০৬:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
                       

বই রিভিউ: একাত্তরের কানাগলি

রিয়াজুল ইসলাম জুলিয়ান
  • প্রকাশ: ০৬:১২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অগাস্ট ২০২১
  • / ৯৬২ বার পড়া হয়েছে

'একাত্তরের কানাগলি' উপন্যাসের এই প্রচ্ছদ এঁকেছেন অনীক মোস্তফা আনোয়ার

‘একাত্তরের কানাগলি’ হলো আসিফ সিদ্দীকী দীপ্র রচিত একটি রোমাঞ্চকর উপন্যাস। লেখক এটি লিখেছেন ১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। বইটি প্রকাশ করেছে ঢাকার রোদেলা প্রকাশনী।

অল্পকথায় ‘একাত্তরের কানাগলি’

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের কোভার্ট অ্যাকশন ডিভিশনে একটি ইন্টারোগেশন হয়, যার সাথে আপাতদৃষ্টিতে মুক্তিযুদ্ধের কোনো সম্পর্কই ছিল না; তার সূত্র ধরে হয় একটি ছোট্ট অপারেশন, এবং এরপর থেকেই বিভিন্ন প্রশ্ন জাগতে শুরু করে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের মনে। যার উত্তর উদ্ধার করতে গিয়ে বের হয়ে পড়ে পর্দার অন্তরালে চলতে থাকা একটি অত্যন্ত গোপন এবং উন্মত্ত অপারেশনের।

এমন কিছু সেই অপারেশনে ছিল যা বাস্তবায়িত হলে কেবল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানেই নয় ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়ে যাবে সমগ্র্র বিশ্বজুড়েই।

মাত্র গুটি কয়েক লোকের কাছে ফাঁস হয়ে যাওয়া সেই প্ল্যান বানচাল করতে, বাংলাদেশকে, এবং সারা বিশ্বকে একটি সাম্ভাব্য ধ্বংসলীলা থেকে বাঁচানোর জন্য ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য কিন্তু একই লক্ষ্য নিয়ে একদল বেপরোয়া লোক নেমে পড়ে একটি অত্যন্ত গোপন মিশনে।

মুক্তিযুদ্ধের সাথে সমান্তরালভাবে চলতে থাকা সেই মিশনের ফলাফলের উপর নির্ভর করছে মুক্তিযুদ্ধের ভাগ্য, বাংলাদেশের ভাগ্য এবং সমগ্র বিশ্বের ভাগ্য।

সাথে রয়েছে কিছু রহস্যময় চরিত্র, যাদের আনাগোনা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে পুরো মিশনটাকে এবং নিজেরাও প্রভাবিত হয়েছে মিশনটির কারণে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে মুক্তিযুদ্ধ, আমেরিকা থেকে চীন এবং করাচীর গলি থেকে শুরু করে ধাণমন্ডির রাস্তা দিয়ে এগিয়ে চলেছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা একটি সম্পুর্ণ ভিন্নধর্মী স্পাই থৃলার ‘একাত্তরের কানাগলি’র গল্প।

পাঠ প্রতিক্রিয়া

‘একাত্তরের কানাগলি’ উপন্যাসের যে সারাংশ উপরের উল্লেখ করা হলো তা পড়ে সত্যিকার অর্থেই কাহিনির ব্যপ্তি আর গভীরতার সিকিভাগও বোঝা যাবে না, যে কি চীজ ধরে আছেন দুই হাতের ফাঁকে।

যাক, শুরু করলাম লেখকের ডিসক্লেইমার দিয়ে। ড্যান ব্রাউন আর রোলিন্সের বইতে দেখেছি আগে। এখন দেখছি আমার বাঙালি এক ভাইয়ের বইয়ে। প্রত্যাশার পারদ একটুখানি চড়ল। এরপর মুখবন্ধে পেলাম বাস্তব জগতের পরিচিত এক ঘৃন্য চরিত্রকে।

It’s a রোলার কোস্টার রাইড

এরপর লেখক আমাকে পিংপং বল বানিয়ে ফেলল। It’s a রোলার কোস্টার রাইড। কাহিনি এত দ্রুত আর আর এত জায়গাতে ঘটছিল যে নিজেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে একই সাথে বিভিন্ন ফ্রন্টে যুদ্ধরত ফিল্ড মার্শালের মত মনে হচ্ছিল। একবার কাহিনি করাচিতে তো পরে ইউকে তে, তারপর যুক্তরাষ্ট্রে, পোল্যান্ডে, নিউইয়র্কে, আবার করাচিতে, আবার বাংলাদেশে; কখনো চরিত্র হয়ে আসছে সোহরাওয়ার্দী আর শেখ মুজিবুর রহমান, কখনো ইয়াহিয়া খান আর জুলফিকার আলী ভুট্টো, আবার কখনো রিচার্ড নিক্সন আর হেনরি কিসিঞ্জার। তাদের কথোপকথন গুলো এত হৃদয়গ্রাহী আর বাস্তবঘেষা যে, মনে হচ্ছিল লেখক নিজে টাইমট্রাভেল করে দেখে আসেননি তো!

