০১:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

দি অফিসিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্ট, ১৯২৩ এবং কয়েকটি দেশের সরকারি গোপন আইন

মু. মিজানুর রহমান মিজান
  • প্রকাশ: ০৮:১১:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মে ২০২১
  • / ৩৭২৮ বার পড়া হয়েছে

আইন

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে প্রচলিত একটি আইনের নাম হলো ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’। ব্রিটিশ আমলে প্রণীত যে সকল আইন বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত রয়েছে সে সকল আইনের মধ্যে একটি হলো ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন, ১৯২৩’। এই আইনটি তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ১৯২৩ সালে প্রণয়ন করে এবং ওই বছরের এপ্রিল মাসের ২ তারিখ থেকে কার্যকর করে। এই সময় ভাইসরয় ছিলেন লর্ড কার্জন।

১৯২৩ সালের এই সিক্রেট আইনটি ১৮৮৯ সালের সিক্রেট আইনের ওপর ভিত্তি করে। ১৯০৪ সালে এই আইনকে সংশোধন করে আরও কঠোর করা হয়। এ সময় আইনটির নাম ছিল ‘The Indian Official Secrets Act, 1904’; সর্বশেষে ১৯২৩ সালের সংস্করণে পৌঁছায়। পরবর্তিতে দেশভাগের পরে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে এই আইনটি সংশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কার্যকর রাখে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ ও বাংলাদেশ লজ (রিভিশন অ্যান্ড ডিকলারেশন) অ্যাক্ট, ১৯৭৩ অনুসারে ব্রিটিশ আমলে তৎকালীন সরকার কর্তৃক সৃষ্ট ‘The Official Secrets Act, 1923’ প্রচলিত আইন হিসেবে বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করেছে। তবে এক্ষেত্রে বর্তমান বাংলাদেশ যখন পূর্বপাকিস্তান নামে পাকিস্তানের অংশ ছিল, তখন যে সংশোধনী আনা হয় তা বাতিল করে গ্রহণ করা হয়।

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ কেন প্রণয়ন করা হয়?

এই আইনটি প্রণয়ন করা হয় সরকারি বিভিন্ন বিষয় গোপন রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য। গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে যেন কেউ দেশের কোনো ক্ষতি না করতে পারে সে জন্যেই আইনটি করা হয় ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক। এছাড়া গুরুত্বপুর্ণ সরকারি তথ্য হেফাজত করাও এই আইনের উদ্দেশ্য। বৃটিশ সরকার যে কারণে এই আইন প্রণয়ন করেন, সেই একই কারণে বাংলাদেশ সরকারও একই কারণে এই আইনটি দেশে এখন পর্যন্ত কার্যকর রেখেছে।

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩-এ কী বলা আছে?

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ এর ৩ নম্বর ধারায় দেখা যায় যে, সরকার ঘোষিত কোনো নিষিদ্ধ কোনো জায়গায় কেউ যেতে পারবে না। এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কিছু জায়গার কোনো রকম নকশা করে বা ছবি তুলে কোথাও পাঠানো যাবে না। এমন যদি কেউ করে বা করার চেষ্টা করে, তাহলে তাকে অপরাধী বলে গণ্য করা হবে।

অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন, ১৯২৩ এর কিছু বৈশিষ্ট্য

  • গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১৪৯ অনুসারে ব্রিটিশ সরকার প্রণীত আইন ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’ অনুসারে বাংলাদেশে আত্মীকরণ করা রয়েছে।
  • এই আইনের লঙ্ঘন হলো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
  • সরকারি অনুমতি ছাড়া সরকার ঘোষিত কোনো জায়গায় প্রবেশ করা কিংবা প্রবেশের চেষ্টা করা অপরাধ।
  • সরকার ঘোষিত কোনো নিষিদ্ধ কোনো জায়গায় বা উৎসে প্রবেশ করা ব্যক্তির নিজের প্রবেশ বা প্রবেশ চেষ্টা যেমন অপরাধ, তেমনই এই সব জায়গায় অন্য কাউকে প্রবেশ করানো বা প্রবেশ করানোর চেষ্টা করাও অপরাধ।
  • নিরাপত্তা বা অন্য কোনো কারণে সরকার কোনো জায়গাকে নিষিদ্ধ করলে সেই জায়গা চিহ্নিত করা যায় এমন কোনো নকশা, ছবি, মডেল, নোট, নথি বা অন্য যে-কোনো কিছু প্রকাশ করা অপরাধ।
  • প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিদেশি কোনো এজেন্ট বা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যের সাথে যোগাযোগ করা অপরাধ। এমনকি বিদেশি এজেন্ট বা গোয়েন্দা সংস্থা বা সংস্থার কারো সাথে যোগাযগের চেষ্টা করাও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
  • কোনো ভাবে যদি সনাক্ত করা যায় কিংবা উপযুক্ত কারণে সন্দেহ করা হয় দেশের কোনো নাগরিক দেশের অভ্যন্তরে বা দেশের বাইরে বসে দেশের নিরাপত্তা ও স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কাজের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত তাহলে তাকে অপরাধি হিসেবে গণ্য করা হবে। বিদেশি এজেন্ট হিসেবেও ঘোষিত হতে পারেন এমন ব্যক্তি।
  • দেশের কোনো নাগরিক যদি কোনো বিদেশি কোনো এজেন্ট বা গোয়েন্দা সদস্যের সাথে সাক্ষাৎ করেন বা ওই বিদেশি এজেন্টের ঠিকানায় গিয়ে থাকেন তাহলে ওই নাগরিক বিদেশি এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করেছেন বলে ধরা হবে এবং তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
  • দেশের কোনো তথ্য কোনোভাবেই বে-আইনিভাবে কারো কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। যদি কেউ এমন কাজের সাথে জড়িত থাকেন তাহলে তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হবে।
  • যদি কোনো ব্যক্তির কাছে যদি কোনো অফিসিয়াল কোনো কোড অথবা পাসওয়ার্ড, অথবা যে-কোনো ধরনের স্কেচ, মডেল, আর্টিকেল, নথি অথবা তথ্য থাকে বা এসবের নিয়ন্ত্রণ থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির সেগুলোকে সরকারের পক্ষে গোপন রাখতে হবে। আর না হলে তাকে অপরাধী বলা হবে।
  • যদি কোনো ব্যক্তিকে সরকার পূর্বে কোনো দায়িত্বে রাখে তাহলে সরকার প্রদত্ত ওই দায়িত্ব শেষে তাঁর কাছে ওই দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কোনো নথিপত্র বা এ সম্পর্কিত কোনো কপি তাঁর কাছে রাখা যাবে না। এছাড়া ওই ব্যক্তি যা কিছু জেনেছেন ওই নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনকালে তা মৌখিকভাবেও কারো কাছে বলতে পারবেন না। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ওই ব্যক্তিকে দায়িত্ব শেষেও গোপন রাখতে হবে। এর ভিন্ন কিছু ঘটলে অর্থাৎ তথ্য প্রকাশ করলে এবং তা যদি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচনা করা হয় তাহলে ওই ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
  • আইনি কর্তৃপক্ষ ছাড়া কিংবা বে-আইনিভাবে বা উপযুক্ত কোনো কারণ ছাড়া কোনো প্রকারের সিল, স্ট্যাম্প বা এ সংক্রান্ত কোনো কিছুর উৎপাদন ও বিক্রয়কে ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ অনুসারে নিষিদ্ধ। এ রকম কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তি অপরাধী।
  • এই আইনে ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ বা ওয়ারেন্ট ছাড়াও অপরাধীকে গ্রেফতার করা যাবে। যদি কোনো আদেশ বা  ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হয়ে তাহলে অপ্রয়োজনে সময়ক্ষেপণ না করে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে অথবা কোনো ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা অথবা কোনো থানায় তাকে হাজির করাতে হবে।
  • পুলিশ গেফতার করলে অপরাধী জামিন পেতে পারেন আবার তাকে জামিন না দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হতে পারে।
  • গুপ্তচরবৃত্তির জন্য এবং রাষ্ট্রের কোনো প্রতিরক্ষা বিষয়ক তথ্য হাতিয়ে নেওয়া বা পাচার করার জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ডের সাজা পেতে হবে অপরাধীকে।
  • অপরাধ যদি মারাত্মক না হয় সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এই আইনে।

