২১
  • / ৪৯৬ বার পড়া হয়েছে

আফগানিস্তান সর্বশেষ ছেড়ে যাওয়া সিআর-১৭ বিমানগুলোর একটু উড়ে যাচ্ছে

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত যুদ্ধ ২০ বছর পর শেষ হয়েছে। দেশটিতে মার্কিন দীর্ঘ উপস্থিতির অবসান ঘটল দেশটি থেকে চূড়ান্তভাবে সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে। ৩১ আগস্ট, ২০২১ তারিখ আফগানিস্তান ছেড়ে গেল যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সামরিক বিমান। আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়া সর্বশেষ মার্কিন সামরিক সদস্য মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনাহু।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেনজি বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দর থেকে মধ্যরাতের এক মিনিট আগে (ইএসটি সময় বিকেল ৩.২৯ মিনিট) সবশেষ বিমানগুলো ছেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে সঙ্গে করে সর্বশেষ সি-১৭ বিমান কাবুল ছেড়েছে।

জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এবং জোট বাহিনীর বিমানগুলোয় করে সব মিলিয়ে এক লাখ ২৩ হাজার বেসামরিক ব্যক্তিকে সরিয়ে আনা হয়েছে। প্রতিদিন সাড়ে সাত হাজারের বেশি বাসিন্দা কাবুল ছাড়ার সুযোগ পেয়েছেন।

এই ঘোষণা দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন ওয়াশিংটনে বলেছেন, এটি ছিল ”ব্যাপক সামরিক, কূটনৈতিক এবং মানবিক কর্মযজ্ঞ’ এবং যা যুক্তরাষ্ট্র অনেক চ্যালেঞ্জের সাথে বাস্তবায়ন করেছে।

”নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হলো,” তিনি বলেছেন। ”সামরিক মিশন সমাপ্ত হয়ে নতুন এক কূটনৈতিক মিশন শুরু হল।”

তবে তিনি এও বলেছেন যে, তালেবানকে বৈধতা অর্জন করতে হবে। সেই সঙ্গে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কিনা এবং নাগরিকদের ভ্রমণে স্বাধীনতা দেয়া, নারীদের অধিকার রক্ষা এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দমন করছে কিনা-এসব বিষয় বিশ্ববাসীর নজরে থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ বিমানগুলো চলে যাবার কথা জানানো হলেও, হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, কাবুল থেকে আমেরিকান এবং সংকটে থাকা আফগানদের সরিয়ে নিতে ‘শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত’ সহায়তা অব্যাহত রাখবে। মানুষকে বিমানে করে সরিয়ে নেবার ঐ কার্যক্রমকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ইতিহাসের সর্ববৃহৎ কার্যক্রম হিসাবে বর্ণনা করা হচ্ছে।

এর আগে, জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের আঞ্চলিক কার্যক্রমের ডেপুটি ডিরেক্টর সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল উইলিয়াম হ্যাঙ্ক টেইলর সাংবাদিকদের জানান, শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত মানুষকে বিমানে করে সরিয়ে নেবার ক্ষমতা তাদের অব্যাহত আছে।

হোয়াইট হাউস এবং পেন্টাগন জানিয়েছে, তালেবান আগষ্টের শুরুতে আফগানিস্তানের দখল নেবার পর আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ৫ হাজার আমেরিকানসহ মোট ১ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ জনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি সাংবাদিকদের বলেন, ঐ সময়কালে প্রায় ৬০০০ জন আমেরিকান আফগানিস্তান ত্যাগ করেছেন। কিন্তু ‘সেখানে এখনও অল্প সংখ্যক মানুষ রয়েছেন’ যাদেরকে বের করে আনা সম্ভব হয়নি।

১৪ আগস্ট, ২০২১ কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল তালেবান। সেই সময় থেকেই মূলত কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার কার্যক্রম চলছিল।

খবর বিবিসি এবং ভয়েস অব আমেরিকার।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