এস্পিয়োনাজ স্বাদ

আমি স্পাই জগতের ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহী পাঠক। আর এখানে আমার আগ্রহ পূরনের উপাদান পেয়েছি একেবারে মনমতো। কেননা দৃশ্যপটে আছে ত্যাঁদড় ত্যাঁদড় কয়েকটা সংস্থা। CIA, ISI, MOSSAD, RAW, FBI, KGB একেবারে বিগ সাইজ কম্বো। লেখক স্পাইগেমটা পুরো পেশাদারত্ব বজায় রেখেই খেলেছেন। ইন্টেলিজেন্স, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স, ডাবল কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স, স্পাইদের বিশ্বাসঘাতকতা, হঠকারীতা সব উঠে এসেছে সাবলীল বর্ননায়।

দায়বদ্ধতা, দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ এবং শিহরণ

কাহিনির জায়গায় জায়গায় আর্মড এবং আন-আর্মড হ্যান্ড-টু-হ্যান্ড কমব্যাট বর্ণনাভঙ্গিতে হয়ে উঠেছে জীবন্ত। সাথে আছে বইয়ের জমজমাট ফুল প্যাকড কাহিনি। কয়েকজন শক্তিশালী চরিত্র সৃষ্টি করেছেন লেখক। যেহেতু ‘একাত্তরের কানাগলি’ উপন্যাসের গল্প মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক, তাই বিভিন্ন চরিত্রের ভিতর দিয়ে উঠে এসেছে দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা, সুগভীর দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ। পড়ে শিহরিত হিয়েছি যে, কীভাবে একজন লোক তার last full measure of devotion দিয়ে দেশপ্রেম এ অটুট থেকে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারে।

একাত্তরের কানাগলি উপন্যাসের চরিত্রচিত্রণ

লেখক আসিফ সিদ্দীকী দীপ্র চরিত্রসৃষ্টিতে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। যেহেতু অনেক চরিত্রের বাস্তব অস্তিত্ব ছিল তাই তাদের সবার individual personality এর প্রতি লেখকের সজাগ দৃষ্টি ছিল, সেটা তাদের কার্যকলাপ আর ডায়লগের ভিতর দিয়ে খুব ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। বাস্তবের সাথে সহজেই মিলানো গেছে। এটা কাহিনিকার এর সবচেয়ে বড় সফলতার একটা বলে মনে করি। কাহিনির প্রথমার্ধের আপাত অসামঞ্জস্যতা পরের অর্ধেকে এসে এত সুন্দরভাবে মিলে গেছে যে খুব উপভোগ্য হয়ে উঠেছে উপন্যাসটা।

একটু সমালোচনা

একাত্তরের কানাগলি সমালোচনা বলতে বলব; কয়েকটা জায়গায় ‘টাকা’ এর বদলে ‘অর্থ’ শব্দটা ব্যবহার করলে ভাল হত, কারণ টাকা বলতে স্পেসিফিক বাংলাদেশের মুদ্রাকেই বোঝানো হয়। বোম শব্দটার বদলে ‘বোমা’ বা ‘বম্ব’ ব্যবহার করলে ভালো হতো বলে অভিমত প্রদান করলাম। গর্দভ শব্দটা কিছু জায়গায় গর্ভব হয়ে গেছে। ব্যাস!

শেষকথা

লেখক আসিফ সিদ্দীকী দীপ্র বইয়ের ফ্ল্যাপে বলেছেন, বিদেশি লেখকদের থ্রিলার দেখলে তিনি ঈর্ষার সুক্ষ্ম খোঁচা অনুভব করতেন। তাকে এখানে বলতে চাই, “ওকে, আর করার দরকার নেই। আপনি নিজেই দারুন একটা থ্রিলার লিখে ফেলেছেন”।

বইয়ের নামএকাত্তরের কানাগলি
ধরনউপন্যাস (থ্রিলার)
লেখকআসিফ সিদ্দীকী দীপ্র
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানরোদেলা প্রকাশনী, ঢাকা

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

রিয়াজুল ইসলাম জুলিয়ান

জুলিয়ান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। লেখালেখির জগতে বিচরণ করতে পছন্দ করেন। ২০১৯ সালে তার প্রথম মৌলিক বই 'নিঃশব্দ শিকারি' প্রকাশিত হয়েছে। এখন কাজ করছেন দ্বিতীয় বই 'আশিয়ানী' নিয়ে।