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ কেন গুরুত্বপূর্ণ

১৯২৩ সালে প্রণীত এই আইনটি কেন গুরুত্বপুর্ণ সেটি এর শিরোনাম দেখেই মোটামুটিভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়। প্রতিটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে এমন আইনের প্রচলন থাকা উচিৎ। অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট (Official Secrets Act) কে সংক্ষেপে OSA বলেও চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।

এই আইনের প্রচলন করা হয়েছে প্রধানত দেশের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ঠেকানোর জন্য। এন্টি-এস্পিয়োনাজ এই আইন শুধু গুপ্তচরবৃত্তি ঠেকানোর জন্যই কার্যকর, তেমন নয়। এই আইন দেশের যে-কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন রাখতে সাহায্য করে। এভাবে অফিসিয়াল তথ্য গোপন রাখা যে-কোনো স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। এই আইনের কারণে প্রাপ্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে দেশকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা বা বিপদ থেকে রক্ষা করা যায়।

বিভিন্ন দেশে সরকারি গোপন আইন

যুক্তরাজ্য

পার্লামেন্ট অব দ্য ইউনাইটেড কিংডম বা যুক্তরাজ্য সংসদ সর্বপ্রথম দাপ্তরিক গোপন আইন বা অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট (Official Secrets Act) প্রণয়ন করে। এটি ছিল ১৮৮৯ সালের ঘটনা। রাষ্ট্রীয় তথ্যের সুরক্ষার জন্য প্রণীত ওই আইনের দাপ্তরিক বা অফিসিয়াল নাম ছিল ‘The Official Secrets Act 1889’। পরবর্তিতে এই আইনটি ‘The Official Secrets Act 1911’ আইন দ্বারা রিপ্লেস করা হয়। যুক্তরাজ্যে বর্তমানে এ সম্পর্কিত আরও তিনটি আইন আছে যেগুলো যথাক্রমে ১৯২০, ১৯৩৯ এবং ১৯৮৯ সালে প্রণীত হয়।

কানাডা

১৯৮৯ সালে প্রণীত যুক্তরাজ্যের আইনে কিছুটা মডিফিকেশন সহকারে কানাডাতে এর প্রচলন করা হয় ‘The (UK) Offcial Secrets Act 1989’ নামে। এর আগে কানাডা সরকার ১৯৩৯ ও ১৯৮১ সালে এই ধরনের সুরক্ষা আইন প্রচলন করেছিল। সর্বশেষ ২০০১ সালে পার্লামেন্ট অব কানাডা ‘The Security of Informaton Act’ নামে নতুন রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা আইনের প্রচলন করে।

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন হলো ‘দি এস্পিয়োনাজ অ্যাক্ট অন ১৯১৭ (The Espionage Act of 1917)’। উড্রো উইলসনের আমলে এই আইন পাশ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই দাপ্তরিক গোপন আইন কার্যকর হয় জুন ১৫, ১৯১৭।

চীন

চীনে প্রচলিত সিক্রেট আইন বা গোপন আইনের শিরোনাম হলো- ল অব দ্য পিপল’স রিপাবলিক অফ চায়না অন গার্ডিং স্টেট সিক্রেটস (২০১০ রিভিশন)। এই আইনটি ‘চায়না স্টেট সিক্রেটস ল’ নামে অধিক পরিচিত। চীনে সর্বপ্রথম গোপন আইন প্রণয়ন করা হয় ১৯৮৮ সালে। বর্তমানে প্রচলিত আইনটি ১৯৮৮ সালের আইনের ওপরই ভিত্তি করে রচিত। ১৯৮৮ সালের সিক্রেটস অ্যাক্টের পুর্বে ১৯৫১ সালের একটি রেগুলেশন প্রচলিত ছিল।