আহমেদ মিন্টো

মিন্টো একজন ফ্রিল্যান্স লেখক এবং বিশ্লেষণ'র কন্ট্রিবিউটর।

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

আফগানিস্তানে ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান, ফিরে গেল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী

প্রকাশ: ১২:০০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অগাস্ট ২০২১

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত যুদ্ধ ২০ বছর পর শেষ হয়েছে। দেশটিতে মার্কিন দীর্ঘ উপস্থিতির অবসান ঘটল দেশটি থেকে চূড়ান্তভাবে সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে। ৩১ আগস্ট, ২০২১ তারিখ আফগানিস্তান ছেড়ে গেল যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সামরিক বিমান। আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়া সর্বশেষ মার্কিন সামরিক সদস্য মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনাহু।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেনজি বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দর থেকে মধ্যরাতের এক মিনিট আগে (ইএসটি সময় বিকেল ৩.২৯ মিনিট) সবশেষ বিমানগুলো ছেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে সঙ্গে করে সর্বশেষ সি-১৭ বিমান কাবুল ছেড়েছে।

জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এবং জোট বাহিনীর বিমানগুলোয় করে সব মিলিয়ে এক লাখ ২৩ হাজার বেসামরিক ব্যক্তিকে সরিয়ে আনা হয়েছে। প্রতিদিন সাড়ে সাত হাজারের বেশি বাসিন্দা কাবুল ছাড়ার সুযোগ পেয়েছেন।

এই ঘোষণা দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন ওয়াশিংটনে বলেছেন, এটি ছিল ”ব্যাপক সামরিক, কূটনৈতিক এবং মানবিক কর্মযজ্ঞ’ এবং যা যুক্তরাষ্ট্র অনেক চ্যালেঞ্জের সাথে বাস্তবায়ন করেছে।

”নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হলো,” তিনি বলেছেন। ”সামরিক মিশন সমাপ্ত হয়ে নতুন এক কূটনৈতিক মিশন শুরু হল।”

তবে তিনি এও বলেছেন যে, তালেবানকে বৈধতা অর্জন করতে হবে। সেই সঙ্গে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কিনা এবং নাগরিকদের ভ্রমণে স্বাধীনতা দেয়া, নারীদের অধিকার রক্ষা এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দমন করছে কিনা-এসব বিষয় বিশ্ববাসীর নজরে থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ বিমানগুলো চলে যাবার কথা জানানো হলেও, হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, কাবুল থেকে আমেরিকান এবং সংকটে থাকা আফগানদের সরিয়ে নিতে ‘শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত’ সহায়তা অব্যাহত রাখবে। মানুষকে বিমানে করে সরিয়ে নেবার ঐ কার্যক্রমকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ইতিহাসের সর্ববৃহৎ কার্যক্রম হিসাবে বর্ণনা করা হচ্ছে।

এর আগে, জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের আঞ্চলিক কার্যক্রমের ডেপুটি ডিরেক্টর সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল উইলিয়াম হ্যাঙ্ক টেইলর সাংবাদিকদের জানান, শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত মানুষকে বিমানে করে সরিয়ে নেবার ক্ষমতা তাদের অব্যাহত আছে।

হোয়াইট হাউস এবং পেন্টাগন জানিয়েছে, তালেবান আগষ্টের শুরুতে আফগানিস্তানের দখল নেবার পর আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ৫ হাজার আমেরিকানসহ মোট ১ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ জনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি সাংবাদিকদের বলেন, ঐ সময়কালে প্রায় ৬০০০ জন আমেরিকান আফগানিস্তান ত্যাগ করেছেন। কিন্তু ‘সেখানে এখনও অল্প সংখ্যক মানুষ রয়েছেন’ যাদেরকে বের করে আনা সম্ভব হয়নি।

১৪ আগস্ট, ২০২১ কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল তালেবান। সেই সময় থেকেই মূলত কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার কার্যক্রম চলছিল।

খবর বিবিসি এবং ভয়েস অব আমেরিকার।