তাহসান খান এবং মুনজেরিন শহীদের দুটি প্রফেশনাল কমিউনিকেশন কোর্স করুন ২৮% ছাড়ে
তাহসান খান এবং মুনজেরিন শহীদের দুটি প্রফেশনাল কমিউনিকেশন কোর্স করুন ২৮% ছাড়ে

২৮℅ ছাড় পেতে ৩০/০৬/২০২৪ তারিখের মধ্যে প্রোমো কোড “professional10” ব্যবহার করুন। বিস্তারিত জানতে ও ভর্তি হতে ক্লিক করুন এখানে

বই রিভিউ: একাত্তরের কানাগলি

প্রকাশ: ০৬:১২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অগাস্ট ২০২১

‘একাত্তরের কানাগলি’ হলো আসিফ সিদ্দীকী দীপ্র রচিত একটি রোমাঞ্চকর উপন্যাস। লেখক এটি লিখেছেন ১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। বইটি প্রকাশ করেছে ঢাকার রোদেলা প্রকাশনী।

অল্পকথায় ‘একাত্তরের কানাগলি’

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের কোভার্ট অ্যাকশন ডিভিশনে একটি ইন্টারোগেশন হয়, যার সাথে আপাতদৃষ্টিতে মুক্তিযুদ্ধের কোনো সম্পর্কই ছিল না; তার সূত্র ধরে হয় একটি ছোট্ট অপারেশন, এবং এরপর থেকেই বিভিন্ন প্রশ্ন জাগতে শুরু করে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের মনে। যার উত্তর উদ্ধার করতে গিয়ে বের হয়ে পড়ে পর্দার অন্তরালে চলতে থাকা একটি অত্যন্ত গোপন এবং উন্মত্ত অপারেশনের।

এমন কিছু সেই অপারেশনে ছিল যা বাস্তবায়িত হলে কেবল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানেই নয় ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়ে যাবে সমগ্র্র বিশ্বজুড়েই।

মাত্র গুটি কয়েক লোকের কাছে ফাঁস হয়ে যাওয়া সেই প্ল্যান বানচাল করতে, বাংলাদেশকে, এবং সারা বিশ্বকে একটি সাম্ভাব্য ধ্বংসলীলা থেকে বাঁচানোর জন্য ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য কিন্তু একই লক্ষ্য নিয়ে একদল বেপরোয়া লোক নেমে পড়ে একটি অত্যন্ত গোপন মিশনে।

মুক্তিযুদ্ধের সাথে সমান্তরালভাবে চলতে থাকা সেই মিশনের ফলাফলের উপর নির্ভর করছে মুক্তিযুদ্ধের ভাগ্য, বাংলাদেশের ভাগ্য এবং সমগ্র বিশ্বের ভাগ্য।

সাথে রয়েছে কিছু রহস্যময় চরিত্র, যাদের আনাগোনা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে পুরো মিশনটাকে এবং নিজেরাও প্রভাবিত হয়েছে মিশনটির কারণে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে মুক্তিযুদ্ধ, আমেরিকা থেকে চীন এবং করাচীর গলি থেকে শুরু করে ধাণমন্ডির রাস্তা দিয়ে এগিয়ে চলেছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা একটি সম্পুর্ণ ভিন্নধর্মী স্পাই থৃলার ‘একাত্তরের কানাগলি’র গল্প।

পাঠ প্রতিক্রিয়া

‘একাত্তরের কানাগলি’ উপন্যাসের যে সারাংশ উপরের উল্লেখ করা হলো তা পড়ে সত্যিকার অর্থেই কাহিনির ব্যপ্তি আর গভীরতার সিকিভাগও বোঝা যাবে না, যে কি চীজ ধরে আছেন দুই হাতের ফাঁকে।

যাক, শুরু করলাম লেখকের ডিসক্লেইমার দিয়ে। ড্যান ব্রাউন আর রোলিন্সের বইতে দেখেছি আগে। এখন দেখছি আমার বাঙালি এক ভাইয়ের বইয়ে। প্রত্যাশার পারদ একটুখানি চড়ল। এরপর মুখবন্ধে পেলাম বাস্তব জগতের পরিচিত এক ঘৃন্য চরিত্রকে।