ভারত

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সময়ে তৎকালীন সরকার ১৯২৩ সালে এন্টি-এস্পিয়োনাজ যে আইনটি প্রণয়ন করেছিল সেটিই আত্মীকরণ করে ভারত। ঘটনাটি বাংলাদেশের মতোই। অর্থাৎ ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’ ভারতেও কার্যকর। তবে সেখানে এই আইনের পাশাপাশি ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৫’ নামের আইনটিও দরকার আছে ‘গোপন’ কিছুকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য।

পাকিস্তান

ঔপনিবেশিক সময়ে রচিত বৃটিশ সরকার কর্তৃক রচিত ১৯২৩ সালের সিক্রেটস অ্যাক্টকেই পাকিস্তান সরকার নিজেদের এন্টি-এস্পিয়োনাজ আইন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যেমনটি দেখা যায় বাংলাদেশ ও ভারতের ক্ষেত্রে। পাকিস্তান সরকার বেশ কয়েকবার এই আইনটি সংশোধন করে।

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ নিয়ে বাংলাদেশে কী জানা যাচ্ছে?

বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’ আত্মীকরণ করে নামমাত্র সংশোধনের মাধ্যমে। যখন থেকে এই আইন বাংলাদেশে কার্যকর রয়েছে তখন থেকে ২০২১ সালের ১৭ মে তারিখের আগে তেমন কোনো আলচনা-সমালোচনা হয়নি। ১৭ মে, ২০২১ প্রথম আলোর একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম এই আইনে গ্রেফতার হবার পর এই আইন নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশে এই আইনে গ্রেফতারের ঘটনা এবারই প্রথম।

কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, বৃটিশ আমলের একটি আইন বাংলাদেশে প্রচলিত থাকা উচিৎ নয়; তবে এমন মন্তব্য অনেকেই মানতে রাজি নন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রচলিত ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ এবং ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’ এর মধ্যে কিছু সমন্বয় বা কিছু ক্ষেত্রে স্পষ্ট বক্তব্য থাকা প্রয়োজন কি না সেটি নিশ্চয়ই আইন বিশেষজ্ঞরা ভেবে দেখবেন।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

মু. মিজানুর রহমান মিজান

মু. মিজানুর রহমান মিজান একজন স্বাধীন শিক্ষামূলক লেখক। তিনি শিক্ষা গবেষণায় বেশ আগ্রহী। যৌথভাবে কিছু গবেষণায়ও অংশ নিয়েছেন।

ওয়েবসাইটটির সার্বিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে স্পনসর খোঁজা হচ্ছে।

দি অফিসিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্ট, ১৯২৩ এবং কয়েকটি দেশের সরকারি গোপন আইন

প্রকাশ: ০৮:১১:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মে ২০২১

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে প্রচলিত একটি আইনের নাম হলো ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’। ব্রিটিশ আমলে প্রণীত যে সকল আইন বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত রয়েছে সে সকল আইনের মধ্যে একটি হলো ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন, ১৯২৩’। এই আইনটি তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ১৯২৩ সালে প্রণয়ন করে এবং ওই বছরের এপ্রিল মাসের ২ তারিখ থেকে কার্যকর করে। এই সময় ভাইসরয় ছিলেন লর্ড কার্জন।

১৯২৩ সালের এই সিক্রেট আইনটি ১৮৮৯ সালের সিক্রেট আইনের ওপর ভিত্তি করে। ১৯০৪ সালে এই আইনকে সংশোধন করে আরও কঠোর করা হয়। এ সময় আইনটির নাম ছিল ‘The Indian Official Secrets Act, 1904’; সর্বশেষে ১৯২৩ সালের সংস্করণে পৌঁছায়। পরবর্তিতে দেশভাগের পরে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে এই আইনটি সংশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কার্যকর রাখে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ ও বাংলাদেশ লজ (রিভিশন অ্যান্ড ডিকলারেশন) অ্যাক্ট, ১৯৭৩ অনুসারে ব্রিটিশ আমলে তৎকালীন সরকার কর্তৃক সৃষ্ট ‘The Official Secrets Act, 1923’ প্রচলিত আইন হিসেবে বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করেছে। তবে এক্ষেত্রে বর্তমান বাংলাদেশ যখন পূর্বপাকিস্তান নামে পাকিস্তানের অংশ ছিল, তখন যে সংশোধনী আনা হয় তা বাতিল করে গ্রহণ করা হয়।

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ কেন প্রণয়ন করা হয়?

এই আইনটি প্রণয়ন করা হয় সরকারি বিভিন্ন বিষয় গোপন রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য। গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে যেন কেউ দেশের কোনো ক্ষতি না করতে পারে সে জন্যেই আইনটি করা হয় ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক। এছাড়া গুরুত্বপুর্ণ সরকারি তথ্য হেফাজত করাও এই আইনের উদ্দেশ্য। বৃটিশ সরকার যে কারণে এই আইন প্রণয়ন করেন, সেই একই কারণে বাংলাদেশ সরকারও একই কারণে এই আইনটি দেশে এখন পর্যন্ত কার্যকর রেখেছে।

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩-এ কী বলা আছে?

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ এর ৩ নম্বর ধারায় দেখা যায় যে, সরকার ঘোষিত কোনো নিষিদ্ধ কোনো জায়গায় কেউ যেতে পারবে না। এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কিছু জায়গার কোনো রকম নকশা করে বা ছবি তুলে কোথাও পাঠানো যাবে না। এমন যদি কেউ করে বা করার চেষ্টা করে, তাহলে তাকে অপরাধী বলে গণ্য করা হবে।

অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন, ১৯২৩ এর কিছু বৈশিষ্ট্য

  • গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১৪৯ অনুসারে ব্রিটিশ সরকার প্রণীত আইন ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’ অনুসারে বাংলাদেশে আত্মীকরণ করা রয়েছে।
  • এই আইনের লঙ্ঘন হলো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
  • সরকারি অনুমতি ছাড়া সরকার ঘোষিত কোনো জায়গায় প্রবেশ করা কিংবা প্রবেশের চেষ্টা করা অপরাধ।
  • সরকার ঘোষিত কোনো নিষিদ্ধ কোনো জায়গায় বা উৎসে প্রবেশ করা ব্যক্তির নিজের প্রবেশ বা প্রবেশ চেষ্টা যেমন অপরাধ, তেমনই এই সব জায়গায় অন্য কাউকে প্রবেশ করানো বা প্রবেশ করানোর চেষ্টা করাও অপরাধ।
  • নিরাপত্তা বা অন্য কোনো কারণে সরকার কোনো জায়গাকে নিষিদ্ধ করলে সেই জায়গা চিহ্নিত করা যায় এমন কোনো নকশা, ছবি, মডেল, নোট, নথি বা অন্য যে-কোনো কিছু প্রকাশ করা অপরাধ।
  • প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিদেশি কোনো এজেন্ট বা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যের সাথে যোগাযোগ করা অপরাধ। এমনকি বিদেশি এজেন্ট বা গোয়েন্দা সংস্থা বা সংস্থার কারো সাথে যোগাযগের চেষ্টা করাও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
  • কোনো ভাবে যদি সনাক্ত করা যায় কিংবা উপযুক্ত কারণে সন্দেহ করা হয় দেশের কোনো নাগরিক দেশের অভ্যন্তরে বা দেশের বাইরে বসে দেশের নিরাপত্তা ও স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কাজের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত তাহলে তাকে অপরাধি হিসেবে গণ্য করা হবে। বিদেশি এজেন্ট হিসেবেও ঘোষিত হতে পারেন এমন ব্যক্তি।
  • দেশের কোনো নাগরিক যদি কোনো বিদেশি কোনো এজেন্ট বা গোয়েন্দা সদস্যের সাথে সাক্ষাৎ করেন বা ওই বিদেশি এজেন্টের ঠিকানায় গিয়ে থাকেন তাহলে ওই নাগরিক বিদেশি এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করেছেন বলে ধরা হবে এবং তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
  • দেশের কোনো তথ্য কোনোভাবেই বে-আইনিভাবে কারো কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। যদি কেউ এমন কাজের সাথে জড়িত থাকেন তাহলে তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হবে।
  • যদি কোনো ব্যক্তির কাছে যদি কোনো অফিসিয়াল কোনো কোড অথবা পাসওয়ার্ড, অথবা যে-কোনো ধরনের স্কেচ, মডেল, আর্টিকেল, নথি অথবা তথ্য থাকে বা এসবের নিয়ন্ত্রণ থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির সেগুলোকে সরকারের পক্ষে গোপন রাখতে হবে। আর না হলে তাকে অপরাধী বলা হবে।
  • যদি কোনো ব্যক্তিকে সরকার পূর্বে কোনো দায়িত্বে রাখে তাহলে সরকার প্রদত্ত ওই দায়িত্ব শেষে তাঁর কাছে ওই দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কোনো নথিপত্র বা এ সম্পর্কিত কোনো কপি তাঁর কাছে রাখা যাবে না। এছাড়া ওই ব্যক্তি যা কিছু জেনেছেন ওই নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনকালে তা মৌখিকভাবেও কারো কাছে বলতে পারবেন না। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ওই ব্যক্তিকে দায়িত্ব শেষেও গোপন রাখতে হবে। এর ভিন্ন কিছু ঘটলে অর্থাৎ তথ্য প্রকাশ করলে এবং তা যদি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচনা করা হয় তাহলে ওই ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
  • আইনি কর্তৃপক্ষ ছাড়া কিংবা বে-আইনিভাবে বা উপযুক্ত কোনো কারণ ছাড়া কোনো প্রকারের সিল, স্ট্যাম্প বা এ সংক্রান্ত কোনো কিছুর উৎপাদন ও বিক্রয়কে ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ অনুসারে নিষিদ্ধ। এ রকম কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তি অপরাধী।
  • এই আইনে ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ বা ওয়ারেন্ট ছাড়াও অপরাধীকে গ্রেফতার করা যাবে। যদি কোনো আদেশ বা  ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হয়ে তাহলে অপ্রয়োজনে সময়ক্ষেপণ না করে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে অথবা কোনো ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা অথবা কোনো থানায় তাকে হাজির করাতে হবে।
  • পুলিশ গেফতার করলে অপরাধী জামিন পেতে পারেন আবার তাকে জামিন না দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হতে পারে।
  • গুপ্তচরবৃত্তির জন্য এবং রাষ্ট্রের কোনো প্রতিরক্ষা বিষয়ক তথ্য হাতিয়ে নেওয়া বা পাচার করার জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ডের সাজা পেতে হবে অপরাধীকে।
  • অপরাধ যদি মারাত্মক না হয় সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এই আইনে।