It’s a রোলার কোস্টার রাইড

এরপর লেখক আমাকে পিংপং বল বানিয়ে ফেলল। It’s a রোলার কোস্টার রাইড। কাহিনি এত দ্রুত আর আর এত জায়গাতে ঘটছিল যে নিজেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে একই সাথে বিভিন্ন ফ্রন্টে যুদ্ধরত ফিল্ড মার্শালের মত মনে হচ্ছিল। একবার কাহিনি করাচিতে তো পরে ইউকে তে, তারপর যুক্তরাষ্ট্রে, পোল্যান্ডে, নিউইয়র্কে, আবার করাচিতে, আবার বাংলাদেশে; কখনো চরিত্র হয়ে আসছে সোহরাওয়ার্দী আর শেখ মুজিবুর রহমান, কখনো ইয়াহিয়া খান আর জুলফিকার আলী ভুট্টো, আবার কখনো রিচার্ড নিক্সন আর হেনরি কিসিঞ্জার। তাদের কথোপকথন গুলো এত হৃদয়গ্রাহী আর বাস্তবঘেষা যে, মনে হচ্ছিল লেখক নিজে টাইমট্রাভেল করে দেখে আসেননি তো!

এস্পিয়োনাজ স্বাদ

আমি স্পাই জগতের ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহী পাঠক। আর এখানে আমার আগ্রহ পূরনের উপাদান পেয়েছি একেবারে মনমতো। কেননা দৃশ্যপটে আছে ত্যাঁদড় ত্যাঁদড় কয়েকটা সংস্থা। CIA, ISI, MOSSAD, RAW, FBI, KGB একেবারে বিগ সাইজ কম্বো। লেখক স্পাইগেমটা পুরো পেশাদারত্ব বজায় রেখেই খেলেছেন। ইন্টেলিজেন্স, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স, ডাবল কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স, স্পাইদের বিশ্বাসঘাতকতা, হঠকারীতা সব উঠে এসেছে সাবলীল বর্ননায়।

দায়বদ্ধতা, দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ এবং শিহরণ

কাহিনির জায়গায় জায়গায় আর্মড এবং আন-আর্মড হ্যান্ড-টু-হ্যান্ড কমব্যাট বর্ণনাভঙ্গিতে হয়ে উঠেছে জীবন্ত। সাথে আছে বইয়ের জমজমাট ফুল প্যাকড কাহিনি। কয়েকজন শক্তিশালী চরিত্র সৃষ্টি করেছেন লেখক। যেহেতু ‘একাত্তরের কানাগলি’ উপন্যাসের গল্প মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক, তাই বিভিন্ন চরিত্রের ভিতর দিয়ে উঠে এসেছে দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা, সুগভীর দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ। পড়ে শিহরিত হিয়েছি যে, কীভাবে একজন লোক তার last full measure of devotion দিয়ে দেশপ্রেম এ অটুট থেকে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারে।

একাত্তরের কানাগলি উপন্যাসের চরিত্রচিত্রণ

লেখক আসিফ সিদ্দীকী দীপ্র চরিত্রসৃষ্টিতে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। যেহেতু অনেক চরিত্রের বাস্তব অস্তিত্ব ছিল তাই তাদের সবার individual personality এর প্রতি লেখকের সজাগ দৃষ্টি ছিল, সেটা তাদের কার্যকলাপ আর ডায়লগের ভিতর দিয়ে খুব ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। বাস্তবের সাথে সহজেই মিলানো গেছে। এটা কাহিনিকার এর সবচেয়ে বড় সফলতার একটা বলে মনে করি। কাহিনির প্রথমার্ধের আপাত অসামঞ্জস্যতা পরের অর্ধেকে এসে এত সুন্দরভাবে মিলে গেছে যে খুব উপভোগ্য হয়ে উঠেছে উপন্যাসটা।

একটু সমালোচনা

একাত্তরের কানাগলি সমালোচনা বলতে বলব; কয়েকটা জায়গায় ‘টাকা’ এর বদলে ‘অর্থ’ শব্দটা ব্যবহার করলে ভাল হত, কারণ টাকা বলতে স্পেসিফিক বাংলাদেশের মুদ্রাকেই বোঝানো হয়। বোম শব্দটার বদলে ‘বোমা’ বা ‘বম্ব’ ব্যবহার করলে ভালো হতো বলে অভিমত প্রদান করলাম। গর্দভ শব্দটা কিছু জায়গায় গর্ভব হয়ে গেছে। ব্যাস!

শেষকথা

লেখক আসিফ সিদ্দীকী দীপ্র বইয়ের ফ্ল্যাপে বলেছেন, বিদেশি লেখকদের থ্রিলার দেখলে তিনি ঈর্ষার সুক্ষ্ম খোঁচা অনুভব করতেন। তাকে এখানে বলতে চাই, “ওকে, আর করার দরকার নেই। আপনি নিজেই দারুন একটা থ্রিলার লিখে ফেলেছেন”।

বইয়ের নামএকাত্তরের কানাগলি
ধরনউপন্যাস (থ্রিলার)
লেখকআসিফ সিদ্দীকী দীপ্র
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানরোদেলা প্রকাশনী, ঢাকা