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ কেন গুরুত্বপূর্ণ

১৯২৩ সালে প্রণীত এই আইনটি কেন গুরুত্বপুর্ণ সেটি এর শিরোনাম দেখেই মোটামুটিভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়। প্রতিটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে এমন আইনের প্রচলন থাকা উচিৎ। অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট (Official Secrets Act) কে সংক্ষেপে OSA বলেও চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।

এই আইনের প্রচলন করা হয়েছে প্রধানত দেশের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ঠেকানোর জন্য। এন্টি-এস্পিয়োনাজ এই আইন শুধু গুপ্তচরবৃত্তি ঠেকানোর জন্যই কার্যকর, তেমন নয়। এই আইন দেশের যে-কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন রাখতে সাহায্য করে। এভাবে অফিসিয়াল তথ্য গোপন রাখা যে-কোনো স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। এই আইনের কারণে প্রাপ্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে দেশকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা বা বিপদ থেকে রক্ষা করা যায়।

বিভিন্ন দেশে সরকারি গোপন আইন

যুক্তরাজ্য

পার্লামেন্ট অব দ্য ইউনাইটেড কিংডম বা যুক্তরাজ্য সংসদ সর্বপ্রথম দাপ্তরিক গোপন আইন বা অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট (Official Secrets Act) প্রণয়ন করে। এটি ছিল ১৮৮৯ সালের ঘটনা। রাষ্ট্রীয় তথ্যের সুরক্ষার জন্য প্রণীত ওই আইনের দাপ্তরিক বা অফিসিয়াল নাম ছিল ‘The Official Secrets Act 1889’। পরবর্তিতে এই আইনটি ‘The Official Secrets Act 1911’ আইন দ্বারা রিপ্লেস করা হয়। যুক্তরাজ্যে বর্তমানে এ সম্পর্কিত আরও তিনটি আইন আছে যেগুলো যথাক্রমে ১৯২০, ১৯৩৯ এবং ১৯৮৯ সালে প্রণীত হয়।

কানাডা

১৯৮৯ সালে প্রণীত যুক্তরাজ্যের আইনে কিছুটা মডিফিকেশন সহকারে কানাডাতে এর প্রচলন করা হয় ‘The (UK) Offcial Secrets Act 1989’ নামে। এর আগে কানাডা সরকার ১৯৩৯ ও ১৯৮১ সালে এই ধরনের সুরক্ষা আইন প্রচলন করেছিল। সর্বশেষ ২০০১ সালে পার্লামেন্ট অব কানাডা ‘The Security of Informaton Act’ নামে নতুন রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা আইনের প্রচলন করে।

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন হলো ‘দি এস্পিয়োনাজ অ্যাক্ট অন ১৯১৭ (The Espionage Act of 1917)’। উড্রো উইলসনের আমলে এই আইন পাশ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই দাপ্তরিক গোপন আইন কার্যকর হয় জুন ১৫, ১৯১৭।

চীন

চীনে প্রচলিত সিক্রেট আইন বা গোপন আইনের শিরোনাম হলো- ল অব দ্য পিপল’স রিপাবলিক অফ চায়না অন গার্ডিং স্টেট সিক্রেটস (২০১০ রিভিশন)। এই আইনটি ‘চায়না স্টেট সিক্রেটস ল’ নামে অধিক পরিচিত। চীনে সর্বপ্রথম গোপন আইন প্রণয়ন করা হয় ১৯৮৮ সালে। বর্তমানে প্রচলিত আইনটি ১৯৮৮ সালের আইনের ওপরই ভিত্তি করে রচিত। ১৯৮৮ সালের সিক্রেটস অ্যাক্টের পুর্বে ১৯৫১ সালের একটি রেগুলেশন প্রচলিত ছিল।

ভারত

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সময়ে তৎকালীন সরকার ১৯২৩ সালে এন্টি-এস্পিয়োনাজ যে আইনটি প্রণয়ন করেছিল সেটিই আত্মীকরণ করে ভারত। ঘটনাটি বাংলাদেশের মতোই। অর্থাৎ ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’ ভারতেও কার্যকর। তবে সেখানে এই আইনের পাশাপাশি ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৫’ নামের আইনটিও দরকার আছে ‘গোপন’ কিছুকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য।

পাকিস্তান

ঔপনিবেশিক সময়ে রচিত বৃটিশ সরকার কর্তৃক রচিত ১৯২৩ সালের সিক্রেটস অ্যাক্টকেই পাকিস্তান সরকার নিজেদের এন্টি-এস্পিয়োনাজ আইন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যেমনটি দেখা যায় বাংলাদেশ ও ভারতের ক্ষেত্রে। পাকিস্তান সরকার বেশ কয়েকবার এই আইনটি সংশোধন করে।

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ নিয়ে বাংলাদেশে কী জানা যাচ্ছে?

বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’ আত্মীকরণ করে নামমাত্র সংশোধনের মাধ্যমে। যখন থেকে এই আইন বাংলাদেশে কার্যকর রয়েছে তখন থেকে ২০২১ সালের ১৭ মে তারিখের আগে তেমন কোনো আলচনা-সমালোচনা হয়নি। ১৭ মে, ২০২১ প্রথম আলোর একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম এই আইনে গ্রেফতার হবার পর এই আইন নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশে এই আইনে গ্রেফতারের ঘটনা এবারই প্রথম।

কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, বৃটিশ আমলের একটি আইন বাংলাদেশে প্রচলিত থাকা উচিৎ নয়; তবে এমন মন্তব্য অনেকেই মানতে রাজি নন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রচলিত ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ এবং ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’ এর মধ্যে কিছু সমন্বয় বা কিছু ক্ষেত্রে স্পষ্ট বক্তব্য থাকা প্রয়োজন কি না সেটি নিশ্চয়ই আইন বিশেষজ্ঞরা ভেবে দেখবেন।